দিঘাপতিয়া রাজ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১১ নং লাইন: | ১১ নং লাইন: | ||
'''গ্রন্থপঞ্জি''' কালীনাথ চৌধুরী, রাজশাহীর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, কলকাতা, ১৩০৮; ''Bangladesh District Gazetteer, Rajshahi'', Dhaka,1976. | '''গ্রন্থপঞ্জি''' কালীনাথ চৌধুরী, রাজশাহীর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, কলকাতা, ১৩০৮; ''Bangladesh District Gazetteer, Rajshahi'', Dhaka,1976. | ||
[[en:Dighapatia Raj]] | [[en:Dighapatia Raj]] |
০৫:৩৫, ১৩ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
দিঘাপতিয়া রাজ দয়ারাম রায় (১৬৮০-১৭৬০) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত। তাঁর বংশপরিচয় অস্পষ্ট। নিরক্ষর হলেও তিনি ছিলেন অসাধারণ মেধা ও প্রতিভার অধিকারী। শৈশবকালে তিনি নাটোর রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা রামজীবন রায়-এর আশ্রয় লাভ করেন এবং পরবর্তীকালে কঠোর পরিশ্রম, দূরদৃষ্টি ও মেধা গুণে তিনি রামজীবনের দীউয়ান নিযুক্ত হন।
দয়ারাম ১৭১৬ সালে মুর্শিদাবাদের নওয়াবের সাহায্যার্থে রামজীবনের এক সৈন্যবাহিনীর নেতৃত্ব দেন এবং ভূষণার বিদ্রোহী জমিদার রাজা সীতারাম রায়কে পরাজিত ও বিতাড়ন করেন। সীতারামের রাজধানী মুহম্মদপুর লুণ্ঠন করে তিনি প্রচুর ধনরত্ন লাভ করেন এবং এর ফলে দিঘাপতিয়া এস্টেট প্রতিষ্ঠা করা তাঁর পক্ষে সম্ভবপর হয়ে ওঠে। পৃষ্ঠপোষকের প্রতি তাঁর বিশ্বস্ততা, দক্ষতা ও কর্তব্যনিষ্ঠার জন্য তিনি রাজশাহী ও যশোরে প্রচুর ভূসম্পত্তির অধিকারী হন এবং পরবর্তীকালে বগুড়া ও ময়মনসিংহের জমিদারি লাভ করেন। নওয়াব মুর্শিদকুলী খান তাঁর কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে রায়-রায়ান উপাধিতে ভূষিত করেন।
মুর্শিদকুলী খানের শাসনামলে সৃষ্ট বহু প্রাচীন জমিদার বংশ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত এর অধীনে নয়-দশমাংশ ভূমি রাজস্ব প্রদান করতে অপারগ হওয়ায় তাদের রাজস্ব বাকি পড়ে। তাদের জমিদারি কলকাতার নতুন একটি ধনীক শ্রেণির কাছে বিক্রি হয়ে যায়।
দিঘাপতিয়া রাজ পতন্মোমুখ পুরানো জায়গিরদারদের মধ্যে টিকে থাকা একটি। তারা ইউরোপীয় পোশাক-পরিচ্ছদ, পানাভ্যাস, ঘোড়দৌড় ও অন্যান্য চাকচিক্যময় জীবনাচারে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন। পাশ্চাত্য স্টাইলের প্রতি তাদের যে অনুরাগ তা শুধু তাদের জীবনধারার মধ্যেই আসে নি, বরং তা ফুটে উঠেছে তাদের প্রাসাদ স্থাপত্য, ঘরের আসবাবপত্র, এমনকি গৃহসজ্জাতেও। উৎসব অনুষ্ঠানে তারা পরিধান করতেন অত্যন্ত জমকালো পোশাক, মাথায় থাকত রত্নখচিত পাগড়ি, কোমরে গোঁজা থাকত চকচকে খাপে মোড়া পাথর খচিত তরবারি। পুরানো মুগল রীতির অনুকরণে এবং মুগল সাম্রাজ্যের অস্তগত অধ্যায়ের লালিমা ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়ার পরও তাদের এ রীতি অনুসরণ করতে দেখা যায়। প্রাণনাথ রায় এবং প্রমোদনাথ রায় হলেন দিঘাপতিয়া রাজবংশের উল্লেখযোগ্য জমিদার।
দিঘাপতিয়া রাজগণ তাঁদের মহত্ত্ব ও জনকল্যাণের জন্য খ্যাত ছিলেন। বিশেষ করে রাজশাহী জেলা এ পরিবারের কাছে ঋণী এ কারণেই যে, তাঁরা উক্ত এলাকায় কতিপয় পাবলিক প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেন এবং শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিভিন্ন বিষয়ে পৃষ্ঠপোষকতা করেন। এ কারণে ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে তাঁদের অনেকেই রাজা ও রাজা বাহাদুর উপাধি লাভ করেছেন। এটি একটি কৌতূহলোদ্দীপক ব্যাপার যে, পরিবারটির অনেকেই পি.এন রায় নামটি তাদের বংশনাম হিসেবে ব্যবহার করেছেন। প্রাণনাথ থেকে শুরু করে প্রমোদনাথ পর্যন্ত প্রায় সকলেই ‘পি.এন’-কে নামের শুরুতে ব্যবহার করেছেন। [নাজিমউদ্দীন আহমেদ]
গ্রন্থপঞ্জি কালীনাথ চৌধুরী, রাজশাহীর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, কলকাতা, ১৩০৮; Bangladesh District Gazetteer, Rajshahi, Dhaka,1976.