নর্থব্রুক, লর্ড: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(fix: image tag)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:Banglapedia]]
[[Category:Banglapedia]]
'''নর্থব্রুক'''''', ''''''লর্ড''' (১৮২৬-১৯০৪)  ১৮৭২ সালের মে থেকে ১৮৭৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ভারতের গভর্নর জেনারেল এবং ভাইসরয় ছিলেন। প্রথম ব্যারন নর্থব্রুকের পুত্র টমাস জর্জ ব্যারিং নর্থব্রুক ১৮২৬ সালের ২২ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। নর্থব্রুক অক্সফোর্ডের ক্রাইস্টচার্চে শিক্ষালাভ করেন। তিনি প্রথমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্যার জর্জ গ্রে-র এবং পরে ইন্ডিয়া অফিস ও নৌবিভাগে স্যার সি. উড (লর্ড হ্যালিফ্যাক্স)-এর ব্যক্তিগত সচিব ছিলেন। তিনি ফলমাউথ ও পেনরিন অঞ্চলের (১৮৫৭-৬৬) এমপি, নৌবিভাগের জুনিয়র লর্ড (১৮৫৭-৮) ও ভারতের আন্ডার সেক্রেটারি (১৮৫৯-৬৪) ছিলেন।
[[Image:NorthbrookLord.jpg|thumb|400px|right|লর্ড নর্থব্রুক]]
'''নর্থব্রুক, লর্ড''' (১৮২৬-১৯০৪)  ১৮৭২ সালের মে থেকে ১৮৭৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ভারতের গভর্নর জেনারেল এবং ভাইসরয় ছিলেন। প্রথম ব্যারন নর্থব্রুকের পুত্র টমাস জর্জ ব্যারিং নর্থব্রুক ১৮২৬ সালের ২২ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। নর্থব্রুক অক্সফোর্ডের ক্রাইস্টচার্চে শিক্ষালাভ করেন। তিনি প্রথমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্যার জর্জ গ্রে-র এবং পরে ইন্ডিয়া অফিস ও নৌবিভাগে স্যার সি. উড (লর্ড হ্যালিফ্যাক্স)-এর ব্যক্তিগত সচিব ছিলেন। তিনি ফলমাউথ ও পেনরিন অঞ্চলের (১৮৫৭-৬৬) এমপি, নৌবিভাগের জুনিয়র লর্ড (১৮৫৭-৮) ও ভারতের আন্ডার সেক্রেটারি (১৮৫৯-৬৪) ছিলেন।


বাংলায় ঔপানিবেশিক শাসনের শুরু থেকেই ভারতের সাথে লর্ড নর্থব্রুকের ঘনিষ্ঠ পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। তাঁর দাদা, ব্যারিং [[Downloads_Banglapedia_unicode_2001-3000/ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি|ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি]]র একজন প্রভাবশালী পরিচালক ছিলেন। তাঁর পরিবারের অনেক সদস্য ১৭৮০ সাল থেকে বণিক এবং সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে ভারতে আসেন। গ্ল্যাডস্টোনের অনুসারী উদারবাদী লর্ড নর্থব্রুক প্রশাসনে সরকারি হস্তক্ষেপ পছন্দ করতেন না এবং তিনি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের মাধ্যমে ঔপনিবেশিক প্রশাসনকে বিব্রত না করার পক্ষপাতী ছিলেন। তিনি মুক্ত বাণিজ্যে বিশ্বাসী ছিলেন এবং তেল, ধান, নীল ও লাক্ষা ছাড়া অন্য সকল দ্রব্যের রপ্তানি কর উঠিয়ে দিয়েছিলেন। রপ্তানি করের মতো আমদানি করও রহিত করার জন্য লর্ড ডিজরেলীর রক্ষণশীল সরকারের পক্ষ থেকে তার উপর চাপ প্রয়োগ করা হয়। খুব বেশি চাপ প্রয়োগ করায় তিনি আমদানি কর ৭.৫% থেকে ৫% পর্যন্ত কমিয়ে দেন, যা দেশিয় শিল্পের উপর প্রভাব ফেলে।সীমান্তে রাশিয়ার প্রভাবকে নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্যে গৃহীত আফগান নীতি প্রসঙ্গেও সরকারের সঙ্গে লর্ড ব্রুকের মতবিরোধ ছিল। তিনি ডিজরেলী সরকারের ‘ফরওয়ার্ড পলিসি’-রও বিরোধী ছিলেন। #[[Image:নর্থব্রুক, লর্ড_html_88407781.png]]
বাংলায় ঔপানিবেশিক শাসনের শুরু থেকেই ভারতের সাথে লর্ড নর্থব্রুকের ঘনিষ্ঠ পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। তাঁর দাদা, ব্যারিং [[ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি|ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি]]র একজন প্রভাবশালী পরিচালক ছিলেন। তাঁর পরিবারের অনেক সদস্য ১৭৮০ সাল থেকে বণিক এবং সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে ভারতে আসেন। গ্ল্যাডস্টোনের অনুসারী উদারবাদী লর্ড নর্থব্রুক প্রশাসনে সরকারি হস্তক্ষেপ পছন্দ করতেন না এবং তিনি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের মাধ্যমে ঔপনিবেশিক প্রশাসনকে বিব্রত না করার পক্ষপাতী ছিলেন। তিনি মুক্ত বাণিজ্যে বিশ্বাসী ছিলেন এবং তেল, ধান, নীল ও লাক্ষা ছাড়া অন্য সকল দ্রব্যের রপ্তানি কর উঠিয়ে দিয়েছিলেন। রপ্তানি করের মতো আমদানি করও রহিত করার জন্য লর্ড ডিজরেলীর রক্ষণশীল সরকারের পক্ষ থেকে তার উপর চাপ প্রয়োগ করা হয়। খুব বেশি চাপ প্রয়োগ করায় তিনি আমদানি কর ৭.৫% থেকে ৫% পর্যন্ত কমিয়ে দেন, যা দেশিয় শিল্পের উপর প্রভাব ফেলে।সীমান্তে রাশিয়ার প্রভাবকে নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্যে গৃহীত আফগান নীতি প্রসঙ্গেও সরকারের সঙ্গে লর্ড ব্রুকের মতবিরোধ ছিল। তিনি ডিজরেলী সরকারের ‘ফরওয়ার্ড পলিসি’-রও বিরোধী ছিলেন।
 
[[Image:NorthbrookLord.jpg|thumb|400px]]
 
#লর্ড নর্থব্রুক


বাংলায় কৃষক বিক্ষোভ নর্থব্রুকের শাসনামলের উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ১৮৭৪ সালে বাংলায় যে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল তা তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে মোকাবিলা করেন। ব্যক্তিগত ভাবে তিনি দুর্ভিক্ষ এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণকার্য পরিচালনা করে সকলের শ্রদ্ধা অর্জন করেন। ১৮৭৬ সালের প্রথম দিকে ইন্ডিয়া অফিস থেকে নর্থব্রুক আমদানি কর রোধ করার নির্দেশ পান। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত ভারতীয় অর্থনীতিকে অত্যধিক ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে যুক্তি দেখিয়ে তিনি পদত্যাগ করেন।  [সিরাজুল ইসলাম]
বাংলায় কৃষক বিক্ষোভ নর্থব্রুকের শাসনামলের উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ১৮৭৪ সালে বাংলায় যে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল তা তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে মোকাবিলা করেন। ব্যক্তিগত ভাবে তিনি দুর্ভিক্ষ এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণকার্য পরিচালনা করে সকলের শ্রদ্ধা অর্জন করেন। ১৮৭৬ সালের প্রথম দিকে ইন্ডিয়া অফিস থেকে নর্থব্রুক আমদানি কর রোধ করার নির্দেশ পান। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত ভারতীয় অর্থনীতিকে অত্যধিক ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে যুক্তি দেখিয়ে তিনি পদত্যাগ করেন।  [সিরাজুল ইসলাম]
<!-- imported from file: নর্থব্রুক, লর্ড.html-->


[[en:Northbrook, Lord]]
[[en:Northbrook, Lord]]

০৬:০০, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

লর্ড নর্থব্রুক

নর্থব্রুক, লর্ড (১৮২৬-১৯০৪)  ১৮৭২ সালের মে থেকে ১৮৭৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ভারতের গভর্নর জেনারেল এবং ভাইসরয় ছিলেন। প্রথম ব্যারন নর্থব্রুকের পুত্র টমাস জর্জ ব্যারিং নর্থব্রুক ১৮২৬ সালের ২২ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। নর্থব্রুক অক্সফোর্ডের ক্রাইস্টচার্চে শিক্ষালাভ করেন। তিনি প্রথমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্যার জর্জ গ্রে-র এবং পরে ইন্ডিয়া অফিস ও নৌবিভাগে স্যার সি. উড (লর্ড হ্যালিফ্যাক্স)-এর ব্যক্তিগত সচিব ছিলেন। তিনি ফলমাউথ ও পেনরিন অঞ্চলের (১৮৫৭-৬৬) এমপি, নৌবিভাগের জুনিয়র লর্ড (১৮৫৭-৮) ও ভারতের আন্ডার সেক্রেটারি (১৮৫৯-৬৪) ছিলেন।

বাংলায় ঔপানিবেশিক শাসনের শুরু থেকেই ভারতের সাথে লর্ড নর্থব্রুকের ঘনিষ্ঠ পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। তাঁর দাদা, ব্যারিং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একজন প্রভাবশালী পরিচালক ছিলেন। তাঁর পরিবারের অনেক সদস্য ১৭৮০ সাল থেকে বণিক এবং সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে ভারতে আসেন। গ্ল্যাডস্টোনের অনুসারী উদারবাদী লর্ড নর্থব্রুক প্রশাসনে সরকারি হস্তক্ষেপ পছন্দ করতেন না এবং তিনি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের মাধ্যমে ঔপনিবেশিক প্রশাসনকে বিব্রত না করার পক্ষপাতী ছিলেন। তিনি মুক্ত বাণিজ্যে বিশ্বাসী ছিলেন এবং তেল, ধান, নীল ও লাক্ষা ছাড়া অন্য সকল দ্রব্যের রপ্তানি কর উঠিয়ে দিয়েছিলেন। রপ্তানি করের মতো আমদানি করও রহিত করার জন্য লর্ড ডিজরেলীর রক্ষণশীল সরকারের পক্ষ থেকে তার উপর চাপ প্রয়োগ করা হয়। খুব বেশি চাপ প্রয়োগ করায় তিনি আমদানি কর ৭.৫% থেকে ৫% পর্যন্ত কমিয়ে দেন, যা দেশিয় শিল্পের উপর প্রভাব ফেলে।সীমান্তে রাশিয়ার প্রভাবকে নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্যে গৃহীত আফগান নীতি প্রসঙ্গেও সরকারের সঙ্গে লর্ড ব্রুকের মতবিরোধ ছিল। তিনি ডিজরেলী সরকারের ‘ফরওয়ার্ড পলিসি’-রও বিরোধী ছিলেন।

বাংলায় কৃষক বিক্ষোভ নর্থব্রুকের শাসনামলের উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ১৮৭৪ সালে বাংলায় যে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল তা তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে মোকাবিলা করেন। ব্যক্তিগত ভাবে তিনি দুর্ভিক্ষ এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণকার্য পরিচালনা করে সকলের শ্রদ্ধা অর্জন করেন। ১৮৭৬ সালের প্রথম দিকে ইন্ডিয়া অফিস থেকে নর্থব্রুক আমদানি কর রোধ করার নির্দেশ পান। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত ভারতীয় অর্থনীতিকে অত্যধিক ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে যুক্তি দেখিয়ে তিনি পদত্যাগ করেন।  [সিরাজুল ইসলাম]