খয়ের: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
৮ নং লাইন: | ৮ নং লাইন: | ||
খয়ের কাঠ অত্যন্ত মজবুত এবং [[উইপোকা|উইপোকা]] বা ঘুণপোকা আক্রমণ করতে পারে না বিধায় ঘরের খুঁটি, গরুর গাড়ির চাকা, [[লাঙল|লাঙল]], [[ঢেঁকি|ঢেঁকি]] ইত্যাদি তৈরীর কাজে ব্যবহূত হয়। জ্বালানি হিসেবেও খয়ের কাঠ উন্নতমানের। খয়ের গাছে [[লাক্ষাকীট|লাক্ষাকীট]]-এর চাষও করা হয়। | খয়ের কাঠ অত্যন্ত মজবুত এবং [[উইপোকা|উইপোকা]] বা ঘুণপোকা আক্রমণ করতে পারে না বিধায় ঘরের খুঁটি, গরুর গাড়ির চাকা, [[লাঙল|লাঙল]], [[ঢেঁকি|ঢেঁকি]] ইত্যাদি তৈরীর কাজে ব্যবহূত হয়। জ্বালানি হিসেবেও খয়ের কাঠ উন্নতমানের। খয়ের গাছে [[লাক্ষাকীট|লাক্ষাকীট]]-এর চাষও করা হয়। | ||
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে ধামইরহাট, গোবিন্দগঞ্জ, চারঘাট, রাজশাহী, দেবীগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর, খানসামা, বীরগঞ্জ, হরিপুর প্রভৃতি এলাকায়, বিশেষত [[বরেন্দ্রভূমি|বরেন্দ্রভূমি]] এলাকায় ব্যাপক পরিমাণে খয়ের গাছ জন্মে। ভারতে পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার এবং জলপাইগুড়ি অঞ্চলেও প্রচুর খয়ের গাছ জন্মায়। বাংলাদেশে খয়েরের চাহিদার সিংহভাগই নিজস্ব উৎপাদন দিয়ে পূরণ হয়ে থাকে। মালয়েশিয়া থেকেও কিছু খয়ের আমদানি করা হয়। তবে বাংলাদেশে উৎপন্ন খয়ের উৎকৃষ্ট মানের। | বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে ধামইরহাট, গোবিন্দগঞ্জ, চারঘাট, রাজশাহী, দেবীগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর, খানসামা, বীরগঞ্জ, হরিপুর প্রভৃতি এলাকায়, বিশেষত [[বরেন্দ্রভূমি|বরেন্দ্রভূমি]] এলাকায় ব্যাপক পরিমাণে খয়ের গাছ জন্মে। ভারতে পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার এবং জলপাইগুড়ি অঞ্চলেও প্রচুর খয়ের গাছ জন্মায়। বাংলাদেশে খয়েরের চাহিদার সিংহভাগই নিজস্ব উৎপাদন দিয়ে পূরণ হয়ে থাকে। মালয়েশিয়া থেকেও কিছু খয়ের আমদানি করা হয়। তবে বাংলাদেশে উৎপন্ন খয়ের উৎকৃষ্ট মানের। [মোঃ মাহবুব মোর্শেদ] | ||
[মোঃ মাহবুব মোর্শেদ] | |||
[[en:Catechu]] | [[en:Catechu]] |
১০:৪৯, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
খয়ের (Catechu) খয়ের বা খাদির গাছ (Acacia catechu) থেকে আহরিত নির্যাস বা আঠা। খয়ের গাছ লেগুমিনোসী (Leguminosae) গোত্রের অন্তর্ভুক্ত দ্বিবীজপত্রী পর্ণমোচী বৃক্ষ যা সাধারণত ভারতীয় উপমহাদেশ ও এর আশেপাশের অঞ্চলে জন্মে। প্রাচীনকাল থেকেই বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভূটান, পাকিস্তান, শ্রীলংকা এবং মালয়েশিয়াতে পান খাওয়ার মসলা হিসেবে খয়েরের ব্যবহার প্রচলিত। খয়ের ছাড়া প্রকৃত পানসেবীদের স্বাদের ষোলকলা পূর্ণ হয় না। পানের সঙ্গে খয়েরের এক পোচ যেমন পান চিবানোর স্বাদকে পূর্ণ করে তোলে, তেমনি এতে ঠোঁটও লাল হয়ে ওঠে।
খয়ের গাছের নির্যাস দু প্রকার - শ্বেত খয়ের এবং বাদামি খয়ের। শ্বেত খয়েরের ব্যবহার অনেক বেশি এবং এটি পাপড়ি খয়ের নামেও পরিচিত। বাদামি খয়ের কাপড়ের রং তৈরিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহূত হয়। পানের মসলা হিসেবে পাঁচ প্রকার খয়েরের প্রচলন রয়েছে - পাপড়ি, জনকপুরী, পেগু, তিলি ও বেলগুটি। এ প্রসঙ্গে সুগন্ধি কেয়া খয়েরের নামও উল্লেখযোগ্য। খয়ের গাছ ও রাবার গাছ থেকে নির্যাস আহরণ পদ্ধতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। রাবারের বেলায় গাছের বাকল চিরে সরাসরি রস আহরণ করা হয়। অন্যদিকে খয়েরের ক্ষেত্রে গাছের কান্ড বা ডাল টুকরো টুকরো করে কেটে সেগুলি কয়েকদিন পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয় এবং পানিতে খয়ের রস নিঃসৃত হয়। এ পানিকে জ্বাল দিয়ে ঠান্ডা করলে অশোধিত খয়ের বা পাথর খয়ের প্রস্ত্তত হয়।
ভেষজ ঔষধ হিসেবে খয়ের গাছের ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ এবং এ গাছের পাতা, ছাল এবং নির্যাস থেকে বিভিন্ন রোগের কবিরাজী বা আয়ুর্বেদিক ঔষধ তৈরি হয়। বহুবিধ রক্তশোধক টনিক বা সালসা খয়ের থেকে প্রস্ত্তত করা হয়। এদের মধ্যে ‘খাদিরাট্রিষ্ট’ উল্লেখযোগ্য যা কুষ্ঠ, জন্ডিস, প্লীহাবৃদ্ধি প্রভৃতি রোগের জন্য মহৌষধ হিসেবে বিবেচিত।
খয়ের কাঠ অত্যন্ত মজবুত এবং উইপোকা বা ঘুণপোকা আক্রমণ করতে পারে না বিধায় ঘরের খুঁটি, গরুর গাড়ির চাকা, লাঙল, ঢেঁকি ইত্যাদি তৈরীর কাজে ব্যবহূত হয়। জ্বালানি হিসেবেও খয়ের কাঠ উন্নতমানের। খয়ের গাছে লাক্ষাকীট-এর চাষও করা হয়।
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে ধামইরহাট, গোবিন্দগঞ্জ, চারঘাট, রাজশাহী, দেবীগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর, খানসামা, বীরগঞ্জ, হরিপুর প্রভৃতি এলাকায়, বিশেষত বরেন্দ্রভূমি এলাকায় ব্যাপক পরিমাণে খয়ের গাছ জন্মে। ভারতে পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার এবং জলপাইগুড়ি অঞ্চলেও প্রচুর খয়ের গাছ জন্মায়। বাংলাদেশে খয়েরের চাহিদার সিংহভাগই নিজস্ব উৎপাদন দিয়ে পূরণ হয়ে থাকে। মালয়েশিয়া থেকেও কিছু খয়ের আমদানি করা হয়। তবে বাংলাদেশে উৎপন্ন খয়ের উৎকৃষ্ট মানের। [মোঃ মাহবুব মোর্শেদ]