বৌদ্ধ চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''বৌদ্ধ চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপি''' বিগত দেড়শ বছরে নেপাল ও তিববতের বিভিন্ন গ্রন্থাগারে বাংলা ও বিহারের বিপুল সংখ্যক বৌদ্ধ পান্ডুলিপির | '''বৌদ্ধ চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপি''' বিগত দেড়শ বছরে নেপাল ও তিববতের বিভিন্ন গ্রন্থাগারে বাংলা ও বিহারের বিপুল সংখ্যক বৌদ্ধ পান্ডুলিপির সন্ধান পাওয় গেছে। বৃহদাকৃতির তালপাতায় এগুলি ধর্মীয় গ্রন্থের, বিশেষ করে অষ্টসাহস্রিকা-প্রজ্ঞাপারমিতা গ্রন্থের, অনুলিপি। শিক্ষাদীক্ষা, পুণ্যার্জন বা বৌদ্ধ বিহারের গ্রন্থাগারে সংরক্ষণের জন্য এ সমস্ত ধর্মীয় পান্ডুলিপির অনুলিপি তৈরি করা হতো। বেশিরভাগ পান্ডুলিপিতে চিত্রালঙ্করণ নেই, তবে স্বল্পসংখ্যক পান্ডুলিপিতে চিত্রালঙ্কার লক্ষ্য করা যায়। এগুলি কোথায় লিখিত হয়েছিল তা স্পষ্টভাবে জানা যায় না, তবে কোন কোন পান্ডুলিপিতে লিপিকরের নাম হতে কিছু কিছু ঐতিহাসিক তথ্য সংগ্রহ করা যায়। এ সমস্ত পান্ডুলিপি হতে কোন কোন শাসকের নাম পাওয়া যায়, তবে এগুলি কোন বৌদ্ধবিহারে লিখিত, চিত্রিত বা উৎসর্গীকৃত হয়েছিল তা প্রায়ই অজানা রয়ে গেছে। | ||
পাল শাসক রামপাল, চতুর্থ গোপাল ও মদনপালের রাজত্বকালে কিছু সংখ্যক পান্ডুলিপি অনুলিখিত ও চিত্রিত হয়েছিল বলে জানা যায়। এ পান্ডুলিপিসমূহে উল্লিখিত বিবরণ থেকে জানা যায়, খ্রিস্টীয় এগারো শতকের শেষের দিকে এবং বারো শতকে এ পান্ডুলিপিসমূহ বিহারে লিখিত হয়েছিল এবং সেখান থেকে তা বিভিন্ন বৌদ্ধবিহারে, যেমন [[নালন্দা মহাবিহার|নালন্দা]] ও বিক্রমশীলা বিহারে দান করা হয়েছিল। বস্ত্তত, বাংলায় খুব সীমিত সংখ্যক বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থেরই অনুলিপি তৈরি হয়েছিল। | পাল শাসক রামপাল, চতুর্থ গোপাল ও মদনপালের রাজত্বকালে কিছু সংখ্যক পান্ডুলিপি অনুলিখিত ও চিত্রিত হয়েছিল বলে জানা যায়। এ পান্ডুলিপিসমূহে উল্লিখিত বিবরণ থেকে জানা যায়, খ্রিস্টীয় এগারো শতকের শেষের দিকে এবং বারো শতকে এ পান্ডুলিপিসমূহ বিহারে লিখিত হয়েছিল এবং সেখান থেকে তা বিভিন্ন বৌদ্ধবিহারে, যেমন [[নালন্দা মহাবিহার|নালন্দা]] ও বিক্রমশীলা বিহারে দান করা হয়েছিল। বস্ত্তত, বাংলায় খুব সীমিত সংখ্যক বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থেরই অনুলিপি তৈরি হয়েছিল। | ||
[[Image:BuddhistIlluminatedManuscript1.jpg|thumb|right|400px|মারীচী, বরেন্দ্র গবেষনা জাদুঘর, রাজশাহী]] | |||
সাধারণত অঙ্কিত মূর্তির সঙ্গে লিখিত বিবরণের কোন সম্পর্ক থাকত না। পান্ডুলিপির বাঁধাইর কাঠের উপর অঙ্কিত বিভিন্ন মূর্তি সম্বলিত কিছু কিছু চিত্রকর্মও পাওয়া গেছে। যে-সমস্ত পান্ডুলিপি বাঁধাইর জন্য এগুলি তৈরি করা হয়েছিল, সেগুলির বেশিরভাগই কালের গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে বিধায় উক্ত পান্ডুলিপিসমূহের সঙ্গে কাঠের উপরকার চিত্রকলার কি সম্পর্ক ছিল তা জানা অসম্ভব। বিহার ও বাংলায় প্রাপ্ত পান্ডুলিপিসমূহে অঙ্কিত দেবদেবীর-প্রতিমাতে কিছু কিছু পার্থক্য রয়েছে। বিহারে প্রাপ্ত পান্ডুলিপিসমূহে প্রধানত গৌতম বুদ্ধের জীবনের আটটি মহান ঘটনা সুন্দরভাবে চিত্রায়িত করা হয়েছে এবং তা পান্ডুলিপির প্রথম ও শেষদিকে সুন্দরভাবে সাজান হয়েছে। অন্যদিকে বাংলায় প্রাপ্ত পান্ডুলিপিসমূহে পান্ডুলিপির মাঝে মাঝে চিত্রালঙ্কৃত এবং কোন কোন ক্ষেত্রে অনুলিপিকৃত গ্রন্থের বিষয়েরই চিত্রায়ন করা হয়েছে, যেমন করন্ডব্যূহসূত্র। অন্যদিকে বিহারে প্রাপ্ত পান্ডুলিপিসমূহে দেখা যায় বিষয়বস্ত্তর সঙ্গে চিত্রের কোন মিল নেই। যেমন কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যায় পূজার চিত্র পান্ডুলিপির মাঝখানে চিত্রায়িত করা হয়েছে। বিরল বৌদ্ধ ধর্মীয় গ্রন্থাদির, যেমন করন্ডব্যূহসূত্র ও পঞ্চবিংশতিসাহস্রিকা-প্রজ্ঞাপারমিতার অনুলিপি প্রস্ত্তত করে চিত্রায়িত করা হয়েছে। | সাধারণত অঙ্কিত মূর্তির সঙ্গে লিখিত বিবরণের কোন সম্পর্ক থাকত না। পান্ডুলিপির বাঁধাইর কাঠের উপর অঙ্কিত বিভিন্ন মূর্তি সম্বলিত কিছু কিছু চিত্রকর্মও পাওয়া গেছে। যে-সমস্ত পান্ডুলিপি বাঁধাইর জন্য এগুলি তৈরি করা হয়েছিল, সেগুলির বেশিরভাগই কালের গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে বিধায় উক্ত পান্ডুলিপিসমূহের সঙ্গে কাঠের উপরকার চিত্রকলার কি সম্পর্ক ছিল তা জানা অসম্ভব। বিহার ও বাংলায় প্রাপ্ত পান্ডুলিপিসমূহে অঙ্কিত দেবদেবীর-প্রতিমাতে কিছু কিছু পার্থক্য রয়েছে। বিহারে প্রাপ্ত পান্ডুলিপিসমূহে প্রধানত গৌতম বুদ্ধের জীবনের আটটি মহান ঘটনা সুন্দরভাবে চিত্রায়িত করা হয়েছে এবং তা পান্ডুলিপির প্রথম ও শেষদিকে সুন্দরভাবে সাজান হয়েছে। অন্যদিকে বাংলায় প্রাপ্ত পান্ডুলিপিসমূহে পান্ডুলিপির মাঝে মাঝে চিত্রালঙ্কৃত এবং কোন কোন ক্ষেত্রে অনুলিপিকৃত গ্রন্থের বিষয়েরই চিত্রায়ন করা হয়েছে, যেমন করন্ডব্যূহসূত্র। অন্যদিকে বিহারে প্রাপ্ত পান্ডুলিপিসমূহে দেখা যায় বিষয়বস্ত্তর সঙ্গে চিত্রের কোন মিল নেই। যেমন কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যায় পূজার চিত্র পান্ডুলিপির মাঝখানে চিত্রায়িত করা হয়েছে। বিরল বৌদ্ধ ধর্মীয় গ্রন্থাদির, যেমন করন্ডব্যূহসূত্র ও পঞ্চবিংশতিসাহস্রিকা-প্রজ্ঞাপারমিতার অনুলিপি প্রস্ত্তত করে চিত্রায়িত করা হয়েছে। | ||
বিহার এবং সমসাময়িককালে নেপালে প্রাপ্ত বৌদ্ধ চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপিসমূহের মর্মার্থ উপলব্ধি না করে বাংলায় প্রাপ্ত বৌদ্ধ চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপিসমূহের মর্মার্থ উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। বৌদ্ধ ভিক্ষুরাই বিভিন্ন স্থানে পরিভ্রমণের সময় এ সমস্ত চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপি সঙ্গে করে নিয়ে যেতেন এবং তাঁরা নির্দিষ্ট কোন বিহারে বহুল অলঙ্কৃত পান্ডুলিপি উৎসর্গ করতেন। এগুলি বিহারের গ্রন্থাগারের বাইরে যেত না, এমনকি হয়ত সবার ব্যবহারের জন্যও দেওয়া হতো না। কতগুলি দুর্লভ চিত্রালকৃত পান্ডুলিপি পর্যালোচনা করে একথা বলা যায় যে, শিল্পকর্মের একটি ধারা ভারতের বিহার রাজ্যের বিভিন্ন বৌদ্ধবিহারে কেন্দ্রীভূত ছিল এবং অন্য ধারাটি ছিল বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে। অধিকাংশ অলঙ্কৃত পান্ডুলিপি এ দুধারার মধ্যে শনাক্ত করা যায়, তবে কোন কোনটি অন্তর্বর্তী এলাকার বলেও মনে হয়। | বিহার এবং সমসাময়িককালে নেপালে প্রাপ্ত বৌদ্ধ চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপিসমূহের মর্মার্থ উপলব্ধি না করে বাংলায় প্রাপ্ত বৌদ্ধ চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপিসমূহের মর্মার্থ উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। বৌদ্ধ ভিক্ষুরাই বিভিন্ন স্থানে পরিভ্রমণের সময় এ সমস্ত চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপি সঙ্গে করে নিয়ে যেতেন এবং তাঁরা নির্দিষ্ট কোন বিহারে বহুল অলঙ্কৃত পান্ডুলিপি উৎসর্গ করতেন। এগুলি বিহারের গ্রন্থাগারের বাইরে যেত না, এমনকি হয়ত সবার ব্যবহারের জন্যও দেওয়া হতো না। কতগুলি দুর্লভ চিত্রালকৃত পান্ডুলিপি পর্যালোচনা করে একথা বলা যায় যে, শিল্পকর্মের একটি ধারা ভারতের বিহার রাজ্যের বিভিন্ন বৌদ্ধবিহারে কেন্দ্রীভূত ছিল এবং অন্য ধারাটি ছিল বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে। অধিকাংশ অলঙ্কৃত পান্ডুলিপি এ দুধারার মধ্যে শনাক্ত করা যায়, তবে কোন কোনটি অন্তর্বর্তী এলাকার বলেও মনে হয়। | ||
'''''দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ''''' এগারো ও বারো শতকের প্রথমভাগে হরিবর্মণের রাজত্বকালে লালমাই অঞ্চলে দুটি পরিচিত পান্ডুলিপি তৈরি করা হয়েছিল। এ দুটির মধ্যে প্রথমটির কিছু অংশ ব্যক্তিগত সংগ্রহে এবং বাকি অংশ বরোদা রাজ্য জাদুঘর ও চিত্রশালায় সংরক্ষিত আছে (চিত্র-১) এবং এটি হরিবর্মণের অষ্টম রাজ্যাঙ্কে উৎসর্গ করা হয়েছিল। দ্বিতীয়টি রাজশাহীর [[বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর|বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর]]এ রয়েছে এবং এটিও হরিবর্মণের উনবিংশ রাজ্যাঙ্কে অনুলিখিত (চিত্র-২)। রাজশাহীরটি প্রচলিত অষ্টসাহস্রিকা-প্রজ্ঞাপারমিতার পান্ডুলিপি, বরোদারটি পঞ্চবিংশতিসাহস্রিকা-প্রজ্ঞাপারমিতার পান্ডুলিপি। | |||
'''দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ''' এগারো ও বারো শতকের প্রথমভাগে হরিবর্মণের রাজত্বকালে লালমাই অঞ্চলে দুটি পরিচিত পান্ডুলিপি তৈরি করা হয়েছিল। এ দুটির মধ্যে প্রথমটির কিছু অংশ ব্যক্তিগত সংগ্রহে এবং বাকি অংশ বরোদা রাজ্য জাদুঘর ও চিত্রশালায় সংরক্ষিত আছে (চিত্র-১) এবং এটি হরিবর্মণের অষ্টম রাজ্যাঙ্কে উৎসর্গ করা হয়েছিল। দ্বিতীয়টি রাজশাহীর [[বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর|বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর]]এ রয়েছে এবং এটিও হরিবর্মণের উনবিংশ রাজ্যাঙ্কে অনুলিখিত (চিত্র-২)। রাজশাহীরটি প্রচলিত অষ্টসাহস্রিকা-প্রজ্ঞাপারমিতার পান্ডুলিপি, বরোদারটি পঞ্চবিংশতিসাহস্রিকা-প্রজ্ঞাপারমিতার পান্ডুলিপি। | |||
উভয় পান্ডুলিপিতেই ৬ সেমি ৫.৫ সেমি আয়তনের চিত্র পাতার মধ্যস্থলে স্থান পেয়েছে। রাজশাহীর পান্ডুলিপিটির প্রথমে, মাঝে এবং সর্বশেষে মোট ছয়টি চিত্রালঙ্কার রয়েছে। পাতার এক পাশে পূর্ব, মধ্য এবং পশ্চিমের তিনজন তথাগত বুদ্ধ এবং অপর পৃষ্ঠায় প্রত্যেকের সঙ্গে সম্পৃক্ত বোধিসত্ত্ব বা বৌদ্ধ দেবী-প্রতিমার চিত্র রয়েছে। বরোদা পান্ডুলিপিতে সুস্পষ্ট মূর্তিতাত্ত্বিক ধারণা পাওয়া যায় না। বিহারে প্রাপ্ত পান্ডুলিপিগুলিতে বুদ্ধ, বোধিসত্ত্ব, পূজার চিত্র সুবিন্যস্তভাবে স্থান পেয়েছে। মধ্যবর্তী মার্জিনে, যেখানে [[পুথি|পুথি]] বাঁধার জন্য ছিদ্র রয়েছে, জ্যামিতিক মোটিফ দেখা যায়। বাইরের মার্জিনে রয়েছে স্তূপের প্রতিকৃতি। | উভয় পান্ডুলিপিতেই ৬ সেমি ৫.৫ সেমি আয়তনের চিত্র পাতার মধ্যস্থলে স্থান পেয়েছে। রাজশাহীর পান্ডুলিপিটির প্রথমে, মাঝে এবং সর্বশেষে মোট ছয়টি চিত্রালঙ্কার রয়েছে। পাতার এক পাশে পূর্ব, মধ্য এবং পশ্চিমের তিনজন তথাগত বুদ্ধ এবং অপর পৃষ্ঠায় প্রত্যেকের সঙ্গে সম্পৃক্ত বোধিসত্ত্ব বা বৌদ্ধ দেবী-প্রতিমার চিত্র রয়েছে। বরোদা পান্ডুলিপিতে সুস্পষ্ট মূর্তিতাত্ত্বিক ধারণা পাওয়া যায় না। বিহারে প্রাপ্ত পান্ডুলিপিগুলিতে বুদ্ধ, বোধিসত্ত্ব, পূজার চিত্র সুবিন্যস্তভাবে স্থান পেয়েছে। মধ্যবর্তী মার্জিনে, যেখানে [[পুথি|পুথি]] বাঁধার জন্য ছিদ্র রয়েছে, জ্যামিতিক মোটিফ দেখা যায়। বাইরের মার্জিনে রয়েছে স্তূপের প্রতিকৃতি। | ||
১৬ নং লাইন: | ১৫ নং লাইন: | ||
ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে রক্ষিত করন্ডব্যূহসূত্র পুথিতে ভেতরের মার্জিনে একই ধরনের মোটিফ দেখা যায়, তবে তাতে ত্রিপত্রাকৃতি কুলুঙ্গির ভেতরে বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতিকৃতি স্থান পেয়েছে। হরিবর্মণের রাজত্বকালে তৈরি দুটি পান্ডুলিপির বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে লন্ডন জাদুঘরে রক্ষিত পান্ডুলিপির (আনু. ১১০০-১১২৫ খ্রিস্টাব্দে তৈরি) অনেক বৈশিষ্ট্যের মিল রয়েছে। সাদৃশ্য থাকায় মনে হয়, এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কোন চিত্রকর্মশালায় অনুলিখিত ও চিত্রায়িত হয়েছিল। লন্ডন জাদুঘরে রক্ষিত পান্ডুলিপিতে ৬৩টি পাতার মধ্যে ৫৩টি চিত্রালঙ্কৃত রয়েছে। প্রতিটি পাতায় মধ্যস্থানে একটি করে মূর্তি অঙ্কিত এবং পাতার দুপ্রান্ত বরাবর স্তূপের উঁচু ভিতের উপর ত্রিপত্রাকৃতি কুলুঙ্গির ভেতর দেবতার প্রতিকৃতি সম্বলিত মার্জিন অঙ্কন করা হয়েছে। | ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে রক্ষিত করন্ডব্যূহসূত্র পুথিতে ভেতরের মার্জিনে একই ধরনের মোটিফ দেখা যায়, তবে তাতে ত্রিপত্রাকৃতি কুলুঙ্গির ভেতরে বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতিকৃতি স্থান পেয়েছে। হরিবর্মণের রাজত্বকালে তৈরি দুটি পান্ডুলিপির বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে লন্ডন জাদুঘরে রক্ষিত পান্ডুলিপির (আনু. ১১০০-১১২৫ খ্রিস্টাব্দে তৈরি) অনেক বৈশিষ্ট্যের মিল রয়েছে। সাদৃশ্য থাকায় মনে হয়, এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কোন চিত্রকর্মশালায় অনুলিখিত ও চিত্রায়িত হয়েছিল। লন্ডন জাদুঘরে রক্ষিত পান্ডুলিপিতে ৬৩টি পাতার মধ্যে ৫৩টি চিত্রালঙ্কৃত রয়েছে। প্রতিটি পাতায় মধ্যস্থানে একটি করে মূর্তি অঙ্কিত এবং পাতার দুপ্রান্ত বরাবর স্তূপের উঁচু ভিতের উপর ত্রিপত্রাকৃতি কুলুঙ্গির ভেতর দেবতার প্রতিকৃতি সম্বলিত মার্জিন অঙ্কন করা হয়েছে। | ||
[[Image:BuddhistIlluminatedManuscript2.jpg|thumb|left|400px|অবলোকিতেশ্বর]] | |||
[[Image:BuddhistIlluminatedManuscript2.jpg|thumb| | |||
উপরোক্ত তিনটি পান্ডুলিপি একই রীতিতে চিত্রায়িত। সমান পটভূমির উপর মূর্তি অঙ্কিত এবং এতে উজ্জ্বল রং গাঢ় নীল অথবা লাল ব্যবহার করা হয়েছে। তবে এ ধরনের চিত্রকলায় সাদা রঙের ব্যবহার বেশি পরিলক্ষিত হয়। প্রতিকৃতির উন্মুক্ত চক্ষুসহ বড় মুখাবয়ব এবং প্রতিকৃতিটি একটি স্থাপত্যিক কাঠামোর উপর হয় দন্ডায়মান নতুবা উপবিষ্ট। মন্দির আকৃতির চালচিত্রের উভয় পাশে দুটি বৃহদাকার বৃক্ষ সুন্দরভাবে চিত্রায়িত। সমান পটভূমিতে অঙ্কিত রেখার মাধ্যমে চিত্রায়নই এ রীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য। এছাড়া ভক্তি প্রদর্শনের দৃশ্যও এ চিত্রসমূহে লক্ষ্য করা যায়, যা অন্য কোন শিল্পরীতিতে দেখা যায় না। অধিকন্তু উপরিউক্ত পান্ডুলিপিসমূহের চিত্রগুলিতে প্রতিমাকে মন্দিরের অভ্যন্তরে দন্ডায়মান অবস্থায় দেখা যায়। অন্যদিকে বিহারে অনুলিখিত ও চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপিসমূহে দন্ডায়মান অবস্থান খুব একটা দেখা যায় না। | উপরোক্ত তিনটি পান্ডুলিপি একই রীতিতে চিত্রায়িত। সমান পটভূমির উপর মূর্তি অঙ্কিত এবং এতে উজ্জ্বল রং গাঢ় নীল অথবা লাল ব্যবহার করা হয়েছে। তবে এ ধরনের চিত্রকলায় সাদা রঙের ব্যবহার বেশি পরিলক্ষিত হয়। প্রতিকৃতির উন্মুক্ত চক্ষুসহ বড় মুখাবয়ব এবং প্রতিকৃতিটি একটি স্থাপত্যিক কাঠামোর উপর হয় দন্ডায়মান নতুবা উপবিষ্ট। মন্দির আকৃতির চালচিত্রের উভয় পাশে দুটি বৃহদাকার বৃক্ষ সুন্দরভাবে চিত্রায়িত। সমান পটভূমিতে অঙ্কিত রেখার মাধ্যমে চিত্রায়নই এ রীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য। এছাড়া ভক্তি প্রদর্শনের দৃশ্যও এ চিত্রসমূহে লক্ষ্য করা যায়, যা অন্য কোন শিল্পরীতিতে দেখা যায় না। অধিকন্তু উপরিউক্ত পান্ডুলিপিসমূহের চিত্রগুলিতে প্রতিমাকে মন্দিরের অভ্যন্তরে দন্ডায়মান অবস্থায় দেখা যায়। অন্যদিকে বিহারে অনুলিখিত ও চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপিসমূহে দন্ডায়মান অবস্থান খুব একটা দেখা যায় না। | ||
খ্রিস্টীয় বারো শতকে তৈরি মায়ানমারের পাগানের ফ্রেস্কো চিত্রের শিল্পশৈলীর সঙ্গে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পান্ডুলিপির চিত্রশৈলীতে মিল রয়েছে। লন্ডনের ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে রক্ষিত পান্ডুলিপির একটি বোর্ডের চিত্রালঙ্করণে এ মিল লক্ষ্য করা যায়। মনে করা হয় এটিও বাংলার এ অঞ্চলেই তৈরি হয়েছিল। | খ্রিস্টীয় বারো শতকে তৈরি মায়ানমারের পাগানের ফ্রেস্কো চিত্রের শিল্পশৈলীর সঙ্গে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পান্ডুলিপির চিত্রশৈলীতে মিল রয়েছে। লন্ডনের ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে রক্ষিত পান্ডুলিপির একটি বোর্ডের চিত্রালঙ্করণে এ মিল লক্ষ্য করা যায়। মনে করা হয় এটিও বাংলার এ অঞ্চলেই তৈরি হয়েছিল। | ||
'''উত্তর ও পশ্চিম বঙ্গ''' উত্তর ও পশ্চিম বঙ্গের কোন বৌদ্ধ বিহারের উল্লেখ কোন পান্ডুলিপিতে নেই। তাই পান্ডুলিপির চিত্রালঙ্কার এ অঞ্চলের কোন কর্মশালার তা শনাক্ত করার জন্য নির্ভর করতে হয় পান্ডুলিপিতে বিধৃত ঐতিহাসিক তথ্যের ওপর কিংবা দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার বা বিহারের শিল্পরীতির সঙ্গে পার্থক্যের বিবেচনায়। এভাবে রাজা রামপালের সমসাময়িক (পদুবন্বা) পান্ডুয়া অঞ্চলের সোম নামে জনৈক ব্যক্তির উৎসর্গীকৃত পান্ডুলিপিটিকে সোমপুরের শিল্পকর্মশালায় তৈরি পান্ডুলিপি বলে শনাক্ত করা হয়ে থাকে। | '''''উত্তর ও পশ্চিম বঙ্গ''''' উত্তর ও পশ্চিম বঙ্গের কোন বৌদ্ধ বিহারের উল্লেখ কোন পান্ডুলিপিতে নেই। তাই পান্ডুলিপির চিত্রালঙ্কার এ অঞ্চলের কোন কর্মশালার তা শনাক্ত করার জন্য নির্ভর করতে হয় পান্ডুলিপিতে বিধৃত ঐতিহাসিক তথ্যের ওপর কিংবা দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার বা বিহারের শিল্পরীতির সঙ্গে পার্থক্যের বিবেচনায়। এভাবে রাজা রামপালের সমসাময়িক (পদুবন্বা) পান্ডুয়া অঞ্চলের সোম নামে জনৈক ব্যক্তির উৎসর্গীকৃত পান্ডুলিপিটিকে সোমপুরের শিল্পকর্মশালায় তৈরি পান্ডুলিপি বলে শনাক্ত করা হয়ে থাকে। | ||
এগারো শতকের শেষ ও বারো শতকের প্রথমদিকে বিহারে অনুলিখিত ও চিত্রায়িত পান্ডুলিপিসমূহের শিল্পরীতি ও মূর্তিলক্ষণের সঙ্গে উত্তর বঙ্গের পান্ডুলিপির শিল্পরীতির মিল রয়েছে। এমনকি নেপালের পান্ডুলিপিসমূহের সঙ্গেও মিল খুঁজে পাওয়া যায়। বাংলায় চিত্রায়িত পান্ডুলিপিসমূহে মন্দিরের প্রতিকৃতি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যার অভ্যন্তরে দন্ডায়মান অথবা উপবিষ্ট দেব-দেবীর প্রতিকৃতি। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পান্ডুলিপিসমূহে এটি একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য। এমনকি বারো শতকের প্রথম দিকে পূর্ব বিহার, উত্তরবঙ্গ এবং নেপালে তৈরি চিত্রিত কাষ্ঠফলকেও এ সাধারণ বৈশিষ্ট্যসমূহ লক্ষণীয়। সবগুলি না হলেও এ চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপিসমূহ [[বিক্রমশীলা মহাবিহার|বিক্রমশীলা মহাবিহার]] বা বিহারের মুঙ্গের জেলার কোন বৌদ্ধ বিহারে তৈরি হয়েছিল। গঙ্গা অববাহিকায় বহুসংখ্যক প্রস্তর ভাস্কর্য আবিষ্কৃত হয়েছে, যেগুলির সঙ্গে উত্তরবঙ্গ ও মগধে আবিষ্কৃত ভাস্কর্যের শিল্পশৈলীর মিল রয়েছে। | এগারো শতকের শেষ ও বারো শতকের প্রথমদিকে বিহারে অনুলিখিত ও চিত্রায়িত পান্ডুলিপিসমূহের শিল্পরীতি ও মূর্তিলক্ষণের সঙ্গে উত্তর বঙ্গের পান্ডুলিপির শিল্পরীতির মিল রয়েছে। এমনকি নেপালের পান্ডুলিপিসমূহের সঙ্গেও মিল খুঁজে পাওয়া যায়। বাংলায় চিত্রায়িত পান্ডুলিপিসমূহে মন্দিরের প্রতিকৃতি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যার অভ্যন্তরে দন্ডায়মান অথবা উপবিষ্ট দেব-দেবীর প্রতিকৃতি। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পান্ডুলিপিসমূহে এটি একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য। এমনকি বারো শতকের প্রথম দিকে পূর্ব বিহার, উত্তরবঙ্গ এবং নেপালে তৈরি চিত্রিত কাষ্ঠফলকেও এ সাধারণ বৈশিষ্ট্যসমূহ লক্ষণীয়। সবগুলি না হলেও এ চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপিসমূহ [[বিক্রমশীলা মহাবিহার|বিক্রমশীলা মহাবিহার]] বা বিহারের মুঙ্গের জেলার কোন বৌদ্ধ বিহারে তৈরি হয়েছিল। গঙ্গা অববাহিকায় বহুসংখ্যক প্রস্তর ভাস্কর্য আবিষ্কৃত হয়েছে, যেগুলির সঙ্গে উত্তরবঙ্গ ও মগধে আবিষ্কৃত ভাস্কর্যের শিল্পশৈলীর মিল রয়েছে। | ||
[[Image:BuddhistIlluminatedManuscript3.jpg|thumb|right|400px|হেবজ্র প্রজ্ঞা, বরেন্দ্র গবেষনা জাদুঘর, রাজশাহী]] | |||
লন্ডনে সংরক্ষিত সোম কর্তৃক উৎসর্গীকৃত পান্ডুলিপি ছাড়াও লসএঞ্জেলসে একজোড়া চিত্রালঙ্কৃত কাঠের ফলকের শিল্পশৈলী দেখে এদেরকে এ অঞ্চলের শিল্পকর্ম বলে চিহ্নিত করা যায়। কাঠের ফলকে স্থাপত্য নিদর্শনাদির পেছনে রয়েছে বৃক্ষের দৃশ্য এবং ছোট ফুল ছড়ানো অলঙ্করণ। যে শিল্পরীতিতে এ দৃশ্যের অবতারণা করা হয়েছে তা বিহারে দেখা যায় না। তবে বিহারের অনেক বৈশিষ্ট্যই এগারো শতকের শেষ ও বারো শতকের উত্তরবঙ্গের ভাস্কর্য শিল্পরীতির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। | লন্ডনে সংরক্ষিত সোম কর্তৃক উৎসর্গীকৃত পান্ডুলিপি ছাড়াও লসএঞ্জেলসে একজোড়া চিত্রালঙ্কৃত কাঠের ফলকের শিল্পশৈলী দেখে এদেরকে এ অঞ্চলের শিল্পকর্ম বলে চিহ্নিত করা যায়। কাঠের ফলকে স্থাপত্য নিদর্শনাদির পেছনে রয়েছে বৃক্ষের দৃশ্য এবং ছোট ফুল ছড়ানো অলঙ্করণ। যে শিল্পরীতিতে এ দৃশ্যের অবতারণা করা হয়েছে তা বিহারে দেখা যায় না। তবে বিহারের অনেক বৈশিষ্ট্যই এগারো শতকের শেষ ও বারো শতকের উত্তরবঙ্গের ভাস্কর্য শিল্পরীতির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। | ||
এই চিত্রকলায় মূর্তি প্রতিকৃতির বহুল উপস্থিতি বেশি লক্ষণীয়। কোন কোন জায়গায় গ্রন্থের লিখনের বিপরীতমুখী হয়ে আছে মূর্তির দেহ। বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরে রক্ষিত একটি পান্ডুলিপিতে প্রতি দ্বিতীয় পৃষ্ঠায়ই এরূপ ঘটেছে (চিত্র-৩)। | এই চিত্রকলায় মূর্তি প্রতিকৃতির বহুল উপস্থিতি বেশি লক্ষণীয়। কোন কোন জায়গায় গ্রন্থের লিখনের বিপরীতমুখী হয়ে আছে মূর্তির দেহ। বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরে রক্ষিত একটি পান্ডুলিপিতে প্রতি দ্বিতীয় পৃষ্ঠায়ই এরূপ ঘটেছে (চিত্র-৩)। যখন পান্ডুলিপিটি বন্ধ করা হয় তখন প্রতিটি পুরুষ মূর্তির বিপরীতে রয়েছে একটি নারীমূর্তি মনে হয় যেন তারা আলিঙ্গনাবদ্ধ। | ||
যখন পান্ডুলিপিটি বন্ধ করা হয় তখন প্রতিটি পুরুষ মূর্তির বিপরীতে রয়েছে একটি নারীমূর্তি মনে হয় যেন তারা আলিঙ্গনাবদ্ধ। | |||
যদিও স্বল্পসংখ্যক চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপি বাংলায় অবস্থিত কর্মশালায় তৈরি বলে শনাক্ত করা যায়, তবু এসবে অঙ্কিত চিত্র থেকে উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্ববঙ্গের দুটি প্রধান চিত্রকর্মশালার শিল্পশৈলী ও মূর্তিতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য সর্ম্পকে একটি ধারণা করা সম্ভব। এতদঞ্চলে প্রাপ্ত প্রস্তর ভাস্কর্যের সঙ্গে তুলনামূলক গবেষণা করে অজানা চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপি বা ছিন্নপত্রসমূহকে এসব চিত্রকর্মশালার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে। [ক্লোডিন বাউৎজে-পিকরণ] | যদিও স্বল্পসংখ্যক চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপি বাংলায় অবস্থিত কর্মশালায় তৈরি বলে শনাক্ত করা যায়, তবু এসবে অঙ্কিত চিত্র থেকে উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্ববঙ্গের দুটি প্রধান চিত্রকর্মশালার শিল্পশৈলী ও মূর্তিতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য সর্ম্পকে একটি ধারণা করা সম্ভব। এতদঞ্চলে প্রাপ্ত প্রস্তর ভাস্কর্যের সঙ্গে তুলনামূলক গবেষণা করে অজানা চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপি বা ছিন্নপত্রসমূহকে এসব চিত্রকর্মশালার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে। [ক্লোডিন বাউৎজে-পিকরণ] | ||
''আরও দেখুন'' পাল | ''আরও দেখুন'' [[পাল চিত্রকলা|পাল চিত্রকলা]]। | ||
'''গ্রন্থপঞ্জি''' Pratapaditya Pal & | '''গ্রন্থপঞ্জি''' Pratapaditya Pal & Meech-Pekarik Julia, Buddhist Book Illuminations, Paris/New York, 1988; Jeremiah P Losty, ‘An Early Indian Manuscript of the Karandavyuhasutra’, in Debala Mitra & Gouriswar Bhattacharya (ed), Studies in Art and Archaeology of Bihar-Bengal, Delhi, 1989; Claudine Bautze-Picron, ‘Buddhist Painting during the reign of Harivarmadeva (end of the 11th c) in Southeast Bangladesh’, Journal of Bengal Art, 4, 1999. | ||
[[en:Buddhist Illuminated Manuscripts]] | [[en:Buddhist Illuminated Manuscripts]] |
০৪:০৩, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
বৌদ্ধ চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপি বিগত দেড়শ বছরে নেপাল ও তিববতের বিভিন্ন গ্রন্থাগারে বাংলা ও বিহারের বিপুল সংখ্যক বৌদ্ধ পান্ডুলিপির সন্ধান পাওয় গেছে। বৃহদাকৃতির তালপাতায় এগুলি ধর্মীয় গ্রন্থের, বিশেষ করে অষ্টসাহস্রিকা-প্রজ্ঞাপারমিতা গ্রন্থের, অনুলিপি। শিক্ষাদীক্ষা, পুণ্যার্জন বা বৌদ্ধ বিহারের গ্রন্থাগারে সংরক্ষণের জন্য এ সমস্ত ধর্মীয় পান্ডুলিপির অনুলিপি তৈরি করা হতো। বেশিরভাগ পান্ডুলিপিতে চিত্রালঙ্করণ নেই, তবে স্বল্পসংখ্যক পান্ডুলিপিতে চিত্রালঙ্কার লক্ষ্য করা যায়। এগুলি কোথায় লিখিত হয়েছিল তা স্পষ্টভাবে জানা যায় না, তবে কোন কোন পান্ডুলিপিতে লিপিকরের নাম হতে কিছু কিছু ঐতিহাসিক তথ্য সংগ্রহ করা যায়। এ সমস্ত পান্ডুলিপি হতে কোন কোন শাসকের নাম পাওয়া যায়, তবে এগুলি কোন বৌদ্ধবিহারে লিখিত, চিত্রিত বা উৎসর্গীকৃত হয়েছিল তা প্রায়ই অজানা রয়ে গেছে।
পাল শাসক রামপাল, চতুর্থ গোপাল ও মদনপালের রাজত্বকালে কিছু সংখ্যক পান্ডুলিপি অনুলিখিত ও চিত্রিত হয়েছিল বলে জানা যায়। এ পান্ডুলিপিসমূহে উল্লিখিত বিবরণ থেকে জানা যায়, খ্রিস্টীয় এগারো শতকের শেষের দিকে এবং বারো শতকে এ পান্ডুলিপিসমূহ বিহারে লিখিত হয়েছিল এবং সেখান থেকে তা বিভিন্ন বৌদ্ধবিহারে, যেমন নালন্দা ও বিক্রমশীলা বিহারে দান করা হয়েছিল। বস্ত্তত, বাংলায় খুব সীমিত সংখ্যক বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থেরই অনুলিপি তৈরি হয়েছিল।
সাধারণত অঙ্কিত মূর্তির সঙ্গে লিখিত বিবরণের কোন সম্পর্ক থাকত না। পান্ডুলিপির বাঁধাইর কাঠের উপর অঙ্কিত বিভিন্ন মূর্তি সম্বলিত কিছু কিছু চিত্রকর্মও পাওয়া গেছে। যে-সমস্ত পান্ডুলিপি বাঁধাইর জন্য এগুলি তৈরি করা হয়েছিল, সেগুলির বেশিরভাগই কালের গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে বিধায় উক্ত পান্ডুলিপিসমূহের সঙ্গে কাঠের উপরকার চিত্রকলার কি সম্পর্ক ছিল তা জানা অসম্ভব। বিহার ও বাংলায় প্রাপ্ত পান্ডুলিপিসমূহে অঙ্কিত দেবদেবীর-প্রতিমাতে কিছু কিছু পার্থক্য রয়েছে। বিহারে প্রাপ্ত পান্ডুলিপিসমূহে প্রধানত গৌতম বুদ্ধের জীবনের আটটি মহান ঘটনা সুন্দরভাবে চিত্রায়িত করা হয়েছে এবং তা পান্ডুলিপির প্রথম ও শেষদিকে সুন্দরভাবে সাজান হয়েছে। অন্যদিকে বাংলায় প্রাপ্ত পান্ডুলিপিসমূহে পান্ডুলিপির মাঝে মাঝে চিত্রালঙ্কৃত এবং কোন কোন ক্ষেত্রে অনুলিপিকৃত গ্রন্থের বিষয়েরই চিত্রায়ন করা হয়েছে, যেমন করন্ডব্যূহসূত্র। অন্যদিকে বিহারে প্রাপ্ত পান্ডুলিপিসমূহে দেখা যায় বিষয়বস্ত্তর সঙ্গে চিত্রের কোন মিল নেই। যেমন কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যায় পূজার চিত্র পান্ডুলিপির মাঝখানে চিত্রায়িত করা হয়েছে। বিরল বৌদ্ধ ধর্মীয় গ্রন্থাদির, যেমন করন্ডব্যূহসূত্র ও পঞ্চবিংশতিসাহস্রিকা-প্রজ্ঞাপারমিতার অনুলিপি প্রস্ত্তত করে চিত্রায়িত করা হয়েছে।
বিহার এবং সমসাময়িককালে নেপালে প্রাপ্ত বৌদ্ধ চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপিসমূহের মর্মার্থ উপলব্ধি না করে বাংলায় প্রাপ্ত বৌদ্ধ চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপিসমূহের মর্মার্থ উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। বৌদ্ধ ভিক্ষুরাই বিভিন্ন স্থানে পরিভ্রমণের সময় এ সমস্ত চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপি সঙ্গে করে নিয়ে যেতেন এবং তাঁরা নির্দিষ্ট কোন বিহারে বহুল অলঙ্কৃত পান্ডুলিপি উৎসর্গ করতেন। এগুলি বিহারের গ্রন্থাগারের বাইরে যেত না, এমনকি হয়ত সবার ব্যবহারের জন্যও দেওয়া হতো না। কতগুলি দুর্লভ চিত্রালকৃত পান্ডুলিপি পর্যালোচনা করে একথা বলা যায় যে, শিল্পকর্মের একটি ধারা ভারতের বিহার রাজ্যের বিভিন্ন বৌদ্ধবিহারে কেন্দ্রীভূত ছিল এবং অন্য ধারাটি ছিল বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে। অধিকাংশ অলঙ্কৃত পান্ডুলিপি এ দুধারার মধ্যে শনাক্ত করা যায়, তবে কোন কোনটি অন্তর্বর্তী এলাকার বলেও মনে হয়।
দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ এগারো ও বারো শতকের প্রথমভাগে হরিবর্মণের রাজত্বকালে লালমাই অঞ্চলে দুটি পরিচিত পান্ডুলিপি তৈরি করা হয়েছিল। এ দুটির মধ্যে প্রথমটির কিছু অংশ ব্যক্তিগত সংগ্রহে এবং বাকি অংশ বরোদা রাজ্য জাদুঘর ও চিত্রশালায় সংরক্ষিত আছে (চিত্র-১) এবং এটি হরিবর্মণের অষ্টম রাজ্যাঙ্কে উৎসর্গ করা হয়েছিল। দ্বিতীয়টি রাজশাহীর বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরএ রয়েছে এবং এটিও হরিবর্মণের উনবিংশ রাজ্যাঙ্কে অনুলিখিত (চিত্র-২)। রাজশাহীরটি প্রচলিত অষ্টসাহস্রিকা-প্রজ্ঞাপারমিতার পান্ডুলিপি, বরোদারটি পঞ্চবিংশতিসাহস্রিকা-প্রজ্ঞাপারমিতার পান্ডুলিপি।
উভয় পান্ডুলিপিতেই ৬ সেমি ৫.৫ সেমি আয়তনের চিত্র পাতার মধ্যস্থলে স্থান পেয়েছে। রাজশাহীর পান্ডুলিপিটির প্রথমে, মাঝে এবং সর্বশেষে মোট ছয়টি চিত্রালঙ্কার রয়েছে। পাতার এক পাশে পূর্ব, মধ্য এবং পশ্চিমের তিনজন তথাগত বুদ্ধ এবং অপর পৃষ্ঠায় প্রত্যেকের সঙ্গে সম্পৃক্ত বোধিসত্ত্ব বা বৌদ্ধ দেবী-প্রতিমার চিত্র রয়েছে। বরোদা পান্ডুলিপিতে সুস্পষ্ট মূর্তিতাত্ত্বিক ধারণা পাওয়া যায় না। বিহারে প্রাপ্ত পান্ডুলিপিগুলিতে বুদ্ধ, বোধিসত্ত্ব, পূজার চিত্র সুবিন্যস্তভাবে স্থান পেয়েছে। মধ্যবর্তী মার্জিনে, যেখানে পুথি বাঁধার জন্য ছিদ্র রয়েছে, জ্যামিতিক মোটিফ দেখা যায়। বাইরের মার্জিনে রয়েছে স্তূপের প্রতিকৃতি।
ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে রক্ষিত করন্ডব্যূহসূত্র পুথিতে ভেতরের মার্জিনে একই ধরনের মোটিফ দেখা যায়, তবে তাতে ত্রিপত্রাকৃতি কুলুঙ্গির ভেতরে বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতিকৃতি স্থান পেয়েছে। হরিবর্মণের রাজত্বকালে তৈরি দুটি পান্ডুলিপির বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে লন্ডন জাদুঘরে রক্ষিত পান্ডুলিপির (আনু. ১১০০-১১২৫ খ্রিস্টাব্দে তৈরি) অনেক বৈশিষ্ট্যের মিল রয়েছে। সাদৃশ্য থাকায় মনে হয়, এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কোন চিত্রকর্মশালায় অনুলিখিত ও চিত্রায়িত হয়েছিল। লন্ডন জাদুঘরে রক্ষিত পান্ডুলিপিতে ৬৩টি পাতার মধ্যে ৫৩টি চিত্রালঙ্কৃত রয়েছে। প্রতিটি পাতায় মধ্যস্থানে একটি করে মূর্তি অঙ্কিত এবং পাতার দুপ্রান্ত বরাবর স্তূপের উঁচু ভিতের উপর ত্রিপত্রাকৃতি কুলুঙ্গির ভেতর দেবতার প্রতিকৃতি সম্বলিত মার্জিন অঙ্কন করা হয়েছে।
উপরোক্ত তিনটি পান্ডুলিপি একই রীতিতে চিত্রায়িত। সমান পটভূমির উপর মূর্তি অঙ্কিত এবং এতে উজ্জ্বল রং গাঢ় নীল অথবা লাল ব্যবহার করা হয়েছে। তবে এ ধরনের চিত্রকলায় সাদা রঙের ব্যবহার বেশি পরিলক্ষিত হয়। প্রতিকৃতির উন্মুক্ত চক্ষুসহ বড় মুখাবয়ব এবং প্রতিকৃতিটি একটি স্থাপত্যিক কাঠামোর উপর হয় দন্ডায়মান নতুবা উপবিষ্ট। মন্দির আকৃতির চালচিত্রের উভয় পাশে দুটি বৃহদাকার বৃক্ষ সুন্দরভাবে চিত্রায়িত। সমান পটভূমিতে অঙ্কিত রেখার মাধ্যমে চিত্রায়নই এ রীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য। এছাড়া ভক্তি প্রদর্শনের দৃশ্যও এ চিত্রসমূহে লক্ষ্য করা যায়, যা অন্য কোন শিল্পরীতিতে দেখা যায় না। অধিকন্তু উপরিউক্ত পান্ডুলিপিসমূহের চিত্রগুলিতে প্রতিমাকে মন্দিরের অভ্যন্তরে দন্ডায়মান অবস্থায় দেখা যায়। অন্যদিকে বিহারে অনুলিখিত ও চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপিসমূহে দন্ডায়মান অবস্থান খুব একটা দেখা যায় না।
খ্রিস্টীয় বারো শতকে তৈরি মায়ানমারের পাগানের ফ্রেস্কো চিত্রের শিল্পশৈলীর সঙ্গে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পান্ডুলিপির চিত্রশৈলীতে মিল রয়েছে। লন্ডনের ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে রক্ষিত পান্ডুলিপির একটি বোর্ডের চিত্রালঙ্করণে এ মিল লক্ষ্য করা যায়। মনে করা হয় এটিও বাংলার এ অঞ্চলেই তৈরি হয়েছিল।
উত্তর ও পশ্চিম বঙ্গ উত্তর ও পশ্চিম বঙ্গের কোন বৌদ্ধ বিহারের উল্লেখ কোন পান্ডুলিপিতে নেই। তাই পান্ডুলিপির চিত্রালঙ্কার এ অঞ্চলের কোন কর্মশালার তা শনাক্ত করার জন্য নির্ভর করতে হয় পান্ডুলিপিতে বিধৃত ঐতিহাসিক তথ্যের ওপর কিংবা দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার বা বিহারের শিল্পরীতির সঙ্গে পার্থক্যের বিবেচনায়। এভাবে রাজা রামপালের সমসাময়িক (পদুবন্বা) পান্ডুয়া অঞ্চলের সোম নামে জনৈক ব্যক্তির উৎসর্গীকৃত পান্ডুলিপিটিকে সোমপুরের শিল্পকর্মশালায় তৈরি পান্ডুলিপি বলে শনাক্ত করা হয়ে থাকে।
এগারো শতকের শেষ ও বারো শতকের প্রথমদিকে বিহারে অনুলিখিত ও চিত্রায়িত পান্ডুলিপিসমূহের শিল্পরীতি ও মূর্তিলক্ষণের সঙ্গে উত্তর বঙ্গের পান্ডুলিপির শিল্পরীতির মিল রয়েছে। এমনকি নেপালের পান্ডুলিপিসমূহের সঙ্গেও মিল খুঁজে পাওয়া যায়। বাংলায় চিত্রায়িত পান্ডুলিপিসমূহে মন্দিরের প্রতিকৃতি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যার অভ্যন্তরে দন্ডায়মান অথবা উপবিষ্ট দেব-দেবীর প্রতিকৃতি। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পান্ডুলিপিসমূহে এটি একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য। এমনকি বারো শতকের প্রথম দিকে পূর্ব বিহার, উত্তরবঙ্গ এবং নেপালে তৈরি চিত্রিত কাষ্ঠফলকেও এ সাধারণ বৈশিষ্ট্যসমূহ লক্ষণীয়। সবগুলি না হলেও এ চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপিসমূহ বিক্রমশীলা মহাবিহার বা বিহারের মুঙ্গের জেলার কোন বৌদ্ধ বিহারে তৈরি হয়েছিল। গঙ্গা অববাহিকায় বহুসংখ্যক প্রস্তর ভাস্কর্য আবিষ্কৃত হয়েছে, যেগুলির সঙ্গে উত্তরবঙ্গ ও মগধে আবিষ্কৃত ভাস্কর্যের শিল্পশৈলীর মিল রয়েছে।
লন্ডনে সংরক্ষিত সোম কর্তৃক উৎসর্গীকৃত পান্ডুলিপি ছাড়াও লসএঞ্জেলসে একজোড়া চিত্রালঙ্কৃত কাঠের ফলকের শিল্পশৈলী দেখে এদেরকে এ অঞ্চলের শিল্পকর্ম বলে চিহ্নিত করা যায়। কাঠের ফলকে স্থাপত্য নিদর্শনাদির পেছনে রয়েছে বৃক্ষের দৃশ্য এবং ছোট ফুল ছড়ানো অলঙ্করণ। যে শিল্পরীতিতে এ দৃশ্যের অবতারণা করা হয়েছে তা বিহারে দেখা যায় না। তবে বিহারের অনেক বৈশিষ্ট্যই এগারো শতকের শেষ ও বারো শতকের উত্তরবঙ্গের ভাস্কর্য শিল্পরীতির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
এই চিত্রকলায় মূর্তি প্রতিকৃতির বহুল উপস্থিতি বেশি লক্ষণীয়। কোন কোন জায়গায় গ্রন্থের লিখনের বিপরীতমুখী হয়ে আছে মূর্তির দেহ। বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরে রক্ষিত একটি পান্ডুলিপিতে প্রতি দ্বিতীয় পৃষ্ঠায়ই এরূপ ঘটেছে (চিত্র-৩)। যখন পান্ডুলিপিটি বন্ধ করা হয় তখন প্রতিটি পুরুষ মূর্তির বিপরীতে রয়েছে একটি নারীমূর্তি মনে হয় যেন তারা আলিঙ্গনাবদ্ধ।
যদিও স্বল্পসংখ্যক চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপি বাংলায় অবস্থিত কর্মশালায় তৈরি বলে শনাক্ত করা যায়, তবু এসবে অঙ্কিত চিত্র থেকে উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্ববঙ্গের দুটি প্রধান চিত্রকর্মশালার শিল্পশৈলী ও মূর্তিতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য সর্ম্পকে একটি ধারণা করা সম্ভব। এতদঞ্চলে প্রাপ্ত প্রস্তর ভাস্কর্যের সঙ্গে তুলনামূলক গবেষণা করে অজানা চিত্রালঙ্কৃত পান্ডুলিপি বা ছিন্নপত্রসমূহকে এসব চিত্রকর্মশালার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে। [ক্লোডিন বাউৎজে-পিকরণ]
আরও দেখুন পাল চিত্রকলা।
গ্রন্থপঞ্জি Pratapaditya Pal & Meech-Pekarik Julia, Buddhist Book Illuminations, Paris/New York, 1988; Jeremiah P Losty, ‘An Early Indian Manuscript of the Karandavyuhasutra’, in Debala Mitra & Gouriswar Bhattacharya (ed), Studies in Art and Archaeology of Bihar-Bengal, Delhi, 1989; Claudine Bautze-Picron, ‘Buddhist Painting during the reign of Harivarmadeva (end of the 11th c) in Southeast Bangladesh’, Journal of Bengal Art, 4, 1999.