ফারুক, আবদুল্লাহ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''ফারুক, আবদুল্লাহ '''(১৯২৮-১৯৯৭)  লেখক, চিন্তাবিদ, অর্থনীতিবিদ। তিনি পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন। প্রথমে পাবনা জেলা স্কুল এবং পরে কলকাতার পার্ক সার্কাস হাই স্কুলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন। রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা লাভের পর তিনি  [[কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়|কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়]]এ গমন করেন। সেখানে তিনি ১৯৪৬ সালে অর্থনীতিতে বি.এ সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। অতঃপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪৮ সালে অর্থনীতিতে এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন।
[[Image:FaroukAbdullah.jpg|thumb|400px|right|আবদুল্লাহ ফারুক]]
'''ফারুক, আবদুল্লাহ''' (১৯২৮-১৯৯৭)  লেখক, চিন্তাবিদ, অর্থনীতিবিদ। তিনি পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন। প্রথমে পাবনা জেলা স্কুল এবং পরে কলকাতার পার্ক সার্কাস হাই স্কুলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন। রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা লাভের পর তিনি  [[কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়|কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়]]এ গমন করেন। সেখানে তিনি ১৯৪৬ সালে অর্থনীতিতে বি.এ সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। অতঃপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪৮ সালে অর্থনীতিতে এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন।


আবদুল্লাহ ফারুকের অভিজ্ঞতা ছিল বৈচিত্র্যপূর্ণ। প্রথমদিকে তিনি পাবনা আলীয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতার চাকরি গ্রহণ করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি সিরাজগঞ্জ কলেজে অর্থনীতি বিষয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৫০ সালে তাঁকে সরকারি খাদ্যদপ্তরে সহকারী পরিচালক নিযুক্ত করা হয়। সরকার তাঁকে পিসি মহলানবিশ-এর নেতৃত্বাধীন ভারতীয় পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউট কর্তৃক আয়োজিত সরকারি পরিসংখ্যানের ওপর এক বছরব্যাপী এক প্রশিক্ষণে যোগদানের জন্য প্রেরণ করে। অতঃপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে এম.ভি আয়ারের অধীনে পিএইচ.ডি-র ছাত্র হিসেবে নিবন্ধন গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৫ সালে তাঁর গবেষণা অভিসন্দর্ভ ‘রাইস মার্কেটিং’-এর জন্য পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি একই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন এবং জনসংখ্যা সমস্যার ওপর বান্দুং সম্মেলনে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
আবদুল্লাহ ফারুকের অভিজ্ঞতা ছিল বৈচিত্র্যপূর্ণ। প্রথমদিকে তিনি পাবনা আলীয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতার চাকরি গ্রহণ করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি সিরাজগঞ্জ কলেজে অর্থনীতি বিষয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৫০ সালে তাঁকে সরকারি খাদ্যদপ্তরে সহকারী পরিচালক নিযুক্ত করা হয়। সরকার তাঁকে পিসি মহলানবিশ-এর নেতৃত্বাধীন ভারতীয় পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউট কর্তৃক আয়োজিত সরকারি পরিসংখ্যানের ওপর এক বছরব্যাপী এক প্রশিক্ষণে যোগদানের জন্য প্রেরণ করে। অতঃপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে এম.ভি আয়ারের অধীনে পিএইচ.ডি-র ছাত্র হিসেবে নিবন্ধন গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৫ সালে তাঁর গবেষণা অভিসন্দর্ভ ‘রাইস মার্কেটিং’-এর জন্য পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি একই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন এবং জনসংখ্যা সমস্যার ওপর বান্দুং সম্মেলনে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
৭ নং লাইন: ৮ নং লাইন:


ডক্টর ফারুক অর্থনীতি ও মার্কেটিং-এর অধ্যাপক ছিলেন এবং তাঁর অধিকাংশ গবেষণাকর্ম ছিল মার্কেটিং বিষয়ের ওপর। তিনি বাংলাদেশে বাজারজাতকরণের সমস্যার ওপর একটি পাঠ্যবই রচনা করেন।তাহেরুল ইসলাম এবং মনিরুজ্জামানের সাথে যৌথভাবে লিখিত সায়েন্স ট্রেইন্ড ম্যানপাওয়ার গ্রন্থটি পূর্ব পাকিস্তানে বিজ্ঞানসম্পর্কিত জ্ঞান ও দক্ষতার ওপর একটি দিকনির্দেশনাধর্মী গবেষণাকর্ম।
ডক্টর ফারুক অর্থনীতি ও মার্কেটিং-এর অধ্যাপক ছিলেন এবং তাঁর অধিকাংশ গবেষণাকর্ম ছিল মার্কেটিং বিষয়ের ওপর। তিনি বাংলাদেশে বাজারজাতকরণের সমস্যার ওপর একটি পাঠ্যবই রচনা করেন।তাহেরুল ইসলাম এবং মনিরুজ্জামানের সাথে যৌথভাবে লিখিত সায়েন্স ট্রেইন্ড ম্যানপাওয়ার গ্রন্থটি পূর্ব পাকিস্তানে বিজ্ঞানসম্পর্কিত জ্ঞান ও দক্ষতার ওপর একটি দিকনির্দেশনাধর্মী গবেষণাকর্ম।
[[Image:FaroukAbdullah.jpg|thumb|400px|right|আবদুল্লাহ ফারুক]]


তাঁর দ্য হার্ড ওয়ার্কিং পুয়র এবং দ্য ভ্যাগর‌্যান্টস অব ঢাকা সিটি শীর্ষক বইদুটি জনসংখ্যার অবহেলিত অংশ এবং তাদের উন্নয়নের বিষয়ে তাঁর চিন্তাধারার গভীর প্রকাশ। তাঁর টাইম ইউজ অব রুরাল উইমেন হচ্ছে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক গবেষণার ক্ষেত্রে জেন্ডার বিষয় উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে অন্যতম গবেষণাকর্ম। আবদুল্লাহ ফারুকের অন্যান্য প্রধান গবেষণাকর্মের মধ্যে রয়েছে মডার্নাইজিং সাবসিসটেন্ট এগ্রিকালচার (এস.এ লেক-এর সঙ্গে যৌথভাবে লিখিত), রিটেইনিং অব কনজুমার গুডস (এম. সফিউল্লাহর সঙ্গে যৌথভাবে লিখিত), ইকনোমিক হিস্ট্রি অব বাংলাদেশ, চেঞ্জেস ইন বাংলাদেশ ইকনোমি এবং মেজারিং বেনিফিটস অব ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টস।
তাঁর দ্য হার্ড ওয়ার্কিং পুয়র এবং দ্য ভ্যাগর‌্যান্টস অব ঢাকা সিটি শীর্ষক বইদুটি জনসংখ্যার অবহেলিত অংশ এবং তাদের উন্নয়নের বিষয়ে তাঁর চিন্তাধারার গভীর প্রকাশ। তাঁর টাইম ইউজ অব রুরাল উইমেন হচ্ছে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক গবেষণার ক্ষেত্রে জেন্ডার বিষয় উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে অন্যতম গবেষণাকর্ম। আবদুল্লাহ ফারুকের অন্যান্য প্রধান গবেষণাকর্মের মধ্যে রয়েছে মডার্নাইজিং সাবসিসটেন্ট এগ্রিকালচার (এস.এ লেক-এর সঙ্গে যৌথভাবে লিখিত), রিটেইনিং অব কনজুমার গুডস (এম. সফিউল্লাহর সঙ্গে যৌথভাবে লিখিত), ইকনোমিক হিস্ট্রি অব বাংলাদেশ, চেঞ্জেস ইন বাংলাদেশ ইকনোমি এবং মেজারিং বেনিফিটস অব ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টস।

০৯:৪৮, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

আবদুল্লাহ ফারুক

ফারুক, আবদুল্লাহ (১৯২৮-১৯৯৭)  লেখক, চিন্তাবিদ, অর্থনীতিবিদ। তিনি পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন। প্রথমে পাবনা জেলা স্কুল এবং পরে কলকাতার পার্ক সার্কাস হাই স্কুলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন। রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা লাভের পর তিনি  কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়এ গমন করেন। সেখানে তিনি ১৯৪৬ সালে অর্থনীতিতে বি.এ সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। অতঃপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪৮ সালে অর্থনীতিতে এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন।

আবদুল্লাহ ফারুকের অভিজ্ঞতা ছিল বৈচিত্র্যপূর্ণ। প্রথমদিকে তিনি পাবনা আলীয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতার চাকরি গ্রহণ করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি সিরাজগঞ্জ কলেজে অর্থনীতি বিষয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৫০ সালে তাঁকে সরকারি খাদ্যদপ্তরে সহকারী পরিচালক নিযুক্ত করা হয়। সরকার তাঁকে পিসি মহলানবিশ-এর নেতৃত্বাধীন ভারতীয় পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউট কর্তৃক আয়োজিত সরকারি পরিসংখ্যানের ওপর এক বছরব্যাপী এক প্রশিক্ষণে যোগদানের জন্য প্রেরণ করে। অতঃপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে এম.ভি আয়ারের অধীনে পিএইচ.ডি-র ছাত্র হিসেবে নিবন্ধন গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৫ সালে তাঁর গবেষণা অভিসন্দর্ভ ‘রাইস মার্কেটিং’-এর জন্য পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি একই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন এবং জনসংখ্যা সমস্যার ওপর বান্দুং সম্মেলনে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৫৭ সালে ইউনেস্কো আবদুল্লাহ ফারুককে গবেষণা পদ্ধতির ওপর একজন প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে নির্বাচন করলে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সে বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ পান। তিনি ১৯৬৭ সালে অর্থনৈতিক উন্নয়ন-সম্পর্কিত কিছু সেমিনারে অংশগ্রহণের জন্য ফ্রান্স এবং পূর্ব জার্মানি গমন করেন। পরবর্তী পর্যায়ে তিনি বার্মা, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, চীন, ব্রাজিল, চিলি এবং জাপানও ভ্রমণ করেন।

ডক্টর ফারুক অর্থনীতি ও মার্কেটিং-এর অধ্যাপক ছিলেন এবং তাঁর অধিকাংশ গবেষণাকর্ম ছিল মার্কেটিং বিষয়ের ওপর। তিনি বাংলাদেশে বাজারজাতকরণের সমস্যার ওপর একটি পাঠ্যবই রচনা করেন।তাহেরুল ইসলাম এবং মনিরুজ্জামানের সাথে যৌথভাবে লিখিত সায়েন্স ট্রেইন্ড ম্যানপাওয়ার গ্রন্থটি পূর্ব পাকিস্তানে বিজ্ঞানসম্পর্কিত জ্ঞান ও দক্ষতার ওপর একটি দিকনির্দেশনাধর্মী গবেষণাকর্ম।

তাঁর দ্য হার্ড ওয়ার্কিং পুয়র এবং দ্য ভ্যাগর‌্যান্টস অব ঢাকা সিটি শীর্ষক বইদুটি জনসংখ্যার অবহেলিত অংশ এবং তাদের উন্নয়নের বিষয়ে তাঁর চিন্তাধারার গভীর প্রকাশ। তাঁর টাইম ইউজ অব রুরাল উইমেন হচ্ছে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক গবেষণার ক্ষেত্রে জেন্ডার বিষয় উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে অন্যতম গবেষণাকর্ম। আবদুল্লাহ ফারুকের অন্যান্য প্রধান গবেষণাকর্মের মধ্যে রয়েছে মডার্নাইজিং সাবসিসটেন্ট এগ্রিকালচার (এস.এ লেক-এর সঙ্গে যৌথভাবে লিখিত), রিটেইনিং অব কনজুমার গুডস (এম. সফিউল্লাহর সঙ্গে যৌথভাবে লিখিত), ইকনোমিক হিস্ট্রি অব বাংলাদেশ, চেঞ্জেস ইন বাংলাদেশ ইকনোমি এবং মেজারিং বেনিফিটস অব ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টস।

ডক্টর ফারুক ১৯৮৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষাধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। তাঁর চাকরিজীবনের বিভিন্ন সময়ে তিনি সরকারি পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য,  জীবন বীমা কর্পোরেশনজনতা ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ শিল্পঋণ সংস্থা এবং জাতীয় আয় কমিশনের চেয়ারম্যান, ন্যূনতম মজুরি বোর্ড এবং ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের সদস্য হিসেবে কাজ করেন।  [এম. হবিবুল্লাহ]