চামকাটি মসজিদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
২ নং লাইন: | ২ নং লাইন: | ||
'''চামকাটি মসজিদ''' গৌড়ে অবস্থিত এ মসজিদের নামকরণ হয়েছে সম্ভবত চামকাটি সম্প্রদায়ের (মুসলমান) নামে। চামকাটি সম্প্রদায়ের বংশধররা এখনও পুরানো মালদহের নিকটবর্তী চালিসপাড়ায় বসবাস করে। ক্রাইটনের মতে তারা ছিল এমন এক খোদা-ভক্ত সম্প্রদায় যারা প্রবল ধর্মীয় উদ্দীপনার বশে ছুরি দিয়ে নিজেদের দেহ জখম করতো এবং সে কারণে তাদেরকে চামকাটি (ত্বক কর্তনকারী) বলা হতো। | '''চামকাটি মসজিদ''' গৌড়ে অবস্থিত এ মসজিদের নামকরণ হয়েছে সম্ভবত চামকাটি সম্প্রদায়ের (মুসলমান) নামে। চামকাটি সম্প্রদায়ের বংশধররা এখনও পুরানো মালদহের নিকটবর্তী চালিসপাড়ায় বসবাস করে। ক্রাইটনের মতে তারা ছিল এমন এক খোদা-ভক্ত সম্প্রদায় যারা প্রবল ধর্মীয় উদ্দীপনার বশে ছুরি দিয়ে নিজেদের দেহ জখম করতো এবং সে কারণে তাদেরকে চামকাটি (ত্বক কর্তনকারী) বলা হতো। | ||
[[Image:ChamkatiMosqueGour.jpg|thumb|400px|right|চামকাটি মসজিদ, গৌড়]] | |||
এটি ইট দ্বারা নির্মিত এক গম্বুজ বিশিষ্ট একটি বর্গাকার মসজিদ। এর অভ্যন্তরভাগে, বিশেষ করে নিচের দিকে পাথরের আস্তরণ দেখা যায়। বর্গাকার নামায কক্ষটির ভেতরের দিকে প্রতি পার্শ্বের মাপ ৭.২ মিটার। কক্ষটি একটি বিরাট গোলার্ধ আকৃতির গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত। গম্বুজটি স্কুইঞ্চ ও প্রস্তর-স্তম্ভের উপর স্থাপিত। | এটি ইট দ্বারা নির্মিত এক গম্বুজ বিশিষ্ট একটি বর্গাকার মসজিদ। এর অভ্যন্তরভাগে, বিশেষ করে নিচের দিকে পাথরের আস্তরণ দেখা যায়। বর্গাকার নামায কক্ষটির ভেতরের দিকে প্রতি পার্শ্বের মাপ ৭.২ মিটার। কক্ষটি একটি বিরাট গোলার্ধ আকৃতির গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত। গম্বুজটি স্কুইঞ্চ ও প্রস্তর-স্তম্ভের উপর স্থাপিত। | ||
৭ নং লাইন: | ৮ নং লাইন: | ||
[[দানী, আহমদ হাসান|আহমদ হাসান ]][[দানী, আহমদ হাসান|দানী]] মনে করেন, এ মসজিদের স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যগুলি [[একলাখী সমাধিসৌধ|একলাখী সমাধিসৌধ]]-এর স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যের অনুরূপ। একলাখী সৌধে একটি বর্গাকার ঘরকে অষ্টভুজে রূপান্তরিত করে তার উপর একটি বিরাট গম্বুজ নির্মাণের চেষ্টা করা হয়েছিল। চামকাটি মসজিদে ভেতরের হলঘরটিকে বর্গাকার রেখেই তার উপরে গম্বুজ নির্মাণে সক্ষম হয়। এ কাজে তারা এক সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করে। বর্গাকার ঘরটিকে অষ্টভুজে রূপান্তরিত করার পরিবর্তে অষ্টভুজের প্রত্যেক কোণে একটি করে মোট আটটি পাথরের স্তম্ভ ব্যবহার এবং সেগুলির উপর খিলান ও স্কুইঞ্চ স্থাপন করা হয়। এ খিলান ও স্কুইঞ্চগুলির উপরে গম্বুজটি নির্মিত হয়। বিশাল গম্বুজটিকে ধরে রাখার জন্য পাথরের স্তম্ভগুলিকে যথেষ্ট মনে করা হয়। | [[দানী, আহমদ হাসান|আহমদ হাসান ]][[দানী, আহমদ হাসান|দানী]] মনে করেন, এ মসজিদের স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যগুলি [[একলাখী সমাধিসৌধ|একলাখী সমাধিসৌধ]]-এর স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যের অনুরূপ। একলাখী সৌধে একটি বর্গাকার ঘরকে অষ্টভুজে রূপান্তরিত করে তার উপর একটি বিরাট গম্বুজ নির্মাণের চেষ্টা করা হয়েছিল। চামকাটি মসজিদে ভেতরের হলঘরটিকে বর্গাকার রেখেই তার উপরে গম্বুজ নির্মাণে সক্ষম হয়। এ কাজে তারা এক সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করে। বর্গাকার ঘরটিকে অষ্টভুজে রূপান্তরিত করার পরিবর্তে অষ্টভুজের প্রত্যেক কোণে একটি করে মোট আটটি পাথরের স্তম্ভ ব্যবহার এবং সেগুলির উপর খিলান ও স্কুইঞ্চ স্থাপন করা হয়। এ খিলান ও স্কুইঞ্চগুলির উপরে গম্বুজটি নির্মিত হয়। বিশাল গম্বুজটিকে ধরে রাখার জন্য পাথরের স্তম্ভগুলিকে যথেষ্ট মনে করা হয়। | ||
এর পর থেকে এ পদ্ধতি বেশ চালু হয়ে ওঠে। প্যানেলগুলির কিনারে চকচকে টালি ব্যবহারের ফলে বিন্যাস বেশ শোভনীয় রূপ লাভ করে। মসজিদটির নির্মাণকাল নিশ্চিতভাবে জানা যায় নি। ৮৮০ হিজরির (১৪৭৫ খ্রি) একটি [[শিলালিপি|শিলালিপি]]কে [[কানিংহাম, স্যার আলেকজান্ডার|কানিংহাম]] এ মসজিদের লিপি বলে মনে করেন। লিপিটি পরবর্তী [[ইলিয়াস শাহ|ইলিয়াস শাহ]] রাজবংশের শাসক ইউসুফ শাহের শাসনামলের। মসজিদটির নির্মাণশৈলী এ সময়ের নির্মাণরীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। [সুলতান আহমদ] | এর পর থেকে এ পদ্ধতি বেশ চালু হয়ে ওঠে। প্যানেলগুলির কিনারে চকচকে টালি ব্যবহারের ফলে বিন্যাস বেশ শোভনীয় রূপ লাভ করে। মসজিদটির নির্মাণকাল নিশ্চিতভাবে জানা যায় নি। ৮৮০ হিজরির (১৪৭৫ খ্রি) একটি [[শিলালিপি|শিলালিপি]]কে [[কানিংহাম, স্যার আলেকজান্ডার|কানিংহাম]] এ মসজিদের লিপি বলে মনে করেন। লিপিটি পরবর্তী [[ইলিয়াস শাহ|ইলিয়াস শাহ]] রাজবংশের শাসক ইউসুফ শাহের শাসনামলের। মসজিদটির নির্মাণশৈলী এ সময়ের নির্মাণরীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। [সুলতান আহমদ] | ||
[[en:Chamkatti Mosque]] | [[en:Chamkatti Mosque]] |
০৯:২৪, ২২ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
চামকাটি মসজিদ গৌড়ে অবস্থিত এ মসজিদের নামকরণ হয়েছে সম্ভবত চামকাটি সম্প্রদায়ের (মুসলমান) নামে। চামকাটি সম্প্রদায়ের বংশধররা এখনও পুরানো মালদহের নিকটবর্তী চালিসপাড়ায় বসবাস করে। ক্রাইটনের মতে তারা ছিল এমন এক খোদা-ভক্ত সম্প্রদায় যারা প্রবল ধর্মীয় উদ্দীপনার বশে ছুরি দিয়ে নিজেদের দেহ জখম করতো এবং সে কারণে তাদেরকে চামকাটি (ত্বক কর্তনকারী) বলা হতো।
এটি ইট দ্বারা নির্মিত এক গম্বুজ বিশিষ্ট একটি বর্গাকার মসজিদ। এর অভ্যন্তরভাগে, বিশেষ করে নিচের দিকে পাথরের আস্তরণ দেখা যায়। বর্গাকার নামায কক্ষটির ভেতরের দিকে প্রতি পার্শ্বের মাপ ৭.২ মিটার। কক্ষটি একটি বিরাট গোলার্ধ আকৃতির গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত। গম্বুজটি স্কুইঞ্চ ও প্রস্তর-স্তম্ভের উপর স্থাপিত।
নামায কক্ষে পাঁচটি প্রবেশপথ রয়েছে, পূর্ব দিকে তিনটি এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিকে একটি করে। মসজিদের পশ্চিমদিকের দেয়ালে একটি মাত্র মিহরাব রয়েছে, যা বিভিন্ন ধরনের লতাপাতার নকশায় শোভনীয়রূপে অলঙ্কৃত। শিকল এবং ঘণ্টার মোটিফও লক্ষ করা যায়। পূর্ব পাশে পরস্পরছেদী খিলান দ্বারা আচ্ছাদিত একটি বারান্দা রয়েছে।
আহমদ হাসান দানী মনে করেন, এ মসজিদের স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যগুলি একলাখী সমাধিসৌধ-এর স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যের অনুরূপ। একলাখী সৌধে একটি বর্গাকার ঘরকে অষ্টভুজে রূপান্তরিত করে তার উপর একটি বিরাট গম্বুজ নির্মাণের চেষ্টা করা হয়েছিল। চামকাটি মসজিদে ভেতরের হলঘরটিকে বর্গাকার রেখেই তার উপরে গম্বুজ নির্মাণে সক্ষম হয়। এ কাজে তারা এক সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করে। বর্গাকার ঘরটিকে অষ্টভুজে রূপান্তরিত করার পরিবর্তে অষ্টভুজের প্রত্যেক কোণে একটি করে মোট আটটি পাথরের স্তম্ভ ব্যবহার এবং সেগুলির উপর খিলান ও স্কুইঞ্চ স্থাপন করা হয়। এ খিলান ও স্কুইঞ্চগুলির উপরে গম্বুজটি নির্মিত হয়। বিশাল গম্বুজটিকে ধরে রাখার জন্য পাথরের স্তম্ভগুলিকে যথেষ্ট মনে করা হয়।
এর পর থেকে এ পদ্ধতি বেশ চালু হয়ে ওঠে। প্যানেলগুলির কিনারে চকচকে টালি ব্যবহারের ফলে বিন্যাস বেশ শোভনীয় রূপ লাভ করে। মসজিদটির নির্মাণকাল নিশ্চিতভাবে জানা যায় নি। ৮৮০ হিজরির (১৪৭৫ খ্রি) একটি শিলালিপিকে কানিংহাম এ মসজিদের লিপি বলে মনে করেন। লিপিটি পরবর্তী ইলিয়াস শাহ রাজবংশের শাসক ইউসুফ শাহের শাসনামলের। মসজিদটির নির্মাণশৈলী এ সময়ের নির্মাণরীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। [সুলতান আহমদ]