গজারিয়া উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''গজারিয়া উপজেলা''' ([[মুন্সিগঞ্জ জেলা|মুন্সিগঞ্জ জেলা]])  আয়তন: ১৩০.৯২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°২৯´ থেকে ২৩°৩৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৩৪´ থেকে ৯০°৪৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সোনারগাঁ ও হোমনা উপজেলা, দক্ষিণে মতলব উত্তর উপজেলা, পূর্বে দাউদকান্দি ও মেঘনা উপজেলা, পশ্চিমে মুন্সিগঞ্জ সদর, সোনারগাঁ উপজেলা ও মেঘনা নদী। উপজেলাটি চারদিকে মেঘনা নদী দ্বারা বেষ্টিত।
'''গজারিয়া উপজেলা''' ([[মুন্সিগঞ্জ জেলা|মুন্সিগঞ্জ জেলা]])  আয়তন: ১৩১.০০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°২৯´ থেকে ২৩°৩৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৩৪´ থেকে ৯০°৪৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সোনারগাঁ ও হোমনা উপজেলা, দক্ষিণে মতলব উত্তর উপজেলা, পূর্বে দাউদকান্দি ও মেঘনা উপজেলা, পশ্চিমে মুন্সিগঞ্জ সদর, সোনারগাঁ উপজেলা ও মেঘনা নদী। উপজেলাটি চারদিকে মেঘনা নদী দ্বারা বেষ্টিত।


''জনসংখ্যা'' 1৩৮১০৮; পুরুষ ৬৯৬৯৮, মহিলা ৬৮৪১০। মুসলিম ১৩৩৪৫৩, হিন্দু ৪৬৩১ এবং অন্যান্য ৩০।
''জনসংখ্যা'' ১৫৭৯৮৮; পুরুষ ৭৮৭৪৪, মহিলা ৭৯২৪৪। মুসলিম ১৫২৮৮৯, হিন্দু ৫০৫১, বৌদ্ধ ৫, খ্রিস্টান ১৬ এবং অন্যান্য ২৭।


''জলাশয়''  প্রধান নদী: মেঘনা।
''জলাশয়''  প্রধান নদী: মেঘনা।
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| - || ৮ || ১১৪  || ১৩৩ || ৬২৬৮  || ১৩১৮৪০  || ১০৫৫  || ৬৬.৪  || ৫৩.
| - || ৮ || ১১২ || ১৩৩ || ৬৫৫৯ || ১৫১৪২৯ || ১২০৬ || ৫৯.|| ৫৭.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
২৪ নং লাইন: ২৪ নং লাইন:
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| .৭৬  || ৫ || ৬২৬৮  || ১৩১৭  || ৬৬.
| .৬৬ || ৫ || ৬৫৫৯ || ১৭৯২ || ৫৯.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
৩৪ নং লাইন: ৩৪ নং লাইন:
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-  
|-  
| ইমামপুর ৭৩ || ৫১৪৬  || ১০৬৫৭ || ১০৭৬২  || ৫৫.৫৩
| ইমামপুর ৭৩ || ৬২২৬ || ১০৪৪৭ || ১০৯৭৫ || ৫৪.
 
|-
|-
| গজারিয়া ৪২ || ৩৬৮০  || ৭১৭১ || ৭৩১৬  || ৫৩.৩৪
| গজারিয়া ৪২ || ৩৬৪৩ || ৭৪৯১ || ৮০৭৯ || ৫৬.
 
|-
|-
| গুয়াগাছিয়া ৫২ || ৩৭২৩  || ৭২৬৫ || ৭৪১১  || ৩৮.৭৫
| গুয়াগাছিয়া ৫২ || ৪২৯৬ || ৭৩৮৮ || ৮০২৫ || ৫২.
 
|-
|-
| টেঙ্গারচর ৮৪ || ২৭৭৩  || ৬৫৮৮ || ৬১৯৩  || ৬৪.৩৯
| টেঙ্গারচর ৮৪ || ৩৩৩২ || ৭৬৮৫ || ৭৩৭০ || ৬৩.
 
|-
|-
| বাউসিয়া ২১ || ৫৩৮১  || ১১৭৮৫ || ১১৪৯৯  || ৪৯.০৩
| বাউসিয়া ২১ || ৫২৬১ || ১৩৮২৭ || ১৪৪০২ || ৫৭.
 
|-
|-
| বালুয়াকান্দি ১০ || ২৯৫০  || ৮২০৫ || ৭৫৩৩  || ৪৮.৯৩
| বালুয়াকান্দি ১০ || ৩৪২৬ || ৮৬৫২ || ৮৭৮৮ || ৫৭.
 
|-
|-
| ভবের চর ৩১ || ২১৪৫  || ৫৮৬৮ || ৮৩৫৮  || ৬৬.৯১
| ভবের চর ৩১ || ২২৩৮ || ১০১৭৩ || ১০০০৬ || ৬২.
 
|-
|-
| হোসেনদি ৬৩ || ৫০৪৫  || ৯৪৫৯ || ৯৩৩৮  || ৫৪.০৪
| হোসেনদি ৬৩ || ৩৯৪৯ || ১৩০৮১ || ১১৫৯৯ || ৫৩.
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:GazariaUpazila.jpg|thumb|400px|right]]
[[Image:GazariaUpazila.jpg|thumb|400px|right]]
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের ৯ মে পাকবাহিনী স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় গজারিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে প্রায় ৩৬০জন নিরীহ জনগণকে হত্যা করে। ১৪ মে মুক্তিযোদ্ধারা বোমা বিস্ফোরণের সাহায্যে ভাটেরচর ব্রীজ ধ্বংস করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ২২ মে পাকবাহিনী বাউশিয়া গ্রামের অধিকাংশ বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। ৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাটেরচর বেইলি ব্রিজ ধ্বংস করার সময় পাকবাহিনীর আক্রমণে ৯জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ৮ ডিসেম্বর পাকবাহিনী ভবেরচরে ১০জন কিশোরকে হত্যা করে এবং ৯ ডিসেম্বর পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ১জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৪ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনীর বিমান হামলায় পাকবাহিনীর ২টি গানবোট ডুবে যায় এবং এই দিনে গজারিয়া উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের ৯ মে পাকবাহিনী স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় গজারিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে প্রায় ৩৬০জন নিরীহ জনগণকে হত্যা করে। ১৪ মে মুক্তিযোদ্ধারা বোমা বিস্ফোরণের সাহায্যে ভাটেরচর ব্রিজ ধ্বংস করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ২২ মে পাকবাহিনী বাউশিয়া গ্রামের অধিকাংশ বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। ৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাটেরচর বেইলি ব্রিজ ধ্বংস করার সময় পাকবাহিনীর আক্রমণে প্রায় ৯জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ৮ ডিসেম্বর পাকবাহিনী ভবেরচরে ১০জন কিশোরকে হত্যা করে এবং ৯ ডিসেম্বর পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ১জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৪ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনীর বিমান হামলায় পাকবাহিনীর ২ টি গানবোট ডুবে যায় এবং এই দিনে গজারিয়া উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়। উপজেলার ভবেরচরে ১টি গণকবর রয়েছে।


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' গণকবর ১ (ভবেরচর)।
''বিস্তারিত দেখুন'' গজারিয়া উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৩।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ২৩০, মন্দির ৫। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: কাউনিয়া মসজিদ, পুরান বাউসিয়া জামে মসজিদ, সোলায়মান লেংটার মাযার, ভবেরচর মন্দির।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ২৩০, মন্দির ৫। উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান: কাউনিয়া মসজিদ, পুরান বাউসিয়া জামে মসজিদ, সোলায়মান লেংটার মাযার, ভবেরচর মন্দির।


''শিক্ষার হার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান''  গড় হার ৫৩.০৮%; পুরুষ ৫৭.০৪%, মহিলা ৫০.%। বিশ্ববিদ্যালয় ১, কলেজ ২, ইঞ্জিনিয়ারিং স্টাফ কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৭, ভকেশনাল ইন্সটিটিউট ১, মাদ্রাসা ৫। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমুহ: ভবেরচর ওয়াজির আলী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩০), গজারিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৭), গজারিয়া পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭৭), বালুয়াকান্দি ডাঃ আব্দুল গাফ্ফার উচ্চ বিদ্যালয়, অসডোর অ্যাকাডেমি জুনিয়র হাই স্কুল, গজারিয়া বাতেনীয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, গজারিয়া সরকারি কলেজ।
''শিক্ষার হার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৫৭.%; পুরুষ ৫৯.%, মহিলা ৫৪.%। বিশ্ববিদ্যালয় ১, কলেজ ২, ইঞ্জিনিয়ারিং স্টাফ কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৭, ভকেশনাল ইন্সটিটিউট ১, মাদ্রাসা ৫। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমুহ: ভবেরচর ওয়াজির আলী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩০), গজারিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৭), গজারিয়া পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭৭), বালুয়াকান্দি ডাঃ আব্দুল গাফ্ফার উচ্চ বিদ্যালয়, অসডোর অ্যাকাডেমি জুনিয়র হাই স্কুল, গজারিয়া বাতেনীয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, গজারিয়া সরকারি কলেজ।


''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী''  দৈনিক মুন্সিগঞ্জের কাগজ।
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী''  দৈনিক মুন্সিগঞ্জের কাগজ।
৮৪ নং লাইন: ৭৭ নং লাইন:
''মৎস্য, হাঁস মুরগির খামার''  মৎস্য ২২, হাঁস-মুরগি ২৫, হ্যাচারি ৪, অন্যান্য ১।
''মৎস্য, হাঁস মুরগির খামার''  মৎস্য ২২, হাঁস-মুরগি ২৫, হ্যাচারি ৪, অন্যান্য ১।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব''  পাকারাস্তা ৪৬.০৭ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৪২.০০ কিমি।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব''  পাকা রাস্তা ৬০কিমি, আধা-পাকা রাস্তা ৯ কিমি, কাঁচা রাস্তা ১৬৩ কিমি; নৌপথ ২৮ কিমি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরুর গাড়ি।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরুর গাড়ি।
৯৬ নং লাইন: ৮৯ নং লাইন:
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  আলু, গম, কাগজ, সিমেন্ট, সূতা।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  আলু, গম, কাগজ, সিমেন্ট, সূতা।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার''  এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৭.৮৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার''  সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচীর আওতাধীন। তবে উপজেলার ৭৭.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''পানীয়জলের উৎস''  অগভীর নলকূপ ৮৫.৩০%, গভীর নলকূপ ২.৩৭%, ট্যাপ ০.৪১%, পুকুর ১.৫৪%, অন্যান্য ১০.৩৮%। উপজেলার ৮৭% অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিক রয়েছে। ২০০১ সালের এক জরীপ অনুযায়ী আর্সেনিক আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১০৩ জন।
''পানীয়জলের উৎস''  নলকূপ ৯০.%, ট্যাপ .%, অন্যান্য .%। উপজেলার ৮৭% অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিক রয়েছে। ২০০১ সালের এক জরীপ অনুযায়ী আর্সেনিক আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১০৩ জন।  


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' ৩৮.৩৫% (গ্রামে ৩৬.১৭% এবং শহরে ৮২.৩৪%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৪.৮৬% (গ্রামে ৫৬.৯৪% এবং শহরে ১২.৯০%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। .৭৯% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' ৭৮.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১৯.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। .% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র''  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১ (৩১ শয্যা বিশিষ্ট), উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৪, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৮, দাতব্য চিকিৎসালয় ৪, কমিউনিটি ক্লিনিক ৬, কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র ১, পশু চিকিৎসা কেন্দ্র ১।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র''  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১ (৩১ শয্যা বিশিষ্ট), উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৪, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৮, দাতব্য চিকিৎসালয় ৪, কমিউনিটি ক্লিনিক ৬, কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র ১, পশু চিকিৎসা কেন্দ্র ১।
১০৬ নং লাইন: ৯৯ নং লাইন:
''এনজিও''  ব্র্যাক।  [এ.কে.এম হাবিবুর রহমান]
''এনজিও''  ব্র্যাক।  [এ.কে.এম হাবিবুর রহমান]


'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; গজারিয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন-২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; গজারিয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন-২০০৭।


[[en:Gazaria Upazila]]
[[en:Gazaria Upazila]]

১৫:৫৫, ৩ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

গজারিয়া উপজেলা (মুন্সিগঞ্জ জেলা)  আয়তন: ১৩১.০০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°২৯´ থেকে ২৩°৩৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৩৪´ থেকে ৯০°৪৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সোনারগাঁ ও হোমনা উপজেলা, দক্ষিণে মতলব উত্তর উপজেলা, পূর্বে দাউদকান্দি ও মেঘনা উপজেলা, পশ্চিমে মুন্সিগঞ্জ সদর, সোনারগাঁ উপজেলা ও মেঘনা নদী। উপজেলাটি চারদিকে মেঘনা নদী দ্বারা বেষ্টিত।

জনসংখ্যা ১৫৭৯৮৮; পুরুষ ৭৮৭৪৪, মহিলা ৭৯২৪৪। মুসলিম ১৫২৮৮৯, হিন্দু ৫০৫১, বৌদ্ধ ৫, খ্রিস্টান ১৬ এবং অন্যান্য ২৭।

জলাশয়  প্রধান নদী: মেঘনা।

প্রশাসন একসময় গজারিয়া থানা দাউদকান্দি থানার অন্তর্গত ছিল। ১৯৫৪ সালে গজারিয়া থানা গঠিত হয় এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১১২ ১৩৩ ৬৫৫৯ ১৫১৪২৯ ১২০৬ ৫৯.৯ ৫৭.১
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৩.৬৬ ৬৫৫৯ ১৭৯২ ৫৯.৯
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
ইমামপুর ৭৩ ৬২২৬ ১০৪৪৭ ১০৯৭৫ ৫৪.৮
গজারিয়া ৪২ ৩৬৪৩ ৭৪৯১ ৮০৭৯ ৫৬.৭
গুয়াগাছিয়া ৫২ ৪২৯৬ ৭৩৮৮ ৮০২৫ ৫২.৯
টেঙ্গারচর ৮৪ ৩৩৩২ ৭৬৮৫ ৭৩৭০ ৬৩.৮
বাউসিয়া ২১ ৫২৬১ ১৩৮২৭ ১৪৪০২ ৫৭.২
বালুয়াকান্দি ১০ ৩৪২৬ ৮৬৫২ ৮৭৮৮ ৫৭.৭
ভবের চর ৩১ ২২৩৮ ১০১৭৩ ১০০০৬ ৬২.২
হোসেনদি ৬৩ ৩৯৪৯ ১৩০৮১ ১১৫৯৯ ৫৩.৬

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ৯ মে পাকবাহিনী স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় গজারিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে প্রায় ৩৬০জন নিরীহ জনগণকে হত্যা করে। ১৪ মে মুক্তিযোদ্ধারা বোমা বিস্ফোরণের সাহায্যে ভাটেরচর ব্রিজ ধ্বংস করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ২২ মে পাকবাহিনী বাউশিয়া গ্রামের অধিকাংশ বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। ৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাটেরচর বেইলি ব্রিজ ধ্বংস করার সময় পাকবাহিনীর আক্রমণে প্রায় ৯জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ৮ ডিসেম্বর পাকবাহিনী ভবেরচরে ১০জন কিশোরকে হত্যা করে এবং ৯ ডিসেম্বর পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ১জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৪ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনীর বিমান হামলায় পাকবাহিনীর ২ টি গানবোট ডুবে যায় এবং এই দিনে গজারিয়া উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়। উপজেলার ভবেরচরে ১টি গণকবর রয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন গজারিয়া উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৩।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২৩০, মন্দির ৫। উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান: কাউনিয়া মসজিদ, পুরান বাউসিয়া জামে মসজিদ, সোলায়মান লেংটার মাযার, ভবেরচর মন্দির।

শিক্ষার হার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৭.২%; পুরুষ ৫৯.৬%, মহিলা ৫৪.৮%। বিশ্ববিদ্যালয় ১, কলেজ ২, ইঞ্জিনিয়ারিং স্টাফ কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৭, ভকেশনাল ইন্সটিটিউট ১, মাদ্রাসা ৫। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমুহ: ভবেরচর ওয়াজির আলী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩০), গজারিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৭), গজারিয়া পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭৭), বালুয়াকান্দি ডাঃ আব্দুল গাফ্ফার উচ্চ বিদ্যালয়, অসডোর অ্যাকাডেমি জুনিয়র হাই স্কুল, গজারিয়া বাতেনীয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, গজারিয়া সরকারি কলেজ।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক মুন্সিগঞ্জের কাগজ।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২, প্রেসক্লাব ১, শিল্পকলা একাডেমি ১, ক্লাব ২৫, সিনেমা হল ১, মহিলা সমিতি ৪১, খেলার মাঠ ১৮।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৪৪.৬৩%, অকৃষি শ্রমিক ১.৭২%, শিল্প ০.৪০%, ব্যবসা ১৭.০২%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৪৯%, চাকরি ৬.৮০%, নির্মাণ ১.৫২%, ধর্মীয় সেবা ০.২১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ২.২৫% এবং অন্যান্য ২১.৯৬%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৪.৭৪%, ভূমিহীন ৩৫.২৬%। শহরে ৬৫.৪৮% এবং গ্রামে ৬৪.৭০% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, আলু, সরিষা, তিল, মসুর ডাল, চীনাবাদাম, ভুট্টা।

বিলুপ্ত ও বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  পাট, কাউন, কলাই, তিষি।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, জাম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, লিচু, নারিকেল, পেয়ারা, কুল, তাল, বাতাবি লেবু, কতবেল, তরমুজ।

মৎস্য, হাঁস মুরগির খামার  মৎস্য ২২, হাঁস-মুরগি ২৫, হ্যাচারি ৪, অন্যান্য ১।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকা রাস্তা ৬০কিমি, আধা-পাকা রাস্তা ৯ কিমি, কাঁচা রাস্তা ১৬৩ কিমি; নৌপথ ২৮ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা এ উপজেলায় কাগজ কল, সিমেন্ট কারখানা, সুতা কল, বিস্কুট ফ্যাক্টরি, হিমাগার প্রভৃতি রয়েছে।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, বাঁশের কাজ, কাঠের কাজ প্রভৃতি।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৭, মেলা ৪। উল্লেখযোগ্য হাটবাজার ও মেলা: গজারিয়া বাজার, ভবেরচর হাট, রসুলপুর হাট, হোসেনদি বাজার, দাসকান্দি বটগাছতলা মেলা (মধ্য বাউসিয়া), কালীগাছতলা মেলা (ভবেরচর)।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  আলু, গম, কাগজ, সিমেন্ট, সূতা।

বিদ্যুৎ ব্যবহার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচীর আওতাধীন। তবে উপজেলার ৭৭.৬% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯০.৫%, ট্যাপ ৩.৮%, অন্যান্য ৫.৭%। উপজেলার ৮৭% অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিক রয়েছে। ২০০১ সালের এক জরীপ অনুযায়ী আর্সেনিক আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১০৩ জন।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা ৭৮.৪% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১৯.২% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২.৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১ (৩১ শয্যা বিশিষ্ট), উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৪, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৮, দাতব্য চিকিৎসালয় ৪, কমিউনিটি ক্লিনিক ৬, কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র ১, পশু চিকিৎসা কেন্দ্র ১।

এনজিও ব্র্যাক।  [এ.কে.এম হাবিবুর রহমান]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; গজারিয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন-২০০৭।