দাস, সুরেন্দ্রলাল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:Banglapedia]] | [[Category:Banglapedia]] | ||
'''দাস | '''দাস, সুরেন্দ্রলাল''' (১৮৯২-১৯৪৩) সঙ্গীতশিল্পী ও [[অর্কেস্ট্রা|অর্কেস্ট্রা]] সংগঠক। চট্টগ্রাম শহরের উপকণ্ঠে কাট্টলি গ্রামে তাঁর জন্ম। সাধারণ্যে তিনি ‘ঠাকুরদা’ নামে খ্যাত ছিলেন। শৈশবেই তিনি সঙ্গীতের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং কণ্ঠসঙ্গীত ও বংশীবাদনের মাধ্যমে [[সঙ্গীত|সঙ্গীত]] জগতে পরিচিতি লাভ করেন। ১৯২০ সালে তিনি চট্টগ্রামের আর্য সঙ্গীত সমিতিতে যোগদান করেন এবং অর্কেস্ট্রা দল গঠনে মনোযোগী হন। ভারতবর্ষে অর্কেস্ট্রা গঠনে সুরেন্দ্রলাল ছিলেন অন্যতম পথিকৃৎ। তিনি ছিলেন রাগসঙ্গীতের নিষ্ঠাবান সাধক। তাই প্রাচ্যের রাগবিস্তারকে কেন্দ্র করে দেশি [[বাদ্যযন্ত্র|বাদ্যযন্ত্র]] সহযোগে তিনি চট্টগ্রামে গঠন করেন ‘আর্য সঙ্গীত অর্কেস্ট্রা’ নামে একটি অর্কেস্ট্রা দল। এ জন্য তিনি অর্কেস্ট্রার উপযোগী কয়েকটি সঙ্গীতযন্ত্রও আবিষ্কার করেন। ১৯২২ সালে অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেসে তাঁর অর্কেস্ট্রা দল ঐকতান পরিবেশন করে ব্যাপক সুনাম অর্জন করে। তখন কলকাতা বেতার থেকে তাঁর পরিচালনায় নিয়মিত অর্কেস্ট্রা প্রচারিত হতো। তাঁর রচিত ও পরিচালিত সত্তরটিরও অধিক অর্কেস্ট্রা প্রচারিত হয়। | ||
১৯৩০ সালে কলকাতা বেতারে ‘যন্ত্রিসঙ্ঘ’ নামে একটি অর্কেস্ট্রা দল গঠন ছিল সুরেন্দ্রলালের স্মরণীয় কীর্তি। ১৯৩৯ সালে তিনি কলকাতার ‘আওয়ার অর্কেস্ট্রা’ দলে যোগদান করেন। ওই সময় কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। তাঁর নিকট সঙ্গীতে তালিম নিয়ে যাঁরা খ্যাতিমান হয়েছেন তাঁদের মধ্যে দক্ষিণামোহন ঠাকুর, প্রিয়লাল দাশগুপ্ত, প্রিয়দারঞ্জন সেনগুপ্ত প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। চট্টগ্রামে তিনি ‘সঙ্গীত বিদ্যাপীঠ’ নামে একটি সঙ্গীত একাডেমি স্থাপনের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন। | ১৯৩০ সালে কলকাতা বেতারে ‘যন্ত্রিসঙ্ঘ’ নামে একটি অর্কেস্ট্রা দল গঠন ছিল সুরেন্দ্রলালের স্মরণীয় কীর্তি। ১৯৩৯ সালে তিনি কলকাতার ‘আওয়ার অর্কেস্ট্রা’ দলে যোগদান করেন। ওই সময় কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। তাঁর নিকট সঙ্গীতে তালিম নিয়ে যাঁরা খ্যাতিমান হয়েছেন তাঁদের মধ্যে দক্ষিণামোহন ঠাকুর, প্রিয়লাল দাশগুপ্ত, প্রিয়দারঞ্জন সেনগুপ্ত প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। চট্টগ্রামে তিনি ‘সঙ্গীত বিদ্যাপীঠ’ নামে একটি সঙ্গীত একাডেমি স্থাপনের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন। | ||
সুরেন্দ্রলাল স্বদেশী আন্দোলনেরও একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পঞ্চাশের মন্বন্তরে তিনি চট্টগ্রামে এসে আর্ত মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করেন এবং অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে হঠাৎ মৃত্যুবরণ করেন। [মোবারক হোসেন খান] | সুরেন্দ্রলাল স্বদেশী আন্দোলনেরও একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পঞ্চাশের মন্বন্তরে তিনি চট্টগ্রামে এসে আর্ত মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করেন এবং অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে হঠাৎ মৃত্যুবরণ করেন। [মোবারক হোসেন খান] | ||
[[en:Das, Surendralal]] | [[en:Das, Surendralal]] |
০৫:০৫, ১৩ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
দাস, সুরেন্দ্রলাল (১৮৯২-১৯৪৩) সঙ্গীতশিল্পী ও অর্কেস্ট্রা সংগঠক। চট্টগ্রাম শহরের উপকণ্ঠে কাট্টলি গ্রামে তাঁর জন্ম। সাধারণ্যে তিনি ‘ঠাকুরদা’ নামে খ্যাত ছিলেন। শৈশবেই তিনি সঙ্গীতের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং কণ্ঠসঙ্গীত ও বংশীবাদনের মাধ্যমে সঙ্গীত জগতে পরিচিতি লাভ করেন। ১৯২০ সালে তিনি চট্টগ্রামের আর্য সঙ্গীত সমিতিতে যোগদান করেন এবং অর্কেস্ট্রা দল গঠনে মনোযোগী হন। ভারতবর্ষে অর্কেস্ট্রা গঠনে সুরেন্দ্রলাল ছিলেন অন্যতম পথিকৃৎ। তিনি ছিলেন রাগসঙ্গীতের নিষ্ঠাবান সাধক। তাই প্রাচ্যের রাগবিস্তারকে কেন্দ্র করে দেশি বাদ্যযন্ত্র সহযোগে তিনি চট্টগ্রামে গঠন করেন ‘আর্য সঙ্গীত অর্কেস্ট্রা’ নামে একটি অর্কেস্ট্রা দল। এ জন্য তিনি অর্কেস্ট্রার উপযোগী কয়েকটি সঙ্গীতযন্ত্রও আবিষ্কার করেন। ১৯২২ সালে অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেসে তাঁর অর্কেস্ট্রা দল ঐকতান পরিবেশন করে ব্যাপক সুনাম অর্জন করে। তখন কলকাতা বেতার থেকে তাঁর পরিচালনায় নিয়মিত অর্কেস্ট্রা প্রচারিত হতো। তাঁর রচিত ও পরিচালিত সত্তরটিরও অধিক অর্কেস্ট্রা প্রচারিত হয়।
১৯৩০ সালে কলকাতা বেতারে ‘যন্ত্রিসঙ্ঘ’ নামে একটি অর্কেস্ট্রা দল গঠন ছিল সুরেন্দ্রলালের স্মরণীয় কীর্তি। ১৯৩৯ সালে তিনি কলকাতার ‘আওয়ার অর্কেস্ট্রা’ দলে যোগদান করেন। ওই সময় কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। তাঁর নিকট সঙ্গীতে তালিম নিয়ে যাঁরা খ্যাতিমান হয়েছেন তাঁদের মধ্যে দক্ষিণামোহন ঠাকুর, প্রিয়লাল দাশগুপ্ত, প্রিয়দারঞ্জন সেনগুপ্ত প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। চট্টগ্রামে তিনি ‘সঙ্গীত বিদ্যাপীঠ’ নামে একটি সঙ্গীত একাডেমি স্থাপনের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন।
সুরেন্দ্রলাল স্বদেশী আন্দোলনেরও একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পঞ্চাশের মন্বন্তরে তিনি চট্টগ্রামে এসে আর্ত মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করেন এবং অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে হঠাৎ মৃত্যুবরণ করেন। [মোবারক হোসেন খান]