কচুয়া উপজেলা (বাগেরহাট): সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
(একজন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত ৪টি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''কচুয়া উপজেলা''' ([[চাঁদপুর জেলা|চাঁদপুর জেলা]])  আয়তন: ২৩৫.৮২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°১৫´ থেকে ২৩°২৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৪৮´ থেকে ৯১°০১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে [[চান্দিনা উপজেলা|চান্দিনা]] ও [[দাউদকান্দি উপজেলা|দাউদকান্দি ]]উপজেলা, দক্ষিণে [[শাহরাস্তি উপজেলা|শাহরাস্তি ]][[হাজীগঞ্জ উপজেলা |হাজীগঞ্জ ]]উপজেলা, পূর্বে [[বরুড়া উপজেলা|বরুড়া]] ও চান্দিনা উপজেলা, পশ্চিমে [[মতলব দক্ষিণ উপজেলা|মতলব দক্ষিণ]] ও হাজীগঞ্জ উপজেলা।
'''কচুয়া উপজেলা''' ([[বাগেরহাট জেলা|বাগেরহাট জেলা]])   আয়তন: ১৩১.৬৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৩৪' থেকে ২২°৪৫' উত্তর আংশ এবং ৮৯°৪৯' থেকে ৮৯°৫৬' পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে [[চিতলমারী উপজেলা|চিতলমারী]] উপজেলা, দক্ষিণে [[মোড়েলগঞ্জ উপজেলা|মোড়েলগঞ্জ]], পূর্বে [[নাজিরপুর উপজেলা|নাজিরপুর]] এবং [[পিরোজপুর সদর উপজেলা|পিরোজপুর]] সদর উপজেলা, পশ্চিমে [[বাগেরহাট সদর উপজেলা|বাগেরহাট]] সদর উপজেলা।  


''জনসংখ্যা'' ৩৩১৩৬০; পুরুষ ১৬৩৭২৩, মহিলা ১৬৭৬৩৭। মুসলিম ৩০৬৫৯৩, হিন্দু ২৪৭২৯, বৌদ্ধ ১৩ এবং অন্যান্য ২৫।
''জনসংখ্যা'' ৯৭০১১; পুরুষ ৪৭৭৭৮, মহিলা ৪৯২৩৩। মুসলিম ৭৮৬৪৫, হিন্দু ১৮৩৪৭ এবং খ্রিস্টান ১৯।
 
 
''জলাশয়'' প্রধান নদী: কচুয়া, কালীছড়ি এবং বোয়ালজুরির খাল ও বাটাকাশি খাল উল্লেখযোগ্য।
''জলাশয়'' বালেশ্বর, তালেশ্বর ও বিষখালী নদী এবং লারার খাল উল্লেখযোগ্য।  
 
''প্রশাসন'' কচুয়া থানা গঠিত হয় ১৯১৮ সালে এবং উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালের ২০ জুলাই।


''প্রশাসন''  কচুয়া থানা সৃষ্টি হয় ১৮৮৬ সালে এবং এটি উপজেলায় রূপান্তরিত হয় ১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৮৩ সালে।
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| colspan="9" | উপজেলা
| colspan="9" | উপজেলা
|-
|-
| rowspan="2" | পৌরসভা || rowspan="2" | ইউনিয়ন || rowspan="2" | মৌজা || rowspan="2" | গ্রাম || colspan="2" | জনসংখ্যা || rowspan="2" | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) || colspan="2" | শিক্ষার হার (%)
| rowspan="2" | পৌরসভা || rowspan="2" | ইউনিয়ন || rowspan="2" | মৌজা || rowspan="2" | গ্রাম || colspan="2" | জনসংখ্যা || rowspan="2" | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || colspan="2" | শিক্ষার হার (%)
|-
| শহর || গ্রাম || | শহর || গ্রাম
|-
|-
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| - || || ৮০ || ১০২ || ৯৪৭৩ || ৮৭৫৩৮ || ৭৩৭ || ৬২.|| ৫৬.
|-
| ১  || ১২  || ১৭৩  || ২৩২  || ২২১৯৭  || ৩০৯১৬৩  || ১৪০৫  || ৪৭.৩  || ৪৪.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
|পৌরসভা
| colspan="5" | উপজেলা শহর
|-
|-
| আয়তন(বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড || মহল্লা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| .৩২ || || ৯৪৭৩ || ১১৩৯ || ৬২.
|-
| ১১.২৩  || ৯  || ২০  || ২২১৯৭  || ১৯৭৫  || ৪৭.৩০
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
| colspan="5" | ইউনিয়ন
| ইউনিয়ন
|-  
|-  
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর) || colspan="2" | লোকসংখ্যা || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর) || colspan="2" | লোকসংখ্যা || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
|-
| পুরুষ  || মহিলা
|-
| আশরাফপুর ১৩  || ৫৭৭৭  || ১৫৬৬২  || ১৬৪২১  || ৫৫.৯২
|-
| উত্তর কচুয়া ৩৯  || ৪১০২  || ১১৫৭১  || ১২২৯১  || ৪২.২
|-
| উত্তর গোহাট ২৩  || ৩৬১২  || ১১৪১৭  || ১১৭২১  || ৪৯.৫৭
|-
| কড়াইয়া ৬৩  || ৭২৩৩  || ১৮৮৫১  || ১৯০৩৯  || ৪৯.৩৮
|-
|-
| কাদলা ৫৫  || ৬৬৭০  || ১২৬৩৬  || ১৩১২৬  || ৪৮.৭৪
| পুরুষ || মহিলা
|-
|-
| দক্ষিণ কচুয়া ৪৭  || ৩৩৪৯  || ৭৯০৫ || ৮২৩৯  || ৫০.৯৫
| কচুয়া ৫৭ || ৩৭৩২ || ৬৯৮৮ || ৭২৮০ || ৬০.
|-
|-
| দক্ষিণ গোহাট ৩১  || ৩৫৮১  || ১১৪৩৭ || ১২২৬৯  || ৫১.১৬
| গজালিয়া ৩৮ || ৪৯৪৩ || ৮০৬৩ || ৮৩৪৮ || ৪৮.
|-
|-
| পশ্চিম সহদেবপুর ৯৪  || ৪৫৯৩  || ১১৬৬৮ || ১২৪৪১  || ৩৬.৭৩
| গোপালপুর ৪৭ || ৩৩১৭ || ৪৫৮৫ || ৪৭৬৭ || ৫৪.
|-
|-
| পাথৈর ৭৯  || ৩৬৬২  || ৯৮৯৭ || ১০৫৫৩  || ৩৭.১৮
| ধোপাখালী ২৮ || ৩১৩৪ || ৬৩১৯ || ৬৬৬৭ || ৫১.
|-
|-
| পূর্ব সহদেবপুর ৮৭  || ৪১৮৬  || ১০৭৬৭ || ১০৭৩০  || ৩৯.৭৬
| বাধাল ১৫ || ৫২৪৬ || ৭১৫৯ || ৭৪০৬ || ৫৩.
|-
|-
| বিটারা ১৫  || ৭৩২৩  || ১৮৫৩৫ || ১৮৪৪৬  || ৩৪.৩৩
| মঘিয়া ৬৬ || ৪৯০৮ || ৬৩৫৪ || ৬৪২০ || ৬৫.
|-
|-
| সাচার ৭১  || ৪১৮৩  || ১১৯৮৮ || ১১৫৫৩  || ৩৮.১৮
| রাড়ীপাড়া ৭৬ || ৫২২৭ || ৮৩১০ || ৮৩৪৫ || ৬৩.
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
 
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' বখতিয়ার খাঁ জামে মসজিদ (উজানী, ১১০৭ হিজরী), পালাগিরি গ্রামের জামে মসজিদ। বেহুলার দীঘি ও বেহুলার পাটা (বেহুলার পৈতৃক বাড়ী), সাচারে শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের মন্দির (১৮৭০), সাহারপাড়ের দিঘী (রহিমানগর), মনসা মুড়া, তুলাতলীর মঠ (ষোল শতক)।
 
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর রঘুনাথপুর বাজারে স্থানীয় রাজাকারদের হামলায় ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং ১৪ জন নিরীহ লোক নিহত হয়।


[[Image:KachuaUpazilaChandpur.jpg|thumb|right|400px]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ''  শিবপুরের শিববাড়ি (১৩০০ খ্রি.), মঘিয়া জমিদার বাড়ি সংলগ্ন কালী মন্দির।


[[Image:KachuaUpazilaBagerhat.jpg|thumb|right|400px]]


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৪৪৩, মন্দির ৪৯, মাযার ১০, তীর্থস্থান ১।
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের ৩ মে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাধাল ইউনিয়নের শাঁখারীকাঠী হাটে পাকবাহিনী ৪২ জন গ্রামবাসিকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ১৫ অক্টোবর পাকবাহিনী রাজাকারদের সহযোগিতায় মঘিয়া ইউনিয়নের ভাসা বাজার ঘেরাও করে প্রায় ৬০ জন লোককে আটক করে এবং মঘিয়া গ্রামের ভাসারহাট পুলের কাছে গুলি করে হত্যা করে। উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সরাসরি কোনো যুদ্ধ হয়নি। তবে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর দোসর রাজাকারদের কয়েকটি ক্যাম্পে কয়েকবার হামলা পরিচালনা করে। শাঁখারীকাঠী, মঘিয়া ও কচুয়াসহ ৭টি স্থানে গণকবর আবিষ্কৃত হয়েছে; উপজেলায় ২টি স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪৪.৮%: পুরুষ ৪৬.৭%, মহিলা ৪৩.১%। বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ২২৬, এনজিও স্কুল ৪৯, মাদ্রাসা ১৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সাচার উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), কচুয়া পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৭), নিশ্চিন্তপুর ডি.এস. কামিল মাদ্রাসা (১৯৫৮), চাঁদপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট (২০০৫)।
''বিস্তারিত দেখুন''  কচুয়া উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ২।


''সাময়িকী''  পাক্ষিক কচুয়া কণ্ঠ।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ১৬৯, মন্দির ৪৭, তীর্থস্থান ২।


''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' ক্লাব ৮৯, লাইব্রেরি ২, থিয়েটার গ্রুপ ২, মহিলা সংগঠন ১৩, খেলার মাঠ ৩২।
''শিক্ষার হার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৫৬.৮%; পুরুষ ৫৭.৬%, মহিলা ৫৬.০%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯৪, মাদ্রাসা ৮। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কচুয়া ডিগ্রি কলেজ, কচুয়া মহিলা ডিগ্রি কলেজ, মাজেদা বেগম কৃষি প্রযুক্তি কলেজ, মসনী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৫), গোয়ালহাট রসিক লাল বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৬), বাড়ৈখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯১৮), মাধবকাঠী আহমদিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা (১৯১৫)।


''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৫২.৪৭%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৫৩%, শিল্প ০.৭৬%, ব্যবসা ১২.৭৪%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৯৯%, চাকরি ৯.৯৫%, নির্মাণ ২.০৭%, ধর্মীয় সেবা ০.৫২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৪.৯৬% এবং অন্যান্য ৯.০১%
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' সাপ্তাহিক: খানজাহান, সুজনেষু ইন্টারন্যাশনাল, দীপায়ন, তৃতীয় নয়ন, সুন্দরবন, কবিকণ্ঠ, পার্থ সারথী (ধর্মীয় পত্রিকা); সাময়িকী: মুক্তিযুদ্ধে কচুয়া (১৯৯৯)


''কৃষিভুমির মালিকানা''  ভূমিমালিক ৬৪.৫৯%, ভূমিহীন ৩৫.৪১%। শহরে ৫৭.৩৭% এবং গ্রামে ৬৫.০৭% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' লাইব্রেরি ৪, সিনেমা হল ১, নাট্যদল ১, কাব ৫৮।


''প্রধান কৃষি ফসল'' ধান, গম, আলু, সরিষা, তিল।
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৫৮.৬৬%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৬৭%, শিল্প ০.৬%, ব্যবসা ১৭.৫৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৫.৪৩%, চাকরি ৭.০৫%, নির্মাণ ১.৪৮%, ধর্মীয় সেবা ০.২০%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২৯% এবং অন্যান্য ৫.০৫%।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায়''  ফসলাদি  পাট, কাউন, অড়হর।
''কৃষিভূমির মালিকানা'' ভূমিমালিক ৬৩.৭৫%, ভূমিহীন ৩৬.২৫%। শহরে ৪১.৫০% এবং গ্রামে ৬৬.১৩% পরিবারের কৃষিভূমি রয়েছে।


''প্রধান ফল-ফলাদি'' আম, কাঁঠাল, আনারস, কলা, কুল।
''প্রধান কৃষি ফসল'' ধান, আখ, গম, পাট, তুলা, পান, সুপারি, ডাল ও শাকসবজি।


''মৎস্য, গবাদিপশু হাঁস-মুরগির খামার''  এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি খামার রয়েছে।
''বিলুপ্ত বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' সরিষা, তিল, মিষ্টি আলু, বাদাম, তামাক।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ১৫০, আধা-পাকারাস্তা ৭০ কিমি, কাঁচারাস্তা ৭৫০ কিমি।
''প্রধান ফল-ফলাদি'' নারিকেল, কলা, সফেদা, তরমুজ।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরু ঘোড়ার গাড়ি।
''মৎস্য, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগির খামার'' এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।


''শিল্প ও কলকারখানা'' আটা কল, হিমাগার, বরফ কল, ওয়েল্ডিং কারখানা।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ১৪২.২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৮৮.৩ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩০৮.২৭ কিমি।


''কুটিরশিল্প'' স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, বাঁশের কাজ, কাঠের কাজ, বিড়ি শিল্প, রেশম শিল্প।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' [[পালকি|পালকি]], গরুর গাড়ি।


''হাটবাজার, মেলা''   হাটবাজার ৩২, মেলা ১০। কচুয়া, রহিমানগর, সাচার, জগৎপুর, দরবেশগঞ্জ, চাড়াভাঙ্গা বাজার এবং নাউলা হরিসভার মেলা, আইনগিরী মেলা, গোহট মেলা, কড়ইয়া বটতলা মেলা, মেঘদাই মেলা উল্লেখযোগ্য।
''উল্লেখযোগ্য শিল্প ও কলকারখানা'' রাইসমিল, স’মিল প্রভৃতি।


''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''   কুল, কলা, আলু।
''উল্লেখযোগ্য কুটিরশিল্প'' পাটশিল্প, [[নকশি কাঁথা|নকশি কাঁথা]], বেতের কাজ, বাঁশের কাজ প্রভৃতি।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৯.৫% (শহরে ২৮.০৪% এবং গ্রামে ৫১.১১%)  পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ১৪, মেলা ১১। কচুয়া হাট, বৈরাগীর হাট, সাইনবোর্ড বাজার, গোয়ালমাঠ বাজার এবং বিষখালী বারুণী মেলা শিববাড়ির মেলা উল্লেখযোগ্য।


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯০.৬৮%, ট্যাপ ০.৬২%, পুকুর ৩.৫৯% এবং অন্যান্য ৫.১১%।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য'' নারিকেল, সুপারি, কলা, তালের গুড়।


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' ৫২.৬৮% (শহরে ৪৫.৫৭% এবং গ্রামে ৫৩.১৫%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩২.২৪% (শহরে ৪৪.৮১% এবং গ্রামে ৩১.৪%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১৫.০৮% (শহরে ৯.৬২% এবং গ্রামে ১৫.৪৫%) পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪০.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১২।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৫৮.৪%, ট্যাপ ২.৭% এবং অন্যান্য ৩৮.৯%।


''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৯৭৪ সালের ঘূর্ণিঝড়ে এ উপজেলার কয়েকটি গ্রামের সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৮৯.৭% পরিবার স্বাস্ব্যকর এবং ৯.১% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১.২% পরিবারের কোন ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''এনজিও''  [[আসা|আশা]], [[ব্র্যাক|ব্র্যাক]], উদ্দীপন, বার্ড, দি গুড আর্থ।  [হাবিবুন্নবি শরীফুল হক শাহ্জী]
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র''  হাসপাতাল ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৭, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, কমিউনিটি কিনিক ১০, কিনিক ১।
উল্লেখযোগ্য এনজিও  অন্বেষা, প্রদীপন, আশা, ব্র্যাক, গ্রামীণ ব্যাংক, কেয়ার, কোডেক।  [পার্থদেব সাহা]


'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কচুয়া উপজেলা মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০০৭।''' '''
'''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১,বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কচুয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীা প্রতিবেদন ২০০৭।  


[[en:Kachua Upazila (Bagerhat District)]]
[[en:Kachua Upazila (Bagerhat District)]]

১৬:৪১, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

কচুয়া উপজেলা (বাগেরহাট জেলা) আয়তন: ১৩১.৬৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৩৪' থেকে ২২°৪৫' উত্তর আংশ এবং ৮৯°৪৯' থেকে ৮৯°৫৬' পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে চিতলমারী উপজেলা, দক্ষিণে মোড়েলগঞ্জ, পূর্বে নাজিরপুর এবং পিরোজপুর সদর উপজেলা, পশ্চিমে বাগেরহাট সদর উপজেলা।

জনসংখ্যা ৯৭০১১; পুরুষ ৪৭৭৭৮, মহিলা ৪৯২৩৩। মুসলিম ৭৮৬৪৫, হিন্দু ১৮৩৪৭ এবং খ্রিস্টান ১৯।

জলাশয় বালেশ্বর, তালেশ্বর ও বিষখালী নদী এবং লারার খাল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন কচুয়া থানা সৃষ্টি হয় ১৮৮৬ সালে এবং এটি উপজেলায় রূপান্তরিত হয় ১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৮০ ১০২ ৯৪৭৩ ৮৭৫৩৮ ৭৩৭ ৬২.৫ ৫৬.২
উপজেলা শহর
৮.৩২ ৯৪৭৩ ১১৩৯ ৬২.৫
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কচুয়া ৫৭ ৩৭৩২ ৬৯৮৮ ৭২৮০ ৬০.৭
গজালিয়া ৩৮ ৪৯৪৩ ৮০৬৩ ৮৩৪৮ ৪৮.৬
গোপালপুর ৪৭ ৩৩১৭ ৪৫৮৫ ৪৭৬৭ ৫৪.২
ধোপাখালী ২৮ ৩১৩৪ ৬৩১৯ ৬৬৬৭ ৫১.৩
বাধাল ১৫ ৫২৪৬ ৭১৫৯ ৭৪০৬ ৫৩.৬
মঘিয়া ৬৬ ৪৯০৮ ৬৩৫৪ ৬৪২০ ৬৫.০
রাড়ীপাড়া ৭৬ ৫২২৭ ৮৩১০ ৮৩৪৫ ৬৩.৪

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ শিবপুরের শিববাড়ি (১৩০০ খ্রি.), মঘিয়া জমিদার বাড়ি সংলগ্ন কালী মন্দির।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ৩ মে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাধাল ইউনিয়নের শাঁখারীকাঠী হাটে পাকবাহিনী ৪২ জন গ্রামবাসিকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ১৫ অক্টোবর পাকবাহিনী রাজাকারদের সহযোগিতায় মঘিয়া ইউনিয়নের ভাসা বাজার ঘেরাও করে প্রায় ৬০ জন লোককে আটক করে এবং মঘিয়া গ্রামের ভাসারহাট পুলের কাছে গুলি করে হত্যা করে। উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সরাসরি কোনো যুদ্ধ হয়নি। তবে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর দোসর রাজাকারদের কয়েকটি ক্যাম্পে কয়েকবার হামলা পরিচালনা করে। শাঁখারীকাঠী, মঘিয়া ও কচুয়াসহ ৭টি স্থানে গণকবর আবিষ্কৃত হয়েছে; উপজেলায় ২টি স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন কচুয়া উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ২।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ১৬৯, মন্দির ৪৭, তীর্থস্থান ২।

শিক্ষার হার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৬.৮%; পুরুষ ৫৭.৬%, মহিলা ৫৬.০%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯৪, মাদ্রাসা ৮। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কচুয়া ডিগ্রি কলেজ, কচুয়া মহিলা ডিগ্রি কলেজ, মাজেদা বেগম কৃষি প্রযুক্তি কলেজ, মসনী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৫), গোয়ালহাট রসিক লাল বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৬), বাড়ৈখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯১৮), মাধবকাঠী আহমদিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা (১৯১৫)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সাপ্তাহিক: খানজাহান, সুজনেষু ইন্টারন্যাশনাল, দীপায়ন, তৃতীয় নয়ন, সুন্দরবন, কবিকণ্ঠ, পার্থ সারথী (ধর্মীয় পত্রিকা); সাময়িকী: মুক্তিযুদ্ধে কচুয়া (১৯৯৯)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৪, সিনেমা হল ১, নাট্যদল ১, কাব ৫৮।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৮.৬৬%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৬৭%, শিল্প ০.৬%, ব্যবসা ১৭.৫৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৫.৪৩%, চাকরি ৭.০৫%, নির্মাণ ১.৪৮%, ধর্মীয় সেবা ০.২০%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২৯% এবং অন্যান্য ৫.০৫%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৩.৭৫%, ভূমিহীন ৩৬.২৫%। শহরে ৪১.৫০% এবং গ্রামে ৬৬.১৩% পরিবারের কৃষিভূমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, আখ, গম, পাট, তুলা, পান, সুপারি, ডাল ও শাকসবজি।

বিলুপ্ত ও বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি সরিষা, তিল, মিষ্টি আলু, বাদাম, তামাক।

প্রধান ফল-ফলাদি নারিকেল, কলা, সফেদা, তরমুজ।

মৎস্য, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৪২.২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৮৮.৩ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩০৮.২৭ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পালকি, গরুর গাড়ি।

উল্লেখযোগ্য শিল্প ও কলকারখানা রাইসমিল, স’মিল প্রভৃতি।

উল্লেখযোগ্য কুটিরশিল্প পাটশিল্প, নকশি কাঁথা, বেতের কাজ, বাঁশের কাজ প্রভৃতি।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৪, মেলা ১১। কচুয়া হাট, বৈরাগীর হাট, সাইনবোর্ড বাজার, গোয়ালমাঠ বাজার এবং বিষখালী বারুণী মেলা ও শিববাড়ির মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য নারিকেল, সুপারি, কলা, তালের গুড়।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪০.৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৫৮.৪%, ট্যাপ ২.৭% এবং অন্যান্য ৩৮.৯%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৮৯.৭% পরিবার স্বাস্ব্যকর এবং ৯.১% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১.২% পরিবারের কোন ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৭, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, কমিউনিটি কিনিক ১০, কিনিক ১। উল্লেখযোগ্য এনজিও অন্বেষা, প্রদীপন, আশা, ব্র্যাক, গ্রামীণ ব্যাংক, কেয়ার, কোডেক। [পার্থদেব সাহা]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১,বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কচুয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীা প্রতিবেদন ২০০৭।