মজুমদার, মোহিতলাল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Image:MajumderMohitlal.jpg|thumb|200px|মোহিতলাল মজুমদার]]
'''মজুমদার, মোহিতলাল '''(১৮৮৮-১৯৫২)  কবি, প্রাবন্ধিক, সাহিত্যসমালোচক। প্রথম জীবনে কবিতা লিখলেও পরবর্তী জীবনে সাহিত্যসমালোচক হিসেবেই তিনি খ্যাতি লাভ করেন। ১৮৮৮ সালের ২৬ অক্টোবর নদীয়ার কাচঁড়াপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস হুগলির বলাগড়ে। ১৯০৮ সালে তিনি কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। ক্যালকাটা হাইস্কুলে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করে ১৯২৮ পর্যন্ত তিনি এই পেশায়ই নিযুক্ত ছিলেন। মাঝে কিছুদিন (১৯১৪-১৭) সেটলমেন্ট বিভাগে কানুনগো পদে কাজ করেন। ১৯২৮ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগে লেকচারার পদে যোগদান করেন এবং ১৯৪৪ সালে অবসরে যান।
'''মজুমদার, মোহিতলাল '''(১৮৮৮-১৯৫২)  কবি, প্রাবন্ধিক, সাহিত্যসমালোচক। প্রথম জীবনে কবিতা লিখলেও পরবর্তী জীবনে সাহিত্যসমালোচক হিসেবেই তিনি খ্যাতি লাভ করেন। ১৮৮৮ সালের ২৬ অক্টোবর নদীয়ার কাচঁড়াপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস হুগলির বলাগড়ে। ১৯০৮ সালে তিনি কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। ক্যালকাটা হাইস্কুলে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করে ১৯২৮ পর্যন্ত তিনি এই পেশায়ই নিযুক্ত ছিলেন। মাঝে কিছুদিন (১৯১৪-১৭) সেটলমেন্ট বিভাগে কানুনগো পদে কাজ করেন। ১৯২৮ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগে লেকচারার পদে যোগদান করেন এবং ১৯৪৪ সালে অবসরে যান।



০৭:২১, ২ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

মোহিতলাল মজুমদার

মজুমদার, মোহিতলাল (১৮৮৮-১৯৫২)  কবি, প্রাবন্ধিক, সাহিত্যসমালোচক। প্রথম জীবনে কবিতা লিখলেও পরবর্তী জীবনে সাহিত্যসমালোচক হিসেবেই তিনি খ্যাতি লাভ করেন। ১৮৮৮ সালের ২৬ অক্টোবর নদীয়ার কাচঁড়াপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস হুগলির বলাগড়ে। ১৯০৮ সালে তিনি কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। ক্যালকাটা হাইস্কুলে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করে ১৯২৮ পর্যন্ত তিনি এই পেশায়ই নিযুক্ত ছিলেন। মাঝে কিছুদিন (১৯১৪-১৭) সেটলমেন্ট বিভাগে কানুনগো পদে কাজ করেন। ১৯২৮ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগে লেকচারার পদে যোগদান করেন এবং ১৯৪৪ সালে অবসরে যান।

মোহিতলাল মজুমদারের সাহিত্যচর্চার শুরু  মানসী পত্রিকার মাধ্যমে। পরে  ভারতী ও শনিবারের চিঠিসহ অন্যান্য পত্র-পত্রিকায়ও তিনি নিয়মিত লিখতেন। তাঁর প্রথম দিকের কবিতায় স্বপ্নবিহবল তরুণ মনের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও বেদনা মনোরম ছন্দে প্রকাশ পেয়েছে। তাঁর সাহিত্য সৃষ্টির পশ্চাতে নিজস্ব কাব্যাদর্শ, সৌন্দর্যবোধ ও আধ্যাত্মিক মতবাদ ক্রিয়াশীল ছিল। অবশ্য এই আধ্যাত্মিক মতবাদটি খুব স্পষ্ট নয়  বৈষ্ণবতত্ত্বের সঙ্গে বেদান্তের একটা সমন্বয়ের প্রচেষ্টা লক্ষ করা যায়। ভাবসাধনার দিক থেকে মোহিতলাল ভোগসর্বস্ব দেহবাদী কবি।

বাংলা কাব্যে বিদেশী শব্দ, বিশেষ করে আরবি-ফারসি শব্দ প্রয়োগে মোহিতলালের বিশেষ কৃতিত্ব ছিল। তিনি ইংরেজি সাহিত্যেও সুপন্ডিত ছিলেন। বাংলা  ছন্দ ও অলঙ্কার বিষয়ে তাঁর বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল। মোহিতলাল রবীন্দ্রকাব্যের একজন রসজ্ঞ ও মর্মজ্ঞ ব্যক্তি ছিলেন। তবে পরবর্তীতে শনিবারের চিঠির দলে যোগ দিয়ে তিনি রবীন্দ্রবিরোধী হয়ে ওঠেন। কাব্য বিচারে তিনি পঞ্চাশ-উত্তীর্ণ রবীন্দ্রনাথের কবিতাকে বিশেষ মর্যাদার চোখে দেখেননি। তিনি বঙ্গ সাহিত্য-সংস্কৃতির শ্রেষ্ঠ আসনে মাইকেল ও বঙ্কিমচন্দ্রকে বসানোর চেষ্টা করেন।

শিল্প ও সাহিত্য সম্পর্কিত সমস্যাগুলি দেখানোর ক্ষেত্রে তাঁর একটা নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ছিল। তাঁর মননধর্মিতা এবং কবিসুলভ ভাবাত্মক বিচারবোধ সমালোচনা সাহিত্যকে উচ্চ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেছে। তিনি তাঁর সমালোচনামূলক প্রবন্ধগুলিতে ‘কৃত্তিবাস ওঝা’, ‘সব্যসাচী’, ‘শ্রী সত্যসুন্দর দাস’  ইত্যাদি ছদ্মনাম ব্যবহার করতেন।

মৌলিক গ্রন্থ, সমালোচনা ও সম্পাদিত গ্রন্থ মিলিয়ে মোহিতলাল মজুমদারের প্রকাশিত গ্রন্থ অনেক। তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থ হলো: স্বপন পসারী (১৯২১), স্মরগরল (১৯৩৬), আধুনিক বাংলা সাহিত্য (১৯৩৬), বাংলা কবিতার ছন্দ (১৯৪৫), কবি শ্রীমধুসূদন (১৯৪৭), সাহিত্য বিচার (১৯৪৭), বাংলা ও বাঙালী (১৯৫১), কবি রবীন্দ্র ও রবীন্দ্রকাব্য (২ খন্ড ১৯৫২, ১৯৫৩) ইত্যাদি।  বঙ্গদর্শন পত্রিকা তৃতীয় পর্যায়ে মোহিতলালের সম্পাদনায়ই প্রকাশিত হয়।  [বিলকিস রহমান]