জগন্নাথ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
২ নং লাইন: | ২ নং লাইন: | ||
'''জগন্নাথ''' ভারতের উড়িষ্যার সমুদ্রতীরবর্তী পুরীধামের অধিষ্ঠাতা হিন্দু দেবতা। তিনি বিশ্বব্রহ্মান্ডের স্রষ্টা হিসেবে হিন্দুদের দ্বারা কল্পিত ও পূজিত হন। তাঁর সঙ্গে বলরাম ও সুভদ্রাও পূজিত হন। এ ত্রয়ীকে অনেকে বৌদ্ধ ত্রিরত্নের প্রতীক বলে মনে করেন। প্রথমদিকে বৌদ্ধ তান্ত্রিক আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জগন্নাথ শূন্যজ্ঞানে পূজিত হতেন। উড়িষ্যার লোকগীতিতে জগন্নাথ ও বুদ্ধকে অভিন্ন মনে করা হয়। কোথাও কোথাও বিষ্ণুর নবম অবতাররূপেও জগন্নাথের অবস্থান পরিলক্ষিত হয়। অনেকে জগন্নাথকে [[বিষ্ণু|বিষ্ণু]] বা কৃষ্ণজ্ঞানে এবং বলরাম ও সুভদ্রাকে তাঁর ভাইবোন হিসেবেও কল্পনা করেন। এভাবে এক সময় বলরাম শিবরূপে এবং সুভদ্রা ভুবেনশ্বরীরূপে জগন্নাথের সঙ্গে যুক্ত হলে একটি ত্রয়ী গঠিত হয়। এ ত্রয়ী থেকেই হিন্দু আধ্যাত্মিক সংস্কৃতির তিনটি প্রধান ধারা যথাক্রমে শৈব, শাক্ত ও বৈষ্ণব মিলিত হয়ে একটি সাধারণ বৈষ্ণবীয় ধারায় পরিণত হয়। | '''জগন্নাথ''' ভারতের উড়িষ্যার সমুদ্রতীরবর্তী পুরীধামের অধিষ্ঠাতা হিন্দু দেবতা। তিনি বিশ্বব্রহ্মান্ডের স্রষ্টা হিসেবে হিন্দুদের দ্বারা কল্পিত ও পূজিত হন। তাঁর সঙ্গে বলরাম ও সুভদ্রাও পূজিত হন। এ ত্রয়ীকে অনেকে বৌদ্ধ ত্রিরত্নের প্রতীক বলে মনে করেন। প্রথমদিকে বৌদ্ধ তান্ত্রিক আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জগন্নাথ শূন্যজ্ঞানে পূজিত হতেন। উড়িষ্যার লোকগীতিতে জগন্নাথ ও বুদ্ধকে অভিন্ন মনে করা হয়। কোথাও কোথাও বিষ্ণুর নবম অবতাররূপেও জগন্নাথের অবস্থান পরিলক্ষিত হয়। অনেকে জগন্নাথকে [[বিষ্ণু|বিষ্ণু]] বা কৃষ্ণজ্ঞানে এবং বলরাম ও সুভদ্রাকে তাঁর ভাইবোন হিসেবেও কল্পনা করেন। এভাবে এক সময় বলরাম শিবরূপে এবং সুভদ্রা ভুবেনশ্বরীরূপে জগন্নাথের সঙ্গে যুক্ত হলে একটি ত্রয়ী গঠিত হয়। এ ত্রয়ী থেকেই হিন্দু আধ্যাত্মিক সংস্কৃতির তিনটি প্রধান ধারা যথাক্রমে শৈব, শাক্ত ও বৈষ্ণব মিলিত হয়ে একটি সাধারণ বৈষ্ণবীয় ধারায় পরিণত হয়। | ||
[[Image:Jagannath.jpg|thumb|thumb|right|400px|জগন্নাথ (বামে), সুভদ্রা ও বলরাম]] | |||
ভগবান জগন্নাথ দারুব্রহ্ম নামেও অভিহিত হন। এ ক্ষেত্রে পরমাত্মা বা পরম ব্রহ্মকে দারু বা কাষ্ঠে অধিষ্ঠিত মনে করা হয়। বেদান্ত মতের ব্রহ্মের মতোই তিনি রহস্যাবৃত। ভক্তরা তাঁকে চকদোলা বা চকনয়ন নামেও স্মরণ করে থাকে। চকদোলা অর্থ যার চোখ গোলাকৃতি। জগন্নাথের চোখ বলরাম ও সুভদ্রার মতো লম্বা নয়। তাঁর চোখের আকৃতি গোলাকার। এ গোলাকৃতি চোখের প্রতীকী অর্থ হচ্ছে সূর্য ও চন্দ্র। জগন্নাথের অধিষ্ঠান হিসেবে পুরী হিন্দুদের, বিশেষত বাঙালি হিন্দুদের নিকট অন্যতম পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত। পুরীধামের মন্দিরে নিম্বকাষ্ঠ-নির্মিত জগন্নাথের মূর্তি আছে। এ মূর্তি মাঝে মাঝে সমাধিস্থ করে নতুন মূর্তি স্থাপিত হয়। | ভগবান জগন্নাথ দারুব্রহ্ম নামেও অভিহিত হন। এ ক্ষেত্রে পরমাত্মা বা পরম ব্রহ্মকে দারু বা কাষ্ঠে অধিষ্ঠিত মনে করা হয়। বেদান্ত মতের ব্রহ্মের মতোই তিনি রহস্যাবৃত। ভক্তরা তাঁকে চকদোলা বা চকনয়ন নামেও স্মরণ করে থাকে। চকদোলা অর্থ যার চোখ গোলাকৃতি। জগন্নাথের চোখ বলরাম ও সুভদ্রার মতো লম্বা নয়। তাঁর চোখের আকৃতি গোলাকার। এ গোলাকৃতি চোখের প্রতীকী অর্থ হচ্ছে সূর্য ও চন্দ্র। জগন্নাথের অধিষ্ঠান হিসেবে পুরী হিন্দুদের, বিশেষত বাঙালি হিন্দুদের নিকট অন্যতম পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত। পুরীধামের মন্দিরে নিম্বকাষ্ঠ-নির্মিত জগন্নাথের মূর্তি আছে। এ মূর্তি মাঝে মাঝে সমাধিস্থ করে নতুন মূর্তি স্থাপিত হয়। | ||
একে নবকলেবর-উৎসব বলে। প্রতিবছর [[পশ্চিমবঙ্গ|পশ্চিমবঙ্গ]] ও বাংলাদেশ থেকে অসংখ্য হিন্দু পুরীতে জগন্নাথের পূজা দিতে যায়। জগন্নাথদেবের স্মরণে পুরীসহ বাংলার সর্বত্র আষাঢ় মাসে (জুন) [[রথযাত্রা|রথযাত্রা]] উৎসব পালিত হয়। জগন্নাথের অনুগ্রহ লাভের আশায় রথের উপর তাঁর মূর্তি স্থাপন করে শত শত মানুষ এ রথ টানায় অংশগ্রহণ করে। [এস রঙ্গনাথ] | একে নবকলেবর-উৎসব বলে। প্রতিবছর [[পশ্চিমবঙ্গ|পশ্চিমবঙ্গ]] ও বাংলাদেশ থেকে অসংখ্য হিন্দু পুরীতে জগন্নাথের পূজা দিতে যায়। জগন্নাথদেবের স্মরণে পুরীসহ বাংলার সর্বত্র আষাঢ় মাসে (জুন) [[রথযাত্রা|রথযাত্রা]] উৎসব পালিত হয়। জগন্নাথের অনুগ্রহ লাভের আশায় রথের উপর তাঁর মূর্তি স্থাপন করে শত শত মানুষ এ রথ টানায় অংশগ্রহণ করে। [এস রঙ্গনাথ] | ||
[[en:Jagannath]] | [[en:Jagannath]] |
০৫:৪৬, ৩০ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
জগন্নাথ ভারতের উড়িষ্যার সমুদ্রতীরবর্তী পুরীধামের অধিষ্ঠাতা হিন্দু দেবতা। তিনি বিশ্বব্রহ্মান্ডের স্রষ্টা হিসেবে হিন্দুদের দ্বারা কল্পিত ও পূজিত হন। তাঁর সঙ্গে বলরাম ও সুভদ্রাও পূজিত হন। এ ত্রয়ীকে অনেকে বৌদ্ধ ত্রিরত্নের প্রতীক বলে মনে করেন। প্রথমদিকে বৌদ্ধ তান্ত্রিক আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জগন্নাথ শূন্যজ্ঞানে পূজিত হতেন। উড়িষ্যার লোকগীতিতে জগন্নাথ ও বুদ্ধকে অভিন্ন মনে করা হয়। কোথাও কোথাও বিষ্ণুর নবম অবতাররূপেও জগন্নাথের অবস্থান পরিলক্ষিত হয়। অনেকে জগন্নাথকে বিষ্ণু বা কৃষ্ণজ্ঞানে এবং বলরাম ও সুভদ্রাকে তাঁর ভাইবোন হিসেবেও কল্পনা করেন। এভাবে এক সময় বলরাম শিবরূপে এবং সুভদ্রা ভুবেনশ্বরীরূপে জগন্নাথের সঙ্গে যুক্ত হলে একটি ত্রয়ী গঠিত হয়। এ ত্রয়ী থেকেই হিন্দু আধ্যাত্মিক সংস্কৃতির তিনটি প্রধান ধারা যথাক্রমে শৈব, শাক্ত ও বৈষ্ণব মিলিত হয়ে একটি সাধারণ বৈষ্ণবীয় ধারায় পরিণত হয়।
ভগবান জগন্নাথ দারুব্রহ্ম নামেও অভিহিত হন। এ ক্ষেত্রে পরমাত্মা বা পরম ব্রহ্মকে দারু বা কাষ্ঠে অধিষ্ঠিত মনে করা হয়। বেদান্ত মতের ব্রহ্মের মতোই তিনি রহস্যাবৃত। ভক্তরা তাঁকে চকদোলা বা চকনয়ন নামেও স্মরণ করে থাকে। চকদোলা অর্থ যার চোখ গোলাকৃতি। জগন্নাথের চোখ বলরাম ও সুভদ্রার মতো লম্বা নয়। তাঁর চোখের আকৃতি গোলাকার। এ গোলাকৃতি চোখের প্রতীকী অর্থ হচ্ছে সূর্য ও চন্দ্র। জগন্নাথের অধিষ্ঠান হিসেবে পুরী হিন্দুদের, বিশেষত বাঙালি হিন্দুদের নিকট অন্যতম পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত। পুরীধামের মন্দিরে নিম্বকাষ্ঠ-নির্মিত জগন্নাথের মূর্তি আছে। এ মূর্তি মাঝে মাঝে সমাধিস্থ করে নতুন মূর্তি স্থাপিত হয়।
একে নবকলেবর-উৎসব বলে। প্রতিবছর পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ থেকে অসংখ্য হিন্দু পুরীতে জগন্নাথের পূজা দিতে যায়। জগন্নাথদেবের স্মরণে পুরীসহ বাংলার সর্বত্র আষাঢ় মাসে (জুন) রথযাত্রা উৎসব পালিত হয়। জগন্নাথের অনুগ্রহ লাভের আশায় রথের উপর তাঁর মূর্তি স্থাপন করে শত শত মানুষ এ রথ টানায় অংশগ্রহণ করে। [এস রঙ্গনাথ]