ক্রিকেট: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''ক্রিকেট'''  দুটি দলের মধ্যে ব্যাট ও বলের খেলা। প্রতি দলে এগারো জন করে খেলোয়াড় থাকে। এ খেলা ডিম্বাকৃতির মাঠ বা গ্রাউন্ডে ২২ গজ পিচের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। ক্রিকেট ম্যাচ শুরু হওয়ার পূর্বেই দুই দলের দলনেতা আম্পায়ারের উপস্থিতিতে টসের মাধ্যমে নির্ধারণ করে থাকে কোন দল আগে ব্যাট করবে নাকি বল করবে, এটি টস জয়ী দলনেতার পছন্দ অনুযায়ী হয়ে থাকে। খেলা পরিচালনার জন্য মাঠে দুইজন ও মাঠের বাইরে টেলিভিশন রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত দেওয়ার জন্য একজন আম্পায়ার এবং একজন ম্যাচ রেফারি থাকেন। ক্রিকেট ব্যাটের প্রস্থ সর্বাধিক ৪.৫ ইঞ্চি এবং দৈর্ঘ্য সর্বাধিক ৩৮ ইঞ্চি। মাটি থেকে স্টাম্পের উচ্চতা ২৭ ইঞ্চি। একটি আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট বলের পরিধি ২৫০ সেন্টিমিটার এবং এর ওজন প্রায় ১৬০ গ্রাম। এ খেলায় ব্যাটিং পক্ষের উদ্দেশ্য থাকে প্রতিপক্ষের ফিল্ডিং বেষ্টনীকে ফাঁকি দিয়ে বল মেরে রান সংগ্রহ করা। আর বোলিং পক্ষের লক্ষ্য হয় প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানকে যতটা সম্ভব রান নিতে না দেওয়া এবং ব্যাটসম্যানকে আউট করা।
'''ক্রিকেট'''  দুটি দলের মধ্যে ব্যাট ও বলের খেলা। প্রতি দলে এগারো জন করে খেলোয়াড় থাকে। এ খেলা ডিম্বাকৃতির মাঠ বা গ্রাউন্ডে ২২ গজ পিচের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। ক্রিকেট ম্যাচ শুরু হওয়ার পূর্বেই দুই দলের দলনেতা আম্পায়ারের উপস্থিতিতে টসের মাধ্যমে নির্ধারণ করে থাকে কোন দল আগে ব্যাট করবে নাকি বল করবে, এটি টস জয়ী দলনেতার পছন্দ অনুযায়ী হয়ে থাকে। খেলা পরিচালনার জন্য মাঠে দুইজন ও মাঠের বাইরে টেলিভিশন রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত দেওয়ার জন্য একজন আম্পায়ার এবং একজন ম্যাচ রেফারি থাকেন। ক্রিকেট ব্যাটের প্রস্থ সর্বাধিক ৪.৫ ইঞ্চি এবং দৈর্ঘ্য সর্বাধিক ৩৮ ইঞ্চি। মাটি থেকে স্টাম্পের উচ্চতা ২৭ ইঞ্চি। একটি আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট বলের পরিধি ২৫০ সেন্টিমিটার এবং এর ওজন প্রায় ১৬০ গ্রাম। এ খেলায় ব্যাটিং পক্ষের উদ্দেশ্য থাকে প্রতিপক্ষের ফিল্ডিং বেষ্টনীকে ফাঁকি দিয়ে বল মেরে রান সংগ্রহ করা। আর বোলিং পক্ষের লক্ষ্য হয় প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানকে যতটা সম্ভব রান নিতে না দেওয়া এবং ব্যাটসম্যানকে আউট করা।


[[Image:CricketFieldingPositions.jpg|thumbnail|300px|right|ক্রিকেট খেলায় ফিল্ডিং পজিশন]]
ক্রিকেট খেলায় জয়, পরাজয় নির্ধারিত হয় রান বা উইকেটে। যে দল আগে ব্যাট করে তারা যদি জয়লাভ করে তবে জয় হবে রানে অর্থাৎ বিপক্ষ দল টার্গেট রান থেকে যতরান কম করবে ততরানে আগে ব্যাট করা দল জয়ী হবে। আর বিপক্ষ দল যদি পরে ব্যাট করে জযী হয় তবে তারা যত উইকেট হাতে রেখে জয়লাভ করবে তাদের জয় হবে সেই কয় উইকেটে। নির্দিষ্ট ওভারে দুই দলে স্কোর সমান হয়ে গেলে খেলা টাই হয়ে যায়।  বর্তমানে আন্তর্জাতিকভাবে ক্রিকেট তিনটি ফরমেটে খেলা হয়ে থাকে; টেস্ট ম্যাচ, এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ ও টি-২০ ম্যাচ। একটি আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচে কমপক্ষে পাঁচ দিন বা কমপক্ষে ৩০ ঘণ্টা খেলা নির্ধারণ করা হয়। প্রতি দল দুই ইনিংস করে মোট চার ইনিংস খেলতে পারে। এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে সর্বোচ্চ ৫০ ওভার করে দুই ইনিংসে খেলা হয়। প্রতি পক্ষ এক ইনিংস করে মোট দুই ইনিংস খেলার সুযোগ পায়। টি-২০ ম্যাচে একটি দল এক ইনিংসে ২০ ওভার করে খেলার সুযোগ পায়।
ক্রিকেট খেলায় জয়, পরাজয় নির্ধারিত হয় রান বা উইকেটে। যে দল আগে ব্যাট করে তারা যদি জয়লাভ করে তবে জয় হবে রানে অর্থাৎ বিপক্ষ দল টার্গেট রান থেকে যতরান কম করবে ততরানে আগে ব্যাট করা দল জয়ী হবে। আর বিপক্ষ দল যদি পরে ব্যাট করে জযী হয় তবে তারা যত উইকেট হাতে রেখে জয়লাভ করবে তাদের জয় হবে সেই কয় উইকেটে। নির্দিষ্ট ওভারে দুই দলে স্কোর সমান হয়ে গেলে খেলা টাই হয়ে যায়।  বর্তমানে আন্তর্জাতিকভাবে ক্রিকেট তিনটি ফরমেটে খেলা হয়ে থাকে; টেস্ট ম্যাচ, এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ ও টি-২০ ম্যাচ। একটি আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচে কমপক্ষে পাঁচ দিন বা কমপক্ষে ৩০ ঘণ্টা খেলা নির্ধারণ করা হয়। প্রতি দল দুই ইনিংস করে মোট চার ইনিংস খেলতে পারে। এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে সর্বোচ্চ ৫০ ওভার করে দুই ইনিংসে খেলা হয়। প্রতি পক্ষ এক ইনিংস করে মোট দুই ইনিংস খেলার সুযোগ পায়। টি-২০ ম্যাচে একটি দল এক ইনিংসে ২০ ওভার করে খেলার সুযোগ পায়।
<nowiki># # </nowiki>
# #


ক্রিকেটে একজন ব্যাটসম্যান আউট হতে পারেন দশটি উপায়ে। এগুলির মধ্যে সচরাচর দেখা যায় পাঁচ রকম আউট- বোল্ড, কট, এলবিডব্লিউ, স্ট্যাম্প ও রান আউট। বাকি পাঁচটি আউট হলো  হিট উইকেট, টাইমড আউট, হিট দ্য বল টোয়াইস, অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড ও হ্যান্ডেলড দ্য বল। তবে টাইমড ও হিট দ্য বল টোয়াইস অপরাধে টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে এ পর্যন্ত কোনো খেলোয়াড় আউট হয় নি।
ক্রিকেটে একজন ব্যাটসম্যান আউট হতে পারেন দশটি উপায়ে। এগুলির মধ্যে সচরাচর দেখা যায় পাঁচ রকম আউট- বোল্ড, কট, এলবিডব্লিউ, স্ট্যাম্প ও রান আউট। বাকি পাঁচটি আউট হলো  হিট উইকেট, টাইমড আউট, হিট দ্য বল টোয়াইস, অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড ও হ্যান্ডেলড দ্য বল। তবে টাইমড ও হিট দ্য বল টোয়াইস অপরাধে টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে এ পর্যন্ত কোনো খেলোয়াড় আউট হয় নি।

০৯:১৩, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

ক্রিকেট  দুটি দলের মধ্যে ব্যাট ও বলের খেলা। প্রতি দলে এগারো জন করে খেলোয়াড় থাকে। এ খেলা ডিম্বাকৃতির মাঠ বা গ্রাউন্ডে ২২ গজ পিচের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। ক্রিকেট ম্যাচ শুরু হওয়ার পূর্বেই দুই দলের দলনেতা আম্পায়ারের উপস্থিতিতে টসের মাধ্যমে নির্ধারণ করে থাকে কোন দল আগে ব্যাট করবে নাকি বল করবে, এটি টস জয়ী দলনেতার পছন্দ অনুযায়ী হয়ে থাকে। খেলা পরিচালনার জন্য মাঠে দুইজন ও মাঠের বাইরে টেলিভিশন রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত দেওয়ার জন্য একজন আম্পায়ার এবং একজন ম্যাচ রেফারি থাকেন। ক্রিকেট ব্যাটের প্রস্থ সর্বাধিক ৪.৫ ইঞ্চি এবং দৈর্ঘ্য সর্বাধিক ৩৮ ইঞ্চি। মাটি থেকে স্টাম্পের উচ্চতা ২৭ ইঞ্চি। একটি আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট বলের পরিধি ২৫০ সেন্টিমিটার এবং এর ওজন প্রায় ১৬০ গ্রাম। এ খেলায় ব্যাটিং পক্ষের উদ্দেশ্য থাকে প্রতিপক্ষের ফিল্ডিং বেষ্টনীকে ফাঁকি দিয়ে বল মেরে রান সংগ্রহ করা। আর বোলিং পক্ষের লক্ষ্য হয় প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানকে যতটা সম্ভব রান নিতে না দেওয়া এবং ব্যাটসম্যানকে আউট করা।

ক্রিকেট খেলায় ফিল্ডিং পজিশন

ক্রিকেট খেলায় জয়, পরাজয় নির্ধারিত হয় রান বা উইকেটে। যে দল আগে ব্যাট করে তারা যদি জয়লাভ করে তবে জয় হবে রানে অর্থাৎ বিপক্ষ দল টার্গেট রান থেকে যতরান কম করবে ততরানে আগে ব্যাট করা দল জয়ী হবে। আর বিপক্ষ দল যদি পরে ব্যাট করে জযী হয় তবে তারা যত উইকেট হাতে রেখে জয়লাভ করবে তাদের জয় হবে সেই কয় উইকেটে। নির্দিষ্ট ওভারে দুই দলে স্কোর সমান হয়ে গেলে খেলা টাই হয়ে যায়।  বর্তমানে আন্তর্জাতিকভাবে ক্রিকেট তিনটি ফরমেটে খেলা হয়ে থাকে; টেস্ট ম্যাচ, এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ ও টি-২০ ম্যাচ। একটি আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচে কমপক্ষে পাঁচ দিন বা কমপক্ষে ৩০ ঘণ্টা খেলা নির্ধারণ করা হয়। প্রতি দল দুই ইনিংস করে মোট চার ইনিংস খেলতে পারে। এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে সর্বোচ্চ ৫০ ওভার করে দুই ইনিংসে খেলা হয়। প্রতি পক্ষ এক ইনিংস করে মোট দুই ইনিংস খেলার সুযোগ পায়। টি-২০ ম্যাচে একটি দল এক ইনিংসে ২০ ওভার করে খেলার সুযোগ পায়।

ক্রিকেটে একজন ব্যাটসম্যান আউট হতে পারেন দশটি উপায়ে। এগুলির মধ্যে সচরাচর দেখা যায় পাঁচ রকম আউট- বোল্ড, কট, এলবিডব্লিউ, স্ট্যাম্প ও রান আউট। বাকি পাঁচটি আউট হলো  হিট উইকেট, টাইমড আউট, হিট দ্য বল টোয়াইস, অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড ও হ্যান্ডেলড দ্য বল। তবে টাইমড ও হিট দ্য বল টোয়াইস অপরাধে টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে এ পর্যন্ত কোনো খেলোয়াড় আউট হয় নি।

ইতিহাসের অনেক ঘটনা থেকে বোঝা যায়, ইংল্যান্ডের মাটি থেকে রস আহরণ করে আজকের বিরাট মহীরুহ হিসেবে ক্রিকেট বিশ্বব্যাপী বিস্তার লাভ করেছে। ১৩০০ খ্রিস্টাব্দে রাজা প্রথম এডওয়ার্ডের আমলের একটি গ্রন্থে ক্রিকেট খেলার উল্লেখ পাওয়া যায়। ১৭৮৭ সালে মেলবোর্ন ক্রিকেট ক্লাবের প্রতিষ্ঠা এবং ১৭৮৮ সালে এমসিসির সংশোধিত ক্রিকেট আইন প্রকাশ করা হয়। ১৭৯২ সালে কলকাতায় ‘ক্যালকাটা ক্রিকেট ক্লাব’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা হলো আইসিসি (International Cricket Council) এবং সংস্থাটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯০৯ সালে। বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা ১০৫। তার মধ্যে বাংলাদেশসহ ১০টি দেশ পূর্ণ সদস্য (Full Member) এবং বাকী ৯৫টি দেশ সহযোগী সদস্য (Associate Member)।

১৮৭৭ সালে ১৫ মার্চ ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম টেস্ট ম্যাচ শুরু হয় অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে। এ টেস্টে অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ডকে ৪৫ রানে পরাজিত করে। ১৮৯৪-১৯১৪ সালে ক্রিকেট ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করে এবং এ সময় ক্রিকেট আইনের পরিবর্তন ও পরিবর্ধন হয় সবচেয়ে বেশি। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রাথমিক সদস্যভুক্ত করে ১৯০৯ সালে আইসিসি-র জন্ম হয়। ১৯২৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ১৯৩১-৩২ সালে নিউজিল্যান্ড, ১৯৩২ সালে ভারত, ১৯৫২ সালে পাকিস্তান, ১৯৮১-৮২ সালে শ্রীলঙ্কা, ১৯৯২ সালে জিম্বাবুয়ে এবং ২০০০ সালে বাংলাদেশ আইসিসি-র পূর্ণ সদস্যপদ লাভ করে। ১৯৭০-৭১ সালে প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ৫ উইকেটে ইংল্যান্ডকে পরাজিত করে। ১৯৭৩ সালের ২৫-২৬ জুন লর্ডসে আইসিসি-র বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯৭৫ সালে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম বিশ্বকাপ ক্রিকেটের খেলা। এরপর থেকে প্রতি ৪ বছর পরপর বিশ্বকাপ ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২০১১ সাল পর্যন্ত মোট ১০টি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ভারতীয় উপমহাদেশে ইংরেজদের আগমণের অল্প কিছুকাল পরেই ক্রিকেট খেলার সূচনা হয়। ১৮০৪ সালের ১৮ ও ১৯ জানুয়ারি ইটনীয় সিভিল সার্ভেন্ট ও কোম্পানির অন্যান্য কর্মচারীদের মধ্যে একটি আড়ম্বরপূর্ণ ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। ১৮৪৮ সালে ভারতীয় ধর্মীয় গোষ্ঠী ফার্সিস-এর আয়োজনে ওরিয়েন্টাল ক্রিকেট ক্লাব প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৩৪ সাল থেকে ভারতের বিখ্যাত ক্রিকেটার কে.এস রণজিৎ সিংজীর নামানুসারে রণজি ট্রফি খেলা শুরু হয়। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর পাকিস্তান অভ্যন্তরীণ চারটি দলে বিভক্ত হয়ে কায়েদে আযম ট্রফি ক্রিকেট খেলার আয়োজন করে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর সাবেক ইস্ট পাকিস্তান স্পোর্টস ফেডারেশনের ক্রিকেট কমিটিকে জাতীয়ভিত্তিক করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিবি)-এ রূপান্তর করা হয়। ১৯৭২-৭৩ সালে ঢাকা ও চট্টগ্রামে ক্রিকেট লীগ শুরু হয়। ১৯৭৪-৭৫ সালে শুরু হয় জাতীয় ক্রিকেট প্রতিযোগিতা। এ ছাড়া রাজশাহী, খুলনা ও দেশের অন্যান্য স্থানেও ক্রিকেট লীগ শুরু হতে থাকে। ২০০০ সালে বাংলাদেশ টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর থেকে জাতীয় ক্রিকেটের পরিবর্তে শুরু হয়েছে ঘরোয়া ফার্স্ট ক্লাস টুর্নামেন্ট জাতীয় ক্রিকেট লীগ। এছাড়াও জাতীয় যুব ক্রিকেট, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুল ক্রিকেট, শহীদ স্মৃতি ক্রিকেট, দামাল সামার ক্রিকেট, স্টার সামার ক্রিকেটসহ বিভিন্ন ক্রিকেট প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয় বাংলাদেশে। স্বাধীনতার পর থেকেই প্রত্যেক জেলা ও থানা পর্যায়ে ক্রিকেট লীগসহ অন্যান্য ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজিত হয়ে আসছে।

বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দল ১৯৭৯ সালে প্রথম আইসিসি ট্রফিতে অংশগ্রহণ করে এবং ১৯৯৭ সালে এ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। এর আগেই ১৯৮৬ সালে এশিয়া কাপে অংশগ্রহণের মাধ্যমে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় বাংলাদেশের।

বিশ্বের অন্যান্য ক্রিকেটপ্রিয় দেশের মতো বাংলাদেশেও এর ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। বিশেষ করে ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফির শিরোপা লাভ এবং সে সূত্রে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করার পর থেকে ক্রিকেট বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলায় পরিণত হয়েছে। এ খেলায় বাংলাদেশের সাফল্যও অন্য যে কোনো খেলার চেয়ে বেশি। ১৯৯৭ সালেই বাংলাদেশ ওয়ানডে স্ট্যাটাস ২৬ জুন ২০০০ তারিখে আইসিসির দশম পূর্ণাঙ্গ সদস্য হিসেবে টেস্ট খেলার মর্যাদা অর্জন করে। এরপর থেকে বাংলাদেশ নিয়মিত বিশ্বকাপে অংশগ্রহণসহ বিশ্বের সেরা দলগুলোর সঙ্গে খেলার সুযোগ পাচ্ছে। ২০০০ সালের নভেম্বরে ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলতে নামা বাংলাদেশ ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ পায়। ওই বছরই ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে ৩-২ ম্যাচে হারিয়ে বাংলাদেশ প্রথম আইসিসির পুর্ণাঙ্গ সদস্য কোনো দেশের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্বাদ পায়। ২০০৬ সালে চার ম্যাচের সিরিজে কেনিয়াকে ৪-০তে হারিয়ে প্রথম কোনো দেশকে হোয়াইটওয়াশ করার কৃতিত্ব অর্জন করে বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টেস্ট, ওয়ানডে উভয় সিরিজে হারিয়ে বিদেশের মাটিতে কোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জয়ের স্বাদ পায়। আর ২০১০ সালে নিজেদের মাঠে ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ডকে ৪-০ ম্যাচে হারিয়ে পায় টেস্ট খেলুড়ে কোনো দেশকে প্রথমবারের মতো হোয়াইটওয়াশ করার স্বাদ। বিশ্বকাপেও বাংলাদেশের সাফল্য উল্লেখ করার মতো। ১৯৯৯ সালে প্রথমবার অংশ নিতে গিয়েই স্কটল্যান্ড ও পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। এছাড়া ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে ভারতকে হারিয়ে উঠেছিল কোয়ার্টার ফাইনাল রাউন্ডে। সেখানেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ।

টেস্ট খেলার যোগ্যতা অর্জনের আগেই ১৯৯৮ সালে আইসিসি নকআউট বিশ্বকাপ আয়োজন করে আয়োজক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিল বাংলাদেশ। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে বিশ্বকাপের দশম আসরের অন্যতম আয়োজকের দায়িত্ব পায় বাংলাদেশ। ওই আসরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। এছাড়া আগামী ২০১৪ সালে টোয়েন্টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্বও পেয়েছে বাংলাদেশ। [মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া]

আরও দেখুন খেলাধুলা