সুবাহদার: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
৪ নং লাইন: | ৪ নং লাইন: | ||
প্রকৃতপক্ষে সুবাহদারগণ ছিলেন শাসক অভিজাত শ্রেণির কেন্দ্রবিন্দু। সাধারণত রাজপরিবারের সবচেয়ে বিশ্বস্ত সদস্য এবং ক্ষমতাসীন আমলারাই সুবাহদার পদে নিযুক্ত হতেন। সুবাহ-র সামরিক এবং বেসামরিক প্রধান হিসেবে সুবাহদার পদটি ছিল বেশ দায়িত্বপূর্ণ। সুবাহ-র কোন একটি অংশের বিদ্রোহ নিশ্চিতভাবে সম্রাটের ক্ষমতা এবং সাম্রাজ্যের আঞ্চলিক অখন্ডতার উপর গভীর প্রভাব ফেলত। ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দে শেষ বিখ্যাত মুগল সম্রাট [[আওরঙ্গজেব|আওরঙ্গজেব]] এর মৃত্যুর কিছুকাল পরেই হায়দ্রাবাদের নিজাম এবং অযোধ্যা ও বাংলার [[নওয়াব|নওয়াব]] (প্রত্যেকেই সুবাহদার) পর্যায়ক্রমে তাদের স্ব স্ব সুবাহ-য় স্বাধীন শাসকে পরিণত হলে সমগ্র সাম্রাজ্য শুধু করুণার পাত্র এক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। | প্রকৃতপক্ষে সুবাহদারগণ ছিলেন শাসক অভিজাত শ্রেণির কেন্দ্রবিন্দু। সাধারণত রাজপরিবারের সবচেয়ে বিশ্বস্ত সদস্য এবং ক্ষমতাসীন আমলারাই সুবাহদার পদে নিযুক্ত হতেন। সুবাহ-র সামরিক এবং বেসামরিক প্রধান হিসেবে সুবাহদার পদটি ছিল বেশ দায়িত্বপূর্ণ। সুবাহ-র কোন একটি অংশের বিদ্রোহ নিশ্চিতভাবে সম্রাটের ক্ষমতা এবং সাম্রাজ্যের আঞ্চলিক অখন্ডতার উপর গভীর প্রভাব ফেলত। ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দে শেষ বিখ্যাত মুগল সম্রাট [[আওরঙ্গজেব|আওরঙ্গজেব]] এর মৃত্যুর কিছুকাল পরেই হায়দ্রাবাদের নিজাম এবং অযোধ্যা ও বাংলার [[নওয়াব|নওয়াব]] (প্রত্যেকেই সুবাহদার) পর্যায়ক্রমে তাদের স্ব স্ব সুবাহ-য় স্বাধীন শাসকে পরিণত হলে সমগ্র সাম্রাজ্য শুধু করুণার পাত্র এক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। | ||
সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক কার্যবিধিতে সুবাহদারের বৈধ কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত ছিল। তিনি সম্রাট কর্তৃত্ব সরাসরি নিযুক্ত হতেন এবং সম্রাটের কাছেই তাঁকে জবাবদিহি করতে হতো। সাংবিধানিকভাবে একজন সুবাহদার সম্রাট কর্তৃক নির্দিষ্ট অধিকারের সীমা লঙ্ঘন করতে পারতেন না। তাঁর ক্ষমতায় সমতা বিধানের জন্য রাজস্ব ব্যবস্থার সর্বোচ্চ ক্ষমতা স্বয়ং সম্রাট কর্তৃক নির্বাচিত বা মনোনীত প্রাদেশিক দীউয়ানের ওপর অর্পিত হতো। আর্থিক ব্যাপারে দীউয়ানের ওপর সুবাহদারের কোন কর্তৃত ছিল না, যেমন ছিল না প্রশাসনিক বিষয়ে সুবাহদারের উপর দীউয়ানের কোন প্রকার নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা। তাঁরা ছিলেন পরস্পর স্বাধীন। বাংলার সুবাহদার যুবরাজ [[আজিম-উস-শান| | সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক কার্যবিধিতে সুবাহদারের বৈধ কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত ছিল। তিনি সম্রাট কর্তৃত্ব সরাসরি নিযুক্ত হতেন এবং সম্রাটের কাছেই তাঁকে জবাবদিহি করতে হতো। সাংবিধানিকভাবে একজন সুবাহদার সম্রাট কর্তৃক নির্দিষ্ট অধিকারের সীমা লঙ্ঘন করতে পারতেন না। তাঁর ক্ষমতায় সমতা বিধানের জন্য রাজস্ব ব্যবস্থার সর্বোচ্চ ক্ষমতা স্বয়ং সম্রাট কর্তৃক নির্বাচিত বা মনোনীত প্রাদেশিক দীউয়ানের ওপর অর্পিত হতো। আর্থিক ব্যাপারে দীউয়ানের ওপর সুবাহদারের কোন কর্তৃত ছিল না, যেমন ছিল না প্রশাসনিক বিষয়ে সুবাহদারের উপর দীউয়ানের কোন প্রকার নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা। তাঁরা ছিলেন পরস্পর স্বাধীন। বাংলার সুবাহদার যুবরাজ [[আজিম-উস-শান|আজিম-উস-শান]] তাকে অবৈধ অর্থ বরাদ্দের জন্য দীউয়ান মুর্শিদকুলী খানকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন। দীউয়ান তাঁর এ নিয়ম লঙ্ঘনের কথা উল্লেখকরে সম্রাটের নিকট অভিযোগ করেন। সম্রাট এজন্য সুবাহদারকে তিরস্কার করেন এবং দীউয়ানের এ পদক্ষেপটির প্রশংসা করেন। এটি মুগল প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতার দ্বৈত নীতির নজির বা উদাহরণ। | ||
''সারণি'' বাংলার সুবাহদারদের ক্রমপঞ্জি (প্রথম দিককার সমর বিজেতা ও বিদ্রোহী কর্মকর্তা ব্যতীত)। | |||
{| class="table table-bordered table-hover" | |||
শাসনকাল (খ্রি.) | |- | ||
| শাসনকাল (খ্রি.) || সুবাহদার | |||
১৬০৮-১৬১৩ | |- | ||
| ১৬০৮-১৬১৩ || ইসলাম খান (চিশতি) | |||
১৬১৩-১৬১৭ | |- | ||
| ১৬১৩-১৬১৭ || কাসিম খান (চিশতি) | |||
১৬১৭-১৬২৪ | |- | ||
| ১৬১৭-১৬২৪ || ইবরাহিম খান ফতেহ জং | |||
১৬২৫-১৬২৬ | |- | ||
| ১৬২৫-১৬২৬ || মহবত খান | |||
১৬২৬-১৬২৭ | |- | ||
| ১৬২৬-১৬২৭ || মুকাররম খান | |||
১৬২৭-১৬২৮ | |- | ||
| ১৬২৭-১৬২৮ || ফিদাই খান | |||
১৬২৮-১৬৩২ | |- | ||
| ১৬২৮-১৬৩২ || কাসিম খান (জুয়িনি) | |||
১৬৩২-১৬৩৫ | |- | ||
| ১৬৩২-১৬৩৫ || আজম খান | |||
১৬৩৫-১৬৩৯ | |- | ||
| ১৬৩৫-১৬৩৯ || ইসলাম খান (মাশহাদী) | |||
১৬৩৯-১৬৬০ | |- | ||
| ১৬৩৯-১৬৬০ || শাহজাদা শাহ সুজা | |||
১৬৬০-১৬৬৩ | |- | ||
| ১৬৬০-১৬৬৩ || মীর জুমলা (মুয়াজ্জম খান) | |||
১৬৬৩-১৬৭৮ | |- | ||
| ১৬৬৩-১৬৭৮ || শায়েস্তা খান | |||
১৬৭৮-১৬৭৮ | |- | ||
| ১৬৭৮-১৬৭৮ || ফিদাই খান (আজম খান কোকা) | |||
১৬৭৮-১৬৭৯ | |- | ||
| ১৬৭৮-১৬৭৯ || শাহজাদা মুহম্মদ আজম | |||
১৬৮০-১৬৮৮ | |- | ||
| ১৬৮০-১৬৮৮ || শায়েস্তা খান (২য় পর্যায়) | |||
১৬৮৮-১৬৮৯ | |- | ||
| ১৬৮৮-১৬৮৯ || খান-ই-জাহান | |||
১৬৮৯-১৬৯৮ | |- | ||
| ১৬৮৯-১৬৯৮ || ইবরাহিম খান | |||
১৬৯৮-১৭১২ | |- | ||
| ১৬৯৮-১৭১২ || শাহজাদা আজিমুদ্দীন (আজিম-উস-শান) প্রায়শ অনুপস্থিত, ফররুখ সিয়ার ও খান-ই-আলম পর পর তাঁর প্রতিনিধি | |||
১৭১২-১৭১৩ | |- | ||
| ১৭১২-১৭১৩ || খান-ই-আলম | |||
১৭১৩ | |- | ||
| ১৭১৩ || ফরখুন্দ সিয়ার (ফররুখ সিয়ারের নাবালক পুত্র, তাঁর অনুপস্থিতিতে মুর্শিদকুলী খান প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন) | |||
১৭১৩-১৭১৬ | |- | ||
| ১৭১৩-১৭১৬ || মুজাফফর জং মীর জুমলা (তাঁর অনুপস্থিতিতে মুর্শিদকুলী খান প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন) | |||
১৭১৭-১৭২৭ | |- | ||
| ১৭১৭-১৭২৭ || মুর্শিদকুলী খান | |||
১৭২৭-১৭৩৯ | |- | ||
| ১৭২৭-১৭৩৯ || সুজাউদ্দীন মুহম্মদ খান | |||
১৭৩৯-১৭৪০ | |- | ||
| ১৭৩৯-১৭৪০ || সরফরাজ খান | |||
১৭৪০-১৭৫৬ | |- | ||
| ১৭৪০-১৭৫৬ || আলীবর্দী খান | |||
১৭৫৬-১৭৫৭ | |- | ||
| ১৭৫৬-১৭৫৭ || সিরাজউদ্দৌলা | |||
|} | |||
মুর্শিদকুলী খান (১৭১৭-১৭২৭) থেকে [[মীরজাফর আলী খান|মীরজাফর]] (দ্বিতীয়বার ১৭৬৩-৬৫) পর্যন্ত সময়ের সুবাহদারগণ কার্যত বাংলায় স্বাধীন ছিলেন এবং তাঁদের সময়কে নবাবী আমল হিসেবে ইতিহাসে চিহ্নিত। | মুর্শিদকুলী খান (১৭১৭-১৭২৭) থেকে [[মীরজাফর আলী খান|মীরজাফর]] (দ্বিতীয়বার ১৭৬৩-৬৫) পর্যন্ত সময়ের সুবাহদারগণ কার্যত বাংলায় স্বাধীন ছিলেন এবং তাঁদের সময়কে নবাবী আমল হিসেবে ইতিহাসে চিহ্নিত। |
০৫:৩৭, ২৩ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
সুবাহদার মুগল সাম্রাজ্যের যেকোন সুবাহ-র গভর্নর বা ভাইসরয়। শাসনকার্য পরিচালনার সুবিধার্থে সমগ্র মুগল সাম্রাজ্য কয়েকটি সুবাহ-য় (প্রদেশ) বিভক্ত ছিল। সুবাহ প্রধানকে সুবাহদার, নাজিম, সাহিব-ই-সুবাহ, ফৌজদার-ই-সুবাহ প্রভৃতি নামে আখ্যায়িত করা হতো। বাংলা সুবাহ-র গভর্নরকে বলা হতো সুবাহদার। এছাড়া কখনওবা তিনি নাজিম নামেও অভিহিত হতেন। প্রধান দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীউয়ান এবং মীর বখশীর মতোই সর্বোচ্চ পদমর্যাদা বা মনসব-এর অধিকারী কর্মকর্তাদের মধ্য হতে সাধারণত প্রাদেশিক গভর্নর নিয়োগ করা হতো। কখনও কখনও গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশসমূহে মুগল শাহজাদাদেরও সুবাহদার নিয়োগ করা হতো।
প্রকৃতপক্ষে সুবাহদারগণ ছিলেন শাসক অভিজাত শ্রেণির কেন্দ্রবিন্দু। সাধারণত রাজপরিবারের সবচেয়ে বিশ্বস্ত সদস্য এবং ক্ষমতাসীন আমলারাই সুবাহদার পদে নিযুক্ত হতেন। সুবাহ-র সামরিক এবং বেসামরিক প্রধান হিসেবে সুবাহদার পদটি ছিল বেশ দায়িত্বপূর্ণ। সুবাহ-র কোন একটি অংশের বিদ্রোহ নিশ্চিতভাবে সম্রাটের ক্ষমতা এবং সাম্রাজ্যের আঞ্চলিক অখন্ডতার উপর গভীর প্রভাব ফেলত। ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দে শেষ বিখ্যাত মুগল সম্রাট আওরঙ্গজেব এর মৃত্যুর কিছুকাল পরেই হায়দ্রাবাদের নিজাম এবং অযোধ্যা ও বাংলার নওয়াব (প্রত্যেকেই সুবাহদার) পর্যায়ক্রমে তাদের স্ব স্ব সুবাহ-য় স্বাধীন শাসকে পরিণত হলে সমগ্র সাম্রাজ্য শুধু করুণার পাত্র এক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।
সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক কার্যবিধিতে সুবাহদারের বৈধ কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত ছিল। তিনি সম্রাট কর্তৃত্ব সরাসরি নিযুক্ত হতেন এবং সম্রাটের কাছেই তাঁকে জবাবদিহি করতে হতো। সাংবিধানিকভাবে একজন সুবাহদার সম্রাট কর্তৃক নির্দিষ্ট অধিকারের সীমা লঙ্ঘন করতে পারতেন না। তাঁর ক্ষমতায় সমতা বিধানের জন্য রাজস্ব ব্যবস্থার সর্বোচ্চ ক্ষমতা স্বয়ং সম্রাট কর্তৃক নির্বাচিত বা মনোনীত প্রাদেশিক দীউয়ানের ওপর অর্পিত হতো। আর্থিক ব্যাপারে দীউয়ানের ওপর সুবাহদারের কোন কর্তৃত ছিল না, যেমন ছিল না প্রশাসনিক বিষয়ে সুবাহদারের উপর দীউয়ানের কোন প্রকার নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা। তাঁরা ছিলেন পরস্পর স্বাধীন। বাংলার সুবাহদার যুবরাজ আজিম-উস-শান তাকে অবৈধ অর্থ বরাদ্দের জন্য দীউয়ান মুর্শিদকুলী খানকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন। দীউয়ান তাঁর এ নিয়ম লঙ্ঘনের কথা উল্লেখকরে সম্রাটের নিকট অভিযোগ করেন। সম্রাট এজন্য সুবাহদারকে তিরস্কার করেন এবং দীউয়ানের এ পদক্ষেপটির প্রশংসা করেন। এটি মুগল প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতার দ্বৈত নীতির নজির বা উদাহরণ।
সারণি বাংলার সুবাহদারদের ক্রমপঞ্জি (প্রথম দিককার সমর বিজেতা ও বিদ্রোহী কর্মকর্তা ব্যতীত)।
শাসনকাল (খ্রি.) | সুবাহদার |
১৬০৮-১৬১৩ | ইসলাম খান (চিশতি) |
১৬১৩-১৬১৭ | কাসিম খান (চিশতি) |
১৬১৭-১৬২৪ | ইবরাহিম খান ফতেহ জং |
১৬২৫-১৬২৬ | মহবত খান |
১৬২৬-১৬২৭ | মুকাররম খান |
১৬২৭-১৬২৮ | ফিদাই খান |
১৬২৮-১৬৩২ | কাসিম খান (জুয়িনি) |
১৬৩২-১৬৩৫ | আজম খান |
১৬৩৫-১৬৩৯ | ইসলাম খান (মাশহাদী) |
১৬৩৯-১৬৬০ | শাহজাদা শাহ সুজা |
১৬৬০-১৬৬৩ | মীর জুমলা (মুয়াজ্জম খান) |
১৬৬৩-১৬৭৮ | শায়েস্তা খান |
১৬৭৮-১৬৭৮ | ফিদাই খান (আজম খান কোকা) |
১৬৭৮-১৬৭৯ | শাহজাদা মুহম্মদ আজম |
১৬৮০-১৬৮৮ | শায়েস্তা খান (২য় পর্যায়) |
১৬৮৮-১৬৮৯ | খান-ই-জাহান |
১৬৮৯-১৬৯৮ | ইবরাহিম খান |
১৬৯৮-১৭১২ | শাহজাদা আজিমুদ্দীন (আজিম-উস-শান) প্রায়শ অনুপস্থিত, ফররুখ সিয়ার ও খান-ই-আলম পর পর তাঁর প্রতিনিধি |
১৭১২-১৭১৩ | খান-ই-আলম |
১৭১৩ | ফরখুন্দ সিয়ার (ফররুখ সিয়ারের নাবালক পুত্র, তাঁর অনুপস্থিতিতে মুর্শিদকুলী খান প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন) |
১৭১৩-১৭১৬ | মুজাফফর জং মীর জুমলা (তাঁর অনুপস্থিতিতে মুর্শিদকুলী খান প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন) |
১৭১৭-১৭২৭ | মুর্শিদকুলী খান |
১৭২৭-১৭৩৯ | সুজাউদ্দীন মুহম্মদ খান |
১৭৩৯-১৭৪০ | সরফরাজ খান |
১৭৪০-১৭৫৬ | আলীবর্দী খান |
১৭৫৬-১৭৫৭ | সিরাজউদ্দৌলা |
মুর্শিদকুলী খান (১৭১৭-১৭২৭) থেকে মীরজাফর (দ্বিতীয়বার ১৭৬৩-৬৫) পর্যন্ত সময়ের সুবাহদারগণ কার্যত বাংলায় স্বাধীন ছিলেন এবং তাঁদের সময়কে নবাবী আমল হিসেবে ইতিহাসে চিহ্নিত।
এতদ্সত্ত্বেও সুবাহদার ছিলেন প্রদেশের প্রধান এবং প্রদেশের প্রতিরক্ষা ও সুশাসনের দায়ভার তাঁকেই বহন করতে হতো। দুএকটি ব্যতিক্রম ছাড়া মুগল দরবার সুবাহদারগণকে দীর্ঘদিন একই স্থানে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রাখত না। রাজনৈতিক কারণে সাধারণত দুই থেকে তিন বছর পর পরই তাদেরকে বদলি করা হতো অথবা দরবারে ডেকে পাঠানো হতো। অবশ্য অন্যান্য প্রদেশের সুবাহদারদের তুলনায় বাংলার সুবাহদারগণ অপেক্ষাকৃত দীর্ঘকাল পর্যন্ত তাঁদের সুবাহদার পদে অধিষ্ঠিত থাকতেন। বাংলার সুবাহদারগণ কোন রকম বাধা-বিঘ্ন ছাড়াই গড়ে ছয় বছরের অধিক সময় পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতেন। অন্যদিকে অপর সব প্রদেশের সুবাহদারদের সময়কাল ছিল অনধিক চার বছর। ১৭০৪ হতে ১৭১৭ সালের মধ্যবর্তী সময়ে বাংলায় বেশ কয়েকজনকে সুবাহদার নিযুক্ত করা হয়। কিন্তু এ সকল নিয়োগ ছিল শুধুই আলংকারিক; কারণ নিয়োগ প্রাপ্তদের কেউই বাংলায় তাঁদের দায়িত্ব গ্রহণ করতে আসেন নি। এই সময় বাংলা সুবাহ-র কার্যকর ক্ষমতাসম্পন্ন শাসক ছিলেন বাংলায় নওয়াবী শাসনের প্রতিষ্ঠাতা মুর্শিদকুলী খান। বাংলার ইতিহাসে নওয়াব হিসেবে পরিচিত মুর্শিদকুলী খান হতে সিরাজউদ্দৌলা পর্যন্ত সকল সুবাহদারই ছিলেন স্বঘোষিত নওয়াব। এই পর্যায়ে নিজেকে নওয়াব হিসেবে ঘোষণা করার পর শুধু কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন আদায় করে নেওয়া হতো। [সিরাজুল ইসলাম]