আলিকদম উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''আলিকদম উপজেলা''' ([[বান্দরবান জেলা|বান্দরবান জেলা]])  আয়তন: ৮৮৫.৭৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২১°২১´ থেকে ২১°৫০´ উত্তর অক্ষাংশ ৯২°১৫´ থেকে ৯২°৩৪´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে [[লামা উপজেলা|লামা]] উপজেলা, দক্ষিণে মায়ানমারের [[আরাকান|আরাকান]] রাজ্য, পূর্বে [[থানচি উপজেলা|থানচি]] উপজেলা, পশ্চিমে লামা ও [[নাই্যংছড়ি উপজেলা|নাইক্ষ্যংছড়ি]] উপজেলা। উপজেলাটি বান্দরবানের পার্বত্য অঞ্চলের অদূরে মোটামুটি সমভূমি অঞ্চলে অবস্থিত। এ উপজেলার থাইংকিয়াং তাং, রুংরাং তাং ও সারা তাং পাহাড় উল্লেখযোগ্য।
'''আলিকদম উপজেলা''' ([[বান্দরবান জেলা|বান্দরবান জেলা]])  আয়তন: ৮৮৫.৭৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২১°২১´ থেকে ২১°৫০´ উত্তর অক্ষাংশ ৯২°১৫´ থেকে ৯২°৩৪´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে [[লামা উপজেলা|লামা]] উপজেলা, দক্ষিণে মায়ানমারের [[আরাকান|আরাকান]] রাজ্য, পূর্বে [[থানচি উপজেলা|থানচি]] উপজেলা, পশ্চিমে লামা ও [[নাই্যংছড়ি উপজেলা|নাইক্ষ্যংছড়ি]] উপজেলা। উপজেলাটি বান্দরবানের পার্বত্য অঞ্চলের অদূরে মোটামুটি সমভূমি অঞ্চলে অবস্থিত। এ উপজেলার থাইংকিয়াং তাং, রুংরাং তাং ও সারা তাং পাহাড় উল্লেখযোগ্য।


''জনসংখ্যা'' ৩৫২৬৪; পুরুষ ১৯২৯০, মহিলা ১৫৯৭৪। মুসলিম ২০৭৩৭, হিন্দু ১৫১৭, বৌদ্ধ ২০৩০, খ্রিস্টান ১০৯১৭ এবং অন্যান্য ৬৩। এ উপজেলায় চাকমা, মারমা, মুরং, ত্রিপুরা প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
''জনসংখ্যা'' ৪৯৩১৭; পুরুষ ২৫৬৫০, মহিলা ২৩৬৬৭। মুসলমান ২৬৬৮০, হিন্দু ১৬৫৫, বৌদ্ধ ১৫২৩৩, খ্রিস্টান ৩৬৫৭ এবং অন্যান্য ২০৯২। এ উপজেলায় চাকমা, মারমা, মুরং, ত্রিপুরা প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।


''জলাশয়''  প্রধান নদী: [[মাতামুহুরী নদী|মাতামুহুরী]]।
''জলাশয়''  প্রধান নদী: [[মাতামুহুরী নদী|মাতামুহুরী]]।
১৫ নং লাইন: ১৫ নং লাইন:
|-
|-
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| - || ২ || ৭ || ১৫৬  || ১৩১৭৩  || ২২০৯১  || ৪০  || ৪১.৮ || ১৮.
| - || ২ || ৭ || ১৬৮ || ১৪৫২৫ || ৩৪৭৯২ || ৫৬ || ৪১.৮ || ২৪.
 
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
২৭ নং লাইন: ২৪ নং লাইন:
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ২৩.৩১  || ২  || ১৩১৭৩  || ৫৬৫  || ৪১.৭৬
| ২৩.৩৪ || || ১৪৫২৫ || ৫৯০ || ৪৩.
 
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
৩৯ নং লাইন: ৩৪ নং লাইন:
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-  
|-  
| আলিকদম ৩১ || ২৬২৪০  || ১০৩০১ || ৮৪৬৫  || ২৫.৮৮
| আলিকদম ৩১ || ১৮৬৮৮০ || ১৫০৩৫ || ১৩৪৬০ || ৩০.
 
|-
|-
| চোখইয়ং ৬৩ || ১৯২৬৪০  || ৮৩২০ || ৭৩৭৭  || ২৪.৫৩
| চোখইয়ং ৬৩ || ৩২০০০ || ১০৬১৫ || ১০২০৭ || ৩২.
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
 
[[Image:AlikadamUpazila.jpg|thumb|400px|right]]
''ঐতিহাসিক ঘটনাবলি'' আলিকদমসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের বৃহত্তর অংশ নবম শতাব্দীতে আরাকানদের অধীন ছিল। পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে বাংলার সুলতান জালালউদ্দিন এবং খোদাবক্স বংশ অস্থায়ীভাবে আলিকদমে তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করলে সেখানে আরাকানদের শাসন বিঘ্নিত হয়। ১৭৫৬ সালে মুগলরা ওই অঞ্চল জয় করে নিলে সেখানে আরাকানদের শাসন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যায়। আরাকানদের শেষ শাসক কং হ্লা প্রুকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করা হয় এবং তাঁকে সপরিবারে পার্বত্য অঞ্চল ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়া হয়।
''ঐতিহাসিক ঘটনাবলি'' আলিকদমসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের বৃহত্তর অংশ নবম শতাব্দীতে আরাকানদের অধীন ছিল। পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে বাংলার সুলতান জালালউদ্দিন এবং খোদাবক্স বংশ অস্থায়ীভাবে আলিকদমে তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করলে সেখানে আরাকানদের শাসন বিঘ্নিত হয়। ১৭৫৬ সালে মুগলরা ওই অঞ্চল জয় করে নিলে সেখানে আরাকানদের শাসন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যায়। আরাকানদের শেষ শাসক কং হ্লা প্রুকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করা হয় এবং তাঁকে সপরিবারে পার্বত্য অঞ্চল ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়া হয়।


[[Image:AlikadamUpazila.jpg|thumb|400px|right]]
''মুক্তিযুদ্ধ''  ১৯৭১ সালের ২১ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল আলিকদম বৌদ্ধ বিহারের পাশে একটি রাজাকার দলের উপর আক্রমণ করে এবং তাদের এলাকা থেকে বিতাড়িত করে। ৫ সেপ্টেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা লামা রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করে।
''বিস্তারিত দেখুন''  আলিকদম উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৩৮, মন্দির ৫, গির্জা ৩, কেয়াং ১৭।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''   মসজিদ ৩৮, মন্দির ৫, গির্জা ৩, কেয়াং ১৭।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ২৭.%; পুরুষ ৩১.%, মহিলা ২১.%। মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ২২, কমিউনিটি বিদ্যালয় ৪, কিন্ডার গার্টেন ২, মাদ্রাসা ২। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: আলিকদম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, আলিকদম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আলিকদম আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সোনাইছড়ি রেজি: প্রাথমিক বিদ্যালয়।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩১.%; পুরুষ ৩৫.%, মহিলা ২৭.%। মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ২২, কমিউনিটি বিদ্যালয় ৪, কিন্ডার গার্টেন ২, মাদ্রাসা ২। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: আলিকদম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, আলিকদম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আলিকদম আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সোনাইছড়ি রেজি: প্রাথমিক বিদ্যালয়।


''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' প্রেসক্লাব ১, লাইব্রেরি ১, সিনেমা হল ১, সংগীত একাডেমী ১, অডিটরিয়াম ১, মহিলা সংগঠন ২, খেলার মাঠ ১, এতিমখানা ২।
''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' প্রেসক্লাব ১, লাইব্রেরি ১, সিনেমা হল ১, সংগীত একাডেমী ১, অডিটরিয়াম ১, মহিলা সংগঠন ২, খেলার মাঠ ১, এতিমখানা ২।
৬৫ নং লাইন: ৬১ নং লাইন:


''প্রধান ফল-ফলাদিব'' কলা, কাঁঠাল, লিচু, পেঁপে।
''প্রধান ফল-ফলাদিব'' কলা, কাঁঠাল, লিচু, পেঁপে।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব''  পাকারাস্তা ৩ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১.৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ২২২ কিমি; নৌপথ ৩৫ কিমি।


''শিল্প ও কলকারখানা'' প্লাইউড ফ্যাক্টরি, টোবাকো ফ্যাক্টরি, স’মিল, ইটভাটা প্রভৃতি।
''শিল্প ও কলকারখানা'' প্লাইউড ফ্যাক্টরি, টোবাকো ফ্যাক্টরি, স’মিল, ইটভাটা প্রভৃতি।
৭৪ নং লাইন: ৭২ নং লাইন:
''প্রধান রপ্তানি দ্রব্য''  কলা, বাঁশ, আদা, হলুদ, শাকসবজি।
''প্রধান রপ্তানি দ্রব্য''  কলা, বাঁশ, আদা, হলুদ, শাকসবজি।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৩.২৪% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৫.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৪৪.২৮%, ট্যাপ ১.৬২%, পুকুর ১৪.৫৫% এবং অন্যান্য ৩৯.৫৫%।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৪৩.%, ট্যাপ ১.% এবং অন্যান্য ৫৫.%।  


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৮.২৬% (গ্রামে ৪.৪৪% এবং শহরে ১৪.৯২%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৬১.৭১% (গ্রামে ৫৯.৪৩% এবং শহরে ৬৫.৬৭%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩০.০৩% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ২৪.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৩.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩১.% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র''  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১, কমিউনিটি ক্লিনিক ৩, পশু চিকিৎসা কেন্দ্র ১।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র''  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১, কমিউনিটি ক্লিনিক ৩, পশু চিকিৎসা কেন্দ্র ১।
৮৪ নং লাইন: ৮২ নং লাইন:
''এনজিও''  [[ব্র্যাক|ব্র্যাক]], [[প্রশিকা|প্রশিকা]], বিএনকেএস।  [আতিকুর রহমান]
''এনজিও''  [[ব্র্যাক|ব্র্যাক]], [[প্রশিকা|প্রশিকা]], বিএনকেএস।  [আতিকুর রহমান]


'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১,বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; আলিকদম উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১,বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; আলিকদম উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Alikadam Upazila]]
[[en:Alikadam Upazila]]

১৭:৫৯, ৫ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

আলিকদম উপজেলা (বান্দরবান জেলা)  আয়তন: ৮৮৫.৭৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২১°২১´ থেকে ২১°৫০´ উত্তর অক্ষাংশ ৯২°১৫´ থেকে ৯২°৩৪´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে লামা উপজেলা, দক্ষিণে মায়ানমারের আরাকান রাজ্য, পূর্বে থানচি উপজেলা, পশ্চিমে লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা। উপজেলাটি বান্দরবানের পার্বত্য অঞ্চলের অদূরে মোটামুটি সমভূমি অঞ্চলে অবস্থিত। এ উপজেলার থাইংকিয়াং তাং, রুংরাং তাং ও সারা তাং পাহাড় উল্লেখযোগ্য।

জনসংখ্যা ৪৯৩১৭; পুরুষ ২৫৬৫০, মহিলা ২৩৬৬৭। মুসলমান ২৬৬৮০, হিন্দু ১৬৫৫, বৌদ্ধ ১৫২৩৩, খ্রিস্টান ৩৬৫৭ এবং অন্যান্য ২০৯২। এ উপজেলায় চাকমা, মারমা, মুরং, ত্রিপুরা প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জলাশয়  প্রধান নদী: মাতামুহুরী

প্রশাসন ১৯৭৬ সালে লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার কিছু এলাকা নিয়ে আলিকদম থানা গঠিত হয়। ১৯৮৩ সালে এটিকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১৬৮ ১৪৫২৫ ৩৪৭৯২ ৫৬ ৪১.৮ ২৪.৬
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২৩.৩৪ ১৪৫২৫ ৫৯০ ৪৩.০
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আলিকদম ৩১ ১৮৬৮৮০ ১৫০৩৫ ১৩৪৬০ ৩০.৫
চোখইয়ং ৬৩ ৩২০০০ ১০৬১৫ ১০২০৭ ৩২.৪

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

ঐতিহাসিক ঘটনাবলি আলিকদমসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের বৃহত্তর অংশ নবম শতাব্দীতে আরাকানদের অধীন ছিল। পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে বাংলার সুলতান জালালউদ্দিন এবং খোদাবক্স বংশ অস্থায়ীভাবে আলিকদমে তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করলে সেখানে আরাকানদের শাসন বিঘ্নিত হয়। ১৭৫৬ সালে মুগলরা ওই অঞ্চল জয় করে নিলে সেখানে আরাকানদের শাসন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যায়। আরাকানদের শেষ শাসক কং হ্লা প্রুকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করা হয় এবং তাঁকে সপরিবারে পার্বত্য অঞ্চল ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়া হয়।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ২১ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল আলিকদম বৌদ্ধ বিহারের পাশে একটি রাজাকার দলের উপর আক্রমণ করে এবং তাদের এলাকা থেকে বিতাড়িত করে। ৫ সেপ্টেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা লামা রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করে।

বিস্তারিত দেখুন আলিকদম উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৮, মন্দির ৫, গির্জা ৩, কেয়াং ১৭।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩১.৩%; পুরুষ ৩৫.২%, মহিলা ২৭.০%। মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ২২, কমিউনিটি বিদ্যালয় ৪, কিন্ডার গার্টেন ২, মাদ্রাসা ২। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: আলিকদম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, আলিকদম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আলিকদম আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সোনাইছড়ি রেজি: প্রাথমিক বিদ্যালয়।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান প্রেসক্লাব ১, লাইব্রেরি ১, সিনেমা হল ১, সংগীত একাডেমী ১, অডিটরিয়াম ১, মহিলা সংগঠন ২, খেলার মাঠ ১, এতিমখানা ২।

দর্শনীয় স্থান মেরাইনডং পাহাড়।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৯.২৭%, অকৃষি শ্রমিক ৯.৩০%, ব্যবসা ১২.৫২%, চাকরি ৫.২৯%, নির্মাণ ০.৩৮%, ধর্মীয় সেবা ০.২৭%, রেন্ট আন্ড রেমিটেন্স ০.০৩%, পরিবহন ও যোগাযোগ ০.৪৮% এবং অন্যান্য ১২.৪৬%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ২৯.০৩%, ভূমিহীন ৭০.৯৭%। শহরে ২৬.৩১% এবং গ্রামে ৩০.৬০% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, আলু, তামাক, বাদাম, শাকসবজি।

প্রধান ফল-ফলাদিব কলা, কাঁঠাল, লিচু, পেঁপে।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৩ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১.৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ২২২ কিমি; নৌপথ ৩৫ কিমি।

শিল্প ও কলকারখানা প্লাইউড ফ্যাক্টরি, টোবাকো ফ্যাক্টরি, স’মিল, ইটভাটা প্রভৃতি।

কুটিরশিল্প মৃৎশিল্প, লৌহশিল্প, কাঠের কাজ, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ প্রভৃতি।

হাটবাজার  আলিকদম সদর হাট ও তাইনছড়ি হাট উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানি দ্রব্য  কলা, বাঁশ, আদা, হলুদ, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৫.৭% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৪৩.৬%, ট্যাপ ১.১% এবং অন্যান্য ৫৫.৩%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ২৪.৩% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৩.৯% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩১.৮% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১, কমিউনিটি ক্লিনিক ৩, পশু চিকিৎসা কেন্দ্র ১।

এনজিও ব্র্যাক, প্রশিকা, বিএনকেএস।  [আতিকুর রহমান]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১,বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; আলিকদম উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।