কুড়িগ্রাম জেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
(হালনাগাদ) |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''কুড়িগ্রাম জেলা''' ([[রংপুর বিভাগ|রংপুর বিভাগ]]) আয়তন: | '''কুড়িগ্রাম জেলা''' ([[রংপুর বিভাগ|রংপুর বিভাগ]]) আয়তন: ২২৪৫.০৪ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°২৩´ থেকে ২৬°১৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°২৭´ থেকে ৮৯°৫৪´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিণে গাইবান্ধা ও জামালপুর জেলা, পূর্বে ভারতের আসাম রাজ্য, পশ্চিমে রংপুর ও লালমনিরহাট জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। | ||
''জনসংখ্যা'' | ''জনসংখ্যা'' ২০৬৯২৭৩; পুরুষ ১০১০৪৪২, মহিলা ১০৫৮৮৩১। মুসলিম ১৯৩২৭৭৯, হিন্দু ১৩৫৪৮৪, বৌদ্ধ ৪৮, খ্রিস্টান ১০৩ এবং অন্যান্য ৮৫৯। | ||
''জলাশয়'' ব্রহ্মপুত্র নদ, যমুনা, ধরলা, দুধকুমার ও তিস্তা নদী উল্লেখযোগ্য। | ''জলাশয়'' ব্রহ্মপুত্র নদ, যমুনা, ধরলা, দুধকুমার ও তিস্তা নদী উল্লেখযোগ্য। | ||
''প্রশাসন'' ১৮৭৪ সালে কুড়িগ্রামকে মহকুমায় পরিণত করা হয় এবং মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করা হয় ১৯৮৪ সালে। পৌরসভা গঠিত হয় ১৯৭২ সালে। ছিটমহল ১৪। জেলার নয়টি উপজেলার মধ্যে উলিপুর সর্ববৃহৎ ( | ''প্রশাসন'' ১৮৭৪ সালে কুড়িগ্রামকে মহকুমায় পরিণত করা হয় এবং মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করা হয় ১৯৮৪ সালে। পৌরসভা গঠিত হয় ১৯৭২ সালে। ছিটমহল ১৪। জেলার নয়টি উপজেলার মধ্যে উলিপুর সর্ববৃহৎ (৪৫৮.৪৮ বর্গ কিমি) এবং এটি জেলার মোট আয়তনের ২২% এলাকা জুড়ে অবস্থিত। জেলার সবচেয়ে ছোট উপজেলা চর রাজিবপুর (১১১.০৩ বর্গ কিমি)। | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
|- | |- | ||
১৫ নং লাইন: | ১৫ নং লাইন: | ||
| শহর || গ্রাম | | শহর || গ্রাম | ||
|- | |- | ||
| | | ২২৪৫.০৪ || ৯ || ৩ || ৭২ || ৬০০ || ১৮৭২ || ৩২৬৪৯৪ || ১৭৪২৭৭৯ || ৯২২ || ৪২.৫ | ||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
২৩ নং লাইন: | ২৩ নং লাইন: | ||
| উপজেলা নাম || আয়তন(বর্গ কিমি) || পৌরসভা || ইউনিয়ন || মৌজা || গ্রাম || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | | উপজেলা নাম || আয়তন(বর্গ কিমি) || পৌরসভা || ইউনিয়ন || মৌজা || গ্রাম || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | ||
|- | |- | ||
| উলিপুর | | উলিপুর || ৪৫৮.৪৮ || ১ || ১৩ || ১৩৪ || ৩৫৪ || ৩৯৫২০৭ || ৮৬২ || ৪৫.৬ | ||
|- | |- | ||
| কুড়িগ্রাম সদর | | কুড়িগ্রাম সদর || ২৭৬.৪৩ || ১ || ৮ || ৭৬ || ২৬৬ || ৩১২৪০৮ || ১১৩০ || ৪৬.১ | ||
|- | |- | ||
| চর রাজিবপুর | | চর রাজিবপুর || ১১১.০৩ || - || ৩ || ২৬ || ৯৯ || ৭৩৩৭৩ || ৬৬১ || ৩৬.৫ | ||
|- | |- | ||
| চিলমারী | | চিলমারী || ২২৪.৯৬ || - || ৬ || ৪৮ || ১৩৩ || ১২২৮৪১ || ৫৪৬ || ৩৯.৭ | ||
|- | |- | ||
| নাগেশ্বরী | | নাগেশ্বরী || ৪১৭.৫৬ || ১ || ১৪ || ৭৩ || ৩৫০ || ৩৯৪২৫৮ || ৯৪৪ || ৩৮.৭ | ||
|- | |- | ||
| ফুলবাড়ী | | ফুলবাড়ী || ১৫৬.৬১ || - || ৬ || ৪৮ || ১৬৬ || ১৬০২৫০ || ১০২৩ || ৪৪.৮ | ||
|- | |- | ||
| ভুরুঙ্গামারী | | ভুরুঙ্গামারী || ২৩৬.২৬ || - || ১০ || ৫৬ || ১২৬ || ২৩১৫৩৮ || ৯৮০ || ৩৯.৬ | ||
|- | |- | ||
| রাজারহাট | | রাজারহাট || ১৬৬.৬৪ || - || ৭ || ১১০ || ১৮০ || ১৮২৯৮১ || ১০৯৮ || ৫২.০ | ||
|- | |- | ||
| রৌমারী | | রৌমারী || ১৯৭.০৩ || - || ৫ || ২৯ || ১৯৮ || ১৯৬৪১৭ || ৯৯৭ || ৩৪.৬ | ||
|} | |} | ||
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট | ''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | ||
'' | ''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালে এ জেলার উলিপুর উপজেলার চৌমুনী বাজারের নিকট মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর একটি কনভয় আক্রমণ করে। ২০ মে পাকবাহিনী চিলমারী উপজেলার প্রায় ৩০ জন নিরীহ লোককে ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে হত্যা করে। ১১ নভেম্বর এ জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে ভারতীয় বাহিনীর মেজর রামসিংহসহ মিত্রবাহিনীর ৬৯ জন এবং মুক্তিবাহিনীর ৫ জন শহীদ হন। ১৩ নভেম্বর পাকবাহিনী উলিপুর উপজেলার হাতিয়ায় প্রায় ৭০০ জন গ্রামবাসীকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তাছাড়া ১৯ নভেম্বর নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ব্রিজের নিকট এক লড়াইয়ে মুক্তিযোদ্ধা লে. ক. সামাদসহ ৩ জন শহীদ হন। ২০ নভেম্বর ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় এক লড়াইয়ে পাকবাহিনীর শতাধিক সৈন্য নিহত এবং বীর উত্তম লে. আবু সাঈদ মোহাম্মদ আশফাকুস সামাদসহ (বীর উত্তম) অনেক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এছাড়াও পাকবাহিনীর অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ২৬ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট ব্রিজ ধ্বংস করে। নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের নীলুর খামার মৌজায় পাকবাহিনী ৬২ জনকে হত্যা করে এবং নাগেশ্বরী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উত্তর-পশ্চিমের মাঠে পাকবাহিনী প্রায় ৩৫ জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারে। কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ১১টি গণকবর (নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী, উলিপুর ও কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা), ২টি বধ্যভূমি (ভুরুঙ্গামারী ও চিলমারী উপজেলা), ৪টি স্মৃতিস্তম্ভ, ১টি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলক (ঘোষপাড়া) এবং ১টি স্বাধীনতার বিজয় স্তম্ভ (কলেজ মোড়) রয়েছে। | ||
[[Image:KurigramDistrict.jpg|thumb|400px|right]] | [[Image:KurigramDistrict.jpg|thumb|400px|right]] | ||
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪২.৫%; পুরুষ ৪৬.৫%, মহিলা ৩৮.৮%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ (১৮৬৮), কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ (১৯৬১), উলিপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৪), ভুরুঙ্গামারী ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৭), মীর ইসমাইল হোসেন ডিগ্রি কলেজ (১৯৭৩), ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজ (১৯৭৩), রৌমারী ডিগ্রি কলেজ (১৯৭৯), চিলমারী ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৫), রাজিবপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৭), কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৫), উলিপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় (১৯০৯), দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), কুড়িগ্রাম রিভারভিউ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫), নাওডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), ভুরুঙ্গামারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৫), কুড়িগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৮), চিলমারী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৩), পাঙ্গারানী লক্ষ্মীপ্রিয়া হাইস্কুল (১৯৩৯), রৌমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৯৮), পয়ড়ডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৭), নাগেশ্বরী আলিয়া মাদ্রাসা (১৯৬০), কুড়িগ্রাম আলীয়া মাদ্রাসা (১৯৬৭)। | |||
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার | |||
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৭০.৪১%, অকৃষি শ্রমিক ৪.৭৪%, শিল্প ০.৫১%, ব্যবসা ৯.৪৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.০২%, নির্মাণ ০.৭৭%, ধর্মীয় সেবা ০.১৫%, চাকরি ৪.৯৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২১% এবং অন্যান্য ৬.৭৬%। | ''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৭০.৪১%, অকৃষি শ্রমিক ৪.৭৪%, শিল্প ০.৫১%, ব্যবসা ৯.৪৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.০২%, নির্মাণ ০.৭৭%, ধর্মীয় সেবা ০.১৫%, চাকরি ৪.৯৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২১% এবং অন্যান্য ৬.৭৬%। | ||
৬২ নং লাইন: | ৬০ নং লাইন: | ||
''আরও দেখুন'' সংশ্লিষ্ট উপজেলা। | ''আরও দেখুন'' সংশ্লিষ্ট উপজেলা। | ||
'''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১,বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কুড়িগ্রাম জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; কুড়িগ্রাম জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | '''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১,বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কুড়িগ্রাম জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; কুড়িগ্রাম জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | ||
[[en:Kurigram District]] | [[en:Kurigram District]] |
২০:১৮, ২৮ মে ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
কুড়িগ্রাম জেলা (রংপুর বিভাগ) আয়তন: ২২৪৫.০৪ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°২৩´ থেকে ২৬°১৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°২৭´ থেকে ৮৯°৫৪´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিণে গাইবান্ধা ও জামালপুর জেলা, পূর্বে ভারতের আসাম রাজ্য, পশ্চিমে রংপুর ও লালমনিরহাট জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ।
জনসংখ্যা ২০৬৯২৭৩; পুরুষ ১০১০৪৪২, মহিলা ১০৫৮৮৩১। মুসলিম ১৯৩২৭৭৯, হিন্দু ১৩৫৪৮৪, বৌদ্ধ ৪৮, খ্রিস্টান ১০৩ এবং অন্যান্য ৮৫৯।
জলাশয় ব্রহ্মপুত্র নদ, যমুনা, ধরলা, দুধকুমার ও তিস্তা নদী উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন ১৮৭৪ সালে কুড়িগ্রামকে মহকুমায় পরিণত করা হয় এবং মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করা হয় ১৯৮৪ সালে। পৌরসভা গঠিত হয় ১৯৭২ সালে। ছিটমহল ১৪। জেলার নয়টি উপজেলার মধ্যে উলিপুর সর্ববৃহৎ (৪৫৮.৪৮ বর্গ কিমি) এবং এটি জেলার মোট আয়তনের ২২% এলাকা জুড়ে অবস্থিত। জেলার সবচেয়ে ছোট উপজেলা চর রাজিবপুর (১১১.০৩ বর্গ কিমি)।
জেলা | |||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | উপজেলা | পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |
শহর | গ্রাম | ||||||||
২২৪৫.০৪ | ৯ | ৩ | ৭২ | ৬০০ | ১৮৭২ | ৩২৬৪৯৪ | ১৭৪২৭৭৯ | ৯২২ | ৪২.৫ |
জেলার অন্যান্য তথ্য | ||||||||
উপজেলা নাম | আয়তন(বর্গ কিমি) | পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) |
উলিপুর | ৪৫৮.৪৮ | ১ | ১৩ | ১৩৪ | ৩৫৪ | ৩৯৫২০৭ | ৮৬২ | ৪৫.৬ |
কুড়িগ্রাম সদর | ২৭৬.৪৩ | ১ | ৮ | ৭৬ | ২৬৬ | ৩১২৪০৮ | ১১৩০ | ৪৬.১ |
চর রাজিবপুর | ১১১.০৩ | - | ৩ | ২৬ | ৯৯ | ৭৩৩৭৩ | ৬৬১ | ৩৬.৫ |
চিলমারী | ২২৪.৯৬ | - | ৬ | ৪৮ | ১৩৩ | ১২২৮৪১ | ৫৪৬ | ৩৯.৭ |
নাগেশ্বরী | ৪১৭.৫৬ | ১ | ১৪ | ৭৩ | ৩৫০ | ৩৯৪২৫৮ | ৯৪৪ | ৩৮.৭ |
ফুলবাড়ী | ১৫৬.৬১ | - | ৬ | ৪৮ | ১৬৬ | ১৬০২৫০ | ১০২৩ | ৪৪.৮ |
ভুরুঙ্গামারী | ২৩৬.২৬ | - | ১০ | ৫৬ | ১২৬ | ২৩১৫৩৮ | ৯৮০ | ৩৯.৬ |
রাজারহাট | ১৬৬.৬৪ | - | ৭ | ১১০ | ১৮০ | ১৮২৯৮১ | ১০৯৮ | ৫২.০ |
রৌমারী | ১৯৭.০৩ | - | ৫ | ২৯ | ১৯৮ | ১৯৬৪১৭ | ৯৯৭ | ৩৪.৬ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে এ জেলার উলিপুর উপজেলার চৌমুনী বাজারের নিকট মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর একটি কনভয় আক্রমণ করে। ২০ মে পাকবাহিনী চিলমারী উপজেলার প্রায় ৩০ জন নিরীহ লোককে ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে হত্যা করে। ১১ নভেম্বর এ জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে ভারতীয় বাহিনীর মেজর রামসিংহসহ মিত্রবাহিনীর ৬৯ জন এবং মুক্তিবাহিনীর ৫ জন শহীদ হন। ১৩ নভেম্বর পাকবাহিনী উলিপুর উপজেলার হাতিয়ায় প্রায় ৭০০ জন গ্রামবাসীকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তাছাড়া ১৯ নভেম্বর নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ব্রিজের নিকট এক লড়াইয়ে মুক্তিযোদ্ধা লে. ক. সামাদসহ ৩ জন শহীদ হন। ২০ নভেম্বর ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় এক লড়াইয়ে পাকবাহিনীর শতাধিক সৈন্য নিহত এবং বীর উত্তম লে. আবু সাঈদ মোহাম্মদ আশফাকুস সামাদসহ (বীর উত্তম) অনেক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এছাড়াও পাকবাহিনীর অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ২৬ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট ব্রিজ ধ্বংস করে। নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের নীলুর খামার মৌজায় পাকবাহিনী ৬২ জনকে হত্যা করে এবং নাগেশ্বরী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উত্তর-পশ্চিমের মাঠে পাকবাহিনী প্রায় ৩৫ জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারে। কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ১১টি গণকবর (নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী, উলিপুর ও কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা), ২টি বধ্যভূমি (ভুরুঙ্গামারী ও চিলমারী উপজেলা), ৪টি স্মৃতিস্তম্ভ, ১টি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলক (ঘোষপাড়া) এবং ১টি স্বাধীনতার বিজয় স্তম্ভ (কলেজ মোড়) রয়েছে।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪২.৫%; পুরুষ ৪৬.৫%, মহিলা ৩৮.৮%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ (১৮৬৮), কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ (১৯৬১), উলিপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৪), ভুরুঙ্গামারী ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৭), মীর ইসমাইল হোসেন ডিগ্রি কলেজ (১৯৭৩), ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজ (১৯৭৩), রৌমারী ডিগ্রি কলেজ (১৯৭৯), চিলমারী ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৫), রাজিবপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৭), কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৫), উলিপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় (১৯০৯), দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), কুড়িগ্রাম রিভারভিউ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫), নাওডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), ভুরুঙ্গামারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৫), কুড়িগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৮), চিলমারী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৩), পাঙ্গারানী লক্ষ্মীপ্রিয়া হাইস্কুল (১৯৩৯), রৌমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৯৮), পয়ড়ডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৭), নাগেশ্বরী আলিয়া মাদ্রাসা (১৯৬০), কুড়িগ্রাম আলীয়া মাদ্রাসা (১৯৬৭)।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭০.৪১%, অকৃষি শ্রমিক ৪.৭৪%, শিল্প ০.৫১%, ব্যবসা ৯.৪৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.০২%, নির্মাণ ০.৭৭%, ধর্মীয় সেবা ০.১৫%, চাকরি ৪.৯৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২১% এবং অন্যান্য ৬.৭৬%।
পত্র-পত্রিকা ও সামিয়িকী দৈনিক: চাওয়া পাওয়া, জাগো বাহে, কুড়িগ্রাম খবর, বাংলার মানুষ; সাপ্তাহিক: গণকথা, বাহের দেশ, দুধ কুমার, জনপ্রাণ, গ্রামান্তর, জুলফিকার; পাক্ষিক: দ্বীপ দেশ, বার্তাবহ, উৎস, আয়না; অনিয়মিত: উত্তর চৈতী, অগ্রদূত।
লোকসংস্কৃতি ভাওয়াইয়া, পল্লীগীতি, মুর্শিদী, মারফতি, বাউল গান, বিয়ের গীত, চটকা গান, ব্যানা কুশানের গান, গোয়ালীর পাচালী, জারি গান, ছড়া, প্রবাদ-প্রবচন, লোকগল্প, খেলার গদ, ধাঁধা প্রভৃতি।
বিনোদন কেন্দ্র ধরলা ব্রিজ (কুড়িগ্রাম), বেহুলার চর (চর রাজিবপুর), রমনা ঘাট (চিলমারী), ফুলসাগর (ফুলবাড়ী), নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ি (ফুলবাড়ী), ভিতরবন্দ জমিদার বাড়ি (নাগেশ্বরী), চাকির পশার বিল (রাজারহাট), সিন্দুরমতি দিঘি (রাজারহাট)। [মোঃ কামাল হোসেন]
আরও দেখুন সংশ্লিষ্ট উপজেলা।
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১,বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কুড়িগ্রাম জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; কুড়িগ্রাম জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।