আদমদীঘি উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''আদমদীঘি উপজেলা''' ([[বগুড়া জেলা|বগুড়া]] জেলা) আয়তন: ১৬৮. | '''আদমদীঘি উপজেলা''' ([[বগুড়া জেলা|বগুড়া]] জেলা) আয়তন: ১৬৮.৮৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৪৩´ থেকে ২৪°৫২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৮´ থেকে ৮৯°১০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে [[আক্কেলপুর উপজেলা|আক্কেলপুর]] ও [[দুপচাঁচিয়া উপজেলা|দুপচাঁচিয়া]] উপজেলা, দক্ষিণে [[রানীনগর উপজেলা|রানীনগর]] উপজেলা, পূর্বে [[কাহালু উপজেলা|কাহালু]] ও [[নন্দীগ্রাম উপজেলা|নন্দীগ্রাম]] উপজেলা, পশ্চিমে [[নওগাঁ সদর উপজেলা|নওগাঁ সদর]] উপজেলা। | ||
''জনসংখ্যা'' | ''জনসংখ্যা'' ১৯৫১৮৬; পুরুষ ৯৭৩৬৮, মহিলা ৯৭৮১৮। মুসলিম ১৭৮৬৪০, হিন্দু ১৬০৭২, খ্রিস্টান ২১ এবং অন্যান্য ৪৫৩। এ উপজেলায় পাহান আদিবাসি জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। | ||
''জলাশয়'' [[নাগর নদী|নাগর]] ও ইরামতী নদী এবং রক্তদহ বিল উল্লেখযোগ্য। | ''জলাশয়'' [[নাগর নদী|নাগর]] ও ইরামতী নদী এবং রক্তদহ বিল উল্লেখযোগ্য। | ||
১৬ নং লাইন: | ১৬ নং লাইন: | ||
| শহর || গ্রাম || শহর || গ্রাম | | শহর || গ্রাম || শহর || গ্রাম | ||
|- | |- | ||
| ১ (সান্তাহার) | | ১ (সান্তাহার) || ৬ || ১০২ || ১৭৯ || ৩৯৯৪৬ || ১৫৫২৪০ || ১১৫৬ || ৫৭.৬ (২০০১) || ৫২.৭ | ||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
২৪ নং লাইন: | ২৪ নং লাইন: | ||
| আয়তন (বর্গ কিমি) || ওয়ার্ড || মহল্লা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | | আয়তন (বর্গ কিমি) || ওয়ার্ড || মহল্লা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | ||
|- | |- | ||
| ১০.২০ | | ১০.২০ (২০০১) || ৯ || ৩৫ || ৩১০৩৭ || ২৯৬৯ (২০০১) || ৬২.১ | ||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
৩২ নং লাইন: | ৩২ নং লাইন: | ||
| আয়তন (বর্গ কিমি) || মৌজা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | | আয়তন (বর্গ কিমি) || মৌজা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | ||
|- | |- | ||
| ৪.৯৩ | | ৪.৯৩ (২০০১) || ৫ || ৮৯০৯ || ১৬৪৪ (২০০১) || ৬১.৩ | ||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
৪২ নং লাইন: | ৪২ নং লাইন: | ||
| পুরুষ || মহিলা | | পুরুষ || মহিলা | ||
|- | |- | ||
| আদমদীঘি ১৩ | | আদমদীঘি ১৩ || ৬৫৬০ || ১৫৮১৩ || ১৫২৩৩ || ৫৬.৫ | ||
|- | |- | ||
| কুন্ডগ্রাম ৫৪ | | কুন্ডগ্রাম ৫৪ || ৭২৬৫ || ১২১৫৬ || ১২৭২১ || ৫২.৩ | ||
|- | |- | ||
| চম্পাপুর ২৭ | | চম্পাপুর ২৭ || ৭৬৭৪ || ১২১২২ || ১২২৪৪ || ৪৯.১ | ||
|- | |- | ||
| ছাতিয়ানগ্রাম ৪০ | | ছাতিয়ানগ্রাম ৪০ || ৬৮২৪ || ১৪৭৯৬ || ১৫০৭২ || ৫৬.১ | ||
|- | |- | ||
| নসরতপুর ৬৭ | | নসরতপুর ৬৭ || ৫৯২০ || ১৪২৪৯ || ১৪৩৬১ || ৫৩.১ | ||
|- | |- | ||
| সান্তাহার ৮১ | | সান্তাহার ৮১ || ৪৯৫৪ || ১২৫১৯ || ১২৮৬৩ || ৫০.২ | ||
|} | |} | ||
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | ''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | ||
[[Image:AdamdighiUpazila.jpg|thumb|400px|right]] | |||
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' কাবোই রাজবাড়ি ও কালাচাঁদ মন্দির। | ''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' কাবোই রাজবাড়ি ও কালাচাঁদ মন্দির। | ||
'' | ''মুক্তিযুদ্ধ'' বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ শোনার পর এখানকার বাঙালিরা প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করে। তারা সান্তাহার-বগুড়া কাঁচা সড়কের দুপাশের রাস্তা কেটে ব্যারিকেড তৈরি করে এবং রেললাইন-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে। সান্তাহার জিআরপি থানার অবাঙালি হাবিলদার হারুনের নেতৃত্বে বিহারি পুলিশরা অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র নিয়ে বাঙালিদের ওপর আক্রমণ করে। এতে ৩জন বাঙালি নিহত হয়। এরূপ পরিস্থিতিতে তৎকালীন আদমদীঘি থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে রানীনগর থানার অস্ত্রাগার ভেঙে বিহারিদের ওপর আক্রমণ করা হয়। এপ্রিল মাসে বাঙালিরা অবাঙালিদের ওপর আক্রমণ করলে প্রায় ৩০ হাজার অবাঙালি নিহত হয়। এ মাসেই পাকবাহিনী সান্তাহারের বেশসংখ্যক নিরীহ বাঙালিকে হত্যা করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনী স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে। ১৪ ডিসেম্বর এ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়। উপজেলায় ১টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে। | ||
'' | ''বিস্তারিত দেখুন'' আদমদীঘি উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১। | ||
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৩১২, মন্দির ২১, গির্জা ২, মাযার ২। কুন্দগ্রামের শাহী মসজিদ, সান্তাহারের তারাপুর মসজিদ ও স্টেশন জামে মসজিদ উল্লেখযোগ্য। | ''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৩১২, মন্দির ২১, গির্জা ২, মাযার ২। কুন্দগ্রামের শাহী মসজিদ, সান্তাহারের তারাপুর মসজিদ ও স্টেশন জামে মসজিদ উল্লেখযোগ্য। | ||
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড়হার | ''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড়হার ৫৪.৬%; পুরুষ ৫৭.৯%, মহিলা ৫১.৩%। কলেজ ৭, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯৩, মাদ্রাসা ১৪, কমিউনিটি বিদ্যালয় ২, স্যাটেলাইট বিদ্যালয় ৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সান্তাহার কলেজ (১৯৬৭), আদমদীঘি আইপিজে উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), সান্তাহার বিপি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৯)। | ||
''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' ক্লাব ১০, সিনেমা হল ৩, প্রেসক্লাব ২। | ''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' ক্লাব ১০, সিনেমা হল ৩, প্রেসক্লাব ২। | ||
৮৫ নং লাইন: | ৭৮ নং লাইন: | ||
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য হ্যাচারি ৩২, গবাদিপশু ৭৫, হাঁস-মুরগি ৩৩। | ''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য হ্যাচারি ৩২, গবাদিপশু ৭৫, হাঁস-মুরগি ৩৩। | ||
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা | ''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ১২১.৪৩ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ০.১৩ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৩৯.১৯ কিমি; রেলপথ ২০ কিমি। রেলওয়ে জংশন ১ (সান্তাহার)। | ||
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পালকি, গরুর গাড়ি। | ''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পালকি, গরুর গাড়ি। | ||
৯৭ নং লাইন: | ৯০ নং লাইন: | ||
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য'' ধান, আলু, চাদর, নকশিকাঁথা, মাদুর। | ''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য'' ধান, আলু, চাদর, নকশিকাঁথা, মাদুর। | ||
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড | ''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৭৩.১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। | ||
''পানীয়জলের উৎস'' | ''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৪.৪%, ট্যাপ ২.৯% এবং অন্যান্য উৎস ২.৭%। | ||
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার | ''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৫৯.৪% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৯.৫% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১১.১% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই। | ||
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, রেলওয়ে হাসপাতাল ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৯, ক্লিনিক ১২। | ''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, রেলওয়ে হাসপাতাল ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৯, ক্লিনিক ১২। | ||
১০৯ নং লাইন: | ১০২ নং লাইন: | ||
''এনজিও'' [[ব্র্যাক|ব্র্যাক]], আইটিসিএল, [[ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ|ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ]]। [রেজাউল করিম] | ''এনজিও'' [[ব্র্যাক|ব্র্যাক]], আইটিসিএল, [[ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ|ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ]]। [রেজাউল করিম] | ||
'''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; আদমদীঘি উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | '''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; আদমদীঘি উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | ||
[[en:Adamdighi Upazila]] | [[en:Adamdighi Upazila]] |
১০:০৩, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
আদমদীঘি উপজেলা (বগুড়া জেলা) আয়তন: ১৬৮.৮৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৪৩´ থেকে ২৪°৫২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৮´ থেকে ৮৯°১০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে আক্কেলপুর ও দুপচাঁচিয়া উপজেলা, দক্ষিণে রানীনগর উপজেলা, পূর্বে কাহালু ও নন্দীগ্রাম উপজেলা, পশ্চিমে নওগাঁ সদর উপজেলা।
জনসংখ্যা ১৯৫১৮৬; পুরুষ ৯৭৩৬৮, মহিলা ৯৭৮১৮। মুসলিম ১৭৮৬৪০, হিন্দু ১৬০৭২, খ্রিস্টান ২১ এবং অন্যান্য ৪৫৩। এ উপজেলায় পাহান আদিবাসি জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
জলাশয় নাগর ও ইরামতী নদী এবং রক্তদহ বিল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন আদমদীঘি থানা গঠিত হয় ১৮২১ সালে। থানা উপজেলায় রূপান্তরিত হয় ১৯৮৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ (সান্তাহার) | ৬ | ১০২ | ১৭৯ | ৩৯৯৪৬ | ১৫৫২৪০ | ১১৫৬ | ৫৭.৬ (২০০১) | ৫২.৭ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |||
১০.২০ (২০০১) | ৯ | ৩৫ | ৩১০৩৭ | ২৯৬৯ (২০০১) | ৬২.১ |
উপজেলা শহর | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||||
৪.৯৩ (২০০১) | ৫ | ৮৯০৯ | ১৬৪৪ (২০০১) | ৬১.৩ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
আদমদীঘি ১৩ | ৬৫৬০ | ১৫৮১৩ | ১৫২৩৩ | ৫৬.৫ | ||||
কুন্ডগ্রাম ৫৪ | ৭২৬৫ | ১২১৫৬ | ১২৭২১ | ৫২.৩ | ||||
চম্পাপুর ২৭ | ৭৬৭৪ | ১২১২২ | ১২২৪৪ | ৪৯.১ | ||||
ছাতিয়ানগ্রাম ৪০ | ৬৮২৪ | ১৪৭৯৬ | ১৫০৭২ | ৫৬.১ | ||||
নসরতপুর ৬৭ | ৫৯২০ | ১৪২৪৯ | ১৪৩৬১ | ৫৩.১ | ||||
সান্তাহার ৮১ | ৪৯৫৪ | ১২৫১৯ | ১২৮৬৩ | ৫০.২ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ কাবোই রাজবাড়ি ও কালাচাঁদ মন্দির।
মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ শোনার পর এখানকার বাঙালিরা প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করে। তারা সান্তাহার-বগুড়া কাঁচা সড়কের দুপাশের রাস্তা কেটে ব্যারিকেড তৈরি করে এবং রেললাইন-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে। সান্তাহার জিআরপি থানার অবাঙালি হাবিলদার হারুনের নেতৃত্বে বিহারি পুলিশরা অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র নিয়ে বাঙালিদের ওপর আক্রমণ করে। এতে ৩জন বাঙালি নিহত হয়। এরূপ পরিস্থিতিতে তৎকালীন আদমদীঘি থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে রানীনগর থানার অস্ত্রাগার ভেঙে বিহারিদের ওপর আক্রমণ করা হয়। এপ্রিল মাসে বাঙালিরা অবাঙালিদের ওপর আক্রমণ করলে প্রায় ৩০ হাজার অবাঙালি নিহত হয়। এ মাসেই পাকবাহিনী সান্তাহারের বেশসংখ্যক নিরীহ বাঙালিকে হত্যা করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনী স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে। ১৪ ডিসেম্বর এ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়। উপজেলায় ১টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।
বিস্তারিত দেখুন আদমদীঘি উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩১২, মন্দির ২১, গির্জা ২, মাযার ২। কুন্দগ্রামের শাহী মসজিদ, সান্তাহারের তারাপুর মসজিদ ও স্টেশন জামে মসজিদ উল্লেখযোগ্য।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়হার ৫৪.৬%; পুরুষ ৫৭.৯%, মহিলা ৫১.৩%। কলেজ ৭, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯৩, মাদ্রাসা ১৪, কমিউনিটি বিদ্যালয় ২, স্যাটেলাইট বিদ্যালয় ৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সান্তাহার কলেজ (১৯৬৭), আদমদীঘি আইপিজে উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), সান্তাহার বিপি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৯)।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ১০, সিনেমা হল ৩, প্রেসক্লাব ২।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ১৫.২৬%, অকৃষি শ্রমিক ০.৮৬%, ব্যবসা ১.২৯%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ০.৪২%, চাকরি ১৩.১১%, শিল্প ০.০৮%, নির্মাণ ৫১.৯৬%, ধর্মীয় সেবা ০.৪৩%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ২.৭৮% এবং অন্যান্য ১৩.৮১%।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, আলু, গম, সরিষা, বিভিন্ন শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি আউশ ধান।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, পেঁপে।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য হ্যাচারি ৩২, গবাদিপশু ৭৫, হাঁস-মুরগি ৩৩।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১২১.৪৩ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ০.১৩ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৩৯.১৯ কিমি; রেলপথ ২০ কিমি। রেলওয়ে জংশন ১ (সান্তাহার)।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পালকি, গরুর গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা চালকল ৫৯৬, বরফকল ১২, সাবান কারখানা ১।
কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প ৪৫৯, স্বর্ণশিল্প ২৯, লৌহশিল্প ৭৯, মৃৎশিল্প ২০৮।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২০, মেলা ৫। সান্তাহার রাধাকান্ত হাট, শাঁওইল হাট, আদমদীঘি হাট, বিহিগ্রাম হাট, নসরতপুর হাট, ছাতিয়ানগ্রাম হাট এবং সোনারায় মেলা, পান্না মেলা, চরক মেলা, রথের মেলা, সান্দিড়া মেলা, হালালিয়া মেলা, পুসিন্দা মেলা ও বৈশাখী মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, আলু, চাদর, নকশিকাঁথা, মাদুর।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৭৩.১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৪.৪%, ট্যাপ ২.৯% এবং অন্যান্য উৎস ২.৭%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫৯.৪% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৯.৫% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১১.১% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, রেলওয়ে হাসপাতাল ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৯, ক্লিনিক ১২।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৮৬৬ সালে অনাবৃষ্টির কারণে এবং ১৯০৫ ও ১৯০৬ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে অতিবৃষ্টির কারণে এ উপজেলার ব্যাপক ফসল নষ্ট হয়ে যায় ফলে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়।
এনজিও ব্র্যাক, আইটিসিএল, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ। [রেজাউল করিম]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; আদমদীঘি উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।