রায়, প্রফুল্লচন্দ্র: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Image:RayPrafullaChandra.jpg|thumb|right|প্রফুল্ল চন্দ্র রায়]]
'''রায়, প্রফুল্ল চন্দ্র''' (১৮৬১-১৯৪৪)  বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, জাতীয়তাবাদী স্বপ্নদ্রষ্টা। বর্তমান খুলনা এবং তদানীন্তন যশোর জেলার অন্তর্গত রাড়ুলি গ্রামের এক ভূস্বামী পরিবারে ১৮৬১ সালের ২ আগস্ট তাঁর জন্ম। প্রফুল­চন্দ্র ছিলেন হরিশচন্দ্র রায়ের তৃতীয় পুত্র। তাঁর পিতা ছিলেন একজন ছোটখাটো জমিদার। উদার দৃষ্টিভঙ্গির জন্য তিনি সুপরিচিত ছিলেন। গ্রামের স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে প্রফুল্ল চন্দ্র ১৮৭০ সালে হেয়ার স্কুলে (কলকাতা) ভর্তি হন। কিন্তু ভগ্ন স্বাস্থ্যের কারণে তিনি দুবছরের বেশি সেখানে লেখাপড়া করতে পারেন নি। দুবছর বিরতির পর তিনি পুনরায় আলবার্ট স্কুলে লেখাপড়া শুরু করেন এবং সেখান থেকে ১৮৭৮ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। অতঃপর তিনি মেট্টোপলিটান ইনস্টিটিউশনে (বর্তমান বিদ্যাসাগর কলেজ) ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ১৮৮০ সালে এফ.এ পরীক্ষায় পাস করেন। তিনি ১৮৮২ সালে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৮৮৫ সালে বি.এসসি এবং ১৮৮৭ সালে রসায়ন শাস্ত্রে ডি.এসসি ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি বেঙ্গল এডুকেশন সার্ভিসে যোগ দেন এবং ১৮৮৯ সালে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে রসায়নের অস্থায়ী সহকারী অধ্যাপক পদে যোগদান করেন।
'''রায়, প্রফুল্ল চন্দ্র''' (১৮৬১-১৯৪৪)  বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, জাতীয়তাবাদী স্বপ্নদ্রষ্টা। বর্তমান খুলনা এবং তদানীন্তন যশোর জেলার অন্তর্গত রাড়ুলি গ্রামের এক ভূস্বামী পরিবারে ১৮৬১ সালের ২ আগস্ট তাঁর জন্ম। প্রফুল­চন্দ্র ছিলেন হরিশচন্দ্র রায়ের তৃতীয় পুত্র। তাঁর পিতা ছিলেন একজন ছোটখাটো জমিদার। উদার দৃষ্টিভঙ্গির জন্য তিনি সুপরিচিত ছিলেন। গ্রামের স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে প্রফুল্ল চন্দ্র ১৮৭০ সালে হেয়ার স্কুলে (কলকাতা) ভর্তি হন। কিন্তু ভগ্ন স্বাস্থ্যের কারণে তিনি দুবছরের বেশি সেখানে লেখাপড়া করতে পারেন নি। দুবছর বিরতির পর তিনি পুনরায় আলবার্ট স্কুলে লেখাপড়া শুরু করেন এবং সেখান থেকে ১৮৭৮ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। অতঃপর তিনি মেট্টোপলিটান ইনস্টিটিউশনে (বর্তমান বিদ্যাসাগর কলেজ) ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ১৮৮০ সালে এফ.এ পরীক্ষায় পাস করেন। তিনি ১৮৮২ সালে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৮৮৫ সালে বি.এসসি এবং ১৮৮৭ সালে রসায়ন শাস্ত্রে ডি.এসসি ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি বেঙ্গল এডুকেশন সার্ভিসে যোগ দেন এবং ১৮৮৯ সালে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে রসায়নের অস্থায়ী সহকারী অধ্যাপক পদে যোগদান করেন।


১৯০২ সালে প্রফুল্ল চন্দ্র তাঁর বিখ্যাত History of Hindu Chemistry গ্রন্থ প্রকাশ করেন। ১৯০৪ সালে বইটির পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত সংস্করণ প্রকাশিত হয়। বইটির ব্যাপক জনপ্রিয়তায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ১৯০৯ সালে তিনি এর দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশ করেন। মারকিউরাস নাইট্রাইট তৈরির ক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য বৈজ্ঞানিক পরিমন্ডলে প্রফুল্ল চন্দ্র একজন বিজ্ঞানী হিসেবে বিশেষ মর্যাদা লাভ করেন। বিজ্ঞান গবেষণায় তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় ১৯১২ সালে তাঁকে সম্মানসূচক ডি.এসসি ডিগ্রি প্রদান করে। ব্রিটিশ সরকার প্রথমে তাঁকে রাজকীয় খেতাব সি.আই.ই এবং পরে ১৯১৯ সালে ‘নাইট’ উপাধি দিয়ে সম্মানিত করেন। ১৯১৬ সালে প্রফুল্ল চন্দ্র [[প্রেসিডেন্সি কলেজ|প্রেসিডেন্সি কলেজ]] ছেড়ে রসায়নের অধ্যাপক হিসেবে নব প্রতিষ্ঠিত ‘ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি কলেজ অব সায়েন্স’-এ যোগদান করেন। ১৯২০ সালে তিনি ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেসের জেনারেল প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।  
১৯০২ সালে প্রফুল্ল চন্দ্র তাঁর বিখ্যাত History of Hindu Chemistry গ্রন্থ প্রকাশ করেন। ১৯০৪ সালে বইটির পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত সংস্করণ প্রকাশিত হয়। বইটির ব্যাপক জনপ্রিয়তায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ১৯০৯ সালে তিনি এর দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশ করেন। মারকিউরাস নাইট্রাইট তৈরির ক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য বৈজ্ঞানিক পরিমন্ডলে প্রফুল্ল চন্দ্র একজন বিজ্ঞানী হিসেবে বিশেষ মর্যাদা লাভ করেন। বিজ্ঞান গবেষণায় তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় ১৯১২ সালে তাঁকে সম্মানসূচক ডি.এসসি ডিগ্রি প্রদান করে। ব্রিটিশ সরকার প্রথমে তাঁকে রাজকীয় খেতাব সি.আই.ই এবং পরে ১৯১৯ সালে ‘নাইট’ উপাধি দিয়ে সম্মানিত করেন। ১৯১৬ সালে প্রফুল্ল চন্দ্র [[প্রেসিডেন্সি কলেজ|প্রেসিডেন্সি কলেজ]] ছেড়ে রসায়নের অধ্যাপক হিসেবে নব প্রতিষ্ঠিত ‘ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি কলেজ অব সায়েন্স’-এ যোগদান করেন। ১৯২০ সালে তিনি ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেসের জেনারেল প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।  
[[Image:RayPrafullaChandra.jpg|thumb|right|প্রফুল্ল চন্দ্র রায়]]


বিজ্ঞানের উন্নয়নে অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ কলকাতা, বেনারস এবং [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়|ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]] পরপর তাঁকে সম্মানসূচক ডি.এসসি ডিগ্রি প্রদান করে। ১৯৩২ সালে তাঁর আত্মজীবনী Life and Experiences of a Bengali Chemist-এর প্রথম খন্ড এবং ১৯৩৫ সালে দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশিত হয়। ১৯৩৬ সালে ৭৫ বছর বয়সে তিনি [[কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়|কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়]] থেকে রসায়নের ‘পালিত অধ্যাপক’ হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন এবং ১৯৪৪ সালের ১৬ জুন তারিখে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি একজন ‘এমেরিটাস’ প্রফেসর হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
বিজ্ঞানের উন্নয়নে অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ কলকাতা, বেনারস এবং [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়|ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]] পরপর তাঁকে সম্মানসূচক ডি.এসসি ডিগ্রি প্রদান করে। ১৯৩২ সালে তাঁর আত্মজীবনী Life and Experiences of a Bengali Chemist-এর প্রথম খন্ড এবং ১৯৩৫ সালে দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশিত হয়। ১৯৩৬ সালে ৭৫ বছর বয়সে তিনি [[কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়|কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়]] থেকে রসায়নের ‘পালিত অধ্যাপক’ হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন এবং ১৯৪৪ সালের ১৬ জুন তারিখে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি একজন ‘এমেরিটাস’ প্রফেসর হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।


বিজ্ঞান জগতের বাইরে প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের বিশেষ আগ্রহ ছিল সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে। তিনি মাতৃভাষার মাধ্যমে শিল্পকলা ও বিজ্ঞান চর্চায় অনুরাগী ছিলেন। তিনি বাংলা ভাষায় প্রচুর লিখেছেন এবং অন্যদেরকেও মাতৃভাষায় লেখার জন্য উৎসাহিত করেছেন। অনেক স্কুল ও কলেজ তাঁর কাছ থেকে আর্থিক ও অন্যান্য সাহায্য পেয়েছে। একজন জাতীয়তাবাদী হিসেবে তিনি আরও চেয়েছিলেন যে, শিল্প-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান স্থাপনের ক্ষেত্রে বাঙালিরা আরও এগিয়ে আসুক। তিনি নিজে ‘বেঙ্গল কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস’ নামক একটা কেমিক্যাল ফার্ম প্রতিষ্ঠা করে (১৯০১) দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। এটি ছিল বাঙালিদের দ্বারা স্থাপিত ও পরিচালিত অগ্রগামী শিল্প প্রতিষ্ঠান সমূহের একটি।'''  '''[সৈয়দ আলী ইমাম]
বিজ্ঞান জগতের বাইরে প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের বিশেষ আগ্রহ ছিল সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে। তিনি মাতৃভাষার মাধ্যমে শিল্পকলা ও বিজ্ঞান চর্চায় অনুরাগী ছিলেন। তিনি বাংলা ভাষায় প্রচুর লিখেছেন এবং অন্যদেরকেও মাতৃভাষায় লেখার জন্য উৎসাহিত করেছেন। অনেক স্কুল ও কলেজ তাঁর কাছ থেকে আর্থিক ও অন্যান্য সাহায্য পেয়েছে। একজন জাতীয়তাবাদী হিসেবে তিনি আরও চেয়েছিলেন যে, শিল্প-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান স্থাপনের ক্ষেত্রে বাঙালিরা আরও এগিয়ে আসুক। তিনি নিজে ‘বেঙ্গল কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস’ নামক একটা কেমিক্যাল ফার্ম প্রতিষ্ঠা করে (১৯০১) দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। এটি ছিল বাঙালিদের দ্বারা স্থাপিত ও পরিচালিত অগ্রগামী শিল্প প্রতিষ্ঠান সমূহের একটি। [সৈয়দ আলী ইমাম]


[[en:Ray, Prafulla Chandra]]
[[en:Ray, Prafulla Chandra]]

০৬:৫৭, ৯ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

প্রফুল্ল চন্দ্র রায়

রায়, প্রফুল্ল চন্দ্র (১৮৬১-১৯৪৪)  বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, জাতীয়তাবাদী স্বপ্নদ্রষ্টা। বর্তমান খুলনা এবং তদানীন্তন যশোর জেলার অন্তর্গত রাড়ুলি গ্রামের এক ভূস্বামী পরিবারে ১৮৬১ সালের ২ আগস্ট তাঁর জন্ম। প্রফুল­চন্দ্র ছিলেন হরিশচন্দ্র রায়ের তৃতীয় পুত্র। তাঁর পিতা ছিলেন একজন ছোটখাটো জমিদার। উদার দৃষ্টিভঙ্গির জন্য তিনি সুপরিচিত ছিলেন। গ্রামের স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে প্রফুল্ল চন্দ্র ১৮৭০ সালে হেয়ার স্কুলে (কলকাতা) ভর্তি হন। কিন্তু ভগ্ন স্বাস্থ্যের কারণে তিনি দুবছরের বেশি সেখানে লেখাপড়া করতে পারেন নি। দুবছর বিরতির পর তিনি পুনরায় আলবার্ট স্কুলে লেখাপড়া শুরু করেন এবং সেখান থেকে ১৮৭৮ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। অতঃপর তিনি মেট্টোপলিটান ইনস্টিটিউশনে (বর্তমান বিদ্যাসাগর কলেজ) ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ১৮৮০ সালে এফ.এ পরীক্ষায় পাস করেন। তিনি ১৮৮২ সালে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৮৮৫ সালে বি.এসসি এবং ১৮৮৭ সালে রসায়ন শাস্ত্রে ডি.এসসি ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি বেঙ্গল এডুকেশন সার্ভিসে যোগ দেন এবং ১৮৮৯ সালে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে রসায়নের অস্থায়ী সহকারী অধ্যাপক পদে যোগদান করেন।

১৯০২ সালে প্রফুল্ল চন্দ্র তাঁর বিখ্যাত History of Hindu Chemistry গ্রন্থ প্রকাশ করেন। ১৯০৪ সালে বইটির পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত সংস্করণ প্রকাশিত হয়। বইটির ব্যাপক জনপ্রিয়তায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ১৯০৯ সালে তিনি এর দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশ করেন। মারকিউরাস নাইট্রাইট তৈরির ক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য বৈজ্ঞানিক পরিমন্ডলে প্রফুল্ল চন্দ্র একজন বিজ্ঞানী হিসেবে বিশেষ মর্যাদা লাভ করেন। বিজ্ঞান গবেষণায় তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় ১৯১২ সালে তাঁকে সম্মানসূচক ডি.এসসি ডিগ্রি প্রদান করে। ব্রিটিশ সরকার প্রথমে তাঁকে রাজকীয় খেতাব সি.আই.ই এবং পরে ১৯১৯ সালে ‘নাইট’ উপাধি দিয়ে সম্মানিত করেন। ১৯১৬ সালে প্রফুল্ল চন্দ্র প্রেসিডেন্সি কলেজ ছেড়ে রসায়নের অধ্যাপক হিসেবে নব প্রতিষ্ঠিত ‘ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি কলেজ অব সায়েন্স’-এ যোগদান করেন। ১৯২০ সালে তিনি ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেসের জেনারেল প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

বিজ্ঞানের উন্নয়নে অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ কলকাতা, বেনারস এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরপর তাঁকে সম্মানসূচক ডি.এসসি ডিগ্রি প্রদান করে। ১৯৩২ সালে তাঁর আত্মজীবনী Life and Experiences of a Bengali Chemist-এর প্রথম খন্ড এবং ১৯৩৫ সালে দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশিত হয়। ১৯৩৬ সালে ৭৫ বছর বয়সে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নের ‘পালিত অধ্যাপক’ হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন এবং ১৯৪৪ সালের ১৬ জুন তারিখে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি একজন ‘এমেরিটাস’ প্রফেসর হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।

বিজ্ঞান জগতের বাইরে প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের বিশেষ আগ্রহ ছিল সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে। তিনি মাতৃভাষার মাধ্যমে শিল্পকলা ও বিজ্ঞান চর্চায় অনুরাগী ছিলেন। তিনি বাংলা ভাষায় প্রচুর লিখেছেন এবং অন্যদেরকেও মাতৃভাষায় লেখার জন্য উৎসাহিত করেছেন। অনেক স্কুল ও কলেজ তাঁর কাছ থেকে আর্থিক ও অন্যান্য সাহায্য পেয়েছে। একজন জাতীয়তাবাদী হিসেবে তিনি আরও চেয়েছিলেন যে, শিল্প-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান স্থাপনের ক্ষেত্রে বাঙালিরা আরও এগিয়ে আসুক। তিনি নিজে ‘বেঙ্গল কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস’ নামক একটা কেমিক্যাল ফার্ম প্রতিষ্ঠা করে (১৯০১) দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। এটি ছিল বাঙালিদের দ্বারা স্থাপিত ও পরিচালিত অগ্রগামী শিল্প প্রতিষ্ঠান সমূহের একটি। [সৈয়দ আলী ইমাম]