হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট
হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট বাংলাদেশের হিন্দুদের ধর্মীয় কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। এর মুখ্য উদ্দেশ্য হিন্দুদের ধর্মচর্চায় এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও সংরক্ষণ কাজে সহায়তা করা। এর পরিচালনায় রয়েছে ২২ সদস্যবিশিষ্ট একটি ট্রাস্টিবোর্ড। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী পদাধিকার বলে এর সভাপতি। অন্যন্যা সদস্য দেশের ২১টি বৃহত্তর জেলা থেকে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় সরকার কর্তৃক মনোনীত হন। ট্রাস্টিবোর্ডের কার্যকাল তিন বছর।
প্রতিষ্ঠাকালে ট্রাস্টের মূলধন ছিল এক কোটি টাকা, ২০০০-২০০১ অর্থ বছরে তার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে হয় নয় কোটি টাকা। এ অর্থ বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে স্থায়ী আমানত হিসেবে জমা রাখা হয়েছে। প্রতি বছর এই জমাকৃত অর্থের লভ্যাংশ থেকে হিন্দুদের বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব পালন উপলক্ষে এবং উপাসনালয়ের উন্নয়নে অনুদান দেওয়া হয়। তবে প্রয়োজনের তুলনায় এ অর্থ যথেষ্ট নয় বলে সরকার ১৯৯৯ সাল থেকে বাৎসরিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় অতিরিক্ত আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের বিধান প্রবর্তন করেছে।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে ট্রাস্ট যেসব উন্নয়নমূলক কাজ করেছে সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, মানিকগঞ্জের মানিকনগর গ্রামের ঐতিহাসিক বাসুদেব মূর্তি যথাস্থানে সংরক্ষণ, ঢাকেশ্বরী মন্দির ও দিনাজপুরের কান্তজী মন্দিরের সংস্কার সাধন এবং ধামরাইয়ের ঐতিহাসিক যশোমাধবের রথোৎসবের পৃষ্ঠপোষণ। ট্রাস্টের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিরা ১৯৯৮ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত বিখ্যাত কুম্ভমেলায় অংশগ্রহণ করেন।
ট্রাস্ট হিন্দুদের মন্দিরভিত্তিক একটি গণশিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছে, যা তাদের সার্বিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। এছাড়া ট্রাস্টের একটি গ্রন্থাগারও রয়েছে, যার পুস্তক সংখ্যা দুশতাধিক। তবে স্থায়ী কার্যালয়ের অভাবে এ গ্রন্থাগার সকলের জন্য উন্মুক্ত নয়। ট্রাস্টের তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে প্রায় বিশ হাজার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টির লক্ষ্যে ট্রাস্ট এবং সরকার প্রতি বছর বিভিন্ন অংকের আর্থিক অনুদান দিয়ে থাকে, যার দ্বারা নানা প্রকার সংস্কার ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড পরিচালিত হয়। [মনোরঞ্জন রাজবংশী]