হাসান, আবুল
হাসান, আবুল (১৯৪৭-১৯৭৫) কবি, সাংবাদিক। ১৯৪৭ সালের ৪ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়ার বর্ণি গ্রামে মাতুলালয়ে তাঁর জন্ম। তাঁর পৈতৃক নিবাস পিরোজপুর জেলার নাজিরপুরের ঝনঝনিয়া গ্রামে। তাঁর পিতা আলতাফ হোসেন মিয়া ছিলেন একজন পুলিশ অফিসার। তাঁর প্রকৃত নাম আবুল হোসেন মিয়া, আর সাহিত্যিক নাম আবুল হাসান।
আবুল হাসান ঢাকার আরমানিটোলা সরকারি বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৩ সালে এসএসসি পাস করেন। পরে বরিশালের বিএম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে অনার্স নিয়ে বিএ শ্রেণীতে ভর্তি হন, কিন্তু পরীক্ষা শেষ না করেই ১৯৬৯ সালে দৈনিক ইত্তেফাকের বার্তাবিভাগে যোগদান করেন।
পরে তিনি গণবাংলা (১৯৭২-৭৩) এবং দৈনিক জনপদ-এ (১৯৭৩-৭৪) সহকারী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। আবুল হাসান অল্প বয়সেই একজন সৃজনশীল কবি হিসেবে খ্যাতিলাভ করেন। মাত্র এক দশকের কাব্যসাধনায় তিনি আধুনিক বাংলা কাব্যের ইতিহাসে এক বিশিষ্ট স্থান অধিকার করেন। আত্মত্যাগ, দুঃখবোধ, মৃত্যুচেতনা, বিচ্ছিন্নতাবোধ, নিঃসঙ্গচেতনা, স্মৃতিমুগ্ধতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আবুল হাসানের কবিতায় সার্থকভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। ১৯৭০ সালে এশীয় কবিতা প্রতিযোগিতায় তিনি প্রথম হন। তাঁর উলেখযোগ্য গ্রন্থ: রাজা যায় রাজা আসে (১৯৭২), যে তুমি হরণ করো (১৯৭৪) ও পৃথক পালঙ্ক (১৯৭৫)। মৃত্যুর পর কাব্যনাট্য ওরা কয়েকজন (১৯৮৮) ও আবুল হাসান গল্প-সংগ্রহ (১৯৯০) প্রকাশিত হয়। তিনি কবিতার জন্য মরণোত্তর ‘বাংলা একাডেমী পুরস্কার’ (১৯৭৫) এবং বাংলাদেশ সরকারের ‘একুশে পদক’ (১৯৮২) লাভ করেন। ১৯৭৫ সালের ২৬ নভেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। [শহিদুল ইসলাম]