হাকিমপুর উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
(একজন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''হাকিমপুর উপজেলা '''([[দিনাজপুর জেলা|দিনাজপুর জেলা]])  আয়তন: ৯৯.৯২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°১৪´ থেকে ২৫°২৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৬´ থেকে ৮৯°০৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) ও বিরামপুর উপজেলা, দক্ষিণে পাঁচবিবি উপজেলা, পূর্বে ঘোড়াঘাট উপজেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ও বিরামপুর উপজেলা।
'''হাকিমপুর উপজেলা '''([[দিনাজপুর জেলা|দিনাজপুর জেলা]])  আয়তন: ৯৯.৯২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°১৪´ থেকে ২৫°২৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৬´ থেকে ৮৯°০৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) ও বিরামপুর উপজেলা, দক্ষিণে পাঁচবিবি উপজেলা, পূর্বে ঘোড়াঘাট উপজেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ও বিরামপুর উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ৮৩০২৮; পুরুষ ৪২৯২২, মহিলা ৪০১০৬। মুসলিম ৭৫৯০১, হিন্দু ৪৭০১, বৌদ্ধ ১০৫৯, খ্রিস্টান ১৩৩ এবং অন্যান্য ১২৩৪।
''জনসংখ্যা'' ৯২৫৯৯; পুরুষ ৪৭১৬২, মহিলা ৪৫৪৩৭। মুসলিম ৮৪৮৭৮, হিন্দু ৫১০৮, বৌদ্ধ ২৫, খ্রিস্টান ১৩৭২ এবং অন্যান্য ১২১৬।


''জলাশয়'' প্রধান নদী: ছোট যমুনা, তুলসীগঙ্গা।
''জলাশয়'' প্রধান নদী: ছোট যমুনা, তুলসীগঙ্গা।
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম  || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম  || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| ১ || ৩ || ৬৯  || ৮০  || ২৫০৩৮  || ৫৭৯৯০  || ৮৩১  || ৫৪.৩  || ৪৪.
| ১ || ৩ || ৫৬ || ৮৩ || ২৮৪১১ || ৬৪১৮৮ || ৯২৭ || ৬৩.|| ৫০.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
২৪ নং লাইন: ২৪ নং লাইন:
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  || মহল্লা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  || মহল্লা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ১৬.৩৯  || ৯ || ১৬  || ২৫০৩৮  || ১৫২৮  || ৫৪.
| ১৬.৪০ || ৯ || ১৭ || ২৮৪১১ || ১৭৩২ || ৬৩.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
৩০ নং লাইন: ৩০ নং লাইন:
| colspan="9" | ইউনিয়ন
| colspan="9" | ইউনিয়ন
|-
|-
! rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-
|-
| আলীহাট ১৩ || ৯৭৩৪ || ১০১৫১ || ৯৬৫৩  || ৪৪.৮৫
| আলীহাট ১৩ || ৯৭৩৪ || ১১১১৭ || ১০৮৫৭ || ৫১.
 
|-
|-
| খাট্টা মাধবপাড়া ৮১ || ৪১৮৪ || ৮৯২১ || ৮৪৫০  || ৪২.৭৮
| খাট্টা মাধবপাড়া ৮১ || ৪১৮৪ || ৯৬৬৬ || ৯৬৮২ || ৫৪.
 
|-
|-
| বোয়ালদার ৪০ || ৬৭২৩ || ১০৫৭৭ || ১০২৩৮  || ৪৪.৬০
| বোয়ালদার ৪০ || ৬৭২৩ || ১১৩৭৭ || ১১৪৮৯ || ৪৬.
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:HakimpurUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
[[Image:HakimpurUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' গুপ্তযুগের তাম্রলিপি (বৈগ্রাম)।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' গুপ্তযুগের তাম্রলিপি (বৈগ্রাম)।


''ঐতিহাসিক ঘটনাবলি''  ১৯৩৩ সালে ব্রিটিশ-ভারত সশস্ত্র আন্দোলনের সময় ‘অনুশীলন ও যুগান্তর’ নামক বিপ­বী দল হিলি স্টেশনে দার্জিলিং মেইল লুট করে অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ হস্তগত করে স্টেশনটি জ্বালিয়ে দেয়। ১৯৭১ সালের ১৯ এপ্রিল পাকবাহিনী হিলি আক্রমণ করে। হাকিমপুর ছাতনী নামক স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পাকবাহিনী বানিয়াল, ছাতনী, জারগই, সাদুরিয়া গ্রামে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে পুরুষদের হত্যা করে এবং যুবতীদের ধরে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। যুদ্ধচলাকালীন সময়ে মুক্তিযোদ্ধারা ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের পথ হিসেবে হিলি ব্যবহার করে। ২১ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে প্রায় ৩৪৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১১ ডিসেম্বর হাকিমপুর শত্রুমুক্ত হয়।
''ঐতিহাসিক ঘটনা'' ১৯৩৩ সালে ব্রিটিশ-ভারত সশস্ত্র আন্দোলনের সময় ‘অনুশীলন ও যুগান্তর’ নামক বিপ্লবী দল হিলি স্টেশনে দার্জিলিং মেইল লুট করে অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ হস্তগত করে স্টেশনটি জ্বালিয়ে দেয়।  
 
''মুক্তিযুদ্ধ''  ১৯৭১ সালের ১৯ এপ্রিল পাকবাহিনী হিলি আক্রমণ করে। হাকিমপুর ছাতনী নামক স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পাকবাহিনী বানিয়াল, ছাতনী, জারগই, সাদুরিয়া গ্রামে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে পুরুষদের হত্যা করে এবং যুবতীদের ধরে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। যুদ্ধচলাকালীন সময়ে মুক্তিযোদ্ধারা ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের পথ হিসেবে হিলি ব্যবহার করে। ২১ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে প্রায় ৩৪৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১১ ডিসেম্বর হাকিমপুর শত্রুমুক্ত হয়।
 
''বিস্তারিত দেখুন''  হাকিমপুর উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১০।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ১৪০, মন্দির ২২, গির্জা ৩।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ১৪০, মন্দির ২২, গির্জা ৩।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪৭.%; পুরুষ ৫২.%, মহিলা ৪১.%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪১, মাদ্রাসা ১৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: হাকিমপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৪), হাকিমপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৫), জালালপুর বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ, বাংলা হিলি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪১), বাংলা হিলি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪১), বোয়ালদার উচ্চ  বিদ্যালয় (১৯৪৯), হাতিশোঁ আদিবাসী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (২০০১), পাউশগাড়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৭৪)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৫৪.%; পুরুষ ৫৯.%, মহিলা ৫০.%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪১, মাদ্রাসা ১৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: হাকিমপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৪), হাকিমপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৫), জালালপুর বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ, বাংলা হিলি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪১), বাংলা হিলি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪১), বোয়ালদার উচ্চ  বিদ্যালয় (১৯৪৯), হাতিশোঁ আদিবাসী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (২০০১), পাউশগাড়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৭৪)।


''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' সাপ্তাহিক: জিরো পয়েন্ট, হিলি।
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' সাপ্তাহিক: জিরো পয়েন্ট, হিলি।
৭২ নং লাইন: ৭৩ নং লাইন:
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ১২, গবাদিপশু ২, হাঁস-মুরগি ২।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ১২, গবাদিপশু ২, হাঁস-মুরগি ২।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ২৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা কিমি; রেলপথ কিমি।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৫৭.৮ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৪ কিমি, কাঁচারাস্তা ১০৭ কিমি; রেলপথ ১২ কিমি; নৌপথ ২ কিমি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।
৮৪ নং লাইন: ৮৫ নং লাইন:
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  ধান, গম, আলু।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  ধান, গম, আলু।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩৫.১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫৮.১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।  


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৫.৬%, পুকুর ০.০৬%, ট্যাপ ০.২৮% এবং অন্যান্য .০৬%।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৭.৬%, ট্যাপ ০.% এবং অন্যান্য .%।  


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ১৭.১৯% (গ্রামে ৯.৯২% এবং শহরে ৩৫.৬১%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৬.৯১% (গ্রামে ৩৬.০৭% এবং শহরে ৩৯.০৩%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৪৫.৯০% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৬০.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৭.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১১.% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র''  হাসপাতাল ১, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৩।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র''  হাসপাতাল ১, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৩।
৯৪ নং লাইন: ৯৫ নং লাইন:
''এনজিও'' ব্র্যাক, কেয়ার, আশা, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ।  [রেজাউল করিম]
''এনজিও'' ব্র্যাক, কেয়ার, আশা, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ।  [রেজাউল করিম]


'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; হাকিমপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; হাকিমপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Hakimpur Upazila]]
[[en:Hakimpur Upazila]]

১৬:৪৪, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

হাকিমপুর উপজেলা (দিনাজপুর জেলা)  আয়তন: ৯৯.৯২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°১৪´ থেকে ২৫°২৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৬´ থেকে ৮৯°০৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) ও বিরামপুর উপজেলা, দক্ষিণে পাঁচবিবি উপজেলা, পূর্বে ঘোড়াঘাট উপজেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ও বিরামপুর উপজেলা।

জনসংখ্যা ৯২৫৯৯; পুরুষ ৪৭১৬২, মহিলা ৪৫৪৩৭। মুসলিম ৮৪৮৭৮, হিন্দু ৫১০৮, বৌদ্ধ ২৫, খ্রিস্টান ১৩৭২ এবং অন্যান্য ১২১৬।

জলাশয় প্রধান নদী: ছোট যমুনা, তুলসীগঙ্গা।

প্রশাসন হাকিমপুর থানা গঠিত হয় ১৯৫০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
৫৬ ৮৩ ২৮৪১১ ৬৪১৮৮ ৯২৭ ৬৩.৬ ৫০.৭
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১৬.৪০ ১৭ ২৮৪১১ ১৭৩২ ৬৩.৬
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আলীহাট ১৩ ৯৭৩৪ ১১১১৭ ১০৮৫৭ ৫১.৭
খাট্টা মাধবপাড়া ৮১ ৪১৮৪ ৯৬৬৬ ৯৬৮২ ৫৪.৪
বোয়ালদার ৪০ ৬৭২৩ ১১৩৭৭ ১১৪৮৯ ৪৬.৬

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ গুপ্তযুগের তাম্রলিপি (বৈগ্রাম)।

ঐতিহাসিক ঘটনা ১৯৩৩ সালে ব্রিটিশ-ভারত সশস্ত্র আন্দোলনের সময় ‘অনুশীলন ও যুগান্তর’ নামক বিপ্লবী দল হিলি স্টেশনে দার্জিলিং মেইল লুট করে অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ হস্তগত করে স্টেশনটি জ্বালিয়ে দেয়।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ১৯ এপ্রিল পাকবাহিনী হিলি আক্রমণ করে। হাকিমপুর ছাতনী নামক স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পাকবাহিনী বানিয়াল, ছাতনী, জারগই, সাদুরিয়া গ্রামে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে পুরুষদের হত্যা করে এবং যুবতীদের ধরে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। যুদ্ধচলাকালীন সময়ে মুক্তিযোদ্ধারা ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের পথ হিসেবে হিলি ব্যবহার করে। ২১ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে প্রায় ৩৪৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১১ ডিসেম্বর হাকিমপুর শত্রুমুক্ত হয়।

বিস্তারিত দেখুন হাকিমপুর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১০।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ১৪০, মন্দির ২২, গির্জা ৩।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৪.৭%; পুরুষ ৫৯.২%, মহিলা ৫০.১%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪১, মাদ্রাসা ১৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: হাকিমপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৪), হাকিমপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৫), জালালপুর বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ, বাংলা হিলি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪১), বাংলা হিলি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪১), বোয়ালদার উচ্চ  বিদ্যালয় (১৯৪৯), হাতিশোঁ আদিবাসী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (২০০১), পাউশগাড়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৭৪)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সাপ্তাহিক: জিরো পয়েন্ট, হিলি।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, ক্লাব ১২, প্রেসক্লাব ২, শিল্পকলা একাডেমী ১, সিনেমা হল ৩।

বিনোদন কেন্দ্র রত্নপুরী।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৪.২৬%, অকৃষি শ্রমিক ২.৮৫%, শিল্প ০.৬৪%, ব্যবসা ২৩.৭৪%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৪.৯১%, চাকরি ৪.৮২%, নির্মাণ ০.৬৯%, ধর্মীয় সেবা ০.১৫%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২৬% এবং অন্যান্য ৭.৬৮%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫২.৯২%, ভূমিহীন ৪৭.০৮%। শহরে ৪৩.২% এবং গ্রামে ৫৬.৭৬% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, আলু, পাট, আখ, তৈলবীজ।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  আউশ ধান, তামাক, সরিষা, কলাই।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কলা, কাঁঠাল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ১২, গবাদিপশু ২, হাঁস-মুরগি ২।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৫৭.৮ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৪ কিমি, কাঁচারাস্তা ১০৭ কিমি; রেলপথ ১২ কিমি; নৌপথ ২ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা রাইস মিল, হাসকিং মিল, বিড়ি ফ্যাক্টরি, রুটি ফ্যাক্টরি, লজেন্স ফ্যাক্টরি।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৩২, মেলা ৩। হিলি হাট, ডাঙ্গাপাড়া হাট এবং মঙ্গলার পাড় মেলা, জালালপুরের মেলা ও ডাঙ্গাপাড়া মেলা উলে­খযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, গম, আলু।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫৮.১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৭.৬%, ট্যাপ ০.৬% এবং অন্যান্য ১.৮%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৬০.৭% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৭.৯% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১১.৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ১, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৩।

এনজিও ব্র্যাক, কেয়ার, আশা, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ।  [রেজাউল করিম]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; হাকিমপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।