হাইড্রোকার্বন উৎপাদন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
৪ নং লাইন: ৪ নং লাইন:
হাইড্রেকার্বন উৎপাদন ‘তেল বাতায়ন’ (oil window) ও ‘গ্যাস-বাতায়ন’ (gas window) নামে পরিচিত নির্দিষ্ট গভীরতার মধ্যে সংঘটিত নির্দিষ্ট তাপমাত্রার মধ্যে ভূগর্ভের জৈব সমৃদ্ধ শিলায় সংঘটিত হয়। বাংলাদেশে তেল ও গ্যাস বাতায়ন অববাহিকীয় অঞ্চলে প্রায় ৫ থেকে ৮ কিলোমিটার গভীরতার মধ্যে সংঘটিত হয় বলে অনুমিত হয়। জৈব পদার্থে সমৃদ্ধ শিলারাশি এই গভীরতায় হাইড্রোকার্বন উৎপাদন করে, যা পরবর্তীতে ঊর্ধ্বমুখে স্থানান্তরিত হয়ে ১ থেকে ৩ কিলোমিটার গভীরতা সীমায় বর্তমানের ধারক শিলাস্তরে (reservoir rocks) সঞ্চিত হয়।
হাইড্রেকার্বন উৎপাদন ‘তেল বাতায়ন’ (oil window) ও ‘গ্যাস-বাতায়ন’ (gas window) নামে পরিচিত নির্দিষ্ট গভীরতার মধ্যে সংঘটিত নির্দিষ্ট তাপমাত্রার মধ্যে ভূগর্ভের জৈব সমৃদ্ধ শিলায় সংঘটিত হয়। বাংলাদেশে তেল ও গ্যাস বাতায়ন অববাহিকীয় অঞ্চলে প্রায় ৫ থেকে ৮ কিলোমিটার গভীরতার মধ্যে সংঘটিত হয় বলে অনুমিত হয়। জৈব পদার্থে সমৃদ্ধ শিলারাশি এই গভীরতায় হাইড্রোকার্বন উৎপাদন করে, যা পরবর্তীতে ঊর্ধ্বমুখে স্থানান্তরিত হয়ে ১ থেকে ৩ কিলোমিটার গভীরতা সীমায় বর্তমানের ধারক শিলাস্তরে (reservoir rocks) সঞ্চিত হয়।


বাংলাদেশের ভূগর্ভে প্রধানত টারশিয়ারি যুগের (২০ লক্ষ থেকে ৬ কোটি ৬০ লক্ষ বছর পূর্বে) পাললিক শিলার অতি পুরু (প্রায় ২০ কিলোমিটার) স্তরক্রম রয়েছে। এই স্তরক্রম (নবীন থেকে প্রবীণ যথাক্রমে) টিপাম স্তরসমষ্টি, বোকা বিল স্তরসমষ্টি, ভূবন স্তরসমষ্টি, বরাইল স্তরসমষ্টি ও প্রাক-বরাইল ইয়োসিন স্তরক্রম নামে পরিচিত শিলা এককে বিভক্ত। টিপাম, বোকাবিল ও অধিকাংশ ভূবন শিলার জৈব পদার্থের পরিমাণ খুবই নগণ্য হওয়ায় এগুলোকে প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎস হিসেবে গণ্য করা হয় না। ৫ থেকে ৮ কিলোমিটার গভীরতায় অবস্থিত বরাইল শিলা এককের জৈবসমৃদ্ধ কর্দম শিলা (TOC ০.৬১ থেকে ২.৪%) রয়েছে। তাই ধারণা করা হয় তেল ও গ্যাস বাতায়নের মধ্যে অবস্থিত বরাইল কর্দম শিলা বাংলাদেশে প্রাপ্ত প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেল উৎপাদন করে। উৎপাদনের পর তেল ও গ্যাস কয়েক কিলোমিটার শিলাস্তর অতিক্রম করে ঊর্ধ্বমুখী স্থানান্তরণে ভূবন ও বোকা বিল শিলা এককের উপযুক্ত বেলেপাথর ধারকে পৌঁছে সঞ্চিত হচ্ছে। বরাইল কর্দম শিলার জৈব পদার্থসমূহ প্রধানত উদ্ভিদজাত। বহু ভূবিজ্ঞানী মনে করেন, হাইড্রোকার্বন উৎস শিলায় স্থলজ উদ্ভিদজাত জৈব পদার্থের অধিক্যহেতু বাংলাদেশে যে পরিমাণ গ্যাস রয়েছে, সে পরিমাণ তেল নেই। কারণ এই ধরনের জৈব পদার্থ কেবল প্রচুর গ্যাসই উৎপাদনে সক্ষম।
বাংলাদেশের ভূগর্ভে প্রধানত টারশিয়ারি যুগের (২০ লক্ষ থেকে ৬ কোটি ৬০ লক্ষ বছর পূর্বে) পাললিক শিলার অতি পুরু (প্রায় ২০ কিলোমিটার) স্তরক্রম রয়েছে। এই স্তরক্রম (নবীন থেকে প্রবীণ যথাক্রমে) টিপাম স্তরসমষ্টি, বোকা বিল স্তরসমষ্টি, ভূবন স্তরসমষ্টি, বরাইল স্তরসমষ্টি ও প্রাক-বরাইল ইয়োসিন স্তরক্রম নামে পরিচিত শিলা এককে বিভক্ত। টিপাম, বোকাবিল ও অধিকাংশ ভূবন শিলার জৈব পদার্থের পরিমাণ খুবই নগণ্য হওয়ায় এগুলোকে প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎস হিসেবে গণ্য করা হয় না। ৫ থেকে ৮ কিলোমিটার গভীরতায় অবস্থিত বরাইল শিলা এককের জৈবসমৃদ্ধ কর্দম শিলা (TOC ০.৬১ থেকে ২.৪%) রয়েছে। তাই ধারণা করা হয় তেল ও গ্যাস বাতায়নের মধ্যে অবস্থিত বরাইল কর্দম শিলা বাংলাদেশে প্রাপ্ত প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেল উৎপাদন করে। উৎপাদনের পর তেল ও গ্যাস কয়েক কিলোমিটার শিলাস্তর অতিক্রম করে ঊর্ধ্বমুখী স্থানান্তরণে ভূবন ও বোকা বিল শিলা এককের উপযুক্ত বেলেপাথর ধারকে পৌঁছে সঞ্চিত হচ্ছে। বরাইল কর্দম শিলার জৈব পদার্থসমূহ প্রধানত উদ্ভিদজাত। বহু ভূবিজ্ঞানী মনে করেন, হাইড্রোকার্বন উৎস শিলায় স্থলজ উদ্ভিদজাত জৈব পদার্থের অধিক্যহেতু বাংলাদেশে যে পরিমাণ গ্যাস রয়েছে, সে পরিমাণ তেল নেই। কারণ এই ধরনের জৈব পদার্থ কেবল প্রচুর গ্যাসই উৎপাদনে সক্ষম। [বদরুল ইমাম]


[বদরুল ইমাম]
''আরও দেখুন''  [[খনিজ সম্পদ|খনিজ সম্পদ]]।
 
আরও দেখুন [[খনিজ সম্পদ|খনিজ সম্পদ]]।


[[en:Hydrocarbon Generation]]
[[en:Hydrocarbon Generation]]

০৫:২৩, ২৯ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

হাইড্রোকার্বন উৎপাদন (Hydrocarbon Generation)  ভূগর্ভে তেল ও গ্যাসের উৎপাদন তিনটি প্রধান উপাদানের ওপর নির্ভর করে, যথা: (১) শিলায় জৈব পর্দাথের পরিমাণ: হাইড্রোকার্বন উৎপাদনের জন্য কর্দম শিলায় ন্যূনপক্ষে ০.৫% মোট জৈব কার্বন (Total Organic Content-TOC) থাকা প্রয়োজন; (২) জৈব পদার্থের ধরন (সামুদ্রিক জৈব পদার্থ তেল ও গ্যাস দুটোই উৎপাদনে সক্ষম, কিন্তু ভূমি উদ্ভূত উদ্ভিদ জাতীয় জৈব পদার্থ শুধু গ্যাস উৎপাদন করতে পারে); (৩) জৈব পদার্থের তাপীয় পরিপক্কতা, যা ভূগর্ভের তাপ থেকে আহরিত হয়।

হাইড্রেকার্বন উৎপাদন ‘তেল বাতায়ন’ (oil window) ও ‘গ্যাস-বাতায়ন’ (gas window) নামে পরিচিত নির্দিষ্ট গভীরতার মধ্যে সংঘটিত নির্দিষ্ট তাপমাত্রার মধ্যে ভূগর্ভের জৈব সমৃদ্ধ শিলায় সংঘটিত হয়। বাংলাদেশে তেল ও গ্যাস বাতায়ন অববাহিকীয় অঞ্চলে প্রায় ৫ থেকে ৮ কিলোমিটার গভীরতার মধ্যে সংঘটিত হয় বলে অনুমিত হয়। জৈব পদার্থে সমৃদ্ধ শিলারাশি এই গভীরতায় হাইড্রোকার্বন উৎপাদন করে, যা পরবর্তীতে ঊর্ধ্বমুখে স্থানান্তরিত হয়ে ১ থেকে ৩ কিলোমিটার গভীরতা সীমায় বর্তমানের ধারক শিলাস্তরে (reservoir rocks) সঞ্চিত হয়।

বাংলাদেশের ভূগর্ভে প্রধানত টারশিয়ারি যুগের (২০ লক্ষ থেকে ৬ কোটি ৬০ লক্ষ বছর পূর্বে) পাললিক শিলার অতি পুরু (প্রায় ২০ কিলোমিটার) স্তরক্রম রয়েছে। এই স্তরক্রম (নবীন থেকে প্রবীণ যথাক্রমে) টিপাম স্তরসমষ্টি, বোকা বিল স্তরসমষ্টি, ভূবন স্তরসমষ্টি, বরাইল স্তরসমষ্টি ও প্রাক-বরাইল ইয়োসিন স্তরক্রম নামে পরিচিত শিলা এককে বিভক্ত। টিপাম, বোকাবিল ও অধিকাংশ ভূবন শিলার জৈব পদার্থের পরিমাণ খুবই নগণ্য হওয়ায় এগুলোকে প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎস হিসেবে গণ্য করা হয় না। ৫ থেকে ৮ কিলোমিটার গভীরতায় অবস্থিত বরাইল শিলা এককের জৈবসমৃদ্ধ কর্দম শিলা (TOC ০.৬১ থেকে ২.৪%) রয়েছে। তাই ধারণা করা হয় তেল ও গ্যাস বাতায়নের মধ্যে অবস্থিত বরাইল কর্দম শিলা বাংলাদেশে প্রাপ্ত প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেল উৎপাদন করে। উৎপাদনের পর তেল ও গ্যাস কয়েক কিলোমিটার শিলাস্তর অতিক্রম করে ঊর্ধ্বমুখী স্থানান্তরণে ভূবন ও বোকা বিল শিলা এককের উপযুক্ত বেলেপাথর ধারকে পৌঁছে সঞ্চিত হচ্ছে। বরাইল কর্দম শিলার জৈব পদার্থসমূহ প্রধানত উদ্ভিদজাত। বহু ভূবিজ্ঞানী মনে করেন, হাইড্রোকার্বন উৎস শিলায় স্থলজ উদ্ভিদজাত জৈব পদার্থের অধিক্যহেতু বাংলাদেশে যে পরিমাণ গ্যাস রয়েছে, সে পরিমাণ তেল নেই। কারণ এই ধরনের জৈব পদার্থ কেবল প্রচুর গ্যাসই উৎপাদনে সক্ষম। [বদরুল ইমাম]

আরও দেখুন খনিজ সম্পদ