হরিণাকুন্ড উপজেলা

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৬:১৫, ৬ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Robot: Automated text replacement (-\|\s''জনসংখ্যা''\s\|\| +| জনসংখ্যা ||))

হরিণাকুন্ড উপজেলা (ঝিনাইদহ জেলা) আয়তন: ২২৭.১৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৩৩´ থেকে ২৩°৪৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৯´ থেকে ৮৯°১১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা, দক্ষিণে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা, পূর্বে শৈলকূপা উপজেলা, পশ্চিমে আলমডাঙ্গা ও চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৭২৪৯১; পুরুষ ৮৯৪৩৮, মহিলা ৮৩০৫৩। মুসলিম ১৬৩০১৩, হিন্দু ৯৪০০, বৌদ্ধ ৩৩ এবং অন্যান্য ৪৫।

জলাশয় কুমার ও নবগঙ্গা নদী এবং নারায়ণকান্দি, ঋণিখালী ও চাঁদপুর বাওড় উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন হরিণাকুন্ড থানা গঠিত হয় ১৮৭৯ সালে। বর্তমানে এটি উপজেলা।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
৭৪ ১২৪ ১৮৩৩২ ১৫৪১৫৯ ৭৫৯ ৪২.২ ৩৯.৩৮


উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১১.০২ ১০২৫২ ৯৩০ ৪২.২
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কাপাসহাটি ৬৩ ৯০৯০ ১১২১০ ১০২৮৩ ৪৩.২৬
চাঁদপুর ২১ ৮৩৬৬ ১২৭৫২ ১১৮২২ ৩৯.৬৯
জোড়াদহ ৫২ ৩৫০৫ ৬২৮০ ৫৮৮৬ ৩৭.৮১
তাহেরহুদা ৮৪ ৬৭২২ ১১৯৩৫ ১১০০৭ ৪১.৭৬
দৌলতপুর ৩১ ৮৯০৬ ১৪৩৯৫ ১৩৩০৫ ৩৯.৫১
ভায়না ১০ ৬০৯৭ ১০৯৩১ ১০০৮৪ ৩৭.৯২
রঘুনাথপুর ৭৩ ৭২৩৩ ১১০৪২ ১০৪২১ ৩৬.১৯
ফলসী ৪২ ৩২৮৪ ৪৮৭৮ ৪৫৫১ ৩৮.৮৬

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ হরিণাকুন্ড জমিদার বাড়ি, জোড়াদহ, ধুলিয়া, ভায়না, সোনাতনপুর ও হরিণাকুন্ডতে নীলকুঠির ধ্বংসাবশেষ।

ঐতিহাসিক ঘটনাবলি  এ উপজেলায় মরমী কবি লালন শাহ (১৭৭২-১৮৯০) এবং মরমী সাধক পাঞ্জু শাহ (১৮৫১) জন্মগ্রহণ করেন। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে বাঘা যতীন ও কিরণ রায় অংশ নেন। এ উপজেলার অধিকাংশ লোক নীল বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর উপজেলার শিতলির মাঠে পাকসেনাদের সঙ্গে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াই হয়।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন স্মৃতিস্তম্ভ ১ (উপজেলার ফুটবল মাঠের দক্ষিণ পাশে)।

হরিণাকুন্ড উপজেলা


ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ১২৫, মন্দির ১৬, গির্জা ১, তীর্থস্থান ১, মাযার ৫। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: জোড়াদহ গম্বুজ মসজিদ, শ্রীপুর মসজিদ, উপজেলা মসজিদ, পার্বতীপুর মসজিদ, আন্দুলিয়া মসজিদ, কুলবাড়ীয়া ফকির মাহমুদ বিশ্বাসের মাযার, ভবানীপুর কালীমন্দির।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪১.৪১%; পুরুষ ৪২%, মহিলা ৩৬.৮%। কলেজ ৫, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১২৯, মাদ্রাসা ৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সরকারি লালন শাহ কলেজ (১৯৭২), জোড়াদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৮৭২), হরিণাকুন্ড প্রিয়নাথ হাইস্কুল (১৮৭২), হরিণাকুন্ড পাইলট হাইস্কুল (১৯৪৫)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী আন্তরিক (অবলুপ্ত)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, নাট্যদল ৪, যাত্রাপার্টি ১, সিনেমা হল ৫, ক্লাব ৩৪।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭৮.৪৫%, অকৃষি শ্রমিক ২.২৯%, শিল্প ০.৭%, ব্যবসা ৯.৯৯%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৭১%, চাকরি ২.৮৬%, নির্মাণ ০.৬২%, ধর্মীয় সেবা ০.০৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১৭% এবং অন্যান্য ৩.১৪%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৭.৭৯%, ভূমিহীন ৩২.২১%। শহরে ৫৮.৮১% এবং গ্রামে ৬৮.৮৩% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, আখ, গম, পান, আলু, সরিষা, ডাল, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  রাই, তিসি, কাউন, যব, তিল।

প্রধান ফল-ফলাদিব আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, লিচু, জাম, জামরুল, খেজুর, নারিকেল, কুল, বেল, আতা, পেয়ারা।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৫, গবাদিপশু ২, হাঁস-মুরগি ৭।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১০৭.২৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৪৯.৫৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৩৮.৮৭ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি, মহিষের গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা চালকল, ডালকল, তেলকল, মসলাকল, ময়দাকল, মুড়িকল, বিস্কুট ফ্যাক্টরি।

কুটিরশিল্প মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, নকশিকাঁথা, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৬, মেলা ৩। হরিণাকুন্ড, পার্বতীপুর, ভবানীপুর, জোড়াদহ, পোড়াহাটি চরপাড়া, রিশখালী, দখলপুর, কুলবাড়ীয়া, নারায়ণকান্দি, সাতব্রীজ ও মান্দিয়া বাজার এবং চড়ক পূজার মেলা (কাপাশটিয়া) উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   ধান, পাট, আখ, পান, কলা, খেজুর গুড়, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৮.৮২% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৫.৩%, পুকুর ০.০৬%, ট্যাপ ০.৫০% এবং অন্যান্য ৪.১৪%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ১১.৮২% (গ্রামে ১১.০৭% ও শহরে ১৮.২৪%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪২.৫৩% (গ্রামে ৪২.৩৮% ও শহরে ৪৩.৮১%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ৪৫.৬৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৬, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ১১, কমিউনিটি ক্লিনিক ১৩।

এনজিও ব্র্যাক।  [টিপু সুলতান বারী]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; হরিণাকুন্ড উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।