হবিগঞ্জ জেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
(একই ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''হবিগঞ্জ জেলা''' ([[সিলেট বিভাগ|সিলেট বিভাগ]])  আয়তন: ২৬৩৬.৫৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৫৮´ থেকে ২৪°৪২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°০৯´ থেকে ৯১°৪০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সুনামগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, পূর্বে মৌলভীবাজার ও সিলেট জেলা, পশ্চিমে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া ও কিশোরগঞ্জ জেলা।
'''হবিগঞ্জ জেলা''' ([[সিলেট বিভাগ|সিলেট বিভাগ]])  আয়তন: ২৫৭৪.বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৫৮´ থেকে ২৪°৪২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°০৯´ থেকে ৯১°৪০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সুনামগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, পূর্বে মৌলভীবাজার ও সিলেট জেলা, পশ্চিমে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া ও কিশোরগঞ্জ জেলা।


''জনসংখ্যা'' ১৭৫৭৬৬৫; পুরুষ ৮৯৩০২০, মহিলা ৮৬৪৬৪৫। মুসলিম ১৪৩১৮৮৬, হিন্দু ৩২১০৭৭, বৌদ্ধ ১৯৭৩, খ্রিস্টান ২৫৮ এবং অন্যান্য ২৪৭১। এ জেলায় খাসিয়া ও মণিপুরী আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
''জনসংখ্যা'' ২০২৩৬০৩; পুরুষ ৯৯৩৪০৫, মহিলা ১০৩০১৯৮। মুসলিম ১৬৭০৬১০, হিন্দু ৩৪৭৬৬৮, বৌদ্ধ ২৪৯, খ্রিস্টান ২৩০২ এবং অন্যান্য ২৭৭৪। এ জেলায় খাসিয়া ও মণিপুরী আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।


''জলাশয়'' কুশিয়ারা, কালনী, খোয়াই, সুতাং, কোরাঙ্গী ও বরাক নদী উল্লেখযোগ্য।
''জলাশয়'' কুশিয়ারা, কালনী, খোয়াই, সুতাং, কোরাঙ্গী ও বরাক নদী উল্লেখযোগ্য।
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম  
| শহর  || গ্রাম  
|-
|-
|| ২৫৩৬.৫৮  || ৮ || ৪  || ৭৭  || ১২৪১  || ২০৭৬  || ১৯১৬৩৩  || ১৫৬৬০৩২  || ৬৬৭  || ৩৭.৭২
|| ২৫৭৪.|| ৮ || || ৭৫ || ১১২৭ || ২১২০ || ২২১৬৫২ || ১৮০১৯৫১ || ৭৮৬ || ৪০.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
২৪ নং লাইন: ২৪ নং লাইন:
| উপজেলার নাম  || আয়তন(বর্গ কিমি)  || পৌরসভা  || ইউনিয়ন  || মৌজা  || গ্রাম  || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| উপজেলার নাম  || আয়তন(বর্গ কিমি)  || পৌরসভা  || ইউনিয়ন  || মৌজা  || গ্রাম  || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| আজমিরিগঞ্জ || ২২৩.৯৮ || - || ৫ || ৬৮  || ৮৯  || ৯৯২৯৪  || ৪৪৩  || ৩৫.২৮
| আজমিরিগঞ্জ || ২২৩.৯৮ || || ৫ || ৬৬ || ১৩৩ || ১১৪২৬৫ || ৫১০ || ৩৭.
|-
|-
| চুনারুঘাট || ৪৯৫.৪৯  || - || ১০ || ১৬৫  || ৩৮৬  || ২৬৭০৫৬  || ৫৩৯  || ৩২.৮৭
| চুনারুঘাট || ৪৯৫.৫০ || || ১০ || ১৫৯ || ৩৭৩ || ৩০২১১০ || ৬১০ || ৪০.
|-
|-
| নবীগঞ্জ || ৪৩৯.৬২  || ১ || ১৩ || ২১৮  || ৩৫০  || ২৮৭০৩০  || ৬৫৩  || ৩৯.৩৮
| নবীগঞ্জ || ৪৩৯.৬১ || ১ || ১৩ || ২০৩ || ৩৫৬ || ৩৪৫১৭৯ || ৭৮৫ || ৪১.
|-
|-
| বানিয়াচং || ৪৮২.২৫  || - || ১৫ || ২৩৭ || ৩৩৭  || ২৬৮৬৯১  || ৫৫৭  || ৩১.৫৪
| বানিয়াচং || ৪৮২.২৬ || - || ১৫ || ২৩৭ || ৩৫৯ || ৩৩২৫৩০ || ৬৯০ || ৩৪.
|-
|-
| বাহুবল || ২৫০.৬৬  || - || ৭ || ১৪৫  || ৩৩৭  || ১৬৭২৬৫  || ৬৬৭  || ৩৭.৫০
| বাহুবল || ২৫০.৬৫ || - || ৭ || ১৪০ || ৩৪২ || ১৯৭৯৯৭ || ৭৯০ || ৩৯.
|-
|-
| মাধবপুর || ২৯৪.২৮ || ১ || ১১ || ১৮১  || ২৬৮  || ২৭২৫৭৮  || ৯২৬  || ৪২.১২
| মাধবপুর || ২৯৪.২৮ || ১ || ১১ || ১৭৬ || ২৬৭ || ৩১৯০১৬ || ১০৮৪ || ৩৯.
|-
|-
| লাখাই || ১৯৬.৫৬  || - || ৬ || ৭০  || ৬৩  || ১২০৬৭৭  || ৬১৪  || ২৮.৭৫
| লাখাই || ১৯৬.৫৪ || - || ৬ || ৫২ || ৬৫ || ১৪৮৮১১ || ৭৫৭ || ৩৩.
|-
|-
| হবিগঞ্জ সদর || ২৫৩.৭৪  || ২  || ১০  || ১৫৭  || ২৪৬  || ২৭৫০৭৪  || ১০৮৪  || ৪৭.০৪
| হবিগঞ্জ সদর || ১৯১.৮৮ || || || ৯৪ || ২২৫ || ২৬৩৬৯৫ || ১৩৭৪ || ৫০.
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:HabiganjDistrict.jpg|thumb|right|400px]]
[[Image:HabiganjDistrict.jpg|thumb|right|400px]]
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি''  ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল এ জেলার মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ডাকবাংলোতে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক মুহম্মদ আতাউল গনি ওসমানী দ্বিতীয় ও চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কতিপয় অফিসারদের সঙ্গে মিলিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। ১৬ নভেম্বর আজমিরিগঞ্জ উপজেলায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে জগৎজ্যোতি দাস শহীদ হন। এছাড়া পাকসেনারা এ উপজেলার ১১ জন গ্রামবাসিকে হত্যা করে।
''মুক্তিযুদ্ধ''  ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল এ জেলার মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ডাকবাংলোতে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক মুহম্মদ আতাউল গনি ওসমানী দ্বিতীয় ও চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কতিপয় অফিসারদের সঙ্গে মিলিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। ১৬ নভেম্বর আজমিরিগঞ্জ উপজেলায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে জগৎজ্যোতি দাস শহীদ হন। এছাড়া পাকসেনারা এ উপজেলার ১১ জন গ্রামবাসীকে হত্যা করে। হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জে ১টি গণকবর এবং ৩টি স্থানে (মাধবপুর, চুনারুঘাট বানিয়াচং) বধ্যভূমি রয়েছে; নবীগঞ্জ ও মাধরপুরে ২টি স্মৃতিস্তম্ভ এবং চুনারুঘাটে ১টি স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে।
 
''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' গণকবর ১ (নবীগঞ্জ); বধ্যভূমি ৩ (মাধবপুর, চুনারুঘাট, বানিয়াচং); স্মৃতিস্তম্ভ ২ (নবীগঞ্জ, মাধবপুর); স্মৃতিসৌধ ১ (চুনারুঘাট)।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৭.৭২%; পুরুষ ৪১.৭৬%, মহিলা ৩৩.৬২%। কলেজ ১৯, প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ১, কারিগরি কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৫৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮৮৫, কমিউনিটি বিদ্যালয় ২, কিন্ডার গার্টেন ১৭, মাদ্রাসা ১৪০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: হবিগঞ্জ সরকারি বৃন্দাবন কলেজ, পানিউমদা রাগীব-রাবেয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আলিফ সোবহান কলেজ, গোবিন্দপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৩২), হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৪৩), রাজার বাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৬৭), জলসুখ কৃষ্ণগোবিন্দ পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৭৬), মিরাশী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৭), ফকিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯০), এল.আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৬), আদাঐর লোকনাথ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১১), হবিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), নবীগঞ্জ জে.কে উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), ছাতিয়াইন বিশ্বনাথ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১), দিনারপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১), বি কে জি সি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৩), জে কে এন্ড এইচ কে হাইস্কুল (১৯২৪), জগদীশপুর জে,সি, উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৪), দক্ষিণাচরণ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৮), লস্করপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৪৩), হবিগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৮৩), উবাহাটা কুদ্রতীয়া দাখিল মাদ্রাসা (১৮৭০), মিরপুর দাখিল মাদ্রাসা (১৯২০), শানখলা দাখিল মাদ্রাসা (১৯২৮), শায়েস্তাগঞ্জ কামিল মাদ্রাসা, হবিগঞ্জ দারুচ্ছুন্নাৎ সিনিয়র মাদ্রাসা।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪০.%; পুরুষ ৪২.%, মহিলা ৩৮.%। কলেজ ১৯, প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ১, কারিগরি কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৫৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮৮৫, কমিউনিটি বিদ্যালয় ২, কিন্ডার গার্টেন ১৭, মাদ্রাসা ১৪০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: হবিগঞ্জ সরকারি বৃন্দাবন কলেজ, পানিউমদা রাগীব-রাবেয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আলিফ সোবহান কলেজ, গোবিন্দপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৩২), হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৪৩), রাজার বাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৬৭), জলসুখ কৃষ্ণগোবিন্দ পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৭৬), মিরাশী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৭), ফকিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯০), এল.আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৬), আদাঐর লোকনাথ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১১), হবিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), নবীগঞ্জ জে.কে উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), ছাতিয়াইন বিশ্বনাথ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১), দিনারপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১), বি কে জি সি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৩), জে কে এন্ড এইচ কে হাইস্কুল (১৯২৪), জগদীশপুর জে,সি, উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৪), দক্ষিণাচরণ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৮), লস্করপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৪৩), হবিগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৮৩), উবাহাটা কুদ্রতীয়া দাখিল মাদ্রাসা (১৮৭০), মিরপুর দাখিল মাদ্রাসা (১৯২০), শানখলা দাখিল মাদ্রাসা (১৯২৮), শায়েস্তাগঞ্জ কামিল মাদ্রাসা, হবিগঞ্জ দারুচ্ছুন্নাৎ সিনিয়র মাদ্রাসা।


''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৬১.১৩%, অকৃষি শ্রমিক ৭.২০%, শিল্প ২.২৫%, ব্যবসা ১০.৯৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৯৮%, নির্মাণ ১.১৩%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৯%, চাকরি ৪.৫৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.৮০% এবং অন্যান্য ৮.৫৯%।
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৬১.১৩%, অকৃষি শ্রমিক ৭.২০%, শিল্প ২.২৫%, ব্যবসা ১০.৯৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৯৮%, নির্মাণ ১.১৩%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৯%, চাকরি ৪.৫৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.৮০% এবং অন্যান্য ৮.৫৯%।
৫৯ নং লাইন: ৫৭ নং লাইন:
''আরো দেখুন''  সংশ্লিষ্ট উপজেলা।
''আরো দেখুন''  সংশ্লিষ্ট উপজেলা।


'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; হবিগঞ্জ জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; হবিগঞ্জ জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; হবিগঞ্জ জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; হবিগঞ্জ জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Habiganj District]]
[[en:Habiganj District]]

১২:৫৪, ২৮ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

হবিগঞ্জ জেলা (সিলেট বিভাগ)  আয়তন: ২৫৭৪.৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৫৮´ থেকে ২৪°৪২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°০৯´ থেকে ৯১°৪০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সুনামগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, পূর্বে মৌলভীবাজার ও সিলেট জেলা, পশ্চিমে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া ও কিশোরগঞ্জ জেলা।

জনসংখ্যা ২০২৩৬০৩; পুরুষ ৯৯৩৪০৫, মহিলা ১০৩০১৯৮। মুসলিম ১৬৭০৬১০, হিন্দু ৩৪৭৬৬৮, বৌদ্ধ ২৪৯, খ্রিস্টান ২৩০২ এবং অন্যান্য ২৭৭৪। এ জেলায় খাসিয়া ও মণিপুরী আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জলাশয় কুশিয়ারা, কালনী, খোয়াই, সুতাং, কোরাঙ্গী ও বরাক নদী উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন হবিগঞ্জ মহকুমা গঠিত হয় ১৮৭৪ সালে এবং মহকুমাকে জেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।

জেলা
আয়তন (বর্গ কিমি) উপজেলা পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম
২৫৭৪.৭ ৭৫ ১১২৭ ২১২০ ২২১৬৫২ ১৮০১৯৫১ ৭৮৬ ৪০.৫
জেলার অন্যান্য তথ্য
উপজেলার নাম আয়তন(বর্গ কিমি) পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
আজমিরিগঞ্জ ২২৩.৯৮ ৬৬ ১৩৩ ১১৪২৬৫ ৫১০ ৩৭.১
চুনারুঘাট ৪৯৫.৫০ ১০ ১৫৯ ৩৭৩ ৩০২১১০ ৬১০ ৪০.৮
নবীগঞ্জ ৪৩৯.৬১ ১৩ ২০৩ ৩৫৬ ৩৪৫১৭৯ ৭৮৫ ৪১.০
বানিয়াচং ৪৮২.২৬ - ১৫ ২৩৭ ৩৫৯ ৩৩২৫৩০ ৬৯০ ৩৪.৭
বাহুবল ২৫০.৬৫ - ১৪০ ৩৪২ ১৯৭৯৯৭ ৭৯০ ৩৯.৮
মাধবপুর ২৯৪.২৮ ১১ ১৭৬ ২৬৭ ৩১৯০১৬ ১০৮৪ ৩৯.৮
লাখাই ১৯৬.৫৪ - ৫২ ৬৫ ১৪৮৮১১ ৭৫৭ ৩৩.৭
হবিগঞ্জ সদর ১৯১.৮৮ ৯৪ ২২৫ ২৬৩৬৯৫ ১৩৭৪ ৫০.৭

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল এ জেলার মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ডাকবাংলোতে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক মুহম্মদ আতাউল গনি ওসমানী দ্বিতীয় ও চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কতিপয় অফিসারদের সঙ্গে মিলিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। ১৬ নভেম্বর আজমিরিগঞ্জ উপজেলায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে জগৎজ্যোতি দাস শহীদ হন। এছাড়া পাকসেনারা এ উপজেলার ১১ জন গ্রামবাসীকে হত্যা করে। হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জে ১টি গণকবর এবং ৩টি স্থানে (মাধবপুর, চুনারুঘাট ও বানিয়াচং) বধ্যভূমি রয়েছে; নবীগঞ্জ ও মাধরপুরে ২টি স্মৃতিস্তম্ভ এবং চুনারুঘাটে ১টি স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪০.৫%; পুরুষ ৪২.২%, মহিলা ৩৮.৯%। কলেজ ১৯, প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ১, কারিগরি কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৫৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮৮৫, কমিউনিটি বিদ্যালয় ২, কিন্ডার গার্টেন ১৭, মাদ্রাসা ১৪০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: হবিগঞ্জ সরকারি বৃন্দাবন কলেজ, পানিউমদা রাগীব-রাবেয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আলিফ সোবহান কলেজ, গোবিন্দপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৩২), হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৪৩), রাজার বাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৬৭), জলসুখ কৃষ্ণগোবিন্দ পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৭৬), মিরাশী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৭), ফকিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯০), এল.আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৬), আদাঐর লোকনাথ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১১), হবিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), নবীগঞ্জ জে.কে উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), ছাতিয়াইন বিশ্বনাথ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১), দিনারপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১), বি কে জি সি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৩), জে কে এন্ড এইচ কে হাইস্কুল (১৯২৪), জগদীশপুর জে,সি, উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৪), দক্ষিণাচরণ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৮), লস্করপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৪৩), হবিগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৮৩), উবাহাটা কুদ্রতীয়া দাখিল মাদ্রাসা (১৮৭০), মিরপুর দাখিল মাদ্রাসা (১৯২০), শানখলা দাখিল মাদ্রাসা (১৯২৮), শায়েস্তাগঞ্জ কামিল মাদ্রাসা, হবিগঞ্জ দারুচ্ছুন্নাৎ সিনিয়র মাদ্রাসা।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬১.১৩%, অকৃষি শ্রমিক ৭.২০%, শিল্প ২.২৫%, ব্যবসা ১০.৯৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৯৮%, নির্মাণ ১.১৩%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৯%, চাকরি ৪.৫৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.৮০% এবং অন্যান্য ৮.৫৯%।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: স্বদেশ বার্তা, খোয়াই, হবিগঞ্জ সমাচার, প্রতিদিনের বাণী, প্রভাকর, আজকের হবিগঞ্জ, বিবিয়ানা; সাপ্তাহিক: স্বাধীকার, জনতার দলিল, স্বদেশবার্তা, তরপবার্তা, দৃষ্টিকোণ, খোয়াই, হবিগঞ্জ সমাচার; অবলুপ্ত: মাসিক মৈত্রী (১৯০৯), সাপ্তাহিক প্রজাপতি (১৯০৯), শ্রী শ্রী সোনার গৌরাঙ্গ (১৩২৯ বাংলা), পল­ী বাণী (১৯৪০), সাপ্তাহিক শহীদ (১৯৪৮), সাপ্তাহিক জাগরণ (১৯৫৫), মাসিক অভিযাত্রিক (১৯৬৬)।

লোকসংস্কৃতি এ জেলার মাযারে ওরস উপলক্ষে মরমী গান, ফকিরলী গান, মার্শিয়া গান ইত্যাদি গাওয়া হয়। বর্ষাকালে নৌকাবাইচের সময় সারিগানের প্রচলন রয়েছে। এছাড়া ধামাইল নাচ ও গান, গাজীর গীত, কীর্তন, ব্রত সঙ্গীত, পালা গান, হোলী গান (চা শ্রমিকদের গান) ও জারি গান উল্লেখযোগ্য।

গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও দর্শনীয় স্থান মহাকবি সৈয়দ সুলতান প্রতিষ্ঠিত সুলতানশী হাবেলী (সদর উপজেলা), বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড (নবীগঞ্জ), শাহজীবাজার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র (মাধবপুর), বানিয়াচং রাজবাড়ি (বানিয়াচং), মশাজানের ঐতিহাসিক সৈয়দ গোয়াসের (রঃ) দীঘি, সাগরদীঘি (বানিয়াচং), চুনারুঘাট, মাধবপুর উপজেলার চা বাগান।  [জয়ন্ত সিংহ রায়]

আরো দেখুন সংশ্লিষ্ট উপজেলা।

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; হবিগঞ্জ জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; হবিগঞ্জ জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।