হক, এ.কে.এম আজিজুল

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২৩:১৪, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)

হক, এ.কে.এম আজিজুল  (১৯২৩-২০০২)  সরকারি কর্মকর্তা ও সমাজসেবী। তিনি ১ ফেব্রুয়ারি ১৯২৩ তারিখে কুমিল্লাজেলার বুড়িচঙ্গ উপজেলার চান্দলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। প্রথমে নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ও পরবর্তীকালে কুমিল্লা জিলা স্কুলে পড়াশোনা শেষে তিনি চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। তিনি ১৯৪৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ পাস করেন এবং চাকুরিরত অবস্থায় ১৯৬০ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমপিএ ডিগ্রি অর্জন করেন।

আজিজুল হকের কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৪৪ সালে, ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজে ইংরেজির প্রভাষক হিসেবে। এর এক বছর পরই তিনি শিক্ষকতা ছেড়ে সিভিল সাপ্লাইজ বিভাগে সাব-ডিস্ট্রিক্ট কন্ট্রোলার পদে যোগ দেন ও পরবর্তীকালে এ বিভাগে এডিসি পদে উন্নীত হন।

১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর আজিজুল হক পাকিস্তান সরকারের শিক্ষা ও তথ্য মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর একান্ত সচিব নিযুক্ত হন। ১৯৪৯ সালে তিনি ডিপার্টমেন্ট অব সাপ্লাইজ-এর উপ-পরিচালক এবং ১৯৫৭ সালে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের পরিচালক হন। ১৯৫৮ সালে তাঁকে পূর্ব পাকিস্তান ক্ষুদ্র শিল্প কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৫৯ সালে তিনি লোক প্রশাসন বিষয়ে পড়াশোনার জন্য হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। লেখাপড়া শেষে তিনি দেশে ফিরলে ডিপার্টমেন্ট অব সাপ্লাইজ-এর পরিচালক নিযুক্ত হন। তিনি ১৯৬২ সালের এপ্রিলে পূর্ব পাকিস্তান ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান এবং ১৯৬৫ সালে পূর্ব পাকিস্তান শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের পরিচালক হন। ১৯৬৮ থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত তিনি পাকিস্তান (বাংলাদেশ) পল্লী উন্নয়ন একাডেমীর পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

পল্লী উন্নয়ন একাডেমীতে কাজের অভিজ্ঞতা আজিজুল হকের জীবনদর্শনে ব্যাপক পরিবর্তন আনে। আখতার হামিদ খানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি মানুষের কল্যাণে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সেবামূলক কর্মকান্ডে উদ্বুদ্ধ হন। এমনকি বেশভূষায়ও আধুনিকতা ছেড়ে তিনি দেশীয় খাদি পোশাক পরিধান শুরু করেন।

আজিজুল হক বহুসংখ্যক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমাজসেবামূলক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ইউনিসেফ, বয় স্কাউটস, রোটারি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, পরিবার পরিকল্পনা সমিতি, ডায়াবেটিক সমিতি, প্রৌঢ় ও বৃদ্ধ কল্যাণ সমিতি, অন্ধ শিশু কল্যাণ সমিতি, ইউসেপ, হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন,  গ্রামীণ ব্যাংকআশা, মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভারতের ব্যাঙ্গালোরে অবস্থিত এশিয়ান ইনস্টিটিউট ফর রুরাল ডেভেলপমেন্ট উল্লেখযোগ্য। ১৯৭৬-১৯৭৯ সালে তিনি বাংলাদেশ সরকারের কৃষি, পশু ও বন মন্ত্রী ছিলেন।

এ.কে.এম আজিজুল হক এর ৩ সেপ্টেম্বর ২০০২ তারিখে মৃত্যু হয়।  [হুসনে আরা হক]