হক, এস.এম ইমদাদুল
হক, এস.এম ইমদাদুল (১৯৪৯-১৯৭১) সামরিক কর্মকর্তা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। এস.এম ইমদাদুল হক ১৯৪৯ সালের ১৭ জানুয়ারি যশোর জেলার পাড়নাকান্দা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা এস.এম আবদুল হক। ইমদাদুল হক ১৯৬৩ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। ১৯৬৪ সালে তিনি পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৫ সালে কোহাট বেসে এয়ারম্যান পদে কর্মরত থাকাকালে পাক-ভারত যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর তিনি কর্পোরাল পদে পদোন্নতি লাভ করেন। চাকুরিকালে তিনি ১৯৬৮ সালে আইএ পাস করেন। ১৯৭০ সালের ১৪ মে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে যোগ দেন।
ইমদাদুল হক ১৯৭১ সালের মে মাসে মিলিটারি একাডেমি থেকে পালিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। তিনি ৮ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের ‘সি’ কোম্পানির অধিনায়ক হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৭১ সালের ১৫ অক্টোবর রাতে তিনি সিলেটের সাগরনল চা বাগান এলাকায় পাকিস্তান বাহিনীর উপর আক্রমণ পরিচালনা করেন। প্রচন্ড আক্রমণে তিনি পাকিস্তানিদের মেশিনগান পোস্ট ধ্বংস করেন। পাকিস্তানি সৈন্যরা পশ্চাদপসরণ করতে বাধ্য হয়।
ইমদাদুল হক ৬ নভেম্বর ধামাই চা বাগানে অবস্থানরত পাকিস্তান বাহিনীর ওপর আক্রমণ পরিচালনা করেন। শত্রুর একটি মেশিনগান থেকে অনবরত গুলির কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের অগ্রগতি ব্যাহত হয়। ইমদাদুল হক তখন মেশিনগান পোস্টটি ধ্বংস করার লক্ষ্যে হাতে গ্রেনেড নিয়ে ক্রলিং করে বাঙ্কারের পাশে পৌঁছান। বাঙ্কারের ভেতর গ্রেনেড নিক্ষেপের সময় অকস্মাৎ শত্রুর মেশিনগানের গুলিতে তিনি শাহাদাত বরণ করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এস.এম ইমদাদুল হককে মরনোত্তর কমিশন প্রদান করে। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর বীরোচিত অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ‘বীরউত্তম’ খেতাবে ভূষিত করে। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]