স্নায়ুতাত্ত্বিক ব্যাধিসমূহ
স্নায়ুতাত্ত্বিক ব্যাধিসমূহ (Neurological Disorders) স্নায়বিক ব্যাধিগুলিকে (নিউরোলজিক্যাল ডিসঅর্ডার) চিকিৎসাগতভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় এমনসব ব্যাধি হিসাবে যা মস্তিষ্ক, সমগ্র দেহের স্নায়ুসমূহ এবং মেরুরজ্জু বা সুষুস্নাকাণ্ডকে আক্রান্ত করে । মস্তিষ্ক, মেরুরজ্জু (স্পাইনাল কর্ড), বা অন্যান্য স্নায়ুর কাঠামোগত, জৈব রাসায়নিক বা বৈদ্যুতিক অস্বাভাবিকতার ফলে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিতে পারে। লক্ষণসমূহের উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে পক্ষাঘাত (প্যারালাইসিস), পেশী দুর্বলতা, দুর্বল স্নায়ুবিক সমন্বয়, সংবেদনশীলতা হ্রাস, খিঁচুনি, স্নায়ুবিক বিভ্রান্তি, ব্যথা এবং চৈতন্যের বিকৃতি। বয়স, জাতি, সামাজিক শ্রেণী, জাতীয় বা ভৌগলিক সীমানা নির্বিশেষে বিশ্বব্যাপী মৃগীরোগ হল সবচেয়ে গুরুতর মস্তিষ্কের ব্যাধি। বর্তমানে বিশ্বে ৪০-৫০ মিলিয়ন রোগী রয়েছে, যাদের ৮৫ শতাংশ উন্নয়নশীল দেশে বাস করে। বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক দুই মিলিয়ন মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হয়। কমপক্ষে ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে শৈশব বা কৈশোরে শুরু হয়। যদি সঠিকভাবে চিকিৎসা করা হয়, তবে মৃগীরোগে আক্রান্ত ৭০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষ দৈনন্দিন স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে। উন্নয়নশীল দেশগুলিতে, মৃগীরোগে আক্রান্ত ৬০ থেকে ৯০ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা সংস্থান ও বাস্তবায়নের অপ্রতুলতার কারণে এবং সামাজিক লোকলজ্জার কারণে কোনও চিকিৎসা পান না।
আলঝেইমার রোগ এবং ডিমেনশিয়া: স্মৃতিশক্তি হ্রাস একটি সাধারণ অভিযোগ, বিশেষ করে বয়স্কদের মধ্যে। একটি নির্দিষ্ট মাত্রার স্মৃতিশক্তি হ্রাস বার্ধক্যে উপনীত হওয়ার একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে কিছু লক্ষণ আরও গুরুতর কিছু নির্দেশ করতে পারে, যেমন- হারিয়ে যাওয়া, আর্থিক ব্যবস্থাপনায় অসুবিধা, দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ক্রিয়াকলাপে অসুবিধা, পরিবার এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের নাম ভুলে যাওয়া, বা ভাষার সমস্যা। এই স্মৃতি পরিবর্তনের সাথে আচরণগত পরিবর্তনগুলিও উদ্বেগের। ডিমেনশিয়া অত্যন্ত ধীরগতির একটি স্নায়বিক ব্যাধি এবং একজন নিউরোলজিস্টের সাহায্য নেয়া উচিৎ। যদিও কোনো নিরাময় নেই, ওষুধ এবং থেরাপি লক্ষণগুলি কমাতে সাহায্য করতে পারে। পারকিনসন রোগ হল আরেকটি স্নায়ুতন্ত্রের ব্যাধি যা প্রাথমিকভাবে স্নায়বিক সমন্বয়কে প্রভাবিত করে। অ্যামিওট্রফিক ল্যাটারাল স্ক্লেরোসিস (ALS) হলো কিছুটা বিরল মস্তিষ্ক ও পেশির সমন্বয় সংক্রান্ত (নিউরোমাসকুলার) অবস্থা যা মস্তিষ্ক এবং মেরুরজ্জুর স্নায়ুকে প্রভাবিত করে। [মাহমুদ হোসাইন]