সোবহান, সালমা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''সোবহান, সালমা''' (১৯৩৭-২০০৩)  বাংলাদেশের প্রথম মহিলা ব্যারিস্টার, মানবাধিকার কর্মী, নারী সমাধিকার আন্দোলনের সংগঠক। তিনি গণতন্ত্র, মানবাধিকার, জেন্ডার এবং সামাজিক ন্যায়বিচার মূল্যবোধের স্বপক্ষে বলিষ্ঠ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। পিতা মোহাম্মদ ইকরামুল্লাহ ছিলেন পাকিস্তানের প্রথম পররাষ্ট্র সচিব। তাঁর মাতা বেগম শায়েস্তা সোহরাওয়ার্দী ইকরামুল্লাহ ছিলেন পাকিস্তানের প্রথম জাতীয় পরিষদের সদস্য।
'''সোবহান, সালমা''' (১৯৩৭-২০০৩)  বাংলাদেশের প্রথম মহিলা ব্যারিস্টার, মানবাধিকার কর্মী, নারী সমাধিকার আন্দোলনের সংগঠক। তিনি গণতন্ত্র, মানবাধিকার, জেন্ডার এবং সামাজিক ন্যায়বিচার মূল্যবোধের স্বপক্ষে বলিষ্ঠ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। পিতা মোহাম্মদ ইকরামুল্লাহ ছিলেন পাকিস্তানের প্রথম পররাষ্ট্র সচিব। তাঁর মাতা বেগম শায়েস্তা সোহরাওয়ার্দী ইকরামুল্লাহ ছিলেন পাকিস্তানের প্রথম জাতীয় পরিষদের সদস্য।


[[Image:SobhanSalma.jpg|right|thumbnail|300px|সালমা সোবহান]]
সালমা সোবহান গিরটন কলেজ ক্যামব্রিজ থেকে আইন অধ্যয়ন সমাপ্ত করেন এবং ১৯৫৯ সালে লিঙ্কনস্ ইন্ থেকে ব্যারিস্টারি পাশ করেন। এরপর তিনি করাচিতে ফিরে এসে হাইকোর্টে আইন ব্যবসায়ে নিয়োজিত হন। রেহমান সোবহানের সাথে বিয়ের পর ১৯৬২ সালে তিনি ঢাকায় আসেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনশাস্ত্রের অধ্যাপক ছিলেন। কিন্তু তাঁর শিক্ষকতা পেশা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এবং পুনরায় ১৯৭৫ থেকে ১৯৮১ সালে দুইবার বাধাগ্রস্ত হয়। এ সময়ে তিনি এবং তাঁর পরিবার অক্সফোর্ডে আশ্রয় গ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ল’ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সে রিসার্চ ফেলো নিযুক্ত হন। রিসার্চ ফেলো হিসেবে তাঁর প্রধান দায়িত্ব ছিল সুপ্রিম কোর্ট ল’ রিপোর্ট সম্পাদনা করা।
সালমা সোবহান গিরটন কলেজ ক্যামব্রিজ থেকে আইন অধ্যয়ন সমাপ্ত করেন এবং ১৯৫৯ সালে লিঙ্কনস্ ইন্ থেকে ব্যারিস্টারি পাশ করেন। এরপর তিনি করাচিতে ফিরে এসে হাইকোর্টে আইন ব্যবসায়ে নিয়োজিত হন। রেহমান সোবহানের সাথে বিয়ের পর ১৯৬২ সালে তিনি ঢাকায় আসেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনশাস্ত্রের অধ্যাপক ছিলেন। কিন্তু তাঁর শিক্ষকতা পেশা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এবং পুনরায় ১৯৭৫ থেকে ১৯৮১ সালে দুইবার বাধাগ্রস্ত হয়। এ সময়ে তিনি এবং তাঁর পরিবার অক্সফোর্ডে আশ্রয় গ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ল’ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সে রিসার্চ ফেলো নিযুক্ত হন। রিসার্চ ফেলো হিসেবে তাঁর প্রধান দায়িত্ব ছিল সুপ্রিম কোর্ট ল’ রিপোর্ট সম্পাদনা করা।



০৭:৩৯, ২৪ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

সোবহান, সালমা (১৯৩৭-২০০৩)  বাংলাদেশের প্রথম মহিলা ব্যারিস্টার, মানবাধিকার কর্মী, নারী সমাধিকার আন্দোলনের সংগঠক। তিনি গণতন্ত্র, মানবাধিকার, জেন্ডার এবং সামাজিক ন্যায়বিচার মূল্যবোধের স্বপক্ষে বলিষ্ঠ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। পিতা মোহাম্মদ ইকরামুল্লাহ ছিলেন পাকিস্তানের প্রথম পররাষ্ট্র সচিব। তাঁর মাতা বেগম শায়েস্তা সোহরাওয়ার্দী ইকরামুল্লাহ ছিলেন পাকিস্তানের প্রথম জাতীয় পরিষদের সদস্য।

সালমা সোবহান

সালমা সোবহান গিরটন কলেজ ক্যামব্রিজ থেকে আইন অধ্যয়ন সমাপ্ত করেন এবং ১৯৫৯ সালে লিঙ্কনস্ ইন্ থেকে ব্যারিস্টারি পাশ করেন। এরপর তিনি করাচিতে ফিরে এসে হাইকোর্টে আইন ব্যবসায়ে নিয়োজিত হন। রেহমান সোবহানের সাথে বিয়ের পর ১৯৬২ সালে তিনি ঢাকায় আসেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনশাস্ত্রের অধ্যাপক ছিলেন। কিন্তু তাঁর শিক্ষকতা পেশা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এবং পুনরায় ১৯৭৫ থেকে ১৯৮১ সালে দুইবার বাধাগ্রস্ত হয়। এ সময়ে তিনি এবং তাঁর পরিবার অক্সফোর্ডে আশ্রয় গ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ল’ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সে রিসার্চ ফেলো নিযুক্ত হন। রিসার্চ ফেলো হিসেবে তাঁর প্রধান দায়িত্ব ছিল সুপ্রিম কোর্ট ল’ রিপোর্ট সম্পাদনা করা।

সালমা সোবহান ব্রাকের গ্রামীণ মহিলা সদস্যদের মধ্যে অধিকার সচেতনতা সৃষ্টি এবং বিরোধ নিষ্পত্তির কাজে আধা-আইনজ্ঞদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যে একটি আইনি সাক্ষরতা কর্মসূচির পরিকল্পনা করেন। তিনি ও তাঁর আটজন সহকর্মী মিলে ১৯৮৬ সালে গঠন করেন আইন ও সালিশ কেন্দ্র। দীর্ঘ পনের বছর (১৯৮৬-২০০১) তিনি এই সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর নেতৃত্বে এই সংস্থা একটি নেতৃস্থানীয় মানবাধিকার সংস্থায় পরিণত হয়। নারী অধিকার রক্ষায় তাঁর অবদানের জন্য তিনি ২০০০ সালে ঢাকা ‘অনন্যা’  ম্যাগাজিন পুরস্কার এবং ২০০১ সালে নিউইয়র্কে ‘ল’ইয়ার্স কমিটি ফর হিউম্যান রাইট্স পুরস্কার লাভ করেন।

সালমা সোবহান বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড, ব্রাক, নিজেরা করি প্রভৃতি সংস্থার পরিচালনা বোর্ডের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। তিনি ২০০১ সালে ইউএন ইন্সটিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ (ইউএনআরআইডি)-এর বোর্ড সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি দ্য এশিয়া প্যাসিফিক উইমেন ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, উইমেন লিভিং আন্ডার দ্য মুসলিম ওয়ার্ল্ড এবং ম্যাচ্ কানাডা এই তিনটি আন্তর্জাতিক নারী সংস্থার সক্রিয় সদস্য ছিলেন।

সালমা সোবহান রচিত গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো Legal Status of Women in Bangladesh (১৯৭৫), Peasants’ Perception of Law (১৯৮১), No Better Options? Women Industrial Workers (সহ লেখক, ১৯৮৮)।

সালমা সোবহান ২০০৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।  [হামিদা হোসেন]