সৈয়দ আহমদ খান
সৈয়দ আহমদ খান হাজী আহমদের দ্বিতীয় পুত্র সৈয়দ আহমদ খান নওয়াব সরফরাজ খানের আমলে ঘোড়াঘাট ও রংপুরের নায়েব ফৌজদার ছিলেন। দিনাজপুর ও কুচবিহারের যে রাজারা এতদিন নওয়াবের আনুগত্য অস্বীকার করে আসছিলেন তিনি তাদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করে তাদের বিপুল ধনসম্পদ অধিকার করেন। সৌলত জং খেতাবে ভূষিত সৈয়দ আহমদ আলীবর্দী খানের দ্বিতীয় কন্যাকে বিয়ে করেছিলেন। আলীবর্দী খানের আমলে রুস্তম জং-এর জামাতা মির্জা বকর একবার উড়িষ্যায় আলীবর্দীর বাহিনীর উপর আক্রমণ চালান। সেখানে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে মির্জা বকর মারাত্মকভাবে আহত হন। রুস্তম জং তাঁর আহত জামাতাকে নিয়ে পালিয়ে যান। আলীবর্দী খান উড়িষ্যায় একমাস অবস্থান করেন। তিনি তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র ও জামাতা সৈয়দ আহমদ খানকে উড়িষ্যায় নায়েব নাজিম নিযুক্ত করে মুর্শিদাবাদ ফিরে যান। নিয়োগটি যথার্থ হয় নি, কারণ সৈয়দ আহমদ এই নতুন অধিকৃত রাজ্য শাসনে সম্পূর্ণ অযোগ্য ছিলেন। অচিরেই প্রবীণ ও পদস্থ রাজকর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। তাঁদের আমন্ত্রণে একদল মারাঠা পদাতিকসহ মির্জা বকর পুনরায় কটকে এসে পরিবার পরিজনসহ সৈয়দ আহমদকে বন্দি করেন। সৈয়দ আহমদ ও তার পরিবারবর্গকে মুক্ত করার জন্য আলীবর্দী অবিলম্বে মির্জা বকরের বিরুদ্ধে এক অভিযান পরিচালনা করেন। এক সম্মুখ যুদ্ধে আলীবর্দী জয়লাভ করেন। সৈয়দ আহমদকে পুনরায় উড়িষ্যায় নিয়োজিত করে এবং রাজা জানকীরামের পুত্র দুর্লভরামকে তাঁর সহকারী নিযুক্ত করে নওয়াব রাজধানীতে ফিরে আসেন।
শাসক হিসেবে সৈয়দ আহমদ নিজেকে অযোগ্য প্রমাণ করেন। আলীবর্দী খানের জীবিতকালেই সৈয়দ আহমদ খানের মৃত্যু হয়। তাঁর পুত্র শওকত জঙ্গ পরবর্তী সময়ে মুর্শিদাবাদের সিংহাসন লাভের জন্য সিরাজউদ্দৌলার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। [কে.এম করিম]