সুতলি পোকা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১১ নং লাইন: ১১ নং লাইন:


সুতলি পোকার মথ জীবনের কোন পর্যায়েই শীতনিদ্রায় যায় না এবং বছরে প্রায় ১৮ বার প্রজনন ঘটাতে সক্ষম। এ মথের Solanaceae গোত্রের মাত্র কয়েকটি পোষক উদ্ভিদ রয়েছে। আলু ছাড়া তামাক (''Nicotiana tabacum''), টমেটো (''Lycopersicon lycopersicum'') ও বেগুনেরও (''Solanum melongena'') ক্ষতি করে।  [আনোয়ারা কবির]
সুতলি পোকার মথ জীবনের কোন পর্যায়েই শীতনিদ্রায় যায় না এবং বছরে প্রায় ১৮ বার প্রজনন ঘটাতে সক্ষম। এ মথের Solanaceae গোত্রের মাত্র কয়েকটি পোষক উদ্ভিদ রয়েছে। আলু ছাড়া তামাক (''Nicotiana tabacum''), টমেটো (''Lycopersicon lycopersicum'') ও বেগুনেরও (''Solanum melongena'') ক্ষতি করে।  [আনোয়ারা কবির]
''আরও দেখুন''  [[আলু|আলু]]


[[en:Tuber Worm]]
[[en:Tuber Worm]]

০৫:০১, ২৩ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

সুতলি পোকা (Tuber Worm)  ফসল ক্ষেতে ও গুদামজাত অবস্থায় উভয় পরিবেশে আলুর ক্ষতিকর Lepidoptera বর্গের Gelechiidae  গোত্রভুক্ত মথ (Phthorimaea operculella)-এর লার্ভার সাধারণ নাম। প্রাপ্তবয়স্ক মথের দৈর্ঘ্য ৬-৮.৫ মিমি, সামনের ডানা ধূসর বর্ণের, তাতে কালো ও কালচে বাদামি রঙের চিত্রবিচিত্র দাগ এবং আগার কিনারায় খাটো লোমের ঝালর থাকে। পিছনের ডানা হালকা ধূসর, সম্মুখ ডানার চেয়ে সামান্য খাটো ও সরু। স্ত্রী-মথ পোষক উদ্ভিদ, আলুর কন্দ বা কাছাকাছি যেকোন অবধারকে (substratum) ১০০টি পর্যন্ত ডিম পাড়ে। প্রায় ১.২৫ মিমি লম্বা লার্ভা ডিম থেকে বের হওয়ার পর আলু ছিদ্র করে ভিতরে ঢুকে যায়। এতে আলুতে সুড়ঙ্গ সৃষ্টি হয়। কন্দের বহিস্ত্বকে রেশমি গুটিকায় এদের পিউপা পর্যায় অতিবাহিত হয়। বিদ্যমান তাপমাত্রার নিরিখে এদের জীবনচক্র শেষ হয় ১৮-২৫ দিনে।

সম্ভবত উনিশ শতকের শেষে ইতালি থেকে আমদানি করা আলুর মাধ্যমে ব্রিটিশ ভারতে আলুর সুতলি পোকার প্রাদুর্ভাব ঘটে। উপমহাদেশের এই অংশে (বর্তমান বাংলাদেশ) ১৯০২ থেকে ১৯০৭ সালের মধ্যে আলু উৎপাদনকারী এলাকা রংপুর, বগুড়া, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ জেলায় প্রথম এই মথের বিস্তার ঘটে। সে সময় ভারতের উত্তর প্রদেশ ও বিহার থেকে আলু-বীজ আমদানি করা হতো। সৌভাগ্যবশত, বাংলাদেশে মাঠপর্যায়ে সুতলি পোকা তেমন কোন সমস্যা সৃষ্টি করে না। এদেশে এ মথটি কৃষকের ঘরে গুদামজাত (ঠান্ডা গুদামঘর নয়) আলুর মারাত্মক ক্ষতি করে।

সুতলি পোকায় আক্রান্ত আলু

এদের লার্ভা যুগপৎ মাঠে ও গুদামে উপদ্রব সৃষ্টি করলে অর্থনৈতিকভাবে বেশি ক্ষতির কারণ হয়। সুতলি পোকা আক্রান্ত আলু মানুষের খাবার উপযোগী থাকে না। মাঠে আলু গাছের পাতা আক্রমণ করে লার্ভা কান্ডের ভিতরে ঢুকে উদ্ভিদের কোষকলার ক্ষতি ঘটায় এবং তাতে  উৎপাদন হ্রাস পায়।

বাংলাদেশে আলু গুদামজাত করার পদ্ধতি ও পরিবেশগত পরিস্থিতির ওপর সুতলি পোকার ক্ষতির পরিমাণ নির্ভর করে। কোন কোন এলাকায় কৃষকের ঘরে গুদামজাত আলুর প্রায় একশ ভাগই নষ্ট হবার দৃষ্টান্ত রয়েছে। দেশীয় জাতগুলির মধ্যে বিশেষত লাল পাখারি বা বগুড়া জাতের আলু, মথ দ্বারা সহজে আক্রান্ত হয়। এই মথ পাবনা, বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর, জয়পুরহাট ও সিরাজগঞ্জ জেলার লাল পাখারি জাতের আলুর ব্যাপক ক্ষতি করে। প্রথমে আলুর সুতলি পোকা এবং পরে অণুজীব দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ফলে কখনও কখনও ঘরের ও গুদামের সব আলু নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

সুতলি পোকার মথ জীবনের কোন পর্যায়েই শীতনিদ্রায় যায় না এবং বছরে প্রায় ১৮ বার প্রজনন ঘটাতে সক্ষম। এ মথের Solanaceae গোত্রের মাত্র কয়েকটি পোষক উদ্ভিদ রয়েছে। আলু ছাড়া তামাক (Nicotiana tabacum), টমেটো (Lycopersicon lycopersicum) ও বেগুনেরও (Solanum melongena) ক্ষতি করে।  [আনোয়ারা কবির]

আরও দেখুন আলু