সিংহ, লর্ড সত্যেন্দ্রপ্রসন্ন
সিংহ, লর্ড সত্যেন্দ্রপ্রসন্ন (১৮৬৩-১৯২৮) আইনজীবী, বড়লাটের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল ও প্রিভি কাউন্সিলের সদস্য, সহকারী ভারত সচিব এবং ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য। বীরভূম জেলার অন্তর্গত রায়পুরের জমিদার সিতিকণ্ঠ সিংহের কনিষ্ঠ পুত্র সত্যেন্দ্রপ্রসন্ন সিংহ ১৮৬৩ সালের ২৪ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৮৭৭ সালে মাত্র চৌদ্দ বছর বয়সে বীরভূম জিলা স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাস করেন। ১৮৭৯ সালে তিনি কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে এফ.এ পাস করেন। ১৮৬৬ সালে ‘লিঙ্কনস ইন’ থেকে ব্যারিস্টারি পাস করে তিনি স্বদেশে প্রত্যাবর্ত করেন এবং কলকাতা হাইকোর্টে আইন ব্যবসা শুরু করেন।
১৯০৪ সালে সরকার তাঁকে ‘স্ট্যান্ডিং কাউন্সেল’ নিয়োগ করে এবং ১৯০৮ সালে তিনি অ্যাডভোকেট জেনারেল-এর পদ লাভ করেন। মর্লি-মিন্টো সংস্কার সাধিত হলে তিনি গভর্নর জেনারেল-এর এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলে আইন সদস্য (Law Member) নিযুক্ত হন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (১৯১৪-১৯১৮) শুরু হলে তিনি ওয়ার কনফারেন্স-এর সদস্য হিসেবে বিলেত যান। ১৯১৫ সালের নববর্ষ দিবসে তিনি ‘নাইট’ উপাধি পান। ১৯১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে স্যার সত্যেন্দ্রপ্রসন্ন সিংহ ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস-এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। যুদ্ধ শেষে তিনি ইউরোপের শান্তি সম্মেলনে ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দেন। একজন বিশিষ্ট নাগরিক হিসেবে ব্রিটিশ সরকার সত্যেন্দ্রপ্রসন্নকে এই সময় ব্যারন হিসেবে বরণ করে লর্ড উপাধিতে ভূষিত করে। তিনি ‘কিংস কাউন্সিল’ এবং ‘প্রিভি কাউন্সিল’-এরও সদস্য হন। লর্ড এস.পি সিংহ সহকারি ভারত সচিব হিসেবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আসন লাভ করেন। ভারতীয়দের মধ্যে তিনিই ছিলেন এই গৌরবের প্রথম ও একমাত্র অধিকারী। ১৯২০ সালে তিনি বিহার-উড়িষ্যার গভর্নর হন। উপনিবেশিক শাসনামলে তিনিই ছিলেন একমাত্র ভারতীয় যিনি একজন প্রাদেশিক গভর্নরের পদ অলঙ্কৃত করেন। ১৯২৮ সালের ৪ মার্চ তাঁর মৃত্যু হয়। [মুহম্মদ আনসার আলী]