শালবন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''শালবন'''  এক ধরনের বনভূমি যেখানে শালগাছ Shorea robusta মুখ্য উদ্ভিদ প্রজাতি। বনের শ্রেণীবিন্যাসে শালবনকে গ্রীষ্মমন্ডলীয় আর্দ্র পত্রঝরা বনাঞ্চলের (Tropical Moist Deciduous Forest) অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ভূ-প্রকৃতি, ভূতাত্ত্বিক গঠন, জলবায়ু এবং মৃত্তিকার ধরন শালবনের বিস্তৃতি নিয়ন্ত্রণ করে। শালবন প্রধানত দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় হিমালয়ের পাদদেশব্যাপী আসাম থেকে পাঞ্জাব পর্যন্ত এবং মধ্য ভারতের কয়েকটি জেলাসহ পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়িয়া এলাকায় বিস্তৃত। কেবল ভারতেই এই শ্রেণীর বনভূমি প্রায় ১৩০ লক্ষ হেক্টর জায়গা দখল করে আছে। বাংলাদেশ এবং নেপালে রয়েছে মোট ১০ লক্ষ হেক্টরের বেশি স্থান জুড়ে এ ধরনের বনভূমি।
'''শালবন'''  এক ধরনের বনভূমি যেখানে শালগাছ ''Shorea robusta'' মুখ্য উদ্ভিদ প্রজাতি। বনের শ্রেণীবিন্যাসে শালবনকে গ্রীষ্মমন্ডলীয় আর্দ্র পত্রঝরা বনাঞ্চলের (Tropical Moist Deciduous Forest) অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ভূ-প্রকৃতি, ভূতাত্ত্বিক গঠন, জলবায়ু এবং মৃত্তিকার ধরন শালবনের বিস্তৃতি নিয়ন্ত্রণ করে। শালবন প্রধানত দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় হিমালয়ের পাদদেশব্যাপী আসাম থেকে পাঞ্জাব পর্যন্ত এবং মধ্য ভারতের কয়েকটি জেলাসহ পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়িয়া এলাকায় বিস্তৃত। কেবল ভারতেই এই শ্রেণীর বনভূমি প্রায় ১৩০ লক্ষ হেক্টর জায়গা দখল করে আছে। বাংলাদেশ এবং নেপালে রয়েছে মোট ১০ লক্ষ হেক্টরের বেশি স্থান জুড়ে এ ধরনের বনভূমি।


[[Image:ForestSalGazipur.jpg|thumb|right|400px|শালবন, গাজীপুর]]
বাংলাদেশে মোট শালবন এলাকা প্রায় ১,২১,০০০ হেক্টর অর্থাৎ দেশের বনভূমির শতকরা প্রায় ৩২ ভাগ। মোটামুটি ব্যাপক হলেও শালবন দেশের মাত্র কয়েকটি জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে ছড়ানো। বেশির ভাগ বনাঞ্চল রয়েছে গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলায়। এ বনাঞ্চল ভাওয়ালের গড় ও মধুপুরের গড় নামে পরিচিত। বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলের শালবন এলাকা সবচেয়ে বড়, ব্রহ্মপুত্র এবং যমুনা নদীর মাঝে উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত এ বনভূমির দৈর্ঘ্য প্রায় ৯৬ কিমি এবং চওড়া ৮ থেকে ২৪ কিমি। ‘মধুপুর গড়’ নামেই এটি সুপরিচিত। এছাড়া কুমিল­া জেলায় এবং দেশের উত্তর অঞ্চলের দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, রংপুর এবং রাজশাহী জেলাতেও বিক্ষিপ্তভাবে শালবন বিদ্যমান।
বাংলাদেশে মোট শালবন এলাকা প্রায় ১,২১,০০০ হেক্টর অর্থাৎ দেশের বনভূমির শতকরা প্রায় ৩২ ভাগ। মোটামুটি ব্যাপক হলেও শালবন দেশের মাত্র কয়েকটি জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে ছড়ানো। বেশির ভাগ বনাঞ্চল রয়েছে গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলায়। এ বনাঞ্চল ভাওয়ালের গড় ও মধুপুরের গড় নামে পরিচিত। বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলের শালবন এলাকা সবচেয়ে বড়, ব্রহ্মপুত্র এবং যমুনা নদীর মাঝে উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত এ বনভূমির দৈর্ঘ্য প্রায় ৯৬ কিমি এবং চওড়া ৮ থেকে ২৪ কিমি। ‘মধুপুর গড়’ নামেই এটি সুপরিচিত। এছাড়া কুমিল­া জেলায় এবং দেশের উত্তর অঞ্চলের দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, রংপুর এবং রাজশাহী জেলাতেও বিক্ষিপ্তভাবে শালবন বিদ্যমান।


শালবনের প্রধান উদ্ভিদ প্রজাতি ''S. robusta''। এ গাছের উচ্চতা হয় ২৫ মিটার পর্যন্ত এবং শীতকালে অধিকাংশ গাছের পাতা ঝরে যায়। শাল অতি গুরুত্বপূর্ণ  [[দারুবৃৃৃক্ষ|দারুবৃক্ষ]]। এর কাঠ শক্ত ও টেকসই। ভাল জাতের শালকাঠ বাড়িঘর তৈরি, বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের খুঁটি, নৌকা ও রেলের স্লিপার তৈরি এবং অন্যান্য নির্মাণ কাজে ব্যাপকভাবে ব্যবহূত হয়। শালগাছের কান্ড ‘শাল দামার’, ‘রাল’ অথবা ‘ধুম’ নামে পরিচিত এক ধরনের সুগন্ধি আঠার উৎস। এ আঠা নৌকার ছিদ্র বন্ধ করতে, কার্বন পেপার, টাইপকরার যন্ত্রের ফিতা, বার্নিশ এবং রং তৈরির উপাদান হিসেবে কাজে লাগে। ত্বকের রোগ নিরাময়ে প্রলেপ হিসেবে এর ব্যবহার রয়েছে। এছাড়া এর বীজ থেকে সংগৃহীত তেল ভোজ্য তেল হিসেবে এবং শুকনা ফলের গুঁড়া আমাশয় রোগের চিকিৎসায় ব্যবহূত হয়। চালের পিঠা তৈরিতে উপজাতীয় লোকেরা শালগাছের পাতা ব্যবহার করে।


[[Image:ForestSalGazipur.jpg|thumb|right|শালবন , গাজীপুর]]
শালগাছ শালবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৃক্ষ-প্রজাতি হলেও এখানে আরও অন্তত ৫০০ বিভিন্ন প্রজাতির ছোটবড়, লতাগুল্ম ইত্যাদি গাছগাছড়া জন্মাতে দেখা যায়। এসবের মধ্যে উলে­খযোগ্য পলাশ, সিধা জারুল, বহেড়া, হরীতকী, শীলকরই, শিমুল, কুসুম, পিতরাজ, আমলকি, কাঞ্চনলতা, কুমারলতা, শতমূলী, মৌআলু, ঝুম আলু, ভাঁট, আসামলতা, ছনঘাস, শালপানি, বনহলদি ইত্যাদি। উদ্ভিদবৈচিত্র্যে সমৃদ্ধিশালী হলেও শালবন নানা কারণে এখন অবক্ষয়ের সম্মুখীন। ভৌগোলিক অবস্থান এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ যথেষ্ট অনুকূল না হবার পাশাপাশি অতিমাত্রায় সম্পদ আহরণ, গাছপালা কাটা, ভূমি সংলগ্ন পাতা ইত্যাদি সংগ্রহ, অবিবেচিতভাবে বিশেষ বিশেষ অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ও ভেষজগুণসম্পন্ন উদ্ভিদ আহরণ এবং নানাভাবে মানুষের হস্তক্ষেপের ফলে এ বনের স্বাভাবিক বাস্ত্ততন্ত্র ও বন্যপরিবেশ দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। সামাজিক দিক থেকেও বলা যায়, শালবন অন্যতম প্রধান বনাঞ্চল যেখানে এক শ্রেণীর উপজাতীয়রা বাস করে এবং তাদের জীবন ও জীবিকা এই বনের উপর নির্ভরশীল। উল্লুকসহ (''Hylobates hoolock'') অনেক বন্যপ্রাণীর স্বাভাবিক আবাস শালবন। আবাসস্থলের অবনতির কারণে তাদের অনেকেই এখন বিপন্ন অথবা হুমকিগ্রস্ত। [মো. মাহফুজুর রহমান]
 
 
শালবনের প্রধান উদ্ভিদ প্রজাতি S. robusta। এ গাছের উচ্চতা হয় ২৫ মিটার পর্যন্ত এবং শীতকালে অধিকাংশ গাছের পাতা ঝরে যায়। শাল অতি গুরুত্বপূর্ণ  [[দারুবৃৃৃক্ষ|দারুবৃক্ষ]]। এর কাঠ শক্ত ও টেকসই। ভাল জাতের শালকাঠ বাড়িঘর তৈরি, বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের খুঁটি, নৌকা ও রেলের স্লিপার তৈরি এবং অন্যান্য নির্মাণ কাজে ব্যাপকভাবে ব্যবহূত হয়। শালগাছের কান্ড ‘শাল দামার’, ‘রাল’ অথবা ‘ধুম’ নামে পরিচিত এক ধরনের সুগন্ধি আঠার উৎস। এ আঠা নৌকার ছিদ্র বন্ধ করতে, কার্বন পেপার, টাইপকরার যন্ত্রের ফিতা, বার্নিশ এবং রং তৈরির উপাদান হিসেবে কাজে লাগে। ত্বকের রোগ নিরাময়ে প্রলেপ হিসেবে এর ব্যবহার রয়েছে। এছাড়া এর বীজ থেকে সংগৃহীত তেল ভোজ্য তেল হিসেবে এবং শুকনা ফলের গুঁড়া আমাশয় রোগের চিকিৎসায় ব্যবহূত হয়। চালের পিঠা তৈরিতে উপজাতীয় লোকেরা শালগাছের পাতা ব্যবহার করে।
 
শালগাছ শালবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৃক্ষ-প্রজাতি হলেও এখানে আরও অন্তত ৫০০ বিভিন্ন প্রজাতির ছোটবড়, লতাগুল্ম ইত্যাদি গাছগাছড়া জন্মাতে দেখা যায়। এসবের মধ্যে উলে­খযোগ্য পলাশ, সিধা জারুল, বহেড়া, হরীতকী, শীলকরই, শিমুল, কুসুম, পিতরাজ, আমলকি, কাঞ্চনলতা, কুমারলতা, শতমূলী, মৌআলু, ঝুম আলু, ভাঁট, আসামলতা, ছনঘাস, শালপানি, বনহলদি ইত্যাদি। উদ্ভিদবৈচিত্র্যে সমৃদ্ধিশালী হলেও শালবন নানা কারণে এখন অবক্ষয়ের সম্মুখীন। ভৌগোলিক অবস্থান এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ যথেষ্ট অনুকূল না হবার পাশাপাশি অতিমাত্রায় সম্পদ আহরণ, গাছপালা কাটা, ভূমি সংলগ্ন পাতা ইত্যাদি সংগ্রহ, অবিবেচিতভাবে বিশেষ বিশেষ অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ও ভেষজগুণসম্পন্ন উদ্ভিদ আহরণ এবং নানাভাবে মানুষের হস্তক্ষেপের ফলে এ বনের স্বাভাবিক বাস্ত্ততন্ত্র ও বন্যপরিবেশ দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। সামাজিক দিক থেকেও বলা যায়, শালবন অন্যতম প্রধান বনাঞ্চল যেখানে এক শ্রেণীর উপজাতীয়রা বাস করে এবং তাদের জীবন ও জীবিকা এই বনের উপর নির্ভরশীল। উল­ুকসহ (Hylobates hoolock) অনেক বন্যপ্রাণীর স্বাভাবিক আবাস শালবন। আবাসস্থলের অবনতির কারণে তাদের অনেকেই এখন বিপন্ন অথবা হুমকিগ্রস্ত। [মো. মাহফুজুর রহমান]


[[en:Sal Forest]]
[[en:Sal Forest]]

০৬:০৬, ১৫ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

শালবন  এক ধরনের বনভূমি যেখানে শালগাছ Shorea robusta মুখ্য উদ্ভিদ প্রজাতি। বনের শ্রেণীবিন্যাসে শালবনকে গ্রীষ্মমন্ডলীয় আর্দ্র পত্রঝরা বনাঞ্চলের (Tropical Moist Deciduous Forest) অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ভূ-প্রকৃতি, ভূতাত্ত্বিক গঠন, জলবায়ু এবং মৃত্তিকার ধরন শালবনের বিস্তৃতি নিয়ন্ত্রণ করে। শালবন প্রধানত দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় হিমালয়ের পাদদেশব্যাপী আসাম থেকে পাঞ্জাব পর্যন্ত এবং মধ্য ভারতের কয়েকটি জেলাসহ পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়িয়া এলাকায় বিস্তৃত। কেবল ভারতেই এই শ্রেণীর বনভূমি প্রায় ১৩০ লক্ষ হেক্টর জায়গা দখল করে আছে। বাংলাদেশ এবং নেপালে রয়েছে মোট ১০ লক্ষ হেক্টরের বেশি স্থান জুড়ে এ ধরনের বনভূমি।

শালবন, গাজীপুর

বাংলাদেশে মোট শালবন এলাকা প্রায় ১,২১,০০০ হেক্টর অর্থাৎ দেশের বনভূমির শতকরা প্রায় ৩২ ভাগ। মোটামুটি ব্যাপক হলেও শালবন দেশের মাত্র কয়েকটি জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে ছড়ানো। বেশির ভাগ বনাঞ্চল রয়েছে গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলায়। এ বনাঞ্চল ভাওয়ালের গড় ও মধুপুরের গড় নামে পরিচিত। বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলের শালবন এলাকা সবচেয়ে বড়, ব্রহ্মপুত্র এবং যমুনা নদীর মাঝে উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত এ বনভূমির দৈর্ঘ্য প্রায় ৯৬ কিমি এবং চওড়া ৮ থেকে ২৪ কিমি। ‘মধুপুর গড়’ নামেই এটি সুপরিচিত। এছাড়া কুমিল­া জেলায় এবং দেশের উত্তর অঞ্চলের দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, রংপুর এবং রাজশাহী জেলাতেও বিক্ষিপ্তভাবে শালবন বিদ্যমান।

শালবনের প্রধান উদ্ভিদ প্রজাতি S. robusta। এ গাছের উচ্চতা হয় ২৫ মিটার পর্যন্ত এবং শীতকালে অধিকাংশ গাছের পাতা ঝরে যায়। শাল অতি গুরুত্বপূর্ণ  দারুবৃক্ষ। এর কাঠ শক্ত ও টেকসই। ভাল জাতের শালকাঠ বাড়িঘর তৈরি, বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের খুঁটি, নৌকা ও রেলের স্লিপার তৈরি এবং অন্যান্য নির্মাণ কাজে ব্যাপকভাবে ব্যবহূত হয়। শালগাছের কান্ড ‘শাল দামার’, ‘রাল’ অথবা ‘ধুম’ নামে পরিচিত এক ধরনের সুগন্ধি আঠার উৎস। এ আঠা নৌকার ছিদ্র বন্ধ করতে, কার্বন পেপার, টাইপকরার যন্ত্রের ফিতা, বার্নিশ এবং রং তৈরির উপাদান হিসেবে কাজে লাগে। ত্বকের রোগ নিরাময়ে প্রলেপ হিসেবে এর ব্যবহার রয়েছে। এছাড়া এর বীজ থেকে সংগৃহীত তেল ভোজ্য তেল হিসেবে এবং শুকনা ফলের গুঁড়া আমাশয় রোগের চিকিৎসায় ব্যবহূত হয়। চালের পিঠা তৈরিতে উপজাতীয় লোকেরা শালগাছের পাতা ব্যবহার করে।

শালগাছ শালবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৃক্ষ-প্রজাতি হলেও এখানে আরও অন্তত ৫০০ বিভিন্ন প্রজাতির ছোটবড়, লতাগুল্ম ইত্যাদি গাছগাছড়া জন্মাতে দেখা যায়। এসবের মধ্যে উলে­খযোগ্য পলাশ, সিধা জারুল, বহেড়া, হরীতকী, শীলকরই, শিমুল, কুসুম, পিতরাজ, আমলকি, কাঞ্চনলতা, কুমারলতা, শতমূলী, মৌআলু, ঝুম আলু, ভাঁট, আসামলতা, ছনঘাস, শালপানি, বনহলদি ইত্যাদি। উদ্ভিদবৈচিত্র্যে সমৃদ্ধিশালী হলেও শালবন নানা কারণে এখন অবক্ষয়ের সম্মুখীন। ভৌগোলিক অবস্থান এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ যথেষ্ট অনুকূল না হবার পাশাপাশি অতিমাত্রায় সম্পদ আহরণ, গাছপালা কাটা, ভূমি সংলগ্ন পাতা ইত্যাদি সংগ্রহ, অবিবেচিতভাবে বিশেষ বিশেষ অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ও ভেষজগুণসম্পন্ন উদ্ভিদ আহরণ এবং নানাভাবে মানুষের হস্তক্ষেপের ফলে এ বনের স্বাভাবিক বাস্ত্ততন্ত্র ও বন্যপরিবেশ দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। সামাজিক দিক থেকেও বলা যায়, শালবন অন্যতম প্রধান বনাঞ্চল যেখানে এক শ্রেণীর উপজাতীয়রা বাস করে এবং তাদের জীবন ও জীবিকা এই বনের উপর নির্ভরশীল। উল্লুকসহ (Hylobates hoolock) অনেক বন্যপ্রাণীর স্বাভাবিক আবাস শালবন। আবাসস্থলের অবনতির কারণে তাদের অনেকেই এখন বিপন্ন অথবা হুমকিগ্রস্ত। [মো. মাহফুজুর রহমান]