শার্শা উপজেলা

শার্শা উপজেলা (যশোর জেলা)  আয়তন: ৩৩৬.২৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৫৫´ থেকে ২৩°১২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫১´ থেকে ৮৯°০১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য এবং চৌগাছা উপজেলা, দক্ষিণে কলারোয়া উপজেলা, পূর্বে ঝিকরগাছা উপজেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য।

জনসংখ্যা ৩৪১৩২৮; পুরুষ ১৭০০৩৩, মহিলা ১৭১২৯৫। মুসলিম ৩৩২৫১৫, হিন্দু ৮৪৪৩, বৌদ্ধ ১১, খ্রিস্টান ২৭৩ এবং অন্যান্য ৮৬।

জলাশয় প্রধান নদী: বেতনা, দাউদখালী, ইছামতি ও কুদলা। বনমান্দার বিল, জিলা বিল, কালিয়ানির বিল, বড়কোনা বিল, বালুন্দা বিল ও রানতাপাড়া বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন শার্শা থানা গঠিত হয় ১৯১০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ৩ জুলাই ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১১ ১৩১ ১৬৮ ৪১৬০৮ ২৯৯৭২০ ১০১৫ ৫৯.২৮ (২০০১) ৪৮.৭
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
- ১১ ৩৬৫২৪ - ৫৬.৯
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১৪.২২ (২০০১) ৫০৮৪ ১৩৭১ (২০০১) ৬২.৬
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
উলশী ৯৪ ৮৬২২ ১৬৭৮২ ১৬৮২৫ ৪৬.৫
কায়বা ৫১ ৭৭৯৯ ১৫৩২০ ১৫৫৩০ ৪৭.২
গোগা ৪৩ ৭৫৪৪ ১৩০১৩ ১২৯৪৮ ৪৪.৫
ডিহি ৩৪ ৮৫৩৭ ১১৭৮৫ ১২৩৭২ ৫০.৭
নিজামপুর ৬৯ ৬২৮৮ ১০৪৮৮ ১০৬৯৬ ৪৭.৬
পটুখালী ৭৭ ৭২৯১ ১৪০০২ ১৩৮০৯ ৪৬.৫
বাগআঁচড়া ০৮ ৭১৩৩ ১৬৯৫৫ ১৭২৯৫ ৫২.৪
বাহাদুরপুর ১৭ ৮১৭১ ১২১৬০ ১২০৯৬ ৪৯.৭
বেনাপোল ২৫ ৫৩৪৮ ৯০০২ ৯০৫৫ ৪৯.১
লক্ষ্মণপুর ৬০ ৬৪৬০ ৯৮৩৫ ১০০৩১ ৪৪.৮
শার্শা ৮৬ ৭৭৮৬ ২২২১৪ ২২৫৯১ ৫৪.৩

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ পাটবাড়ি হিন্দু আশ্রম।

মুক্তিযুদ্ধ এ উপজেলার বেনাপোল সীমান্তের পূর্বে কাগজ পুকুর এলাকায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সংঘটিত এক লড়াইয়ে ১২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পাকবাহিনী পার্শ্ববর্তী ৩ টি গ্রাম ভস্মীভূত করে। উপজেলার ডিহি ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের সমাধি আছে; মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে ২টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন শার্শা উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৯।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ১৭৫, মন্দির ৮, গির্জা ২।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৯.৮%; পুরুষ ৫১.৬%, মহিলা ৪৮.০%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নাভারন ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), বুরুজ বাগান মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৪২), নাভারন হাইস্কুল (১৯৫২)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সাপ্তাহিক: শার্শা বার্তা (অবলুপ্ত); সাহিত্য সাময়িকী: অর্বাচীন।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ২৫, সিনেমা হল ৩, খেলার মাঠ ৪৮, যাত্রাদল ৪, লাইব্রেরি ১, মহিলা সংগঠন ১।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৬.৩২%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৯৯%, শিল্প ০.৯৪%, ব্যবসা ১২.৪০%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৬০%, চাকরি ৪.৪৩%, নির্মাণ ১.৫১%, ধর্মীয় সেবা ০.১৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৬৬% এবং অন্যান্য ৬.০১%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৩.৪৪%, ভূমিহীন ৪৬.৫৬%। শহরে ৪০.০৬% এবং গ্রামে ৫৩.৫১% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, আলু, গম, সরিষা, মশুর, তিল।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  মাষকলাই, তিসি।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কুল, কাঁঠাল, নারিকেল, আমড়া, খেজুর।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৩৭২, গবাদিপশু ১৩৯, হাঁস-মুরগি ৮৫।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৮০.৬ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৮৫.৯, কাঁচারাস্তা ৮৫৬.৬ কিমি; রেলপথ ১৩ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা চালকল, আটাকল, বলপেন কারখানা, স্টিলমিল, টেক্সটাইলমিল, বিস্কুট ফ্যাক্টরি, বরফকল, চিরুনী ও বোতাম তৈরির কারখানা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, সূচিশিল্প।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৩০, মেলা ২। শার্শা হাট, নাভারন হাট, বেনাপোল হাট, বাগঅাঁচড়া হাট, উলশী হাট, লক্ষ্মণপুর হাট, নিজামপুর হাট, টেংরা হাট, কায়বা হাট, কাশিপুর হাট, গোগা হাট, বাহাদুরপুর হাট উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য খেজুর গুড়, তিল, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫৭.৬% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৬.২%, ট্যাপ ১.১% এবং অন্যান্য ২.৭%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৬০.২% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৩.৪% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৬.৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১১।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, মহিলা সংঘ।  [মো. আব্দুল খালেক]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; শার্শা উপজেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।