শরিয়তপুর জেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
(হালনাগাদ)
 
(একজন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত ২টি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''শরিয়তপুর জেলা''' ([[ঢাকা বিভাগ|ঢাকা বিভাগ]])  আয়তন: ১১৮১.৫৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°০১´ থেকে ২৩°২৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°১৩´ থেকে ৯০°৩৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে মুন্সিগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে বরিশাল জেলা, পূর্বে চাঁদপুর জেলা, পশ্চিমে মাদারীপুর জেলা।
'''শরিয়তপুর জেলা''' ([[ঢাকা বিভাগ|ঢাকা বিভাগ]])  আয়তন: ১১৭৪.০৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°০১´ থেকে ২৩°২৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°১৩´ থেকে ৯০°৩৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে মুন্সিগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে বরিশাল জেলা, পূর্বে চাঁদপুর জেলা, পশ্চিমে মাদারীপুর জেলা।


''জনসংখ্যা'' ১০৮২৩০০; পুরুষ ৫৪৩৮৩৮, মহিলা ৫৩৮৪৬২। মুসলিম ১০৪১৫৮৪, হিন্দু ৪০৪৯১, বৌদ্ধ ৬০, খ্রিস্টান ২৮ এবং অন্যান্য ১৩৭।
''জনসংখ্যা'' ১১৫৫৮২৪; পুরুষ ৫৫৯০৭৫, মহিলা ৫৯৬৭৪৯। মুসলিম ১১১৪৩০১, হিন্দু ৪১৩৩০, বৌদ্ধ ২৩, খ্রিস্টান ১১৪ এবং অন্যান্য ৫৬।


''জলাশয়'' পদ্মা, মেঘনা, পালং ও কীর্তিনাশা নদী উল্লেখযোগ্য।
''জলাশয়'' পদ্মা, মেঘনা, পালং ও কীর্তিনাশা নদী উল্লেখযোগ্য।


''প্রশাসন'' শরিয়তপুর জেলা গঠিত হয় ১৯৮৪ সালের ১ মার্চ। শরিয়তপুর পৌরসভা গঠিত হয় ১৯৯০ সালে। জেলার ছয়টি উপজেলার মধ্যে ভেদরগঞ্জ উপজেলা সর্ববৃহৎ (৩১১.২৪ বর্গ কিমি) এবং সবচেয়ে ছোট উপজেলা ডামুড্যা (৯১.৭৬ বর্গ কিমি)।
''প্রশাসন'' শরিয়তপুর জেলা গঠিত হয় ১৯৮৪ সালের ১ মার্চ। শরিয়তপুর পৌরসভা গঠিত হয় ১৯৯০ সালে। জেলার ছয়টি উপজেলার মধ্যে ভেদরগঞ্জ উপজেলা সর্ববৃহৎ (২৬১.৯০ বর্গ কিমি) এবং সবচেয়ে ছোট উপজেলা ডামুড্যা (৯০.৫৪ বর্গ কিমি)।


{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম  
| শহর  || গ্রাম  
|-  
|-  
| ১২২৫.৫১  || ৬ || ৫ || ৬৪  || ৬০৮  || ১২৩৫  || ১১৪৭৭৬  || ৯৬৭৫২৪  || ৯৩৩  || ৩৮.৯৫
| ১১৭৪.০৫ || ৬ || ৫ || ৬৫ || ৫৫৬ || ১২৫৪ || ১৩১০৪৪ || ১০২৪৭৮০ || ৯৮৪ || ৪৭.
|}
|}


২৩ নং লাইন: ২৩ নং লাইন:
| colspan= "10" | জেলা
| colspan= "10" | জেলা
|-
|-
| rowspan= "2" | আয়তন (বর্গ কিমি) || rowspan= "2" | উপজেলা || rowspan= "2" | পৌরসভা || rowspan= "2" | ইউনিয়ন  || rowspan= "2" | মৌজা  || rowspan= "2" | গ্রাম  || colspan= "2" | জনসংখ্যা || rowspan= "2" | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || rowspan= "2" | শিক্ষার হার (%)
| উপজেলার নাম  || আয়তন (বর্গ কিমি) || পৌরসভা ||  ইউনিয়ন  || মৌজা  || গ্রাম  || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
| গোঁসাইরহাট || ১৯৬.৭২ || - || ৮ || ১০৭ || ২২১ || ১৫৭৬৬৫  || ৮০১ || ৪২.১
|-
| জাজিরা || ২৪৬.২১ || ১ || ১২ || ১১৪ || ২০০  || ১৯৪০১৯ || ৭৮৮ || ৪৪.৪
|-
| ডামুড্যা || ৯০.৫৪ || ১ || ৭ || ৫৮ || ১২০ || ১০৯০০৩ || ১২০৪ || ৫২.৫
|-
| নড়িয়া || ২০৩.৫৮ || ১ || ১৪ || ১৩৫ || ১৮৯ || ২৩১৬৪৪ || ১১৩৮ || ৫১.৮
|-
| ভেদরগঞ্জ || ২৬১.৯০ || ১ || ১৩ || ৮৮ || ৩৭২ || ২৫৩২৩৪ || ৯৬৭ || ৪২.৭
|-
|-
| শহর  || গ্রাম
| শরিয়তপুর সদর || ১৭৫.০৯  || ১ || ১১ || ৮৬ || ১৫২ || ২১০২৫৯ || ১২০১ || ৫১.২
|-
| গোঁসাইরহাট  || ১৬৭.৮৬  || --  || ৭  || ৮৪  || ২১০  || ১২৪০১৪  || ৭৩৯  || ৩২.০২
|-
| জাজিরা  || ২৩৯.৫৩  || ১  || ১২  || ১২৬  || ১৯৫  || ১৭৯৩২২  || ৭৪৯  || ৩১.০
|-
| ডামুড্যা  || ৯১.৭৬  || ১  || ৭  || ৬০  || ১২১  || ১১৬৬৪৩  || ১২৬৯  || ৪৩.১
|-
| নড়িয়া  || ২৪০.০২  || ১  || ১৪  || ১৪৬  || ১৮৭  || ২২৫৫৩৬  || ৯৪০  || ৪১.৩
|-
| ভেদরগঞ্জ  || ৩১১.২৪  || ১  || ১৩  || ৮৭  || ৩৭১  || ২৩৭৭৬৯  || ৭৬৪  || ৪০.৪
|-
| শরিয়তপুর সদর || ১৭৫.১০  || ১ || ১১ || ১০৫  || ১৫১  || ১৯৯০১৬  || ১১৩৭  || ৪৩.২
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:ShariatpurDistrict.jpg|thumb|400px|right]]
[[Image:ShariatpurDistrict.jpg|thumb|400px|right]]
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এ জেলায় পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা ব্যাপক অগ্নিসংযোগ, হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। মুক্তিযুদ্ধে সাবেক মাদারীপুর মহকুমার সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন কর্ণেল শওকত আলী ও স্টুয়ার্ট মজিবুর রহমান। মে মাসে শরিয়তপুর সদর উপজেলার কয়েকটি স্থানে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এসব সংঘর্ষে ৩১৩ জন পাকসেনা নিহত হয়। ভেদরগঞ্জ উপজেলায় পাকবাহিনীর সাথে ২টি খন্ডযুদ্ধ এবং ১টি সম্মুখ লড়াইয়ে বহুসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ডামুড্যা কলেজের দক্ষিণে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সম্মুখ লড়াইয়ে আহসানুল হক ও আব্দুল ওয়াহাবসহ ৯ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। মুজিববাহিনী এ উপজেলায় গেরিলা পদ্ধতিতে যুদ্ধ চালায়। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর অন্য এক লড়াইয়ে গোঁসাইরহাট উপজেলায় ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। নড়িয়া উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধারা থানা আক্রমণ করে অস্ত্র লুট করে এবং পরে পাকবাহিনী এ এলাকায় ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় জাজিরা উপজেলায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ কয়েকটি খন্ডযুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' গণকবর (মহিসার, আটিপাড়া); স্মৃতিসৌধ ৯; স্মৃতিস্তম্ভ ৮।
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এ জেলায় পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা ব্যাপক অগ্নিসংযোগ, হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। মুক্তিযুদ্ধে সাবেক মাদারীপুর মহকুমার সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন কর্ণেল শওকত আলী ও স্টুয়াট মজিবুর রহমান। মে মাসে শরিয়তপুর সদর উপজেলার কয়েকটি স্থানে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এসব সংঘর্ষে ৩১৩ জন পাকসেনা নিহত হয়। ভেদরগঞ্জ উপজেলায় পাকবাহিনীর সাথে টি খণ্ডযুদ্ধ এবং ১ টি সম্মুখ লড়াইয়ে বহুসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ডামুড্যা কলেজের দক্ষিণে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সম্মুখ লড়াইয়ে আহসানুল হক ও আব্দুল ওয়াহাবসহ ৯ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। মুজিববাহিনী এ উপজেলায় গেরিলা পদ্ধতিতে যুদ্ধ চালায়। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর অন্য এক লড়াইয়ে গোঁসাইরহাট উপজেলায় ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। নড়িয়া উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধারা থানা আক্রমণ করে অস্ত্র লুট করে এবং পরে পাকবাহিনী এ এলাকায় ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় জাজিরা উপজেলায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ কয়েকটি খণ্ডযুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। শরিয়তপুর জেলার মহিসার ও আটিপাড়ায় ২টি গণকবর রয়েছে; ৯টি স্মৃতিসৌধ এবং ৮টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৮.৯৫%; পুরুষ ৪২.১৭%, মহিলা ৩৫.৭৭%। কলেজ ১৬, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১০২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭৭২, মাদ্রাসা ৪২। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শরিয়তপুর সরকারি কলেজ, শরিয়তপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পালং তুলাসার গুরুদাস সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, পালং বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৯), ডোমসার জগৎচন্দ্র ইনস্টিটিউিশন (১৯০৭), চিকন্দী শরফ আলী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৪), রুদ্রকর নীলমনি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫), কাগদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শরিয়তপুর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা, আঙ্গারিয়া ওসমানিয়া কওমিয়া মাদ্রাসা, কওয়াদি দাখিল মাদ্রাসা।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪৭.%; পুরুষ ৪৮.%, মহিলা ৪৬.%। কলেজ ১৬, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১০২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭৭২, মাদ্রাসা ৪২। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শরিয়তপুর সরকারি কলেজ, শরিয়তপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পালং তুলাসার গুরুদাস সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, পালং বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৯), ডোমসার জগৎচন্দ্র ইনস্টিটিউিশন (১৯০৭), চিকন্দী শরফ আলী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৪), রুদ্রকর নীলমনি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫), কাগদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শরিয়তপুর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা, আঙ্গারিয়া ওসমানিয়া কওমিয়া মাদ্রাসা, কওয়াদি দাখিল মাদ্রাসা।


''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৬১.৬৬%, অকৃষি শ্রমিক ২.৬৪%, শিল্প ০.৯১%, ব্যবসা ১৪.৩৪%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৪১%, নির্মাণ ১.১৩%, ধর্মীয় সেবা ০.২৮%, চাকরি ৬.৪১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ২.৭১% এবং অন্যান্য ৭.৫১%।
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৬১.৬৬%, অকৃষি শ্রমিক ২.৬৪%, শিল্প ০.৯১%, ব্যবসা ১৪.৩৪%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৪১%, নির্মাণ ১.১৩%, ধর্মীয় সেবা ০.২৮%, চাকরি ৬.৪১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ২.৭১% এবং অন্যান্য ৭.৫১%।
৫৮ নং লাইন: ৫৫ নং লাইন:
''আরো দেখুন'' সংশ্লিষ্ট উপজেলা।
''আরো দেখুন'' সংশ্লিষ্ট উপজেলা।


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; শরিয়তপুর জেলা মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০১১; শরিয়তপুর জেলার উপজেলাসমূহের মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০১১।
'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; শরিয়তপুর জেলা মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০১১; শরিয়তপুর জেলার উপজেলাসমূহের মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০১১।


[[en:Shariatpur District]]
[[en:Shariatpur District]]

১৭:৩১, ৩০ মে ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

শরিয়তপুর জেলা (ঢাকা বিভাগ)  আয়তন: ১১৭৪.০৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°০১´ থেকে ২৩°২৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°১৩´ থেকে ৯০°৩৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে মুন্সিগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে বরিশাল জেলা, পূর্বে চাঁদপুর জেলা, পশ্চিমে মাদারীপুর জেলা।

জনসংখ্যা ১১৫৫৮২৪; পুরুষ ৫৫৯০৭৫, মহিলা ৫৯৬৭৪৯। মুসলিম ১১১৪৩০১, হিন্দু ৪১৩৩০, বৌদ্ধ ২৩, খ্রিস্টান ১১৪ এবং অন্যান্য ৫৬।

জলাশয় পদ্মা, মেঘনা, পালং ও কীর্তিনাশা নদী উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন শরিয়তপুর জেলা গঠিত হয় ১৯৮৪ সালের ১ মার্চ। শরিয়তপুর পৌরসভা গঠিত হয় ১৯৯০ সালে। জেলার ছয়টি উপজেলার মধ্যে ভেদরগঞ্জ উপজেলা সর্ববৃহৎ (২৬১.৯০ বর্গ কিমি) এবং সবচেয়ে ছোট উপজেলা ডামুড্যা (৯০.৫৪ বর্গ কিমি)।

জেলা
আয়তন (বর্গ কিমি) উপজেলা পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম
১১৭৪.০৫ ৬৫ ৫৫৬ ১২৫৪ ১৩১০৪৪ ১০২৪৭৮০ ৯৮৪ ৪৭.৩
জেলা
উপজেলার নাম আয়তন (বর্গ কিমি) পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
গোঁসাইরহাট ১৯৬.৭২ - ১০৭ ২২১ ১৫৭৬৬৫ ৮০১ ৪২.১
জাজিরা ২৪৬.২১ ১২ ১১৪ ২০০ ১৯৪০১৯ ৭৮৮ ৪৪.৪
ডামুড্যা ৯০.৫৪ ৫৮ ১২০ ১০৯০০৩ ১২০৪ ৫২.৫
নড়িয়া ২০৩.৫৮ ১৪ ১৩৫ ১৮৯ ২৩১৬৪৪ ১১৩৮ ৫১.৮
ভেদরগঞ্জ ২৬১.৯০ ১৩ ৮৮ ৩৭২ ২৫৩২৩৪ ৯৬৭ ৪২.৭
শরিয়তপুর সদর ১৭৫.০৯ ১১ ৮৬ ১৫২ ২১০২৫৯ ১২০১ ৫১.২

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এ জেলায় পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা ব্যাপক অগ্নিসংযোগ, হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। মুক্তিযুদ্ধে সাবেক মাদারীপুর মহকুমার সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন কর্ণেল শওকত আলী ও স্টুয়াট মজিবুর রহমান। মে মাসে শরিয়তপুর সদর উপজেলার কয়েকটি স্থানে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এসব সংঘর্ষে ৩১৩ জন পাকসেনা নিহত হয়। ভেদরগঞ্জ উপজেলায় পাকবাহিনীর সাথে ২ টি খণ্ডযুদ্ধ এবং ১ টি সম্মুখ লড়াইয়ে বহুসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ডামুড্যা কলেজের দক্ষিণে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সম্মুখ লড়াইয়ে আহসানুল হক ও আব্দুল ওয়াহাবসহ ৯ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। মুজিববাহিনী এ উপজেলায় গেরিলা পদ্ধতিতে যুদ্ধ চালায়। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর অন্য এক লড়াইয়ে গোঁসাইরহাট উপজেলায় ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। নড়িয়া উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধারা থানা আক্রমণ করে অস্ত্র লুট করে এবং পরে পাকবাহিনী এ এলাকায় ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় জাজিরা উপজেলায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ কয়েকটি খণ্ডযুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। শরিয়তপুর জেলার মহিসার ও আটিপাড়ায় ২টি গণকবর রয়েছে; ৯টি স্মৃতিসৌধ এবং ৮টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৭.৩%; পুরুষ ৪৮.০%, মহিলা ৪৬.৬%। কলেজ ১৬, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১০২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭৭২, মাদ্রাসা ৪২। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শরিয়তপুর সরকারি কলেজ, শরিয়তপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পালং তুলাসার গুরুদাস সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, পালং বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৯), ডোমসার জগৎচন্দ্র ইনস্টিটিউিশন (১৯০৭), চিকন্দী শরফ আলী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৪), রুদ্রকর নীলমনি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫), কাগদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শরিয়তপুর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা, আঙ্গারিয়া ওসমানিয়া কওমিয়া মাদ্রাসা, কওয়াদি দাখিল মাদ্রাসা।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬১.৬৬%, অকৃষি শ্রমিক ২.৬৪%, শিল্প ০.৯১%, ব্যবসা ১৪.৩৪%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৪১%, নির্মাণ ১.১৩%, ধর্মীয় সেবা ০.২৮%, চাকরি ৬.৪১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ২.৭১% এবং অন্যান্য ৭.৫১%।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: হুংকার; সাপ্তাহিক: মুক্তির কণ্ঠ, সেতু, কাগজের পাতা, সপ্তপল্লি সমাচার; অবলুপ্ত: সাপ্তাহিক চিকন্দিবার্তা, শরিয়তপুর বার্তা, রুদ্রকণ্ঠ, জবানবন্দি।

লোকসংস্কৃতি এ জেলায় নববর্ষ, চৈত্র সংক্রান্তি, নৌকাবাইচ উল্লেখযোগ্য লোকউৎসব। জারিগান, যাত্রা, কবিগান, বিয়ের গান প্রভৃতি লোকসঙ্গীত বেশ জনপ্রিয়। এছাড়া এ জেলায় হা-ডু-ডু, গোল্লাছুট, দাড়িয়াবান্ধাসহ নানা ধরণের লোকক্রীড়ার প্রচলন রয়েছে। পৌষ ও চৈত্র সংক্রান্তিতে পূর্বে এখানে ষাঁড়দৌড় হতো।

গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ফতেজঙ্গপুর দূর্গ, নাওডোবা ফেরিঘাট, আঙ্গারিয়া ব্রিজ, রাজাগঞ্জ ব্রিজ, গয়াতোলা ব্রিজ।  [শহীদুল হক]

আরো দেখুন সংশ্লিষ্ট উপজেলা।

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; শরিয়তপুর জেলা মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০১১; শরিয়তপুর জেলার উপজেলাসমূহের মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০১১।