রামপাল উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র'''))
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''রামপাল উপজেলা''' (বাগেরহাট জেলা)  আয়তন: ২৯১.২২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৩০´ থেকে ২২°৪১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৩২´ থেকে ৮৯°৪৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে বাগেরহাট সদর ও ফকিরহাট উপজেলা, দক্ষিণে মংলা ও মোড়েলগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে মোড়েলগঞ্জ ও বাগেরহাট সদর উপজেলা, পশ্চিমে বটিয়াঘাটা ও দাকোপ উপজেলা।
'''রামপাল উপজেলা''' ([[বাগেরহাট জেলা|বাগেরহাট জেলা]])  আয়তন: ২৯১.২২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৩০´ থেকে ২২°৪১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৩২´ থেকে ৮৯°৪৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে বাগেরহাট সদর ও ফকিরহাট উপজেলা, দক্ষিণে মংলা ও মোড়েলগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে মোড়েলগঞ্জ ও বাগেরহাট সদর উপজেলা, পশ্চিমে বটিয়াঘাটা ও দাকোপ উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ১৭৮৫০৩; পুরুষ ৯২০৫৯, মহিলা ৮৬৪৪৪। মুসলিম ১৩৯১৯৩, হিন্দু ৩৮৮০৪, বৌদ্ধ ৪৫৮ এবং অন্যান্য ৪৮।
''জনসংখ্যা'' ১৭৮৫০৩; পুরুষ ৯২০৫৯, মহিলা ৮৬৪৪৪। মুসলিম ১৩৯১৯৩, হিন্দু ৩৮৮০৪, বৌদ্ধ ৪৫৮ এবং অন্যান্য ৪৮।
১০ নং লাইন: ১০ নং লাইন:
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
! colspan="9" | উপজেলা
| colspan="9" | উপজেলা
|-
|-
! rowspan="2" | পৌরসভা  || rowspan="2" | ইউনিয়ন  || rowspan="2" | মৌজা  || rowspan="2" | গ্রাম  || rowspan="2" | জনসংখ্যা || colspan="2" | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি)  || colspan="2" | শিক্ষার হার (%)
| rowspan="2" | পৌরসভা  || rowspan="2" | ইউনিয়ন  || rowspan="2" | মৌজা  || rowspan="2" | গ্রাম  || rowspan="2" | জনসংখ্যা || colspan="2" | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি)  || colspan="2" | শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| শহর  || গ্রাম  || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম  || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| -  || ১০  || ১২৫  || ১৩৩  || ২০৪৯  || ১৭৬৪৫৪  || ৬১৩  || ৬৮.৮  || ৫৭.২
| -  || ১০  || ১২৫  || ১৩৩  || ২০৪৯  || ১৭৬৪৫৪  || ৬১৩  || ৬৮.৮  || ৫৭.২
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| উপজেলা শহর
| colspan="9" | উপজেলা শহর
|-
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ০.৯২  || ১  || ২০৪৯  || ২২২৭  || ৯৮.৮
| ০.৯২  || ১  || ২০৪৯  || ২২২৭  || ৯৮.৮
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| ইউনিয়ন
| colspan="9" | ইউনিয়ন
|-  
|-  
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
৭২ নং লাইন: ৬৫ নং লাইন:
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:RampalUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালে পেড়িখালী ইউনিয়নের ডাকরা গ্রামে সংগঠিত গণহত্যা ছিল রামপালে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা। ২১ মে এই উপজেলার বিভিন্ন এলাকার হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা রাজাকার আলবদরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে জীবন বাচাঁনোর তাগিদে ভারতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ডাকরা গ্রামের কালী মন্দিরে সমবেত হয়। ঘটনার দিন রাজাকার রজ্জব আলী ফকিরের নেতৃত্বে তার বাহিনী দুটি ছিপ নৌকায় এসে কালীগঞ্জ বাজারের কুমারখালি খাল ও মাদারতলি খালের নিকট অবস্থান নিয়ে দু’দিক থেকে সাঁড়াশি আক্রমণ করে বেশ সংখ্যক নিরীহ লোককে হত্যাসহ ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। রামপাল পুরাতন ডাকবাংলোর নদীর ঘাটে একটি বধ্যভূমি ছিল। রাজাকাররা বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকদের ধরে এনে জবাই করে লাশ নদীতে ফেলে দিত। এছাড়াও রামপালের দোয়ানিয়া বেলাই নামক  গ্রামে গণহত্যা হয়েছিল।
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালে পেড়িখালী ইউনিয়নের ডাকরা গ্রামে সংগঠিত গণহত্যা ছিল রামপালে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা। ২১ মে এই উপজেলার বিভিন্ন এলাকার হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা রাজাকার আলবদরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে জীবন বাচাঁনোর তাগিদে ভারতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ডাকরা গ্রামের কালী মন্দিরে সমবেত হয়। ঘটনার দিন রাজাকার রজ্জব আলী ফকিরের নেতৃত্বে তার বাহিনী দুটি ছিপ নৌকায় এসে কালীগঞ্জ বাজারের কুমারখালি খাল ও মাদারতলি খালের নিকট অবস্থান নিয়ে দু’দিক থেকে সাঁড়াশি আক্রমণ করে বেশ সংখ্যক নিরীহ লোককে হত্যাসহ ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। রামপাল পুরাতন ডাকবাংলোর নদীর ঘাটে একটি বধ্যভূমি ছিল। রাজাকাররা বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকদের ধরে এনে জবাই করে লাশ নদীতে ফেলে দিত। এছাড়াও রামপালের দোয়ানিয়া বেলাই নামক  গ্রামে গণহত্যা হয়েছিল।


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' গণকবর ১, বধ্যভূমি ২ (ডাকরা ও রামপাল পুরাতন ডাকবাংলোর নদীর ঘাট), স্মৃতিস্তম্ভভ ১।
''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' গণকবর ১, বধ্যভূমি ২ (ডাকরা ও রামপাল পুরাতন ডাকবাংলোর নদীর ঘাট), স্মৃতিস্তম্ভভ ১।


ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ২৪৫, মন্দির ১০২, গির্জা ৫। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: রামপাল জামে মসজিদ, চাকশ্রী জামে মসজিদ, গিলাতলা বাজার জামে মসজিদ, মল্লিকেরবেড় জামে মসজিদ, ডাকরা কালী মন্দির, রামপাল দুর্গা মন্দির।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ২৪৫, মন্দির ১০২, গির্জা ৫। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: রামপাল জামে মসজিদ, চাকশ্রী জামে মসজিদ, গিলাতলা বাজার জামে মসজিদ, মল্লিকেরবেড় জামে মসজিদ, ডাকরা কালী মন্দির, রামপাল দুর্গা মন্দির।
 
[[Image:RampalUpazila.jpg|thumb|right|রামপাল উপজেলা]]
 
 


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৫৭.৩%; পুরুষ ৬০%, মহিলা ৫৪.৪%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৭, কিন্ডার গার্টেন ৬, কমিউনিটি স্কুল ৩, মাদ্রাসা ৪৫। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: রামপাল ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৮), গিলাতলা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৯), ডাকরা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪০), ফয়লাহাট কামালউদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩৭), পেড়িখালী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩৯), ফয়লাহাট সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৩৭), ইসলামাবাদ সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৩৯)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৫৭.৩%; পুরুষ ৬০%, মহিলা ৫৪.৪%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৭, কিন্ডার গার্টেন ৬, কমিউনিটি স্কুল ৩, মাদ্রাসা ৪৫। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: রামপাল ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৮), গিলাতলা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৯), ডাকরা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪০), ফয়লাহাট কামালউদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩৭), পেড়িখালী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩৯), ফয়লাহাট সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৩৭), ইসলামাবাদ সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৩৯)।
৯২ নং লাইন: ৮২ নং লাইন:
''প্রধান কৃষি ফসল'' ধান, মিষ্টি আলু, শাকসবজি।
''প্রধান কৃষি ফসল'' ধান, মিষ্টি আলু, শাকসবজি।


বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  আখ, সুপারি।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি''  আখ, সুপারি।


''প্রধান ফল-ফলাদিব'' আম, জাম, পেঁপে, কলা, তাল, ডাব।
''প্রধান ফল-ফলাদি'' আম, জাম, পেঁপে, কলা, তাল, ডাব।


''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ৯২০, গবাদিপশু ৬, হাঁস-মুরগি ৭৫, কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র ১, চিংড়ির ঘের ৪২০০।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ৯২০, গবাদিপশু ৬, হাঁস-মুরগি ৭৫, কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র ১, চিংড়ির ঘের ৪২০০।
১১২ নং লাইন: ১০২ নং লাইন:
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১০.৮৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১০.৮৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


প্রাকৃতিক সম্পদ  বাংলাদেশের ভূ-তত্ত্ব ও জরীপ বিভাগ বর্তমানে প্রাথমিকভাবে জয়নগর ও কাদিরখোলায় গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে।
''প্রাকৃতিক সম্পদ''  বাংলাদেশের ভূ-তত্ত্ব ও জরীপ বিভাগ বর্তমানে প্রাথমিকভাবে জয়নগর ও কাদিরখোলায় গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে।


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৭১.৭৮%, পুকুর ২৫.৮৬%, ট্যাপ ১.১২% এবং অন্যান্য ১.২৪%। এ উপজেলার সকল অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৭১.৭৮%, পুকুর ২৫.৮৬%, ট্যাপ ১.১২% এবং অন্যান্য ১.২৪%। এ উপজেলার সকল অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
১২৪ নং লাইন: ১১৪ নং লাইন:
''এনজিও'' আশা, ব্র্যাক, কারিতাস।  [মোশফেকুর রহমান]
''এনজিও'' আশা, ব্র্যাক, কারিতাস।  [মোশফেকুর রহমান]


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; রামপাল উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; রামপাল উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Rampal Upazila]]
[[en:Rampal Upazila]]

০৯:০৮, ৯ মার্চ ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

রামপাল উপজেলা (বাগেরহাট জেলা)  আয়তন: ২৯১.২২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৩০´ থেকে ২২°৪১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৩২´ থেকে ৮৯°৪৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে বাগেরহাট সদর ও ফকিরহাট উপজেলা, দক্ষিণে মংলা ও মোড়েলগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে মোড়েলগঞ্জ ও বাগেরহাট সদর উপজেলা, পশ্চিমে বটিয়াঘাটা ও দাকোপ উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৭৮৫০৩; পুরুষ ৯২০৫৯, মহিলা ৮৬৪৪৪। মুসলিম ১৩৯১৯৩, হিন্দু ৩৮৮০৪, বৌদ্ধ ৪৫৮ এবং অন্যান্য ৪৮।

জলাশয় প্রধান নদী: দাউদখালী, গাছিয়াখালী, পশুর, মংলা, পয়লাহার।

প্রশাসন রামপাল থানা গঠিত হয় ১৮৯২ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১০ ১২৫ ১৩৩ ২০৪৯ ১৭৬৪৫৪ ৬১৩ ৬৮.৮ ৫৭.২
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
০.৯২ ২০৪৯ ২২২৭ ৯৮.৮
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
উজলকুর ৯৪ ৭৭৪৫ ১৫৬৭০ ১৪৬৫৩ ৫৬.৯৪
গৌরম্ভা ৪১ ৮২৪৮ ১১০৬৭ ১০৫৫৮ ৪৬.৬৯
পেড়িখালী ৭১ ৫২২৫ ৮৩৩২ ৮২২৩ ৫৯.৬৮
বাইনতলা ০৫ ৮৫০৫ ১২৩৪২ ১১৮৮১ ৬১.৭৮
বাঁশতলী ১১ ৫৪৭৬ ৭৮৬২ ৭৬৪৪ ৬৩.৯১
ভোজপাতিয়া ১৭ ৫৬৯৫ ৫২২৪ ৪৯৭৪ ৬৩.৫৭
মল্লিকেরবেড় ৫৩ ৬৬৭১ ৬২০৮ ৫৯৪৩ ৫৪.৫৮
রাজনগর ৭৭ ৭৪৫৯ ৭৩২১ ৫৯০৭ ৫৬.২২
রামপাল ৮৩ ৮৮৯৫ ১৪০৫৬ ১৩১২৩ ৫৩.৩১
হুড়কা ৪৭ ৪৩৬৩ ৩৯৭৭ ৩৫৩৮ ৬৬.৬৪

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালে পেড়িখালী ইউনিয়নের ডাকরা গ্রামে সংগঠিত গণহত্যা ছিল রামপালে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা। ২১ মে এই উপজেলার বিভিন্ন এলাকার হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা রাজাকার আলবদরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে জীবন বাচাঁনোর তাগিদে ভারতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ডাকরা গ্রামের কালী মন্দিরে সমবেত হয়। ঘটনার দিন রাজাকার রজ্জব আলী ফকিরের নেতৃত্বে তার বাহিনী দুটি ছিপ নৌকায় এসে কালীগঞ্জ বাজারের কুমারখালি খাল ও মাদারতলি খালের নিকট অবস্থান নিয়ে দু’দিক থেকে সাঁড়াশি আক্রমণ করে বেশ সংখ্যক নিরীহ লোককে হত্যাসহ ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। রামপাল পুরাতন ডাকবাংলোর নদীর ঘাটে একটি বধ্যভূমি ছিল। রাজাকাররা বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকদের ধরে এনে জবাই করে লাশ নদীতে ফেলে দিত। এছাড়াও রামপালের দোয়ানিয়া বেলাই নামক  গ্রামে গণহত্যা হয়েছিল।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ১, বধ্যভূমি ২ (ডাকরা ও রামপাল পুরাতন ডাকবাংলোর নদীর ঘাট), স্মৃতিস্তম্ভভ ১।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ২৪৫, মন্দির ১০২, গির্জা ৫। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: রামপাল জামে মসজিদ, চাকশ্রী জামে মসজিদ, গিলাতলা বাজার জামে মসজিদ, মল্লিকেরবেড় জামে মসজিদ, ডাকরা কালী মন্দির, রামপাল দুর্গা মন্দির।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৭.৩%; পুরুষ ৬০%, মহিলা ৫৪.৪%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৭, কিন্ডার গার্টেন ৬, কমিউনিটি স্কুল ৩, মাদ্রাসা ৪৫। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: রামপাল ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৮), গিলাতলা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৯), ডাকরা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪০), ফয়লাহাট কামালউদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩৭), পেড়িখালী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩৯), ফয়লাহাট সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৩৭), ইসলামাবাদ সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৩৯)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, ক্লাব ২৬, শিল্পকলা একাডেমি ১, মিলনায়তন ৪।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫২.৪১%, অকৃষি শ্রমিক ৭.৭১%, শিল্প ০.৭৯%, ব্যবসা ২০.৭১%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৬৪%, চাকরি ৫.২৬%, নির্মাণ ১.৩৩%, ধর্মীয় সেবা ০.২৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১৬% এবং অন্যান্য ৭.৭৫%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৫.৫৯%, ভূমিহীন ৪৪.৪১%। শহরে ৬৪.১৩% এবং গ্রামে ৫৫.৪৯% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, মিষ্টি আলু, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  আখ, সুপারি।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, জাম, পেঁপে, কলা, তাল, ডাব।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৯২০, গবাদিপশু ৬, হাঁস-মুরগি ৭৫, কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র ১, চিংড়ির ঘের ৪২০০।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৭৩ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৫১ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩৮০ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।

শিল্প ও কলকারখানা অটোরাইস মিল, স’মিল, অয়েল মিল, ফ্লাওয়ার মিল, আইস ফ্যাক্টরি।

কুটিরশিল্প মৃৎশিল্প, পাটশিল্প, দারুশিল্প, বেতের কাজ, নকশি কাঁথা।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৮, মেলা ৪। গিলাতলা হাট, ফয়লা হাট, ভাগা হাট, চাকশ্রী হাট, ডাকরা হাট, কালীগঞ্জ হাট, পোড়খালী হাট ও খান জাহান আলী বাজার এবং কালেখারবেড় ঠাকুরুণ দীঘির পাড়ের বাসন্তী মেলা, ঝনঝনিয়ার রাস মেলা, গাজিখালি পাগল চাঁদের মেলা ও হুড়কার বারুনী মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   চিংড়ি, কাঁকড়া।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১০.৮৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

প্রাকৃতিক সম্পদ  বাংলাদেশের ভূ-তত্ত্ব ও জরীপ বিভাগ বর্তমানে প্রাথমিকভাবে জয়নগর ও কাদিরখোলায় গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৭১.৭৮%, পুকুর ২৫.৮৬%, ট্যাপ ১.১২% এবং অন্যান্য ১.২৪%। এ উপজেলার সকল অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ১৫.৯৪% (গ্রামে ১৫.৫৮% এবং শহরে ৪৮.২২%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৭৮.৭৬% (গ্রামে ৭৩.১৫% ও শহরে ৪৪.৬৬%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৫.২৯% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা ১০।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৬০, ১৯৭০ ও ১৯৮৮ সালের ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে ঘরবাড়ি ও গাছপালা ধ্বংসসহ বেশসংখ্যক লোকের প্রাণহানি ঘটে।

এনজিও আশা, ব্র্যাক, কারিতাস।  [মোশফেকুর রহমান]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; রামপাল উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।