রঞ্জক উদ্ভিদ
রঞ্জক উদ্ভিদ (Dye plant) প্রাকৃতিক রং উৎপাদক গাছগাছড়া। এসব উদ্ভিদ থেকে প্রাপ্ত রং কাপড়, চামড়া, খাদ্যদ্রব্য, কাগজ, কাঠ, পশম, ওষুধ, প্রসাধনী ইত্যাদিতে ব্যবহার্য। পৃথিবীতে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এ ধরনের উদ্ভিদ প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ১৫০। বাংলাদেশে উদ্ভিজ্জ রঞ্জক প্রধানত তুলা, কৃত্রিম অাঁশ ও রেশমিবস্ত্র রং করার কাজে ব্যবহার করা হয়। কাপড়ে ব্যবহার্য সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ রঞ্জকের উৎস খয়ের গাছ (Acacia catechu), বাংলাদেশের অন্যতম পরিচিত বৃক্ষ, দেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে যার চাষ হয়।
এ গাছের সারকাঠ (heartwood) থেকে সংগৃহীত রঞ্জক প্রধানত বাদামি, খাকি ও মেটে রং হিসেবে এবং ক্যানভাস, মাছ ধরার জাল ও দড়িতে রং দেওয়ার জন্য ব্যবহার্য। মেহেদি গাছ (Lawsonia inermis) যোগায় জনপ্রিয় কমলা রং। এটি দিয়ে উৎসব অনুষ্ঠানে চুল, হাতের নখ ও তালু রাঙানো হয়। হলুদগাছের (Curcuma longa) কন্দ থেকে পাওয়া রঞ্জক রান্না ছাড়াও কাপড়, কার্পেট, ক্যালিকো প্রিন্টিং ও খাদ্যবস্ত্তর হলুদ রং হিসেবে ব্যবহূত হয়। কুসুম (Carthamus tinctorius) ফুলের হলুদ বা কমলা রং খাদ্যবস্ত্ত ও বস্ত্র রঞ্জনে ব্যবহার্য। অতি সাধারণ আরেকটি কমলা রং যোগায় শেফালী (Nyctanthes arbortristis) ফুলের বোঁটা। লটকনের (Bixa orellana) বীজ থেকে পাওয়া যায় খাদ্যবস্ত্ত, পশম, বার্নিশ ও সাবানে ব্যবহার উপযোগী রঞ্জক। [মোস্তফা কামাল পাশা]
আরও দেখুন লাক্ষা।