মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ''' ঢাকা শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ কৃষিপণ্য বাজার। এটি বাংলাদেশ কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মালিকানায় ১৯৭৮ সালে স্থাপিত হয়। এই মার্কেটের মোট আয়তন ৫ একর। এর মূল ভবনের দক্ষিণ ব্লকে বাংলাদেশ কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও তার জেলা বিপণন কার্যালয় অবস্থিত। কৃষি মার্কেটের দক্ষিণে শিয়া মসজিদ, পশ্চিম পাশে শ্যামলী লিঙ্ক রোড এবং ঢাকার নতুন আবাসিক এলাকা শেখের টেক অবস্থিত। ১৯৭৮ সালে যখন কৃষি মার্কেট চালু করা হয় তখন মার্কেটের পশ্চিম দিকে ছিল নৌঘাট। বর্তমানে দ্রুত ও অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে নদী ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে বসতবাড়ি। ফলে কৃষি মার্কেটের সঙ্গে বর্তমানে কোন নৌ যোগাযোগ নেই। সড়ক পথেই সমস্ত মালামাল পরিবহণ করা হয়। ১৯৮২ সালে সরকারের এক আদেশবলে মার্কেটের মালিকানা ও পরিচালনার ভার ঢাকা সিটি করপোরেশনের হাতে ন্যস্ত করা হয়।
'''মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট''' ঢাকা শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ কৃষিপণ্য বাজার। এটি বাংলাদেশ কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মালিকানায় ১৯৭৮ সালে স্থাপিত হয়। এই মার্কেটের মোট আয়তন ৫ একর। এর মূল ভবনের দক্ষিণ ব্লকে বাংলাদেশ কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও তার জেলা বিপণন কার্যালয় অবস্থিত। কৃষি মার্কেটের দক্ষিণে শিয়া মসজিদ, পশ্চিম পাশে শ্যামলী লিঙ্ক রোড এবং ঢাকার নতুন আবাসিক এলাকা শেখের টেক অবস্থিত। ১৯৭৮ সালে যখন কৃষি মার্কেট চালু করা হয় তখন মার্কেটের পশ্চিম দিকে ছিল নৌঘাট। বর্তমানে দ্রুত ও অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে নদী ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে বসতবাড়ি। ফলে কৃষি মার্কেটের সঙ্গে বর্তমানে কোন নৌ যোগাযোগ নেই। সড়ক পথেই সমস্ত মালামাল পরিবহণ করা হয়। ১৯৮২ সালে সরকারের এক আদেশবলে মার্কেটের মালিকানা ও পরিচালনার ভার ঢাকা সিটি করপোরেশনের হাতে ন্যস্ত করা হয়।


আধুনিক পরিকল্পনায় তৈরি এই মার্কেটের অভ্যন্তরীণ রাস্তাসমূহ বেশ প্রশস্ত। মূল পরিকল্পনায় দোতলা ভবনের নকশা থাকলেও বর্তমানে এটি একতলা মার্কেট। প্রতিদিন শত শত ট্রাক, পিকআপ এবং ভ্যান মালামাল আনা-নেওয়া করে। বর্তমানে এই মার্কেটের দোকানের সংখ্যা ১৫০টি। দোকান কর্মচারীর সংখ্যা ৪০০ জন, শ্রমিক সংখ্যা ২০০ জন, ভ্যানচালক ২০০ জন এবং চাল ও ডাল বাছাইয়ের কাজে নিয়োজিত নারী ও শিশু শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ২০০ জন। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটটি মূলত চাল ও ডাল কেনা-বেচার জন্য তৈরি হলেও বর্তমানে এখানে প্রায় সবরকম গ্রোসারি পণ্যই পাওয়া যায়। এই মার্কেটের মালামালের প্রায় ৮৫% ভাগই বাংলাদেশে উৎপাদিত এবং ১৫% ভাগ পার্শ্ববর্তী দেশসমূহ থেকে আমদানিকৃত। এই মার্কেটে দেশি মালামাল আসে মূলত জামালপুর, শেরপুর, বগুড়া, দিনাজপুর, রংপুর এবং কুষ্টিয়া জেলা থেকে। দূর অঞ্চল থেকে মালামাল আসে ট্রাকে। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে প্রতিদিন গড়ে প্রায় দেড় কোটি টাকার লেনদেন হয়। এই মার্কেটের ব্যবসায়ীরা নগদ ও বাকি-দুই পদ্ধতিতেই লেনদেন করেন। ঢাকা শহরের বিভিন্ন অঞ্চল ও দোকানে এই মার্কেট থেকে চাল-ডাল সরবরাহ করা হয়। কৃষি মার্কেট ও তার সংলগ্ন এলাকার মহল্লাসমূহকে কেন্দ্র করে মার্কেটের চারপাশে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড এবং আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের শাখা স্থাপিত হয়েছে। চারপাশে গড়ে উঠেছে ছোট ছোট অনেক বাজার ও দোকান। কৃষি মার্কেটের ঠিক পূর্বদিকে রয়েছে একটি কাঁচা বাজার এবং তারই পাশে গড়ে উঠেছে কয়েক সারি কাপড়ের দোকান।
আধুনিক পরিকল্পনায় তৈরি এই মার্কেটের অভ্যন্তরীণ রাস্তাসমূহ বেশ প্রশস্ত। মূল পরিকল্পনায় দোতলা ভবনের নকশা থাকলেও বর্তমানে এটি একতলা মার্কেট। প্রতিদিন শত শত ট্রাক, পিকআপ এবং ভ্যান মালামাল আনা-নেওয়া করে। বর্তমানে এই মার্কেটের দোকানের সংখ্যা ১৫০টি। দোকান কর্মচারীর সংখ্যা ৪০০ জন, শ্রমিক সংখ্যা ২০০ জন, ভ্যানচালক ২০০ জন এবং চাল ও ডাল বাছাইয়ের কাজে নিয়োজিত নারী ও শিশু শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ২০০ জন। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটটি মূলত চাল ও ডাল কেনা-বেচার জন্য তৈরি হলেও বর্তমানে এখানে প্রায় সবরকম গ্রোসারি পণ্যই পাওয়া যায়। এই মার্কেটের মালামালের প্রায় ৮৫% ভাগই বাংলাদেশে উৎপাদিত এবং ১৫% ভাগ পার্শ্ববর্তী দেশসমূহ থেকে আমদানিকৃত। এই মার্কেটে দেশি মালামাল আসে মূলত জামালপুর, শেরপুর, বগুড়া, দিনাজপুর, রংপুর এবং কুষ্টিয়া জেলা থেকে। দূর অঞ্চল থেকে মালামাল আসে ট্রাকে। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে প্রতিদিন গড়ে প্রায় দেড় কোটি টাকার লেনদেন হয়। এই মার্কেটের ব্যবসায়ীরা নগদ ও বাকি-দুই পদ্ধতিতেই লেনদেন করেন। ঢাকা শহরের বিভিন্ন অঞ্চল ও দোকানে এই মার্কেট থেকে চাল-ডাল সরবরাহ করা হয়। কৃষি মার্কেট ও তার সংলগ্ন এলাকার মহল্লাসমূহকে কেন্দ্র করে মার্কেটের চারপাশে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড এবং আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের শাখা স্থাপিত হয়েছে। চারপাশে গড়ে উঠেছে ছোট ছোট অনেক বাজার ও দোকান। কৃষি মার্কেটের ঠিক পূর্বদিকে রয়েছে একটি কাঁচা বাজার এবং তারই পাশে গড়ে উঠেছে কয়েক সারি কাপড়ের দোকান। [সাদাত উল্লাহ খান]
 
[সাদাত উল্লাহ খান]


[[en:Mohammadpur Krishi Market]]
[[en:Mohammadpur Krishi Market]]

০৭:১৯, ৫ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ঢাকা শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ কৃষিপণ্য বাজার। এটি বাংলাদেশ কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মালিকানায় ১৯৭৮ সালে স্থাপিত হয়। এই মার্কেটের মোট আয়তন ৫ একর। এর মূল ভবনের দক্ষিণ ব্লকে বাংলাদেশ কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও তার জেলা বিপণন কার্যালয় অবস্থিত। কৃষি মার্কেটের দক্ষিণে শিয়া মসজিদ, পশ্চিম পাশে শ্যামলী লিঙ্ক রোড এবং ঢাকার নতুন আবাসিক এলাকা শেখের টেক অবস্থিত। ১৯৭৮ সালে যখন কৃষি মার্কেট চালু করা হয় তখন মার্কেটের পশ্চিম দিকে ছিল নৌঘাট। বর্তমানে দ্রুত ও অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে নদী ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে বসতবাড়ি। ফলে কৃষি মার্কেটের সঙ্গে বর্তমানে কোন নৌ যোগাযোগ নেই। সড়ক পথেই সমস্ত মালামাল পরিবহণ করা হয়। ১৯৮২ সালে সরকারের এক আদেশবলে মার্কেটের মালিকানা ও পরিচালনার ভার ঢাকা সিটি করপোরেশনের হাতে ন্যস্ত করা হয়।

আধুনিক পরিকল্পনায় তৈরি এই মার্কেটের অভ্যন্তরীণ রাস্তাসমূহ বেশ প্রশস্ত। মূল পরিকল্পনায় দোতলা ভবনের নকশা থাকলেও বর্তমানে এটি একতলা মার্কেট। প্রতিদিন শত শত ট্রাক, পিকআপ এবং ভ্যান মালামাল আনা-নেওয়া করে। বর্তমানে এই মার্কেটের দোকানের সংখ্যা ১৫০টি। দোকান কর্মচারীর সংখ্যা ৪০০ জন, শ্রমিক সংখ্যা ২০০ জন, ভ্যানচালক ২০০ জন এবং চাল ও ডাল বাছাইয়ের কাজে নিয়োজিত নারী ও শিশু শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ২০০ জন। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটটি মূলত চাল ও ডাল কেনা-বেচার জন্য তৈরি হলেও বর্তমানে এখানে প্রায় সবরকম গ্রোসারি পণ্যই পাওয়া যায়। এই মার্কেটের মালামালের প্রায় ৮৫% ভাগই বাংলাদেশে উৎপাদিত এবং ১৫% ভাগ পার্শ্ববর্তী দেশসমূহ থেকে আমদানিকৃত। এই মার্কেটে দেশি মালামাল আসে মূলত জামালপুর, শেরপুর, বগুড়া, দিনাজপুর, রংপুর এবং কুষ্টিয়া জেলা থেকে। দূর অঞ্চল থেকে মালামাল আসে ট্রাকে। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে প্রতিদিন গড়ে প্রায় দেড় কোটি টাকার লেনদেন হয়। এই মার্কেটের ব্যবসায়ীরা নগদ ও বাকি-দুই পদ্ধতিতেই লেনদেন করেন। ঢাকা শহরের বিভিন্ন অঞ্চল ও দোকানে এই মার্কেট থেকে চাল-ডাল সরবরাহ করা হয়। কৃষি মার্কেট ও তার সংলগ্ন এলাকার মহল্লাসমূহকে কেন্দ্র করে মার্কেটের চারপাশে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড এবং আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের শাখা স্থাপিত হয়েছে। চারপাশে গড়ে উঠেছে ছোট ছোট অনেক বাজার ও দোকান। কৃষি মার্কেটের ঠিক পূর্বদিকে রয়েছে একটি কাঁচা বাজার এবং তারই পাশে গড়ে উঠেছে কয়েক সারি কাপড়ের দোকান। [সাদাত উল্লাহ খান]