মেহেদি

মেহেদি গাছ

মেহেদি (মেন্দি, মেঁহ্দী)  ক্ষুদ্র গোলাপী, লাল বা সাদা ফুলবিশিষ্ট এক ধরনের গ্রীষ্মমন্ডলীয় গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ (lawsania inermis, henna)। এর লতাঙ্কুর বা পাতা থেকে লালচে রং উৎপন্ন হয়, যা বিশেষত চুল, হাতের তালু ও আঙ্গুল রাঙাতে ব্যবহূত হয়। রূপচর্চার মাধ্যম হিসেবে প্রাচীনকাল থেকেই মেহেদির ব্যবহার চলে আসছে। সংস্কৃত গ্রন্থে ‘মেন্ধিকা’ বলতে রং ও ওষধি গুল্ম উভয়কেই বোঝানো হয়েছে। কালিদাসের রচনায় মেহেদিকে বাগানের সৌন্দর্য ও বেড়া নির্মাণের গুল্ম হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। বিশেষত আরবরা অতীতের মতো বর্তমানেও মেহেদির প্রতি অনুরক্ত। বঙ্গে ও বর্তমান বাংলাদেশে মেহেদির জনপ্রিয়তা সব সময়ই বিদ্যমান।

মেহেদি নকশা
মেহেদি রাঙা হাত

মেহেদি চুলের রঞ্জক হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহূত হয়। ঈদ, পূজা, বিবাহ এবং অন্যান্য ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসবে শিশু-কিশোর ও নারী-পুরুষ নির্বিশেষে মেহেদি রঙের বর্ণিল নকশায় তাদের হাত ও আঙ্গুল সজ্জিত করে। কোন অনুষ্ঠানের প্রারম্ভেই মেহেদি উৎসব শুরু হয়। বিবাহ অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে কনের আঙ্গুল, হাত ও দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মেহেদি রঙে সাজিয়ে তাকে বিশেষভাবে গোসল করানো হয়।

সাধারণ সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মা ও ভগিনীরা মেহেদি পাতা বাটে এবং পরিবারের সকল সদস্য, বিশেষত স্ত্রীলোকেরা, একত্রিত হয় এবং একে অন্যকে বিভিন্ন নকশায় তাদের হাত, কখনও পা, রাঙাতে সহায়তা করে। বর্তমানে প্রক্রিয়াকৃত মেহেদি বাটা এবং মেহেদি সজ্জার ছাঁচ ও নকশা বাণিজ্যিকভাবে উৎপন্ন হয়। বর্তমানে এটা এতই জনপ্রিয় হয়েছে যে, মেহেদি ডিজাইনারদের মধ্যে প্রায়শই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় এবং তাতে সকল বয়স ও স্তরের অসংখ্য দর্শকের সমাগম ঘটে। [আশা ইসলাম নাঈম]