মেঘনা উপজেলা

মেঘনা উপজেলা (কুমিল্লা জেলা)  আয়তন: ৯৯.৫৭ বর্গ কিমি। অবস্থান ২৩°৩৪´ থেকে ২৩°৪১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৩৮´ থেকে ৯০°৪৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে আড়াই হাজার উপজেলা (নারায়ণগঞ্জ জেলা), দক্ষিণে দাউদকান্দি ও গজারিয়া উপজেলা, পূর্বে হোমনা ও তিতাস উপজেলা, পশ্চিমে সোঁনারগাও উপজেলা (নারায়ণগঞ্জ জেলা) এবং গজারিয়া উপজেলা (মুন্সিগঞ্জ জেলা)।

জনসংখ্যা ১১২৪৫৩; পুরুষ ৫৬৪৫৩, মহিলা ৫৬০০০। মুসলিম ১০৬৭০৪, হিন্দু ৫৭৪২, খ্রিস্টান ৪ এবং অন্যান্য ৩।

জলাশয় প্রধান নদী: মেঘনা ও কাঁঠালিয়া।

প্রশাসন ১৯৯৯ সালে মেঘনা থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৩৯ ১০২ ৬১৫৯ ১০৬২৯৪ ১১২৯ ৪৬.২ ৪৪.৫
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৪.৩০ ৬১৫৯ ১৪৩২ ৪৬.২
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
চন্দনপুর ১৯ ২৭৫৬ ৬৭৭৮ ৬৫২৩ ৪৩.৫
চালিভাঙ্গা ২১ ২৬৪৪ ৬৬৪২ ৬৪৯১ ৩৬.৪
গোবিন্দপুর ৪৩ ৬৯৬৪ ১০০৪৯ ১০৫০১ ৪৪.১
বড়কান্দা ১২ ৫০১১ ১১৬৯৫ ১১৪৩৮ ৪৬.২
মানিকের চর ৭১ ২৪৯৫ ৭০৫৮ ৬৮৬০ ৪৯.৯
রাধানগর ৯৫ ২৩৭৪ ৮৩৫১ ৭৯৪০ ৪৮.৬
লুটের চর ৫৩ ৩১৫৪ ৫৮৮০ ৬২৪৭ ৪৮.৬

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ উপজেলার বর্তমান সীমানার অভ্যন্তরে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো সম্মুখ যুদ্ধ হয়নি, তবে এখানকার মুক্তিযোদ্ধারা এলাকায় ক্যাম্প স্থাপন করে, দেশের ভেতরে এবং ভারতীয় ক্যাম্পসমূহে ট্রেনিং নেয় এবং স্থানীয় রাজাকার এবং পাকসেনাদের তৎপরতাকে প্রতিরোধ করার কাজে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। পার্শ্ববর্তী গজারিয়া থানায় একটি যুদ্ধেও সরাসরি অংশ নেয়।

বিস্তারিত দেখুন মেঘনা উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৮।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ২২১, মন্দির ৬, মঠ ১।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৪.৬%; পুরুষ ৪৮.২%, মহিলা ৪১.০%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫১, কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১, মাদ্রাসা ২। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মানিকের চর কলেজ (১৯৭০), দৌলত হোসেন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৮), মানিকের চর এল এল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৬), সোনার চর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৭), মুজাফফর আলী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৭), চন্দনপুর এম এ হাইস্কুল (১৯৭১)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৩.৭১%, অকৃষি শ্রমিক ১.৫২%, শিল্প ০.৯৯%, ব্যবসা ১৪.৮৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৮৮%, চাকরি ৬.৩৯%, নির্মাণ ০.৯৩%, ধর্মীয় সেবা ০.২১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৬.৬২% এবং অন্যান্য ১৩.২৮%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৭৪.০৭%, ভূমিহীন ২৫.৯৩%।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, ডাল।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি কাউন, তিসি।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, নারিকেল, কুল, তরমুজ, তাল।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৭.০৩ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৮৬.৬৯ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি।

কুটিরশিল্প লৌহশিল্প, পাটশিল্প, মৃৎশিল্প।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচীর আওতাধীন। তবে ৭৭.১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৩.৯%, ট্যাপ ০.৬% এবং অন্যান্য ৫.৫%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৮৭.৬% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১০.৬% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ১.৮% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৭, কমিউনিটি স্বাস্থ্য ক্লিনিক ৭, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা, কেয়ার। [মো: হাবিবুর রহমান ভূইয়াঁ]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; মেঘনা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।