মৃত্তিকা রন্ধ্রতা
মৃত্তিকা রন্ধ্রতা (Soil Porosity) মৃত্তিকার কণার ভিতরে, কণা মধ্যবর্তী বা সংযুতি এককের মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থান। রন্ধ্র পরিসরকে কতকগুলো ভাগে বিভক্ত করা যায়: (১) আন্তঃমণিক পরিসর- অবক্ষয়ের প্রভাবাধীনে ফেল্ডস্পারের নলাকৃতি পরিসর; (২) আন্তঃকণা পরিসর- কণার বুনট (fabric) দ্বারা সৃষ্ট বা গ্রথনিক রন্ধ্রতা; (৩) ফাট দ্বারা সৃষ্ট পরিসর- সাধারণত জলবায়ুগত কারণে সৃষ্ট এবং সর্বাপেক্ষা মিহি বা স্থূল সংযুতির মধ্যে সরু আকৃতির হয়ে থাকে (৪) নলাকৃতি পরিসর- সংযুতির অভ্যন্তরে বা বাইরে বিদ্যমান এবং সাধারণত জৈবভাবে সৃষ্ট এবং (৫) সংযুতির ভিতরে বুনট পরিসর, যা ফাট দ্বারা সৃষ্ট পরিসর থেকে ভিন্ন। এসব রন্ধ্র পরিসর আকার, আকৃতি, বিন্যাস এবং অঙ্গসংস্থানের দিক থেকে পার্থক্য প্রদর্শন করে। ক্ষেত্র সামর্থ্য (field capacity) অবস্থায় মৃত্তিকা সূক্ষ্ম রন্ধ্রে (০.০৮ মিমি ব্যাস) পানি ধারণ করে। শুষ্ক অবস্থায় প্রায় সব রন্ধ্র বায়ু দ্বারা পূর্ণ থাকে এবং সর্বোচ্চ পানি ধারণ সামর্থ্যে সব রন্ধ্র পানি দ্বারা পূর্ণ থাকে। গাছের শিকড়ের পচন ও গর্ত সৃষ্টিকারী প্রাণী দ্বারা তৈরী ছোট ছোট গর্ত নালী সৃষ্টি করে, যার মধ্য দিয়ে মৃত্তিকাতে পানি ও বায়ু চলাচল করে। গাছের শিকড় ও মৃত্তিকা প্রাণী মৃত্তিকা বস্ত্তকে মিশ্রিত করার ফলে প্রাকৃতিক রন্ধ্র পরিসর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মৃত্তিকা বস্ত্তর মধ্য দিয়ে অগ্রসর হওয়া গাছের শিকড় দ্বারা সৃষ্ট চাপ পাললিক স্তরায়ণ ও শিলার স্তরগুলোর স্বাভাবিক অবস্থাকে বিঘ্নিত করে। [সিরাজুল হক]