মৃত্তিকা পানি
মৃত্তিকা পানি (Soil Water) মৃত্তিকার বলয়ে অবস্থিত পানি অর্থাৎ মৃত্তিকার বাতাশ্বয়ন অঞ্চল বা অধিভূজলীয় অঞ্চলের পানি। ভূ-অভ্যন্তরে মৃত্তিকা কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় অবস্থায় থাকে। তরল মৃত্তিকায় পানি দিয়ে গঠিত দ্রবীভূত বস্ত্ত থাকে। একারণে মৃত্তিকা পানিকে মৃত্তিকা দ্রবণও বলা হয়।
গাছের বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য পানি। গাছ শিকড়ের মাধ্যমে মৃত্তিকা থেকে পানি সংগ্রহ করে। এভাবে মৃত্তিকা পানি কৃষি উৎপাদনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভূপৃষ্ঠে শক্তির ভারসাম্য প্রভাবকারী কয়েকটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াতেও পানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গাছের জন্য মৃত্তিকার পানি সরবরাহ ক্ষমতা বর্ষণ এবং সেচ থেকে পানির নতুন প্রবাহের লাভের উপর নির্ভর করে। ভূত্বক দিয়ে পানি অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এবং স্থূল ও সূক্ষ রন্ধ্র দিয়ে মৃত্তিকার বিভিন্ন গভীরতায় পুর্ণবন্টিত হয়।
মৃত্তিকাতে পানির পরিমাণ পানির আয়তন বা ভর দ্বারা প্রকাশ করা হয়। ভর ভিত্তিক পানির পরিমাণ নির্ণয়ে মৃত্তিকার প্রাথমিক নমুনার ওজন নেওয়া হয় এবং পরে ১০৫°সে তাপমাত্রায় ২৪ ঘণ্টা শুকানোর পর পুনরায় ওজন নেওয়া হয়। এ দুটি ওজনের পার্থক্য থেকে পানির পরিমাণ নির্ণয় করে তা একক পরিমাণ মৃত্তিকার ভিত্তিতে প্রকাশ করা হয়।
তিস্তা ও পুরাতন হিমালয় পর্বত সানুদেশীয় সমতল ভূমির পললে উৎপন্ন পলি দোঅাঁশ মৃত্তিকার উপরের ৬০ সেন্টিমিটার গভীরতা পর্যন্ত সর্বাধিক সঞ্চিত পানির পরিমাণ প্রায় ২৪ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। শীতকালে স্বল্প-স্থায়ী শুস্কভূমির শস্য জন্মানোর জন্য হিসাবকৃত পানির পরিমাণ প্রায় ৩০ সেন্টিমিটার। সুতরাং এসব মৃত্তিকাতে সেচবিহীন শুস্কভূমির রবি শস্যের সন্তোষজনক আবাদ শস্য দ্বারা ব্যবহূত পানির পুনঃসঞ্চারণের উপর নির্ভর করে। মৃত্তিকা পানির পুনঃসঞ্চারণ মৃত্তিকার গভীরে অবস্থিত ক্ষিতিজ থেকে কৈশিক উত্থান এবং আকস্মিক শীতকালীন বৃষ্টিপাত দ্বারা ঘটে। [মোঃ আকতার হোসেন খান]