মিহি-দানাদার অভ্র
মিহি-দানাদার অভ্র (Fine-grained Mica) বাংলাদেশের মৃত্তিকাতে অবক্ষয়যোগ্য মণিকে অন্তর্ভুক্ত বস্ত্তগুলো হলো ফেল্ডস্পারের বালি ও পলি কণা, কালো ও সাদা উভয় প্রকারের মাইকা, গাঢ় রঙের ফেরোম্যাগনেসিয়ান মণিক এবং ২:১ ল্যাটিস এঁটেল। বাংলাদেশের মৃত্তিকায় সাম্প্রতিককালের পললে সূক্ষ্ম বালিময় ও পলিময় অবক্ষেপে সূক্ষ্ম দানাদার অভ্র অন্তর্ভুক্ত। সূক্ষ্ম দানাদার মাইকা (মাসকোভাইট ও বায়োটাইট) ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গা ও তিস্তা নদীর পলিজ অবক্ষেপে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। কিন্তু উত্তর ও পূর্বে অবস্থিত পাহাড় থেকে আসা পললগুলোতে সাধারণত মাইকা (বিশেষ করে বায়োটাইট) কম থাকে। মধুপুর এঁটেলেও মাইকার পরিমাণ অনেক কম। তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও গঙ্গা নদীর অবক্ষেপ থেকে পাহাড় ও সোপান এলাকার অবক্ষেপ ভিন্ন প্রকৃতির। পূর্ববর্তী অবক্ষেপে সাধারণত ৫ থেকে ৩০ শতাংশ মাইকা থাকে। এ মাইকার পরিমাণ কণা আকারের সঙ্গে পার্থক্য প্রদর্শন করে। কোনো কোনো পলিময় অবক্ষেপে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত মাইকা পাওয়া যায়। অন্যান্য নিয়ামকের সঙ্গে শল্কাকৃতির মাইকার (flakes) কারণে দুর্বল নিষ্কাশিত মৃত্তিকার অকৈশিক রন্ধ্রতার সৃষ্টি হয়। মাইকাগুলো প্লাবনভূমিতে gleyan-এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, যেখানে মাইকা শল্কগুলো প্রলেপন পৃষ্ঠের সমান্তরালে অবস্থান করে। কিন্তু প্লাবনভূমির সমরূপতার কারণে মাইকা শল্কাগুলো অনিয়মিত রীতিতে বিন্যস্ত হয়। বাংলাদেশের নতুন পললগুলো সাধারণত স্তরায়িত। স্বতন্ত্র স্তরগুলো পাতলা বা পুরু হতে পারে। সমরূপ পলিময় ও এঁটেল অবক্ষেপে স্তরায়ণ প্রধানত মাইকা শল্কের পাতলা স্তর দ্বারা ঘটে থাকে, যা অবক্ষেপের পৃষ্ঠের সমান্তরালে অবক্ষেপিত হয়েছে। [মোঃ মিজানুর রহমান ভূঁইয়া]