মির্জাপুর জামে মসজিদ
মির্জাপুর জামে মসজিদ পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী থানার ৬ কিমি দূরে আটোয়ারী-পঞ্চগড় পাকা সড়কের পূর্বদিকে মির্জাপুর গ্রামে অবস্থিত। মসজিদের পূর্বদিকের দেয়ালে ফারসি ভাষার একটি শিলালিপি রয়েছে। তা থেকে জানা যায় যে, বাংলা ১২৫২ সনে (১৮৩১ খ্রি) শেখ মালিক-উদ-দীন মসজিদটি মেরামত করেন। মসজিদের দক্ষিণে দুটি প্রাচীন কবর এবং পূর্ব-উত্তর কোণায় একটি প্রাচীন ইঁদারা রয়েছে। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তত্ত্বাবধানে মসজিদটির ব্যাপক সংস্কার করা হয়েছে।
মসজিদটি তিন গম্বুজ বিশিষ্ট। মসজিদের পূর্বদিকে রয়েছে শান বাঁধানো চত্বর। চত্বরটির দৈর্ঘ্য ১৭ মিটার এবং প্রস্থ ১৪ মিটার। এই চত্বরে প্রবেশের জন্য পূর্বদিকের মাঝখানে একটি প্রবেশকক্ষ রয়েছে। বাইরের দিক দিয়ে প্রবেশকক্ষটির দৈর্ঘ্য ৪.১২ মিটার এবং প্রস্থ ২.১২ মিটার, দেয়ালের প্রশস্ততা ০.৬০ মিটার। এর উপরের আকৃতি চৌচালার অনুরূপ।
মসজিদের মূল কক্ষ আয়তাকার, বাইরের পরিমাপ ১৩ মি. × ৫.৪০ মি.। পশ্চিম দিকের দেয়ালে রয়েছে তিনটি মিহরাব। মাঝের মিহরাবটি দু’পাশের দুটি সমমাপের মিহরাবের তুলনায় বড়।
একইভাবে পূর্বদিকের তিনটি খিলানযুক্ত প্রবেশপথের মধ্যে মাঝেরটি পাশের অন্য দুটি সমমাপের খিলানের তুলনায় বড়। মসজিদের উত্তর এবং দক্ষিণ দেয়ালে রয়েছে প্রত্যেক দিকে একটি করে দুটি খিলানযুক্ত জানালা। মসজিদের চার কোণে রয়েছে অষ্টকোণী কর্ণার টাওয়ার। মসজিদের কার্নিস অনুভূমিক। এর গম্বুজে ড্রামের ব্যবহার দেখা যায়। গম্বুজ তৈরিতে স্কুইঞ্চ এবং পেন্ডেন্টিভ উভয় পদ্ধতির সমন্বয় করা হয়েছে।
মসজিদের বাইরের চারদিকে দেয়াল প্লাস্টারের মাধ্যমে প্যানেল করা হয়েছে এবং প্যানেলের মধ্যে পোড়ামাটির ফলক বসানো হয়েছে। এই প্যানেলগুলি আয়তাকার, ভেতরে বিভিন্ন ধরনের ফুলপাতার পোড়ামাটির ফলক দেখা যায়। পূর্বদিকের দেয়ালে তিনটি খিলানের উপর তিনটি এবং পশ্চিমদিকের বাইরের দেয়ালের মাঝামাঝি একটি অর্ধ ক্যানোপির (Canopy) মতো আচ্ছাদন করা হয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণের খিলানের উপর দোচালার মতো আচ্ছাদন রয়েছে। সমস্ত দেয়াল জুড়ে প্লাস্টারের উপর সাদা রং এবং পোড়ামাটির ফলকের লাল রঙের অপূর্ব সমন্বয় দেখা যায়। [সানিয়া সিতারা]