মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র'''))
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
(একজন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা''' (মানিকগঞ্জ জেলা)  আয়তন: ২১৪.৮১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৪২´ থেকে ২৩°৫৫´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৫৮´ থেকে ৯০°০৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সাটুরিয়া উপজেলা, দক্ষিণে নবাবগঞ্জ (ঢাকা) এবং হরিরামপুর উপজেলা, পূর্বে সিঙ্গাইর ও ধামরাই উপজেলা, পশ্চিমে হরিরামপুর ও ঘিওর উপজেলা।
'''মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা''' ([[মানিকগঞ্জ জেলা|মানিকগঞ্জ জেলা]])  আয়তন: ২১৫.১৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৪২´ থেকে ২৩°৫৫´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৫৮´ থেকে ৯০°০৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সাটুরিয়া উপজেলা, দক্ষিণে নবাবগঞ্জ (ঢাকা) এবং হরিরামপুর উপজেলা, পূর্বে সিঙ্গাইর ও ধামরাই উপজেলা, পশ্চিমে হরিরামপুর ও ঘিওর উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ২৬১৬৬২; পুরুষ ১৩০৮৪২, মহিলা ১৩০৮২০। মুসলিম ২৩২৪০৭, হিন্দু ২৯১৭০, বৌদ্ধ ৩৩ এবং অন্যান্য ৫২।
''জনসংখ্যা'' ৩০৯৪১৩; পুরুষ ১৪৯৪০৭, মহিলা ১৬০০০৬। মুসলিম ২৭৭১০৫, হিন্দু ৩২২২৯, খ্রিস্টান ৭৭, বৌদ্ধ ৩৩ এবং অন্যান্য ২।


''জলাশয়'' কালীগঙ্গা, ধলেশ্বরী, ইছামতী ও গাজীখালী নদী এবং গাঙডুবি বিল উল্লেখযোগ্য।
''জলাশয়'' কালীগঙ্গা, ধলেশ্বরী, ইছামতী ও গাজীখালী নদী এবং গাঙডুবি বিল উল্লেখযোগ্য।
১৪ নং লাইন: ১৪ নং লাইন:
|-
|-
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| ১ || ১০ || ২৭০  || ৩১৮  || ৫৩৬৭৮  || ২০৭৯৮৪  || ১২১৮  || ৬৬.৩৪ || ৪৭.৬৪
| ১ || ১০ || ২৬২ || ৩১৫ || ৭২১০৮ || ২৩৭৩০৫ || ১৪৩৮ || ৬৬.৩৪ (২০০১) || ৫২.
 
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
|পৌরসভা
| colspan="9" | পৌরসভা
|-
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  || মহল্লা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  || মহল্লা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ৩৯.০৯  || ৯ || ৫০ || ৫২৮২৬  || ১৩৫১  || ৬৬.৫৫
| ২৩.১৩ || ৯ || ৫০ || ৭১৬৯৮ || ৩১০০ || ৬৯.
 
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| উপজেলা শহর
| colspan="9" | উপজেলা শহর
|-
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ১.৩২ || ২  || ৮৫২  || ৬৪৫ || ৫৩.১৩
| ১.৩২ (২০০১) || || ৪১০ || ৬৪৫ (২০০১) || ৪৪.
 
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| ইউনিয়ন
| colspan="9" | ইউনিয়ন
|-  
|-  
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
৫১ নং লাইন: ৪১ নং লাইন:
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-  
|-  
| আটিগ্রাম ১৩ || ৫০৮৩  || ৯৯৭৩ || ৯৬০৭  || ৪৩.২৩
| আটিগ্রাম ১৩ || ৫৭৭৬ || ১০০৯০ || ১০৬৬৫ || ৪১.
 
|-
|-
| কৃষ্ণপুর ৭১ || ৭৪৪৫  || ১৩৬৮৬ || ১৩২০৮  || ৪৩.৫৪
| কৃষ্ণপুর ৭১ || ৬২৬৭ || ১৪৪৩২ || ১৫০৬৫ || ৪৬.
 
|-
|-
| গড়পাড়া ৩১ || ৩৮৭৫  || ১০৫৮৯ || ১০৭০৪  || ৪৬.৫৫
| গড়পাড়া ৩১ || ৩৮১৮ || ১২০২৭ || ১২৮১৭ || ৫২.
 
|-
|-
| জাগীর ৫৫ || ৪৭৬৮  || ১১৯০৭ || ১১১০৬  || ৪৫.৭০
| জাগীর ৫৫ || ৩৯৫২ || ১৫০৭৮ || ১৫২৪৭ || ৫০.
 
|-
|-
| দীঘি ২৩ || ৩০০২  || ৮১১৬ || ৮০২৬  || ৫২.৭৩
| দীঘি ২৩ || ২৬০১ || ৯৮৪৫ || ১০২৪৯ || ৫৮.
 
|-
|-
| নবগ্রাম ৮৭ || ৩৬৪৩  || ৮১৮৮ || ৮১৫৯  || ৫২.৪৮
| নবগ্রাম ৮৭ || ৪৬১২ || ৮৭১৪ || ৯৫৫৬ || ৫৭.
 
|-
|-
| পুতাইল ৯৪ || ৫২৮৯  || ৯৫৬১ || ১০৬২৪  || ৪৮.৭২
| পুতাইল ৯৪ || ৫৪৯২ || ৯৯১৫ || ১১৩৮২ || ৫২.
 
|-
|-
| বেতিলামিত্র ১১ || ৪২৫৬  || ১০০৪৫ || ১০৫৩১  || ৫২.৬৬
| বেতিলামিত্র ১১ || ৪৭৩৪ || ১১৪৬৪ || ১৩২২৪ || ৫৪.
 
|-
|-
| ভাড়ারিয়া ১৫ || ৪৬৭৮  || ৯২৭০ || ৯৭৪৭  || ৪৯.০০
| ভাড়ারিয়া ১৫ || ৪৫৮৫ || ৯৬৪৬ || ১১২৬৪ || ৫৬.
 
|-
|-
| হাতিপাড়া ৩৯ || ৫৯৩৫  || ১২০২২ || ১৩৭৬৭  || ৪৫.৭৪
| হাতিপাড়া ৩৯ || ৫৬১৪ || ১২১১২ || ১৪৯২৩ || ৫২.
|}
|}
''সূত্র''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
[[Image:ManikganjSadarUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' মানিকগঞ্জ জামে মসজিদ, শ্রীশ্রী আনন্দময়ী কালীবাড়ি (১৮৯৫), রজনী ভবন ও ঝোভাত ভবন (গঙ্গাধর পট্টি), মত্ত মঠ (১৮৯৪), নারায়ণ সাধুর আশ্রম (১৩৪৮ বঙ্গাব্দ), ইসু বাবুর কাচারি (হিজুলী), শিববাড়ি মন্দির, বাইমাইলের নীলকুঠি।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' মানিকগঞ্জ জামে মসজিদ, শ্রীশ্রী আনন্দময়ী কালীবাড়ি (১৮৯৫), রজনী ভবন ও ঝোভাত ভবন (গঙ্গাধর পট্টি), মত্ত মঠ (১৮৯৪), নারায়ণ সাধুর আশ্রম (১৩৪৮ বঙ্গাব্দ), ইসু বাবুর কাচারি (হিজুলী), শিববাড়ি মন্দির, বাইমাইলের নীলকুঠি।


ঐতিহাসিক ঘটনাবলি  এ উপজেলার গড়পাড়া একটি ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ স্থান। বাংলার সুলতান সিকান্দর শাহ এবং তাঁর পুত্র ও সোনারগাঁয়ের শাসনকর্তা গিয়াসউদ্দিন আযম শাহের মধ্যে গড়পাড়ায় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং যুদ্ধে সিকান্দর শাহ নিহত হন। বাংলার মুগল সুবাদার মীরজুমলা শাসনকার্যের সুবিধার্থে ১৬৬২ খ্রিস্টাব্দে গড়পাড়াতে সেনাঘাটি ও প্রশাসনিক দপ্তর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। রাজনৈতিক গুরুত্বের ফলে এখানে পরবর্তীতে একটি বন্দর গড়ে ওঠে। ১৯৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর এ উপজেলার কাগজীনগর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনাদের লড়াইয়ে ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা-আরিচা সড়কপথের পাশে মানরা গ্রামে পাকসেনাদের আক্রমণ করতে গিয়ে ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে গঙ্গাধর পট্টি রোড ধরে পোড়রা হয়ে লওখন্ডা গ্রামের নিকট ঢাকা-আরিচা সড়কে পুনরায় পাকসেনাদের আক্রমণ করে। পাকসেনারা রাস্তার উত্তর পাশে এবং মুক্তিযোদ্ধারা দক্ষিণ পাশে অবস্থান নিয়ে পরস্পরকে আক্রমণ করে জাগীর, গোলড়া, নয়াডিঙ্গি ও বারবারিয়া পর্যন্ত অগ্রসর হয়। এ যুদ্ধে ১ জন পাকসেনা নিহত হয়। এ উপজেলায় নয়াকান্দি বাঁধ কাটা আন্দোলন (১৯৮৭-৮৮) সংঘটিত হয়।
''ঐতিহাসিক ঘটনা''  এ উপজেলার গড়পাড়া একটি ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ স্থান। বাংলার সুলতান সিকান্দর শাহ এবং তাঁর পুত্র ও সোনারগাঁয়ের শাসনকর্তা গিয়াসউদ্দিন আযম শাহের মধ্যে গড়পাড়ায় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং যুদ্ধে সিকান্দর শাহ নিহত হন। বাংলার মুগল সুবাদার মীরজুমলা শাসনকার্যের সুবিধার্থে ১৬৬২ খ্রিষ্টাব্দে গড়পাড়াতে সেনাঘাটি ও প্রশাসনিক দপ্তর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এ উপজেলায় ১৯৮৭-৮৮ সালে নয়াকান্দি বাঁধ কাটা আন্দোলন সংঘটিত হয়। রাজনৈতিক গুরুত্বের ফলে এখানে পরবর্তীতে একটি বন্দর গড়ে ওঠে।  


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' স্মৃতিস্তম্ভ (মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশে ৪৯ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার উদ্দেশে নির্মিত)।
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর এ উপজেলার কাগজীনগর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনাদের লড়াইয়ে ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা-আরিচা সড়কপথের পাশে মানরা গ্রামে পাকসেনাদের আক্রমণ করতে গিয়ে ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে গঙ্গাধর পট্টি রোড ধরে পোড়রা হয়ে লওখ-া গ্রামের নিকট ঢাকা-আরিচা সড়কে পুনরায় পাকসেনাদের আক্রমণ করে। পাকসেনারা রাস্তার উত্তর পাশে এবং মুক্তিযোদ্ধারা দক্ষিণ পাশে অবস্থান নিয়ে পরস্পরকে আক্রমণ করে জাগীর, গোলড়া, নয়াডিঙ্গি ও বারবারিয়া পর্যন্ত অগ্রসর হয়। এ যুদ্ধে জন পাকসেনা নিহত হয়। উপজেলার মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশে ৪৯ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার উদ্দেশে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে।


[[Image:ManikganjSadarUpazila.jpg|thumb|right|মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা]]
''বিস্তারিত দেখুন''  মানিকগঞ্জ উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।


ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ৩৭০, মন্দির ৯৮, মাযার ১০, দরগাহ ২, তীর্থস্থান ১। উল্লেখযোগ্য  ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: মানিকগঞ্জ জামে মসজিদ, কোর্ট মসজিদ, সেওতা কবরস্থান মসজিদ, বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদ, পোড়রা মসজিদ, বেউথা মসজিদ, বেতিলা মসজিদ, ভাটবাউর জামে মসজিদ, বাজার মসজিদ, উচুটিয়া জামে মসজিদ, ভিকরা জামে মসজিদ, মফিজউদ্দিনের মাযার (দাশড়া), গড়পাড়া এমামবাড়ি মাযার, রহিম দরবার শরীফ (ভাটবাউর), খোদাবখশ দরবার শরীফ (ভাটবাউর), শ্রীশ্রী আনন্দময়ী কালীবাড়ি, লক্ষ্মীমন্ডপ, শিববাড়ি মন্দির, গড়পাড়া মন্দির, ডাউটিয়া মন্দির, শিববাড়ি হিন্দু তীর্থ।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ৩৭০, মন্দির ৯৮, মাযার ১০, দরগাহ ২, তীর্থস্থান ১। উল্লেখযোগ্য  ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: মানিকগঞ্জ জামে মসজিদ, কোর্ট মসজিদ, সেওতা কবরস্থান মসজিদ, বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদ, পোড়রা মসজিদ, বেউথা মসজিদ, বেতিলা মসজিদ, ভাটবাউর জামে মসজিদ, বাজার মসজিদ, উচুটিয়া জামে মসজিদ, ভিকরা জামে মসজিদ, মফিজউদ্দিনের মাযার (দাশড়া), গড়পাড়া এমামবাড়ি মাযার, রহিম দরবার শরীফ (ভাটবাউর), খোদাবখশ দরবার শরীফ (ভাটবাউর), শ্রীশ্রী আনন্দময়ী কালীবাড়ি, লক্ষ্মীমন্ডপ, শিববাড়ি মন্দির, গড়পাড়া মন্দির, ডাউটিয়া মন্দির, শিববাড়ি হিন্দু তীর্থ।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৫১.৫৭%; পুরুষ ৫৬.৬৬%, মহিলা ৪৬.৫৪%। কলেজ ৯, ল’ কলেজ ১, বিএড কলেজ ১, পিটিআই ১, ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৩, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০৭, কিন্ডার গার্টেন ৩০, মাদ্রাসা ১৩। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ, গড়পাড়া হাফিজ উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ, মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৪), মানিকগঞ্জ মডেল হাইস্কুল (১৯১৮), মানিকগঞ্জ মডেল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৫), এসকে সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯৩০), বেতিলা হাইস্কুল (১৯৬০), খাবাশপুর লাবণ্য প্রভা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪১), হাতিপাড়া হাইস্কুল (১৯৬৭), আটিগ্রাম আকুলচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৯), লেমুবাড়ি বিনোদা সুন্দরী হাইস্কুল (১৯৪৯), গড়পাড়া হাইস্কুল (১৯৫৯), নবগ্রাম হাইস্কুল (১৯৬৭)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৫৬.%; পুরুষ ৫৮.%, মহিলা ৫৩.%। কলেজ ৯, ল’ কলেজ ১, বিএড কলেজ ১, পিটিআই ১, ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৩, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০৭, কিন্ডার গার্টেন ৩০, মাদ্রাসা ১৩। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ, গড়পাড়া হাফিজ উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ, মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৪), মানিকগঞ্জ মডেল হাইস্কুল (১৯১৮), মানিকগঞ্জ মডেল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৫), এসকে সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯৩০), বেতিলা হাইস্কুল (১৯৬০), খাবাশপুর লাবণ্য প্রভা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪১), হাতিপাড়া হাইস্কুল (১৯৬৭), আটিগ্রাম আকুলচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৯), লেমুবাড়ি বিনোদা সুন্দরী হাইস্কুল (১৯৪৯), গড়পাড়া হাইস্কুল (১৯৫৯), নবগ্রাম হাইস্কুল (১৯৬৭)।


''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' দৈনিক: আল-আযান (১৯৯২); সাপ্তাহিক: আলোর বাণী (১৯৮১), মুক্তির বাহন, কড়চা, মানিকগঞ্জের খবর (১৯৯৫), আবাবিল (অবলুপ্ত), মানিকগঞ্জ (১৯৭২), মানিকগঞ্জ বার্তা (১৯৮১), বুধবার, পতাকা, চলমান (১৯৮০), মুক্তির ডাক (১৯৮০), নবগ্রাম (১৯৭৮), জাগরণী (১৯৬৫), ঋতু-রং-মন (১৯৬৭), আবহমান (১৯৭৮), মৈত্রী ইন্টারন্যাশনাল (১৯৭৯), বিটপ (১৯৮১)।
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' দৈনিক: আল-আযান (১৯৯২); সাপ্তাহিক: আলোর বাণী (১৯৮১), মুক্তির বাহন, কড়চা, মানিকগঞ্জের খবর (১৯৯৫), আবাবিল (অবলুপ্ত), মানিকগঞ্জ (১৯৭২), মানিকগঞ্জ বার্তা (১৯৮১), বুধবার, পতাকা, চলমান (১৯৮০), মুক্তির ডাক (১৯৮০), নবগ্রাম (১৯৭৮), জাগরণী (১৯৬৫), ঋতু-রং-মন (১৯৬৭), আবহমান (১৯৭৮), মৈত্রী ইন্টারন্যাশনাল (১৯৭৯), বিটপ (১৯৮১)।
১০৪ নং লাইন: ৮৭ নং লাইন:
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' তিসি, চীনা, ডাবরি, যব, কাউন, মটর, ছোলা, তিল।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' তিসি, চীনা, ডাবরি, যব, কাউন, মটর, ছোলা, তিল।


''প্রধান ফল-ফলাদিব'' আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, পেয়ারা, নারিকেল, তাল।
''প্রধান ফল-ফলাদি'' আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, পেয়ারা, নারিকেল, তাল।


''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার''  মৎস্য ১৫, গবাদিপশু ৩৩২, হাঁস-মুরগি ৬৪৯, হ্যচারি ৭।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার''  মৎস্য ১৫, গবাদিপশু ৩৩২, হাঁস-মুরগি ৬৪৯, হ্যচারি ৭।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ১০২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৩০ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩০৯ কিমি; নৌপথ ১৬ নটিক্যাল মাইল।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ১০৬ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২১ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪৯৯ কিমি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।
১১৮ নং লাইন: ১০১ নং লাইন:
''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ২৮, মেলা ১২। জয়রা পশু হাট, তরা বিল্টু স্মৃতি হাট, ডাউটিয়া হাট, আটিগ্রাম হাট, বারইল হাট, বারাই ভিকরা হাট, ঘোস্তা হাট, মানিকগঞ্জ বাজার, বেউথা বাজার, বাসস্ট্যান্ড বাজার ও বেতিলা বাজার। মেলা: বিজয়মেলা (মানিকগঞ্জ), রথমেলা (মানিকগঞ্জ), রাসমেলা (বেতিলা), শিববাড়ি মেলা, বৈশাখী মেলা (পাঞ্জনখাড়া), মুহররম মেলা (গড়পাড়া এমামবাড়ি), নিমাই চাঁদের মেলা (কৃষ্ণপুর) উল্লেখযোগ্য।
''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ২৮, মেলা ১২। জয়রা পশু হাট, তরা বিল্টু স্মৃতি হাট, ডাউটিয়া হাট, আটিগ্রাম হাট, বারইল হাট, বারাই ভিকরা হাট, ঘোস্তা হাট, মানিকগঞ্জ বাজার, বেউথা বাজার, বাসস্ট্যান্ড বাজার ও বেতিলা বাজার। মেলা: বিজয়মেলা (মানিকগঞ্জ), রথমেলা (মানিকগঞ্জ), রাসমেলা (বেতিলা), শিববাড়ি মেলা, বৈশাখী মেলা (পাঞ্জনখাড়া), মুহররম মেলা (গড়পাড়া এমামবাড়ি), নিমাই চাঁদের মেলা (কৃষ্ণপুর) উল্লেখযোগ্য।


''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''   ধান, গম, ময়দা, দুধ, ডাল, তৈলবীজ, শাকসবজি, বাঁশ, বেত, ইট, বালি, বিড়ি।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য'' ধান, গম, ময়দা, দুধ, ডাল, তৈলবীজ, শাকসবজি, বাঁশ, বেত, ইট, বালি, বিড়ি।
 
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩৭.৭৯% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৮৭.৫০%, ট্যাপ .৬৪%, পুকুর ০.২৯% এবং অন্যান্য ৩.৫৭%
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৬১.৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৫৩.৪৪% (গ্রামে ৪৫.৯৪% ও শহরে ৮৩.৩৬%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৩.৩১% (গ্রামে ৫০.৩৮% ও শহরে ১৫.০৯%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩.২৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''পানীয়জলের উৎস''  নলকূপ ৮৭.০%, ট্যাপ ১১.৭% এবং অন্যান্য ১.৩%।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৮২.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১৬.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে । ০.% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ১, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, মাতৃমঙ্গল ও শিশুসদন ১, চক্ষু হাসপাতাল ১, ক্লিনিক ৭, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১০।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র''  হাসপাতাল ১, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, মাতৃমঙ্গল ও শিশুসদন ১, চক্ষু হাসপাতাল ১, ক্লিনিক ৭, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১০।


প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলায় অনেক লোকের প্রাণহানি ঘটে। এছাড়া ১৯৮৫ সালের টর্নেডোতে বেশ কয়েকজন লোক প্রাণ হারায়।
''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলায় অনেক লোকের প্রাণহানি ঘটে। এছাড়া ১৯৮৫ সালের টর্নেডোতে বেশ কয়েকজন লোক প্রাণ হারায়।


''এনজিও'' ব্র্যাক, প্রশিকা।  [এম.এ রমজান]
''এনজিও'' ব্র্যাক, প্রশিকা।  [এম.এ রমজান]


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Manikganj Sadar Upazila]]
[[en:Manikganj Sadar Upazila]]

২০:১১, ২ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা (মানিকগঞ্জ জেলা)  আয়তন: ২১৫.১৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৪২´ থেকে ২৩°৫৫´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৫৮´ থেকে ৯০°০৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সাটুরিয়া উপজেলা, দক্ষিণে নবাবগঞ্জ (ঢাকা) এবং হরিরামপুর উপজেলা, পূর্বে সিঙ্গাইর ও ধামরাই উপজেলা, পশ্চিমে হরিরামপুর ও ঘিওর উপজেলা।

জনসংখ্যা ৩০৯৪১৩; পুরুষ ১৪৯৪০৭, মহিলা ১৬০০০৬। মুসলিম ২৭৭১০৫, হিন্দু ৩২২২৯, খ্রিস্টান ৭৭, বৌদ্ধ ৩৩ এবং অন্যান্য ২।

জলাশয় কালীগঙ্গা, ধলেশ্বরী, ইছামতী ও গাজীখালী নদী এবং গাঙডুবি বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন মানিকগঞ্জ থানা গঠিত হয়  ১৮৪৫ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১০ ২৬২ ৩১৫ ৭২১০৮ ২৩৭৩০৫ ১৪৩৮ ৬৬.৩৪ (২০০১) ৫২.০
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২৩.১৩ ৫০ ৭১৬৯৮ ৩১০০ ৬৯.১
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১.৩২ (২০০১) ৪১০ ৬৪৫ (২০০১) ৪৪.২
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আটিগ্রাম ১৩ ৫৭৭৬ ১০০৯০ ১০৬৬৫ ৪১.৩
কৃষ্ণপুর ৭১ ৬২৬৭ ১৪৪৩২ ১৫০৬৫ ৪৬.৩
গড়পাড়া ৩১ ৩৮১৮ ১২০২৭ ১২৮১৭ ৫২.২
জাগীর ৫৫ ৩৯৫২ ১৫০৭৮ ১৫২৪৭ ৫০.৯
দীঘি ২৩ ২৬০১ ৯৮৪৫ ১০২৪৯ ৫৮.৩
নবগ্রাম ৮৭ ৪৬১২ ৮৭১৪ ৯৫৫৬ ৫৭.৮
পুতাইল ৯৪ ৫৪৯২ ৯৯১৫ ১১৩৮২ ৫২.৮
বেতিলামিত্র ১১ ৪৭৩৪ ১১৪৬৪ ১৩২২৪ ৫৪.৫
ভাড়ারিয়া ১৫ ৪৫৮৫ ৯৬৪৬ ১১২৬৪ ৫৬.৮
হাতিপাড়া ৩৯ ৫৬১৪ ১২১১২ ১৪৯২৩ ৫২.০

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ মানিকগঞ্জ জামে মসজিদ, শ্রীশ্রী আনন্দময়ী কালীবাড়ি (১৮৯৫), রজনী ভবন ও ঝোভাত ভবন (গঙ্গাধর পট্টি), মত্ত মঠ (১৮৯৪), নারায়ণ সাধুর আশ্রম (১৩৪৮ বঙ্গাব্দ), ইসু বাবুর কাচারি (হিজুলী), শিববাড়ি মন্দির, বাইমাইলের নীলকুঠি।

ঐতিহাসিক ঘটনা এ উপজেলার গড়পাড়া একটি ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ স্থান। বাংলার সুলতান সিকান্দর শাহ এবং তাঁর পুত্র ও সোনারগাঁয়ের শাসনকর্তা গিয়াসউদ্দিন আযম শাহের মধ্যে গড়পাড়ায় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং যুদ্ধে সিকান্দর শাহ নিহত হন। বাংলার মুগল সুবাদার মীরজুমলা শাসনকার্যের সুবিধার্থে ১৬৬২ খ্রিষ্টাব্দে গড়পাড়াতে সেনাঘাটি ও প্রশাসনিক দপ্তর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এ উপজেলায় ১৯৮৭-৮৮ সালে নয়াকান্দি বাঁধ কাটা আন্দোলন সংঘটিত হয়। রাজনৈতিক গুরুত্বের ফলে এখানে পরবর্তীতে একটি বন্দর গড়ে ওঠে।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর এ উপজেলার কাগজীনগর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনাদের লড়াইয়ে ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা-আরিচা সড়কপথের পাশে মানরা গ্রামে পাকসেনাদের আক্রমণ করতে গিয়ে ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে গঙ্গাধর পট্টি রোড ধরে পোড়রা হয়ে লওখ-া গ্রামের নিকট ঢাকা-আরিচা সড়কে পুনরায় পাকসেনাদের আক্রমণ করে। পাকসেনারা রাস্তার উত্তর পাশে এবং মুক্তিযোদ্ধারা দক্ষিণ পাশে অবস্থান নিয়ে পরস্পরকে আক্রমণ করে জাগীর, গোলড়া, নয়াডিঙ্গি ও বারবারিয়া পর্যন্ত অগ্রসর হয়। এ যুদ্ধে ১ জন পাকসেনা নিহত হয়। উপজেলার মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশে ৪৯ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার উদ্দেশে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন মানিকগঞ্জ উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ৩৭০, মন্দির ৯৮, মাযার ১০, দরগাহ ২, তীর্থস্থান ১। উল্লেখযোগ্য  ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: মানিকগঞ্জ জামে মসজিদ, কোর্ট মসজিদ, সেওতা কবরস্থান মসজিদ, বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদ, পোড়রা মসজিদ, বেউথা মসজিদ, বেতিলা মসজিদ, ভাটবাউর জামে মসজিদ, বাজার মসজিদ, উচুটিয়া জামে মসজিদ, ভিকরা জামে মসজিদ, মফিজউদ্দিনের মাযার (দাশড়া), গড়পাড়া এমামবাড়ি মাযার, রহিম দরবার শরীফ (ভাটবাউর), খোদাবখশ দরবার শরীফ (ভাটবাউর), শ্রীশ্রী আনন্দময়ী কালীবাড়ি, লক্ষ্মীমন্ডপ, শিববাড়ি মন্দির, গড়পাড়া মন্দির, ডাউটিয়া মন্দির, শিববাড়ি হিন্দু তীর্থ।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৬.০%; পুরুষ ৫৮.৮%, মহিলা ৫৩.৪%। কলেজ ৯, ল’ কলেজ ১, বিএড কলেজ ১, পিটিআই ১, ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৩, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০৭, কিন্ডার গার্টেন ৩০, মাদ্রাসা ১৩। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ, গড়পাড়া হাফিজ উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ, মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৪), মানিকগঞ্জ মডেল হাইস্কুল (১৯১৮), মানিকগঞ্জ মডেল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৫), এসকে সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯৩০), বেতিলা হাইস্কুল (১৯৬০), খাবাশপুর লাবণ্য প্রভা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪১), হাতিপাড়া হাইস্কুল (১৯৬৭), আটিগ্রাম আকুলচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৯), লেমুবাড়ি বিনোদা সুন্দরী হাইস্কুল (১৯৪৯), গড়পাড়া হাইস্কুল (১৯৫৯), নবগ্রাম হাইস্কুল (১৯৬৭)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: আল-আযান (১৯৯২); সাপ্তাহিক: আলোর বাণী (১৯৮১), মুক্তির বাহন, কড়চা, মানিকগঞ্জের খবর (১৯৯৫), আবাবিল (অবলুপ্ত), মানিকগঞ্জ (১৯৭২), মানিকগঞ্জ বার্তা (১৯৮১), বুধবার, পতাকা, চলমান (১৯৮০), মুক্তির ডাক (১৯৮০), নবগ্রাম (১৯৭৮), জাগরণী (১৯৬৫), ঋতু-রং-মন (১৯৬৭), আবহমান (১৯৭৮), মৈত্রী ইন্টারন্যাশনাল (১৯৭৯), বিটপ (১৯৮১)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৪, ক্লাব ১৩০, মহিলা সংগঠন ২, নাট্যদল ১৭, যাত্রাপার্টি ৮, নাট্যমঞ্চ ৩, সিনেমা হল ৩।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৪৩.৪৩%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৮%, শিল্প ১.৫৭%, ব্যবসা ১৬.৩%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৫.১৪%, চাকরি ১৬.৬৫%, নির্মাণ ১.৬৮%, ধর্মীয় সেবা ০.১৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.৯% এবং অন্যান্য ৯.৩৫%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৩.০৮%, ভূমিহীন ৪৬.৯২%। শহরে ৪৩.৫১% এবং গ্রামে ৫৫.৪৮% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, পাট, তামাক, আলু, ডাল, আখ, ভুট্টা, তৈলবীজ, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিসি, চীনা, ডাবরি, যব, কাউন, মটর, ছোলা, তিল।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, পেয়ারা, নারিকেল, তাল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ১৫, গবাদিপশু ৩৩২, হাঁস-মুরগি ৬৪৯, হ্যচারি ৭।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১০৬ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২১ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪৯৯ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা বৃহৎশিল্প ৮, মাঝারিশিল্প ৬, ক্ষুদ্রশিল্প ৪০২।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, রেশমশিল্প, শাঁখাশিল্প, তৈজসশিল্প, বিড়ি কারখানা, ওয়েল্ডিং কারখানা, প্যাকেজিং কারখানা, মোমবাতি ও আগরবাতি তৈরির কারখানা, গুড় তৈরির শিল্প, বাঁশের কাজ, কাঠের কাজ, সেলাই কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৮, মেলা ১২। জয়রা পশু হাট, তরা বিল্টু স্মৃতি হাট, ডাউটিয়া হাট, আটিগ্রাম হাট, বারইল হাট, বারাই ভিকরা হাট, ঘোস্তা হাট, মানিকগঞ্জ বাজার, বেউথা বাজার, বাসস্ট্যান্ড বাজার ও বেতিলা বাজার। মেলা: বিজয়মেলা (মানিকগঞ্জ), রথমেলা (মানিকগঞ্জ), রাসমেলা (বেতিলা), শিববাড়ি মেলা, বৈশাখী মেলা (পাঞ্জনখাড়া), মুহররম মেলা (গড়পাড়া এমামবাড়ি), নিমাই চাঁদের মেলা (কৃষ্ণপুর) উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, গম, ময়দা, দুধ, ডাল, তৈলবীজ, শাকসবজি, বাঁশ, বেত, ইট, বালি, বিড়ি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৬১.৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৮৭.০%, ট্যাপ ১১.৭% এবং অন্যান্য ১.৩%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৮২.৪% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১৬.৭% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে । ০.৯% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ১, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, মাতৃমঙ্গল ও শিশুসদন ১, চক্ষু হাসপাতাল ১, ক্লিনিক ৭, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১০।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলায় অনেক লোকের প্রাণহানি ঘটে। এছাড়া ১৯৮৫ সালের টর্নেডোতে বেশ কয়েকজন লোক প্রাণ হারায়।

এনজিও ব্র্যাক, প্রশিকা।  [এম.এ রমজান]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।