মনপুরা উপজেলা
মনপুরা উপজেলা (ভোলা জেলা) আয়তন: ৩৭৩.১৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°০৬´ থেকে ২২°২৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫২´ থেকে ৯১°০১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে তজুমদ্দিন উপজেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে হাতিয়া উপজেলা, পশ্চিমে লালমোহন ও চরফ্যাশন উপজেলা।
জনসংখ্যা ৭৬৫৮২; পুরুষ ৩৮৭৪৬, মহিলা ৩৭৮৩৬। মুসলিম ৭১৯৮৫, হিন্দু ৪৫৯৪ এবং খ্রিস্টান ৩।
জলাশয় মেঘনা নদী এবং শাহবাজপুর চ্যানেল ও হরির খাল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন মনপুরা থানা গঠিত হয় ২৫ ডিসেম্বর ১৯৭০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ৭ নভেম্বর ১৯৮৩ সালে।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ১১০, মন্দির ১৩।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
- | ৪ | ১৮ | ৩০ | ১০২৩ | ৭৫৫৫৯ | ২০৫ | ৫৫.৯ | ৩১.৮ |
উপজেলা শহর | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||||
৩.৯৫ | ১ | ১০২৩ | ২৫৯ | ৫৫.৯ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
মনপুরা ৪৭ | ২৮১৫৪ | ৯৩০৯ | ৮৯৫৮ | ২৭.৭ | ||||
উত্তর সাকুচিয়া ৭১ | ১৯৩৮৫ | ৮৬৩৬ | ৮৫৯৪ | ৩০.০ | ||||
দক্ষিণ সাকুচিয়া ২১ | ২০২১৮ | ৭৭৫৯ | ৭৮৩৬ | ২৯.৫ | ||||
হাজিরহাট ২৩ | ২৪৪২০ | ১৩০৪২ | ১২৪৪৮ | ৩৮.১ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
মুক্তিযুদ্ধ মনপুরায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো যুদ্ধ হয়নি। তবে মনপুরার মুক্তিযোদ্ধারা ভোলায় গিয়ে সেখানকার মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মিলিত হয়ে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।
বিস্তারিত দেখুন মনপুরা উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ১১০, মন্দির ১৩।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩২.১%; পুরুষ ৩১.৯%, মহিলা ৩২.২%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৯, মাদ্রাসা ৩৫। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মনপুরা ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৬), মনোয়ারা বেগম মহিলা কলেজ (২০০৩), মনপুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হাজিরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সাকুচিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী মনপুরা বানী।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ৩৫, সিনেমা হল ১, খেলার মাঠ ৯, শিল্পকলা একাডেমী ১।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭২.৫০%, অকৃষি শ্রমিক ৪.৩০%, শিল্প ০.১৯%, ব্যবসা ৯.৬৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ০.৮৬%, চাকরি ৩.৩২%, নির্মাণ ০.৪৮%, ধর্মীয় সেবা ০.৩২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.০৩% এবং অন্যান্য ৮.৩২%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৪৭.২১%, ভূমিহীন ৫২.৭৯%। শহরে ৫৭.৯৫% এবং গ্রামে ৪৬.৮৪% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, ডাল, মরিচ, মিষ্টি আলু, বাদাম, আলু, শাকসবজি।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, পেঁপে, কলা, আঙ্গুর, তরমুজ।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৬৩ কিমি, কাঁচারাস্তা ৭৫ কিমি; নৌপথ ১২০ কিমি; ব্রিজ ১৪; কালভার্ট ৯০; হেলিপ্যাড ১।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন গরুর গাড়ি, পাল্কি।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, মৃৎশিল্প, লৌহশিল্প, বাঁশের কাজ, কাঠের কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১১, মেলা ২। মাস্টার হাট, বাংলা বাজার, হাজির হাট, রাম-নেওয়াজ হাট, সাকুচিয়া বাজার এবং চৈত্রসংক্রান্তি মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, মরিচ, ডাল, বাদাম, ইলিশ।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন বিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৪.১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৬.১% এবং অন্যান্য ৩.৯%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ২৬.৭% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৫.২% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১৮.১% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১।
প্রকৃতিক দুর্যোগ ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে এ উপজেলার বহু লোক মারা যায়।
এনজিও কারিতাস, ব্র্যাক, স্বনির্ভর বাংলাদেশ। [জাকির হোসেন]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; মনপুরা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।