মঠবাড়িয়া উপজেলা
মঠবাড়ীয়া উপজেলা (পিরোজপুর জেলা) আয়তন: ৩৪৪.২৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°০৯´ থেকে ২২°২৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৫২´ থেকে ৯০°০৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে পিরোজপুর সদর ও ভান্ডারিয়া উপজেলা, দক্ষিণে পাথরঘাটা উপজেলা, পূর্বে বামনা ও কাঁঠালিয়া উপজেলা, পশ্চিমে শরণখোলা ও মোড়েলগঞ্জ উপজেলা।
জনসংখ্যা ২৬২৮৪১; পুরুষ ১২৮৮৪৫, মহিলা ১৩৩৯৯৬। মুসলিম ২৩৬৩৪৪, হিন্দু ২৬৩০৭, বৌদ্ধ ১৩৭, খ্রিস্টান ২৬ এবং অন্যান্য ২৭।
জলাশয় বলেশ্বরী, কচা ও পোনা নদী উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন মঠবাড়ীয়া থানা গঠিত হয় ১৯০৪ সালে। বর্তমানে এটি উপজেলা।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ১১ | ৬৭ | ৯৩ | ২৮৮৫১ | ২৩৩৯৯০ | ৭৬৪ | ৬৯.৭ (২০০১) | ৬০.৫ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার(%) | |||
৬.৫৫ (২০০১) | ৯ | ১৬ | ১৮৩৭৫ | ২৩৫২ (২০০১) | ৭৭.৯ |
উপজেলা শহর | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||||
১৫.৯২ (২০০১) | ৩ | ১০৪৭৬ | ৬৫৩ (২০০১) | ৬১.২ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
আমড়াগাছিয়া ১৫ | ৮৬৫৮ | ১০০১৩ | ১১০৭৭ | ৬৩.৪ | ||||
গুলিশাখালী ৫১ | ৭৬৯২ | ১০৫২১ | ১০৫৭৫ | ৬১.৫ | ||||
টিকিকাটা ৮৬ | ৮৭৩৭ | ১২২৮৪ | ১৩৩০১ | ৬২.২ | ||||
তুষখালী ৯৪ | ৪৭২৭ | ৮৯১৮ | ৮৯৬৯ | ৫৩.৬ | ||||
দাউদখালী ৩৪ | ৭৯৮৪ | ১০২৭২ | ১০৭১১ | ৬০.৪ | ||||
ধানিসাফা ৪৩ | ৮১৩৫ | ১৪২৮০ | ১৩৯২৬ | ৬২.৪ | ||||
বড় মাছুয়া ১৭ | ৪১৭২ | ৫৭৯৪ | ৬০১৪ | ৫২.৫ | ||||
বেতমোর রাজপাড়া ২৫ | ৬৬৬৩ | ৯৫৯৭ | ১০২৭৬ | ৫৬.৩ | ||||
মঠবাড়িয়া ৬০ | ৭৮৪১ | ১০৭৮৮ | ১১২৭৯ | ৬২.২ | ||||
মিরুখালী ৬৯ | ৮৫৫২ | ১১২৬৬ | ১২১৩৬ | ৬১.৬ | ||||
সাপলেজা ৭৭ | ১১৯০২ | ১৫৯৮৮ | ১৬৪৮১ | ৬২.৩ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ সোনাখালী জমিদারবাড়ী ও সাপলেজা কুঠিবাড়ী উল্লেখযোগ্য।
ঐতিহাসিক ঘটনাবলি উপজেলার তুষখালীতে খাজনা বৃদ্ধির প্রতিবাদে ১৮৩০ সাল থেকে ১৮৭০ সাল পর্যন্ত ইজারাদারদের বিরুদ্ধে কৃষক বিদ্রোহ সংগঠিত হয়।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের মে মাসে উপজেলার ঝাটিপুনিয়া নামক স্থানে রাজাকারবাহিনী ১২ জন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে। মঠবাড়িয়ায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো যুদ্ধ হয়নি। তবে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা এলাকায় পাকিস্তানি সৈন্যদের ও তাদের দোসরদের আনাগোনা প্রতিহত করতে সচেষ্ট ছিল এবং পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকায় অনুষ্ঠিত অপারেশনে অংশ নিয়েছিল। উপজেলার ১টি স্থানে বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া গেছে।
বিস্তারিত দেখুন মঠবাড়িয়া উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৭২০, মন্দির ২০, তীর্থস্থান ১। বন্দর জামে মসজিদ, সাফা জামে মসজিদ, মঠবাড়ীয়ার হরিমন্দির উল্লেখযোগ্য।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৬১.৭%; পুরুষ ৬১.৭%, মহিলা ৬১.৭%। কলেজ ৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৫, স্যাটেলাইট স্কুল ৭, মাদ্রাসা ১৮২। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মঠবাড়ীয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ, মহিউদ্দীন মহিলা কলেজ, কে.এম লতিফ ইনস্টিটিউশন (১৯২৮), গুলশাখালী জি.কে ইউনিয়ন হাইস্কুল, বড় মাছুয়া ইউনাইটেড হাইস্কুল, নলী ভিম চন্দ্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৮)।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী পাক্ষিক: মঠবাড়ীয়া সমাচার।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৫, ক্লাব ১৯, সিনেমা হল ১, নাট্যদল ১।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৯.৮৯%, অকৃষি শ্রমিক ৪.৪৯%, ব্যবসা ১২.৮১%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৮৬%, চাকরি ৭.১০%, নির্মাণ ১.৩৬%, ধর্মীয় সেবা ০.২৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ২.১৩% এবং অন্যান্য ১০.১২।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৫.১৬%, ভূমিহীন ৩৪.৮৪%। শহরে ৫৪.০৪% এবং গ্রামে ৬৬.৩২% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, আখ, শাকসবজি, ডাল।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি পান, পাট, তিল, সরিষা।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, নারিকেল, কাঁঠাল, কলা, সুপারি, আমড়া।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৬২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২০১ কিমি, কাঁচারাস্তা ৬২০ কিমি; নদীপথ ৬২ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।
শিল্প ও কলকারখানা বরফকল, স’মিল, রাইস মিল।
কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, বাঁশের কাজ, লোহার কাজ, বিড়ি কারখানা, ওয়েল্ডিং কারখানা।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৩১, মেলা ৩। মঠবাড়ীয়া, তুষখালী ও বড় মাছুয়া হাট এবং পহেলা বৈশাখের মেলা (মঠবাড়ীয়া বন্দর) উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য সুপারি, নারিকেল।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সব ক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩৪.৭% পরিবার বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৩৭.৩%, ট্যাপ ৪.৫% এবং অন্যান্য ৫৮.২%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলায় ৫৮.২% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪০.১% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১.৭% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ১, পল্লী স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ৪৯, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৭।
এনজিও ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা। [মো. মিজানুর রহমান]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; মঠবাড়ীয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।