ভৈরব নদী
ভৈরব নদী (Bhairab River) যশোর-খুলনা এলাকার দীর্ঘতম নদী। মালদহের যেস্থানে শ্রুতকীর্তি গঙ্গায় পড়েছে, তারই অপর পাড়ে ভৈরবের উৎপত্তি। বেশ কিছু পথ অতিক্রম করার পর ভৈরব গঙ্গার অপর এক দক্ষিণগামী শাখানদী জালাঙ্গী নদীর সঙ্গে মিশেছে। পরবর্তীতে ভৈরব মেহেরপুরের পশ্চিম পাশ দিয়ে সুবলপুর গ্রামের কাছে মাথাভাংগার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। দর্শনা রেলস্টেশনের দক্ষিণ-পূর্ব কোণ থেকে ভৈরব নদী মাথাভাংগা নদী থেকে বিচ্যুত হয়ে যশোরে প্রবেশ করে কোটচাঁদপুর পর্যন্ত পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে পরে দক্ষিণমুখী হয়েছে।
এক সময়ে ভৈরব গভীর এবং খরস্রোতা ছিল। খুলনা ও যশোর শহর এই নদীর তীরে অবস্থিত। শহর দুটির বসতি ও সভ্যতা বস্ত্তত এই নদীকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছিল। ভৈরব একটি তীর্থ নদী হিসেবেও পরিচিত। বাংলাদেশে এক নামে একাধিক নদী থাকলেও ভৈরব নামে অপর কোন নদী নাই।
চলার পথে ভৈরব বহু নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। নদীটির উল্লেখযোগ্য দুটি শাখা হচ্ছে ইছামতি ও কপোতাক্ষ। খুলনা জেলার কোন কোন অংশে এই নদী ভারত ও বাংলাদেশের সীমানা নির্ধারণ করেছে। কালিগংগার পর বৈখালী পর্যন্ত কালিন্দী নদী নামে পরিচিত। তারপর মোহনার নিকট এই নদী রায়মংগল নামে পরিচিত। পূর্বে রায়মংগল এবং পশ্চিমে হাড়িয়াভাংগা মোহনা দিয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়েছে। এই নদীর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ২৫০ কিমি।
বর্তমানে বর্ষায় এই নদীতে পদ্মার পানি প্রবেশ করতে পারে। কিন্তু শুকনা মৌসুমে শুকিয়ে যায়। স্থানীয় বৃষ্টি এবং নিম্নাঞ্চলের চুয়ানো পানি নদীর একমাত্র উৎস। এই নদীর নিম্নাঞ্চল নাব্য এবং চলাচলের উপযোগী।
মেহেরপুর, দামুরহুদা, চুয়াডাঙ্গা, বারবাজার, কোটচাঁদপুর, চৌগাছা, যশোহর, বসুন্দিয়া, মিলহাটী, কসবা, সুলতলা, দৌলতপুর, দেনহাটী, আলাইপুর, চাচুয়া, বাগেরহাট, খুলনা প্রভৃতি নদীর তীরবর্তী প্রসিদ্ধ স্থান। [মাসুদ হাসান চৌধুরী]
মানচিত্রের জন্য দেখুন গঙ্গা-পদ্মা নদীপ্রণালী।