ভূমি পুনরুদ্ধার: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''ভূমি পুনরুদ্ধার''' (Land Reclamation)  এমন একটি পদ্ধতি, যার মাধ্যমে শুধুমাত্র চাষাবাদের জন্য হারানো জমিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা নয়, বরং ভূমির এমন উন্নয়ন ঘটানো হয়, যাতে ভূমি অর্থনৈতিক (কৃষিসহ) বা সামাজিক প্রয়োজন মেটানোর ক্ষেত্রে উপযোগী হয়ে ওঠে। এক্ষেত্রে কিছু ভূমির ধরন এবং ব্যবহূত কৌশলসমূহ হলো: জলমগ্নভূমি বা জলাবদ্ধভূমি (নিষ্কাশনের মাধ্যমে বা জলপূর্ণ নিম্নাঞ্চলে জল পূরণ দ্বারা); অনুর্বর ভূমি (সেচের মাধ্যমে এবং লবণাক্ত হলে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় পরিশোধনের মাধ্যমে); অস্থায়ী ঢালুভূমি এবং শিথিল মৃত্তিকা (গাছপালা রোপণের মাধ্যমে মাটি আটকে রাখা); পানিসৃষ্ট ক্ষয়প্রবণ ভূমি (গাছপালা রোপণের মাধ্যমে, ভূমি সোপান নির্মাণের মাধ্যমে, বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে মাটি আটকে রাখা); লবণ বা শিল্পবর্জ্যের দূষিত পানি পরিব্যাপ্ত ভূমি (রাসায়নিক পরিশোধন প্রক্রিয়া ব্যবহারের মাধ্যমে); অনাকাঙ্ক্ষিত গাছপালা অথবা ঝোপঝাড় আবৃত ভূমি (পরিষ্কারকরণের মাধ্যমে)। ভূমি পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে পানিসৃষ্ট ক্ষয় এবং উপকূলীয় এলাকায় বঙ্গোপসাগর থেকে ভূমি পুনরুদ্ধারের বিষয়টি অগ্রাধিকার পায়। দেশের প্রধান ভূমি পুনরুদ্ধার প্রকল্প দুইটি হলো মেঘনা আড় বাঁধ-১ এবং ২।
'''ভূমি পুনরুদ্ধার''' (Land Reclamation)  এমন একটি পদ্ধতি, যার মাধ্যমে শুধুমাত্র চাষাবাদের জন্য হারানো জমিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা নয়, বরং ভূমির এমন উন্নয়ন ঘটানো হয়, যাতে ভূমি অর্থনৈতিক (কৃষিসহ) বা সামাজিক প্রয়োজন মেটানোর ক্ষেত্রে উপযোগী হয়ে ওঠে। এক্ষেত্রে কিছু ভূমির ধরন এবং ব্যবহূত কৌশলসমূহ হলো: জলমগ্নভূমি বা জলাবদ্ধভূমি (নিষ্কাশনের মাধ্যমে বা জলপূর্ণ নিম্নাঞ্চলে জল পূরণ দ্বারা); অনুর্বর ভূমি (সেচের মাধ্যমে এবং লবণাক্ত হলে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় পরিশোধনের মাধ্যমে); অস্থায়ী ঢালুভূমি এবং শিথিল মৃত্তিকা (গাছপালা রোপণের মাধ্যমে মাটি আটকে রাখা); পানিসৃষ্ট ক্ষয়প্রবণ ভূমি (গাছপালা রোপণের মাধ্যমে, ভূমি সোপান নির্মাণের মাধ্যমে, বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে মাটি আটকে রাখা); লবণ বা শিল্পবর্জ্যের দূষিত পানি পরিব্যাপ্ত ভূমি (রাসায়নিক পরিশোধন প্রক্রিয়া ব্যবহারের মাধ্যমে); অনাকাঙ্ক্ষিত গাছপালা অথবা ঝোপঝাড় আবৃত ভূমি (পরিষ্কারকরণের মাধ্যমে)। ভূমি পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে পানিসৃষ্ট ক্ষয় এবং উপকূলীয় এলাকায় বঙ্গোপসাগর থেকে ভূমি পুনরুদ্ধারের বিষয়টি অগ্রাধিকার পায়। দেশের প্রধান ভূমি পুনরুদ্ধার প্রকল্প দুইটি হলো মেঘনা আড় বাঁধ-১ এবং ২।


সেচ বিভাগ ১৯৫৭ সালে নোয়াখালীর মূল ভূখন্ড এবং রামগতি দ্বীপের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত মেঘনা নদীর একটি প্রধান শাখার উপরে মেঘনা আড়বাঁধ-১ নির্মাণ করে। মাটি দ্বারা নির্মিত এ বাঁধের দৈর্ঘ্য ১৩.৬৮ কিমি। বাঁধ নির্মাণের ফলে মেঘনার প্রবাহ পশ্চিমদিকে সরে যায় এবং ১৯৬৫ সালের মধ্যে ২০৭ বর্গ কিমি ভূমি পুনরুদ্ধার হয়। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৯৬৩-৬৫ সালে নোয়াখালীর মূল ভূখন্ড ও চর জববারকে যুক্ত করে মেঘনা আড় বাঁধ-২ নির্মাণ করে। এই বাঁধ নির্মাণের ফলে বঙ্গোপসাগর থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত ৩০৩ বর্গ কিমি, ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত ৫৬৩ বর্গ কিমি এবং ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ৭১৭ বর্গ কিমি ভূমি পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়েছে। এক হিসাবে দেখা যায় এই আড় বাঁধ দুইটি নির্মাণের ফলে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত সমুদ্র গর্ভ থেকে ১,০০১ বর্গ কিমি-এর মতো ভূমি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
সেচ বিভাগ ১৯৫৭ সালে নোয়াখালীর মূল ভূখন্ড এবং রামগতি দ্বীপের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত মেঘনা নদীর একটি প্রধান শাখার উপরে মেঘনা আড়বাঁধ-১ নির্মাণ করে। মাটি দ্বারা নির্মিত এ বাঁধের দৈর্ঘ্য ১৩.৬৮ কিমি। বাঁধ নির্মাণের ফলে মেঘনার প্রবাহ পশ্চিমদিকে সরে যায় এবং ১৯৬৫ সালের মধ্যে ২০৭ বর্গ কিমি ভূমি পুনরুদ্ধার হয়। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৯৬৩-৬৫ সালে নোয়াখালীর মূল ভূখন্ড ও চর জববারকে যুক্ত করে মেঘনা আড় বাঁধ-২ নির্মাণ করে। এই বাঁধ নির্মাণের ফলে বঙ্গোপসাগর থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত ৩০৩ বর্গ কিমি, ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত ৫৬৩ বর্গ কিমি এবং ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ৭১৭ বর্গ কিমি ভূমি পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়েছে। এক হিসাবে দেখা যায় এই আড় বাঁধ দুইটি নির্মাণের ফলে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত সমুদ্র গর্ভ থেকে ১,০০১ বর্গ কিমি-এর মতো ভূমি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। [মাসুদ হাসান চৌধুরী]
 
[মাসুদ হাসান চৌধুরী]


[[en:Land Reclamation]]
[[en:Land Reclamation]]

০৯:৫৮, ১ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

ভূমি পুনরুদ্ধার (Land Reclamation)  এমন একটি পদ্ধতি, যার মাধ্যমে শুধুমাত্র চাষাবাদের জন্য হারানো জমিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা নয়, বরং ভূমির এমন উন্নয়ন ঘটানো হয়, যাতে ভূমি অর্থনৈতিক (কৃষিসহ) বা সামাজিক প্রয়োজন মেটানোর ক্ষেত্রে উপযোগী হয়ে ওঠে। এক্ষেত্রে কিছু ভূমির ধরন এবং ব্যবহূত কৌশলসমূহ হলো: জলমগ্নভূমি বা জলাবদ্ধভূমি (নিষ্কাশনের মাধ্যমে বা জলপূর্ণ নিম্নাঞ্চলে জল পূরণ দ্বারা); অনুর্বর ভূমি (সেচের মাধ্যমে এবং লবণাক্ত হলে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় পরিশোধনের মাধ্যমে); অস্থায়ী ঢালুভূমি এবং শিথিল মৃত্তিকা (গাছপালা রোপণের মাধ্যমে মাটি আটকে রাখা); পানিসৃষ্ট ক্ষয়প্রবণ ভূমি (গাছপালা রোপণের মাধ্যমে, ভূমি সোপান নির্মাণের মাধ্যমে, বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে মাটি আটকে রাখা); লবণ বা শিল্পবর্জ্যের দূষিত পানি পরিব্যাপ্ত ভূমি (রাসায়নিক পরিশোধন প্রক্রিয়া ব্যবহারের মাধ্যমে); অনাকাঙ্ক্ষিত গাছপালা অথবা ঝোপঝাড় আবৃত ভূমি (পরিষ্কারকরণের মাধ্যমে)। ভূমি পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে পানিসৃষ্ট ক্ষয় এবং উপকূলীয় এলাকায় বঙ্গোপসাগর থেকে ভূমি পুনরুদ্ধারের বিষয়টি অগ্রাধিকার পায়। দেশের প্রধান ভূমি পুনরুদ্ধার প্রকল্প দুইটি হলো মেঘনা আড় বাঁধ-১ এবং ২।

সেচ বিভাগ ১৯৫৭ সালে নোয়াখালীর মূল ভূখন্ড এবং রামগতি দ্বীপের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত মেঘনা নদীর একটি প্রধান শাখার উপরে মেঘনা আড়বাঁধ-১ নির্মাণ করে। মাটি দ্বারা নির্মিত এ বাঁধের দৈর্ঘ্য ১৩.৬৮ কিমি। বাঁধ নির্মাণের ফলে মেঘনার প্রবাহ পশ্চিমদিকে সরে যায় এবং ১৯৬৫ সালের মধ্যে ২০৭ বর্গ কিমি ভূমি পুনরুদ্ধার হয়। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৯৬৩-৬৫ সালে নোয়াখালীর মূল ভূখন্ড ও চর জববারকে যুক্ত করে মেঘনা আড় বাঁধ-২ নির্মাণ করে। এই বাঁধ নির্মাণের ফলে বঙ্গোপসাগর থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত ৩০৩ বর্গ কিমি, ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত ৫৬৩ বর্গ কিমি এবং ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ৭১৭ বর্গ কিমি ভূমি পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়েছে। এক হিসাবে দেখা যায় এই আড় বাঁধ দুইটি নির্মাণের ফলে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত সমুদ্র গর্ভ থেকে ১,০০১ বর্গ কিমি-এর মতো ভূমি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। [মাসুদ হাসান চৌধুরী]