ভাওয়াইয়া: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
৬ নং লাইন: ৬ নং লাইন:
ভাওয়াইয়া গান দুই প্রকার- দীর্ঘ সুরবিশিষ্ট ও চটকা সুরবিশিষ্ট। প্রথম শ্রেণীর গানে নর-নারীর, বিশেষত নবযৌবনাদের অনুরাগ, প্রেমপ্রীতি ও ভালোবাসার আবেদন ব্যক্ত হয়। এরূপ গানের মধ্যে ‘ওকি গাড়িয়াল ভাই’, ‘যে জন প্রেমের ভাব জানে না’, ‘কোন দ্যাশে যান মইশাল বন্দুরে’, ‘নউতোন পিরিতির বড় জ্বালা’ ইত্যাদি অধিক জনপ্রিয়। অপরপক্ষে চটকা এক প্রকার রঙ্গগীতি। এ গান চটুল ও দ্রুত তালের। গ্রাম্য ‘চট’ (অর্থ তাড়াতাড়ি) শব্দটির স্ত্রীলিঙ্গান্তর করে ‘চটকা’ শব্দের উৎপত্তি হয়েছে। এ শ্রেণীর গানে যথেষ্ট হাস্যরসের উপাদান থাকে।
ভাওয়াইয়া গান দুই প্রকার- দীর্ঘ সুরবিশিষ্ট ও চটকা সুরবিশিষ্ট। প্রথম শ্রেণীর গানে নর-নারীর, বিশেষত নবযৌবনাদের অনুরাগ, প্রেমপ্রীতি ও ভালোবাসার আবেদন ব্যক্ত হয়। এরূপ গানের মধ্যে ‘ওকি গাড়িয়াল ভাই’, ‘যে জন প্রেমের ভাব জানে না’, ‘কোন দ্যাশে যান মইশাল বন্দুরে’, ‘নউতোন পিরিতির বড় জ্বালা’ ইত্যাদি অধিক জনপ্রিয়। অপরপক্ষে চটকা এক প্রকার রঙ্গগীতি। এ গান চটুল ও দ্রুত তালের। গ্রাম্য ‘চট’ (অর্থ তাড়াতাড়ি) শব্দটির স্ত্রীলিঙ্গান্তর করে ‘চটকা’ শব্দের উৎপত্তি হয়েছে। এ শ্রেণীর গানে যথেষ্ট হাস্যরসের উপাদান থাকে।


চটকা গানের মধ্য দিয়ে স্বামী-স্ত্রীর আশা-আকাঙ্ক্ষা, মনোমালিন্য, সন্তান-সন্ততি কামনা, সংসার জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত ইত্যাদি বিষয় ব্যক্ত হয়। ‘ওরে পতিধন বাড়ি ছাড়িয়া না যান’, ‘পানিয়া মরা মোক মারিলু রে’, ‘ওরে কাইনের ম্যায়ার ঠসক বেশি/ ব্যাড়ায় শালী টাড়ি টাড়ি’ প্রভৃতি গান এ শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। এই দুই শ্রেণীর গানের সুরের মিশ্রণে অপর এক শ্রেণীর গানও প্রচলিত, যা ক্ষীরোল গান নামে পরিচিত।  [[দোতারা|দোতারা]] ভাওয়াইয়া গানের প্রধান  [[বাদ্যযন্ত্র|বাদ্যযন্ত্র]]। শিল্পী  [[আহমদ, আববাসউদ্দীন|আববাসউদ্দীন আহমদ]] ভাওয়াইয়া গান জনপ্রিয় করে তোলেন।''' '''তাঁর কন্যা ফেরদৌসী রহমান এবং পুত্র মোস্তফা জামান আববাসীও এ গানের জনপ্রিয় শিল্পী।
চটকা গানের মধ্য দিয়ে স্বামী-স্ত্রীর আশা-আকাঙ্ক্ষা, মনোমালিন্য, সন্তান-সন্ততি কামনা, সংসার জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত ইত্যাদি বিষয় ব্যক্ত হয়। ‘ওরে পতিধন বাড়ি ছাড়িয়া না যান’, ‘পানিয়া মরা মোক মারিলু রে’, ‘ওরে কাইনের ম্যায়ার ঠসক বেশি/ ব্যাড়ায় শালী টাড়ি টাড়ি’ প্রভৃতি গান এ শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। এই দুই শ্রেণীর গানের সুরের মিশ্রণে অপর এক শ্রেণীর গানও প্রচলিত, যা ক্ষীরোল গান নামে পরিচিত।  [[দোতারা|দোতারা]] ভাওয়াইয়া গানের প্রধান  [[বাদ্যযন্ত্র|বাদ্যযন্ত্র]]। শিল্পী  [[আহমদ, আববাসউদ্দীন|আববাসউদ্দীন আহমদ]] ভাওয়াইয়া গান জনপ্রিয় করে তোলেন। তাঁর কন্যা ফেরদৌসী রহমান এবং পুত্র মোস্তফা জামান আববাসীও এ গানের জনপ্রিয় শিল্পী। [সমবারু চন্দ্র মহন্ত]


[সমবারু চন্দ্র মহন্ত]
''আরও দেখুন''  [[লোকসাহিত্য|লোকসাহিত্য]]
 
আরও দেখুন লোকসাহিত্য।


[[en:Bhawaiya]]
[[en:Bhawaiya]]

০৩:৫৮, ১ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

ভাওয়াইয়া  উত্তরবঙ্গে প্রচলিত এক প্রকার  লোকগীতি। রংপুর ও ভারতের কুচবিহার জেলা এ গানের জন্মস্থান। ভাওয়াইয়া গান সুরলালিত্যে ভরপুর এবং এর একটি নিজস্ব গীতরীতি আছে। বৈশিষ্ট্যগত কারণে সাধারণত উত্তর বাংলার শিল্পী ছাড়া এ গানের সুরসংযোজনা সকলের পক্ষে সম্ভব হয় না।

ভাওয়াইয়া গান ভাবসমৃদ্ধ বিধায় ‘ভাব’ থেকে ‘ভাওয়াইয়া’ কথাটির উৎপত্তি বলে অনুমিত হয়। এ গানের মূল সুর নর-নারীর প্রণয়। প্রণয়ের বিচ্ছেদ জ্বালাই এতে অধিক রূপায়িত হয়। মৈশাল, গাড়োয়ান, মাহুত প্রমুখ এই প্রণয়গীতির নায়ক। আধ্যাত্মিক চেতনাসমৃদ্ধ ভাওয়াইয়া গানও পরিলক্ষিত হয়, যেমন: ‘ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে রে’, ‘ছাড় রে মন ভবের খ্যালা’ ইত্যাদি। বাউদিয়া নামক উদাসী সম্প্রদায় এ গানের রূপকার। কারও কারও মতে এই বাউদিয়া থেকেই ভাওয়াইয়া কথাটির উৎপত্তি হয়েছে।

ভাওয়াইয়া গান দুই প্রকার- দীর্ঘ সুরবিশিষ্ট ও চটকা সুরবিশিষ্ট। প্রথম শ্রেণীর গানে নর-নারীর, বিশেষত নবযৌবনাদের অনুরাগ, প্রেমপ্রীতি ও ভালোবাসার আবেদন ব্যক্ত হয়। এরূপ গানের মধ্যে ‘ওকি গাড়িয়াল ভাই’, ‘যে জন প্রেমের ভাব জানে না’, ‘কোন দ্যাশে যান মইশাল বন্দুরে’, ‘নউতোন পিরিতির বড় জ্বালা’ ইত্যাদি অধিক জনপ্রিয়। অপরপক্ষে চটকা এক প্রকার রঙ্গগীতি। এ গান চটুল ও দ্রুত তালের। গ্রাম্য ‘চট’ (অর্থ তাড়াতাড়ি) শব্দটির স্ত্রীলিঙ্গান্তর করে ‘চটকা’ শব্দের উৎপত্তি হয়েছে। এ শ্রেণীর গানে যথেষ্ট হাস্যরসের উপাদান থাকে।

চটকা গানের মধ্য দিয়ে স্বামী-স্ত্রীর আশা-আকাঙ্ক্ষা, মনোমালিন্য, সন্তান-সন্ততি কামনা, সংসার জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত ইত্যাদি বিষয় ব্যক্ত হয়। ‘ওরে পতিধন বাড়ি ছাড়িয়া না যান’, ‘পানিয়া মরা মোক মারিলু রে’, ‘ওরে কাইনের ম্যায়ার ঠসক বেশি/ ব্যাড়ায় শালী টাড়ি টাড়ি’ প্রভৃতি গান এ শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। এই দুই শ্রেণীর গানের সুরের মিশ্রণে অপর এক শ্রেণীর গানও প্রচলিত, যা ক্ষীরোল গান নামে পরিচিত।  দোতারা ভাওয়াইয়া গানের প্রধান  বাদ্যযন্ত্র। শিল্পী  আববাসউদ্দীন আহমদ ভাওয়াইয়া গান জনপ্রিয় করে তোলেন। তাঁর কন্যা ফেরদৌসী রহমান এবং পুত্র মোস্তফা জামান আববাসীও এ গানের জনপ্রিয় শিল্পী। [সমবারু চন্দ্র মহন্ত]

আরও দেখুন লোকসাহিত্য