বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট

বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট বাংলাদেশী বৌদ্ধদের ধর্মীয় উন্নয়নকল্পে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১৯৮৪ সালে গঠিত একটি স্থায়ী প্রকল্প। এর উদ্দেশ্য বৌদ্ধদের ধর্ম পালন ও উপাসনালয়সমূহ রক্ষণাবেক্ষণে সহায়তা করা। এ লক্ষ্যে পদাধিকার বলে ধর্মমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে তিন বছর মেয়াদি সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় ট্রাস্টের দাপ্তরিক কাজকর্ম ধর্মমন্ত্রণালয়েই সম্পন্ন হতো; পরে ঢাকার ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহারে দপ্তর স্থানান্তরিত হয়। প্রতিষ্ঠালগ্নে ট্রাস্টের তহবিল ছিল এক কোটি টাকা, পরে তা দু’কোটি টাকায় উন্নীত হয়।

ট্রাস্ট ১৯৮৯ সালে  ত্রিপিটক অনুবাদ ও প্রকাশনার উদ্দেশ্যে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। এছাড়া ১৯৯৫ সালে শান্তরক্ষিত মহাস্থবির সংকলিত পালি-বাংলা অভিধান প্রকাশেরও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং সে অনুযায়ী বর্তমানে অভিধানটি বাংলা একাডেমীতে মুদ্রণাধীন রয়েছে। ট্রাস্টের উদ্যোগে ঢাকা ট্রাস্ট কার্যালয়, চট্টগ্রাম নব পন্ডিত বিহার, রাঙ্গামাটি আনন্দ বিহার, খাগড়াছড়ি সিবলি বৌদ্ধ বিহার এবং বান্দরবান রাজবিহারে পাঁচটি বৌদ্ধধর্মীয় গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। পালি টেক্স্ট সোসাইটি অফ লন্ডন (পি.টি.এস) কর্তৃক প্রকাশিত সমগ্র ত্রিপিটক  ও অট্ঠকথাসমূহের রোমান হরফে মূল পালিসহ  ইংরেজি অনুবাদের গ্রন্থগুলিও ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ক্রয় করা হয়। এছাড়াও ট্রাস্ট বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ ও ভারতে প্রকাশিত বাংলা ও ইংরেজিতে লেখা বৌদ্ধ ধর্ম, সাহিত্য ও দর্শনবিষয়ক গ্রন্থ এবং বিশ্বকোষ ও অভিধানসহ নানা ধরনের প্রায় সাত শতাধিক গ্রন্থ ক্রয় করে।

বর্তমানে ট্রাস্ট কর্তৃক রেজিস্ট্রিভুক্ত বিহারের সংখ্যা প্রায় ১০০০। ট্রাস্ট পরিচালনার জন্য রয়েছেন সচিবসহ তিনজন কর্মকর্তা-কর্মচারী। ট্রাস্টের বার্ষিক খরচ আনুমানিক তিন লাখ টাকা। প্রায় দু’দশক যাবৎ ট্রাস্ট এ দেশের বৌদ্ধদের ধর্ম, সমাজ, শিক্ষা ও সংস্কৃতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।  [সুকোমল বড়ুয়া]