বেলবাড়ি মাদ্রাসা
বেলবাড়ি মাদ্রাসা গৌড়-লখনৌতির ভারতীয় অংশে বেলবাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত। এটি ছিল বাংলায় টিকে থাকা দুটি প্রাচীন মাদ্রাসার মধ্যে একটি। অন্যটি নির্মিত হয়েছিল বাংলাদেশের দরসবাড়িতে। উৎখনন অঞ্চলে পাওয়া ভিত্তি এবং ধ্বংসস্তূপ থেকে পাওয়া শিলালিপির বক্তব্যে দরসবাড়ি মাদ্রাসা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। কিন্তু বেলবাড়ি মাদ্রাসার অবস্থান (মূল নামটি নিশ্চিতভাবে জানা যায় না) এখনও সম্পূর্ণভাবে উন্মোচিত হয় নি। ‘চাঁদ সওদাগরের ভিটা’ নামে পরিচিত ছোটসাগর দিঘির উত্তরে একটি চতুর্ভুজাকৃতি স্থানকে জেনারেল কানিংহাম মাদ্রাসাটির সঠিক অবস্থান বলে চিহ্নিত করেছেন। এ স্থান থেকে পাওয়া শিলালিপি মাদ্রাসার অবস্থান সম্পর্কে ধারণা দিতে পারে। কিন্তু বর্তমানে এ শিলালিপিটি ইংলিশ বাজার পুলিশ স্টেশনের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত একটি মসজিদের দেয়ালে সংস্থাপন কারায় এখানেই মাদ্রাসা স্থাপিত ছিল বলে অনেকে মনে করেন। শিলালিপির সাক্ষ্য অনুযায়ী মাদ্রাসাটিকে বলা হয়েছে আল-মাদ্রাসা আল-শরীফ (উচ্চ মানের মাদ্রাসা)। এভাবে মাদ্রাসাটিকে দরসবাড়ি মাদ্রাসা থেকে আলাদা করা যায়। কারণ দরসবাড়ি মাদ্রাসাকে বলা হয়েছে আল-মাদ্রাসা আল-জামিলা (বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ও জাঁকজমকপূর্ণ মাদ্রাসা)। শিলালিপির সাক্ষ্য অনুযায়ী বেলবাড়ি মাদ্রাসাটি ৯০৭ হিজরিতে (১৫০২ খ্রি.) নির্মিত হয়েছিল। যদিও এখন পর্যন্ত এর প্রকৃত অবস্থানটি নির্দেশ করা যায় নি, তবুও দরসবাড়ি মাদ্রাসার ভূমি-পরিকল্পনা ও গঠন-রীতির সঙ্গে এর সাদৃশ্য অনুমান করা হয়। একই রীতির উদাহরণ লক্ষ্য করা যায় ভারতে এবং মধ্য প্রাচ্যের বাইরে। [এ.বি.এম হোসেন]